ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের স্মরণীয় জয়।

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত ১৫ তারিখে বিশ্বকাপের ১৩ তম ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান। কাগজে-কলমে দুই দলের শক্তির ভেতরে ছিলো ব্যাপক পার্থক্য। তাছাড়া এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শুরুটা খারাপ হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে বেশ প্রভাব বিস্তার করেই খেলেছিলো ইংল্যান্ড। সেই হিসাবে সবাই ধরেই নিয়েছিল আফগানিস্তানকে ইংল্যান্ড বড় ব্যবধানে হারিয়ে দেবে। কিন্তু কেউ চিন্তাও করতে পারেনি এই দিনই হতে যাচ্ছে এই বিশ্বকাপের সবচাইতে বড় আপসেট। যদিও অনেকেই এটাকে আপসেট হিসাবে মানতে নারাজ। তারপরেও কাগজ কলমে দুই দলের শক্তির ভিতর এত পার্থক্য যে এটাকে আপসেট বলাই যায়।

IMG_20231019_172541.jpg

স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে SL Cricket Corner নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে

টসে জিতে প্রথমে ইংল্যান্ড আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। কিন্তু ইংল্যান্ডের ক্যাপ্টেনের সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত করে আফগানিস্তানের দুই ওপেনার দুর্দান্ত একটা সূচনা এনে দেয়। মাত্র ষোল ওভার চার বলে ১১৪ রানের একটি ওপেনিং পার্টনারশিপ দেয় রাহমান উল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। তারপরে তারা দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে এক সময় ৩৬ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান করে। শেষ পর্যন্ত রশিদ খানের ২৩ এবং মুজিবুর রহমানের ২৮ রানের দুটি ছোট ইনিংসে ভর করে তারা ৪৯ ওভার পাঁচ বলে সব উইকেট হারিয়ে তারা ২৮৪ রান জড়ো করতে সমর্থ হয়। আফগানিস্তানকে নিয়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা বলে থাকেন আফগানিস্তানের মূল দুর্বলতা হচ্ছে তাদের ব্যাটিং। তাদের বোলিং লাইনে বরাবরই দুর্দান্ত। বিশেষ করে কয়েকজন বিশ্বমানের স্পিনার রয়েছেন তাদের। তাদের ভেতর অন্যতম হচ্ছে রশিদ খান এবং মুজিবুর রহমান।


IMG_20231019_172605.jpg

স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে SL Cricket Corner নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে

আফগানিস্তান ২৮৪ করার পর অনেকেই মনে চিন্তা করছিলেন ইংল্যান্ড যদি ভালো সূচনা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে শেষ পর্যন্ত এই রান করা তাদের জন্য সমস্যা হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। শুরু থেকেই আফগানিস্তানের স্পিনাররা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদেরকে চেপে ধরে। কখনোই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদেরকে তারা দ্রুত গতিতে রান তুলতে দেয়নি। বরঞ্চ ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। ডেভিড মালান এবং হ্যারি ব্রুক ছাড়া আর কোন ইংলিশ ব্যাটসম্যানই তেমন কোন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের তিন স্পিনারের তোপে পড়ে ইংল্যান্ড ৪০ ওভারে ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। আর আফগানিস্তান পায় তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বড় একটা জয়।


IMG_20231019_172627.jpg

স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে SL Cricket Corner নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে

অনেকের কাছে মনে হতে পারে একটা জয় এ আর এমনকি স্পেশাল। কিন্তু আপনি যদি আফগানিস্তান দলটাকে চিনে থাকেন এবং তাদের ইতিহাসটা জানেন তাহলে আপনাকে অবাক হতে হবে। আফগানিস্তান এমন একটা দল যাদের নিজেদের দেশে এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয়নি তাদের দেশে ক্রিকেট অবকাঠামো বলতে কিছুই নেই দীর্ঘদিনের যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশ যাদের জীবনে একমাত্র আনন্দ বলতে আছে ক্রিকেট খেলা তারা জিতেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা প্রাপ্ত একটি দল যাদের ক্রিকেট ইতিহাস সবচাইতে পুরাতন তাদের বিপক্ষে এজন্যই আফগানিস্তানের এই জয়টা অনেক বেশি স্পেশাল আশা করব এই বিশ্বকাপে এমন আরো অনেক অঘটন দেখা যাবে সে আশায় আজকের মত শেষ করছি

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 9 months ago 

ভাই ইতিমধ্যে আরও একটি অঘটন ঘটেছে, নেদারল্যান্ড সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। হয়তো চলমান বিশ্বকাপে আরও অঘটন দেখা যাবে। যাইহোক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের জয়টি অবশ্যই স্মৃতির পাতায় লেখা হয়ে থাকবে। আফগানিস্তানের স্পিনাররা বেশ ভালো বল করে বেশিরভাগ সময়। তবে সেদিন ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান বাজে ব্যাটিং করেছে। ম্যাচটি দেখে বেশ ভালোই লেগেছিল আমার। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

ভাই এবারের বিশ্বকাপে কে কখন কাকে হারিয়ে দিচ্ছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। এ বছরের ক্রিকেট বিশ্বকাপটা অঘটনের একটি বিশ্বকাপ। সেদিনে আফগানিস্তান আর ইংল্যান্ডের ম্যাচটি বেশ দুর্দান্ত একটি ম্যাচ ছিলো। ইংল্যান্ডের সাথে খেলায় আফগানিস্তানের প্রতিটি প্লেয়ার আর তাদের নিজেদের সেরাটা দিয়েছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

এখানে আমি পুরো ক্রেডিট দিব আফগানিস্তানের বোলিং লাইনআপ কে। ঐ রান ইংল‍্যান্ডের কাছে কোন ব‍্যাপার ছিল না। কিন্তু কী অসাধারণ বোলিং করল রশীদ খান এবং মুজিব। ওদের দুজনেই কুপকাত ইংল‍্যান্ড। এবং আরও একটা ইতিহাস রচিত হয়ে গেল আফগানিস্তান এর ক্রিকেট ইতিহাসে। এইজন্যই হয়তো বলে মাঠে সবাই সমান।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64599.25
ETH 3467.96
USDT 1.00
SBD 2.55