বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকা ম্যাচ নিয়ে আমার মতামত।
স্ক্রিনশট নেয়া হয়েছে BPC Media নামক চ্যানেল থেকে। যারা ভিডিও সংগ্রহ করেছেন BCCI Hotstar থেকে
যাইহোক তারপরও যেহেতু নিজের দেশ তাই দিনশেষে আবার সবাই টিভি সেটের সামনে বসে যায় খেলা দেখার জন্য। এদিন ম্যাচে টসে জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও প্রথমে এই সিদ্ধান্তটা আমাদের কারোরই তেমন পছন্দ হয়েছিলো না। কিন্তু পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছিলাম সাকিব বেশ হিসাব করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ব্যাটিং করতে নেমে শ্রীলংকা প্রথমেই ধাক্কা খায়। দলীয় মাত্র পাঁচ রানের মাথায় শরিফুল ইসলামের বলে কুশল পেরেরা মুশফিকুর রহিমের দারুন এক ক্যাচে পরিণত হয়। এরপরে শ্রীলংকা কিছুক্ষণ পরপরই উইকেট হারাতে থাকে। এভাবে ১৩৫ রানে যখন অদ্ভুতভাবে এঞ্জেলো ম্যাথিউস আউট হয়ে যান তখন শ্রীলংকার স্কোর দাঁড়ায় ১৩৫ রানের পাঁচ উইকেট। এঞ্জেলো ম্যাথিউস ক্রিকেট বিশ্বের প্রথম টাইম আউট হন। এজন্য তারা সাকিব আল হাসানকে দোষারোপ করলেও নিয়ম অনুযায়ী তিনি আউট হয়েছিলেন। অবশ্য সাকিব আল হাসান ইচ্ছা করলে তাকে ফেরাতে পারতেন। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে সাকিব আল হাসান সেটা করেননি। যদিও এটা করতে তিনি বাধ্য নন।
এই ঘটনার পরবর্তীতে দুই দলের প্লেয়ারদের ভেতর বারবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছিলো। বিশেষ করে শ্রীলংকান প্লেয়াররা বারবার বাংলাদেশি প্লেয়ারদের উদ্দেশ্যে নানা রকম কটু বাক্য ব্যবহার করছিলো। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আসালংকার দারুন এক সেঞ্চুরির সুবাদে শ্রীলংকা ৫০ ওভারে ২৭৯ রান করতে সমর্থ হয় সব কটি উইকেট হারিয়ে। জবাবে বাংলাদেশ দল প্রথমে দ্রুত দুটি উইকেট হারিয়ে বসে। তারপর নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে যোগ দেন সাকিব আল হাসান। প্রথমে শান্ত বেশ দেখেশুনে খেলছিলো। কিন্তু সাকিব আল হাসান প্রথম কয়েকটা বল খেলার পর থেকেই শ্রীলংকার বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলছিলো। প্রথমে তার এত তাড়াহুড়া দেখে আমরা সাধারণ দর্শকেরা কিছুটা ভুল ভেবেছিলাম। ম্যাচ শেষে অবশ্য বুঝতে পেরেছিলাম সাকিব কেন এত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলো।
মাত্র ৪১ রানের দু উইকেট হারানোর পর শাকিব এবং নাজমুল হাসান শান্ত মিলে ১৭০ রানের একটি দারুণ জুটি উপহার দেয়। যে ইনিংসের উপর ভর করে বাংলাদেশ দল জয়ের বেশ কাছাকাছি পৌঁছে যায়। অবশ্য সাকিব আল হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট দুটো পরাপর হারানোর পর বাংলাদেশ দল কিছুটা চাপে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নিচের ব্যাটসম্যানদের কল্যানে বাংলাদেশ দল ৪১ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয়। এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয় পরাজয় ছাপিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় সামনে উঠে আসে। এঞ্জেলো ম্যাথিউস টাইম আউট হওয়ার কারণে শ্রীলংকার পুরো দল বাংলাদেশের সাথে বেশ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এমনকি এঞ্জেলো ম্যাথিউস ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেও বেশ কিছু আজেবাজে কথা বলেন। এঞ্জেলো ম্যাথিউস যেভাবে আউট হয়েছেন তাতে তিনি হতাশ হতেই পারেন। কিন্তু সেটা ক্রিকেটীয় নিয়মের ভেতরেই হয়েছিলো। এখানে তার মত একজন অভিজ্ঞ প্লেয়ারেরও অনেক গাফিলতি ছিলো।
