দুই বন্ধুর বড়ই বাগান থেকে বড়ই কেনার অভিজ্ঞতা।
যথারীতি পরদিন বিকালে দুই বন্ধু লালের মোড় নামক জায়গায় একত্রিত হলাম। তারপর সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে রাফ্সানের এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যেতে যেতে আমরা চিন্তা করছিলাম কি করা যায়? তবে রাফসানের শোরুমে পৌঁছে কথায় কথায় রাফ্সানের এক ছোট ভাই জানালো ওদের এলাকা থেকে কিছুটা দূরে একটা এলাকায় অনেক বড়ই এর বাগান হয়েছে। সেখানকার বড়ইয়ের কোয়ালিটি নাকি অনেক ভালো। এ কথা শুনে ফেরদৌস সাথে সাথেই তাকে প্রস্তাব দিলো তাহলে চলো আমাদের সাথে। আমরা সেই বাগানে যাবো। আমিও ফেরদৌসের সাথে রাজি হয়ে গেলাম। যদিও রাফসানের সেই ছোট ভাই তখন সেই বাগানে যাওয়ার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী ছিলো না। কিন্তু আমাদের আগ্রহ দেখে রাফসান ও সেই ছোট ভাইকে বলল আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য। সাথে এটাও বলে দিলো আমরা যদি বড়ই কিনি তাহলে রাফসানের জন্য কিছুটা নিয়ে আসতে। তখন আমরা রাফসানের শোরুম থেকে বের হয়ে ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে করে সেই বাগানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। জায়গাটা রাফসানের শোরুম থেকে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার দূরে ছিলো। তাছাড়া সেখানে যাওয়ার রাস্তাটাও ছিল বেশ ভাঙাচোরা। যার ফলে সেখানে পৌঁছতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছে সেই সাথে বেশ কষ্টও হয়েছিলো।
শেষ পর্যন্ত যখন সেই বাগানের কাছাকাছি পৌঁছলাম তখন বাগানটি দেখে অনেক ভালো লাগছিলো। আমরা প্রথমে বাগানের মালিকের বাড়ির ভেতরে ঢুকে সেখান দিয়ে বাগানে প্রবেশ করেছিলাম। বড়ই বাগানে গিয়ে দেখি পুরো বাগানটা জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। যাতে বাদুর বা অন্য পাখি বড়ই নষ্ট করতে না পারে। তবে উপরের জালের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করে দেখলাম সেখানে প্রচুর ছোট আকারে বাদুর মরে পড়ে রয়েছে। অবশ্য অনেকে নাকি এগুলোকে চামচিকা বলে থাকে। দুটো একই প্রজাতির কিনা সেটা আমার জানা নেই। জাল দিয়ে ঢেকে রাখার ফলে একটা ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। বাগানে পৌঁছে দেখতে পেলাম বাগানটা আসলেই অনেক বড়। সেখানে কয়েক প্রজাতির বড়ই ছিলো। আমরা মূলত সেখানে গিয়েছিলাম বড় আকারের কুল বড়ই কিনতে। যেগুলোর নাম তারা বলছিলো নারকেলি কুল। সেখানে দেখতে পেলাম আপেল কুল এবং বল সুন্দরী নামের আরও এক ধরনের বড়ই গাছ রয়েছে।
সেখান থেকে বাগান মালিকের সাথে কথা বলে আমরা ৪ কেজি বড়ই কিনেছিলাম। সাধারণত বাগান থেকে বড়ই কিনলে বা যে কোনো ফল কিনলে সেটার দাম তুলনামূলক কিছুটা কম হয়। তবে এখানে দেখলাম ব্যাপার কিছুটা উল্টো। সে ব্যক্তি আমাদের কাছ থেকে প্রতি কেজি বড়ই ১৪০ টাকা হিসেবে দাম রেখেছিলো। যাইহোক শুধু যে বড়ই কিনেছিলাম তা নয়। সেখান থেকে ইচ্ছামতো বড়ই খাওয়ারও সুযোগ ছিলো। বাগানের মালিক বলেছিলো আপনারা যত ইচ্ছা খেতে পারবেন। বড়ইগুলো খেতে ছিলো দারুন সুস্বাদু। বিশেষ করে যেগুলো পেকে হলুদ রং ধারণ করেছিলো সেগুলো ছিলো খুবই মিষ্টি। আমরা শুধু যে বড়ই কিনেছিলাম তা নয় সাথে কিছু বড়ই খেয়েছিলাম সেখান থেকে। গাছ থেকে নিজ হাতে টাটকা বড়ই পেরে খাওয়ার মজাই ছিলো অন্যরকম। এদিকে বড়ই কেনা শেষ হতে হতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। বড়ই কেনা হয়ে গেলে আমরা টাকা পরিশোধ করে আবার রাফসানের শোরুমের দিকে ফিরে গেলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | হাট কৃষ্ণপুর |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনি দেখছি দুই বন্ধুর বড়ই বাগান থেকে বড়ই কিনেছেন এবং সেখান থেকে বেশ কয়েকটি সুন্দর ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা দেখতে খুবই ভালো লাগছে। তবে আপনার প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে এই দেশি কুলগুলা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম প্রতি কেজি বড়ুয়ের দাম নিয়েছিল ১৪০ টাকা। