বাবা মেয়ে মিলে বাইরে ঘোরাফেরা ও হালকা খাওয়া দাওয়ার অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


অনেকদিন আগে থেকে পরিকল্পনা করেছিলাম একদিন আমার মেয়ে আর ভাস্তিকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। তারপর হালকা খাওয়া-দাওয়া করে বাড়িতে ফিরবো। গতকাল বিকালে হঠাৎ করে আমার ভাস্তি ফোন দিয়ে বলল সে ঘুরতে যাবে। আমিও চিন্তা করলাম তাহলে আজকেই আমাদের সেই পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করা যাবে। সাথে সাথে আমি আমার মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে এলাম। তারপর তাকে তৈরি করে সাথে নিয়ে বের হলাম আমার ভাস্তি যেখানে থাকে সেখানকার উদ্দেশ্যে। সেই জায়গাটা আমার বাসা থেকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূরে। যার ফলে রিকশা করে সেখানে যেতে কিছুটা সময় লাগলো। অবশ্য আমি আগেই ফোন দিয়ে আমার ভাতিজিকে থেকে তৈরি হয়ে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখি আবার ভাস্তি তখনো তৈরি হয়নি।

IMG_20231001_171047.jpg

ছোট বাচ্চা মানুষ এদের মন-মরজি বোঝা খুব মুশকিল। কিছুক্ষণ পর সে জানালো সে আজকে ঘুরতে বের হবে না। অগত্যা কি আর করা? তখন আমি আমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম এখন কি করবে বাসায় ফিরে যাবে নাকি আমরা কোথাও ঘুরতে যাবো? তার মুখ দেখে বুঝতে পারলাম তারও ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। তখন তাকে বললাম চলো আমরা দুজনে মিলে পদ্মারপাড় থেকে ঘুরে আসি। আমার মেয়ে সানন্দে রাজি হয়ে গেলো। তবে সাথে আমাকে আরো একটা শর্ত দিলো। বলল ঘোরাফেরা শেষ হলে আমরা একটা রেস্টুরেন্টে যাবো খাওয়া-দাওয়া করতে। আমি হাসি মুখে তার আবদারে রাজি হয়ে গেলাম। তারপর আমরা যে রিক্সা করে গিয়েছিলাম সেটাতে করেই পদ্মার পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পদ্মার পাড়ে পৌঁছতে আমাদের খুব একটা সময় লাগলো না।


IMG_20231001_171220.jpg

সেখানে পৌঁছে আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম এখনো নদীতে অনেকটা পানি রয়েছে। সাধারণত বছরের এই সময়টাতে নদীতে পানি অনেক কমে যায়। এ বছরের মত এতটা পানি এই সময়ে আমি আগে কখনো দেখেছি বলে মনে পড়ে না। যাইহোক নদীতে পানি দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। শুকনো নদী দেখতে আমার ভালো লাগেনা। গতকাল বিকালের আবহাওয়াটাও ছিলো চমৎকার। নদীর পাড়ে মৃদু ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছিলো। যার ফলে আমার আর আমার মেয়ের দুজনেরই অনেক ভালো লাগছিল। আমার মেয়ে সাধারণত বেশি হাঁটাহাঁটি করতে চায় না। তবে গতকালকের এই চমৎকার আবহাওয়া দেখে সে আমার সাথে বেশ কিছুটা পথ হেঁটে ছিলো পদ্মার পাড় ধরে। আমরা কিছুদূর আগানোর পরে দেখতে পেলাম পাড়ে দুটো রেসকিউ বোট ভেড়ানো রয়েছে। সেখানে কিছু বাচ্চা উঠেছে তাদের অভিভাবকদের সাথে। তাদের দেখে মনে হল রেসকিউ বোটে উঠে সময়টা তারা ভালোই উপভোগ করছে।


IMG_20231001_171832.jpg

এই দৃশ্য দেখে আমার মেয়েও বায়না ধরল সেখানে ওঠার। তবে রেসকিউ বোটে ওঠার তেমন কোন ব্যবস্থা ছিলো না। কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে সেখানে উঠতে হচ্ছিলো। যাই হোক কি আর করা যেহেতু মেয়ের আবদার তাই কিছুটা কষ্ট করে রেস্কিউ বোটে উঠলাম। সেখানে উঠে বেশ কিছুটা সময় কাটালাম। তবে রেসকিউ বোটের ছাদে ওঠার যে ব্যবস্থা ছিল সেটা আমার জানা ছিল না। ভিতরে ঘুরতে গিয়ে দেখি সেখানে ছোট্ট সিঁড়ি রয়েছে যেটা দিয়ে ছাদে ওঠা যায়। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে সেই ছোট্ট সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠলাম। যদিও আমার মেয়ে কিছুটা ভয় পাচ্ছিলো। তারপরে আমি তাকে অভয় দেওয়াতে সে আমার সাথে ছাদে উঠেছিলো।


IMG_20231001_171739.jpg

তবে ছাদে উঠে সে বেশ মজা পেয়েছিলো। বাচ্চাদেরকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে গেলে তাদের হাসি মুখ দেখতে অনেক ভালো লাগে। সেখানে বেশ কিছুখন সময় কাটিয়ে আমরা রেস্কিউ বোট থেকে নেমে এলাম। তারপর পদ্মার পাড়ে আরো বেশ কিছুটা সময় ঘুরে ফিরে কাটালাম। এদিকে খেয়াল করে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায় যায় অবস্থা। আমার আবার নামাজ পড়ার তাড়া রয়েছে। তাই পরিকল্পনা করেছিলাম মেয়েকে নিয়ে প্রথমে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার অর্ডার করবো। তার ভিতরে আজান দিয়ে দিলে আমি মেয়েকে সাথে নিয়ে নামাজ পড়ে তারপর আবার সেই রেস্টুরেন্টে ফিরে আসবো। কারণ ছোট বাচ্চা মানুষকে রেস্টুরেন্টে বসিয়ে রেখে গেলে আবার কোন বিপদ ঘটে কে জানে। এই কারণে আমি মেয়েকে সাথে নিয়ে বের হলে সব সময় তাকে আমার কাছেই রাখি। যাই হোক পদ্মারপাড় থেকে রওনা দিয়ে আমরা মাগরিবের নামাজের কিছুক্ষণ আগে রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

আসলেই ভাই বাচ্চাদেরকে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে গেলে তারা খুব খুশি হয় এবং তখন তাদের হাসিমুখ দেখতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। পদ্মার পাড়ে মেয়েকে নিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন ভাই। রেসকিউ বোটে উঠে তো আশেপাশের দৃশ্য চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

বাচ্চারা ঘুরতে ভীষণ পছন্দ করে।আর বর্তমানে ফাস্ট ফুড খাবার ও খুব পছন্দ করে।আপনি মেয়েকে নিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন পড়ে ভালো লাগলো। নদীর পাড়ে সুন্দর মূহুর্ত কাটিয়েছেন। মেয়ের আবদারে আবার রেসকিউ বোটে ও উঠলেন।আরো বেশি ইনজয় করেছে মেয়ে।ফটোগ্রাফি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। বোটে বসে আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুব সুন্দর ভাবে দেখতে পেলো।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59871.00
ETH 2671.84
USDT 1.00
SBD 2.47