ম্যাচ পরবর্তী এনালাইসিসে আমি মাইকেল ভন এবং সায়মন ডুলের বিশ্লেষণ শুনছিলাম। তারা দুজনই বলছিল এখানে শাকিবের কোন দোষ নেই। সাকিব ইচ্ছা করলে তাকে ফেরাতে পারতো। কিন্তু সেটা নিতান্তই সাকিবের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এঞ্জেলো ম্যাথিউস আউট হয়েছিল ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী। যদিও আমি এই ধরনের আউট সমর্থন করি না। যেমন কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বোলার হাসান মাহমুদ একজন ব্যাটসম্যান কে মানকাড করেছিলো। আমি তখনও সেটার বিপক্ষে ছিলাম। তবে আসলে আপনি এই আউট গুলোর সুযোগ নেবেন কিনা সেটা নিতান্তই আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যেহেতু ক্রিকেটীয় আইনে এইগুলি আউট দেয়া রয়েছে তাই যদি কোন প্লেয়ার সেই সুযোগটা নেয় তাহলে তাকে দোষারোপ করার কিছু নেই।
তাছাড়া এঞ্জেলো ম্যাথিউস ক্যাপ্টেন থাকা অবস্থায় শ্রীলংকার বোলার জস বাটলারকে মনকাড করেছিলো। তখন কিন্তু তিনি সেই বোলারের পক্ষে সাফাই গিয়েছিলেন। আবার নিজে যখন এই ধরনের আউট হন তখন তার কাছে সেটা খারাপ লাগতে থাকে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে দেখলাম অনেকেই শ্রীলংকার সেই ম্যাচের ভিডিও বা ছবি শেয়ার করছে। যাই হোক এই ধরনের পরিস্থিতি আমাদের কারো কাছেই কাম্য নয়। আমরা চাই উপভোগ্য ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে। কিন্তু সেটা যেন কখনো দুই দলের ভেতর রেষারেষির পর্যায়ে চলে না যায়। এই জয়ের কারণে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে খেলার আশা এখনো টিকে রয়েছে। পরবর্তী ম্যাচ হওয়ার পরে বোঝা যাবে বাংলাদেশ না শ্রীলংকা কোন দল চ্যাম্পিয়ন ট্রফির জন্য কোয়ালিফাই করতে পারবে। আশা করি পরবর্তী ম্যাচগুলো দারুণ উপভোগ্য হবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমিও মনে করি এখানে সাকিবের কোনো দোষ নেই, কারণ আম্পায়াররা তো অযথা আউট ঘোষণা করেনি ম্যাথিউসকে। অবশ্যই এটা নিয়মের মধ্যেই ছিলো। তবে ম্যাথিউস যখন সাকিবের উইকেট তুলে নিল,তখন নিজের হাতের ঘড়ির টাইম দেখানোর চেষ্টা করেছিল। তবে সাকিব সেটা পাত্তা না দিয়ে, সোজা হেঁটে প্যাভিলিয়নে ফেরত যায়। তর্কে না জড়িয়ে সাকিব বুদ্ধিমানের পরিচয় দিয়েছে। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জয় পেলেও, সাকিব এবং শান্ত সেঞ্চুরি করতে পারলে আরও বেশি ভালো লাগতো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গতকাল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ম্যাথিউস এর টাইম আউট টা সবাইকে অবাক করেছে। এতো বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে এটা এই প্রথম ঘটলো। গতকাল শান্ত এবং সাকিব ব্যাটিং এ বেশ দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেছিল। আশাকরি পরের ম্যাচটাতে ভালো করে চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে কোয়ালিফাই করবে বাংলাদেশ।
আসলে গতকাল বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকা ম্যাচে অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউসের বিরুদ্ধে শাকিবের পদক্ষেপটি আইসিসির নিয়ম অনুসারে সঠিক ছিল। যাহোক বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে গতকাল জয়ের দেখা পায়। বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকা ক্রিকেট ম্যাচ সম্পর্কে আপনার মতামত গুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ক্রিকেট নিয়মের মধ্যেই আউট হয়েছে ম্যাথিউস। কিন্তু এ ধরনের আউট ঠিক কেন জানি আমার ভালো লাগে না। তবে যেহেতু নিয়মে আছে তাই ম্যাথিউসকে এ নিয়মকে সম্মান জানানো উচিৎ ছিল। তবে এ আউট নিয়ে দু'দলের মধ্যে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। তবে খেলাটা বেশ উপভোগ্য ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া লেখাটি শেয়ার করার জন্য।