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
এই বাক্যগুলো ঠিক করুন। কমেন্ট লেখার পরে একবার চেক করে দেখবেন যে কি লিখেছেন।
আসলে ভাইয়া চাকরি মানেই হচ্ছে একটা বন্দি কারাগার,যেখানে অন্যের অধীনস্থ হয়ে থাকতে হয়। কিন্তু এরই মাঝে যদি লম্বা কোন ছুটি পাওয়া যায় তাহলে তো মন আনন্দে ফুরফুরে হয়ে যায় । আসলে ভাইয়া বড়ই বাগানগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় উপরে দিয়ে চাল দেওয়া থাকে যার ধরুন বড়ই গুলো নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। আর ১৪০ টাকা কেজি ধরে বড়ই ক্রয় করা আসলে আমার মনে হচ্ছে দামটা একটু বেশি হয়েছে। আর গাছ থেকে টাটকা বড়াই পেড়ে খাওয়া মজাই আলাদা কথাটা কিন্তু সত্যি ভাইয়া। সব মিলিয়ে আপনার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত উপভোগ করেছেন বোঝাই যাচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। কমেন্টে কিছু বানান ভুল করেছেন সেগুলো অনুগ্রহপূর্বক সংশোধন করুন।
চরম লেভেলের অনুভূতি, নিজ হাতে বড়ই গাছ থেকে বড়ই খাওয়া! এই অনুভূতিটাই অন্যরকম। ফেরদৌস ভাইকে নিয়ে ভালোই সময় কাটিয়েছেন বড়ই বাগানে। ১৪০ টাকা করে হলে বড়ই দাম ঠিকই আছে মনে হয়, যদিও বড়ই এর দরদাম সম্পর্কে অবগত নয় আমি।
সাধারণত বাগান থেকে কোন ফল কিনলে সেখানে দাম কিছুটা কম রাখে। বাগান মালিক নিজে আমাদের কাছে স্বীকার করেছিলো সে দাম কিছুটা বেশি রেখেছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
বাদুর আর চামচিকা আলাদা দাদা। বাদুর গুলো সাইজে একটু বড় হয়। সত্যি কথা বলতে এইভাবে বরই বাগানে গিয়ে নিজের হাতে বরই কেনার মজাই আসলে আলাদা। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে দাম একটু বেশি নিয়েছে আমাদের এইখানের থেকে। এখানে মনে হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে কেজি বিক্রি হয়। তারপরেও আপনারা যেহেতু আনন্দ করেছেন ওখানে গিয়ে, তারপর আবার ফ্রি ফ্রি খেয়েছেন বরই, এটাই অনেক বড় ব্যাপার দাদা।
ওগুলো তাহলে আলাদা? যাক একটা জিনিস জানতে পারলাম। আমাদের দেশে ফলের দাম তুলনামূলক অনেকটা বেশি। আপনারা এদিক থেকে অনেক ভালো আছেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
হ্যাঁ দাদা, চামচিকা ছোট প্রজাতির হয় আর বাদুড় বড় প্রজাতির। তবে দেখতে একই রকমের লাগে শুধু আকারের পার্থক্য থাকে।
নারকেলি কুল বরই খেতে আসলেই খুব মজা। অনেক দিন আগে খেয়েছিলাম। তবে বাগান থেকে নিজের হাতে পেরে বরই খাওয়ার মজাই আলাদা। মনের মধ্যে অন্য রকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যদিও তুলনামূলক ভাবে বরই এর দাম অনেকটা বেশি নিয়েছে। আমার মতে ৮০-১০০ টাকা কেজি হলে পারফেক্ট ছিলো। যাইহোক বরই বাগানে গিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা। এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বড়ইগুলো খেতে আসলেই বেশ মজা ছিলো। তাছাড়া বাগান থেকে নিজ হাতে ফল করে খাওয়ার মজাটাও অনেক বড়ো ব্যাপার। এজন্য দাম কিছুটা বেশি নিলেও খুব একটা গায়ে লাগেনি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।