পরিবারের সাথে বাইরে খাওয়া দাওয়া করা।
বেশ কয়েকদিন হল ঘরেই বন্দী হয়ে আছি। বাইরে তেমন কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি সবসময় বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা করি। ফেরদৌস ফরিদপুরের বাইরে থাকায় আমি ঘরে বসে রয়েছি আর ফেরদৌস কবে ফিরবে সেই দিন গুনছি। যদিও কয়েকদিন থেকে মনে মনে পরিকল্পনা করছি একা একাই ঘুরতে বের হতে হবে। কারণ এভাবে ঘরের ভেতর বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আর বাইরে বের হওয়া হচ্ছে না।
আবার স্বাস্থ্যগত কারণে গত বেশ কিছুদিন যাবত খাওয়া দাওয়া অনেকটা কন্ট্রোল করেছি। মূলত চেষ্টা করছি খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে ওজন কমানোর। তাই বাইরের খাবার খাওয়া প্রায় বন্ধ রয়েছে গত কয়েক দিন ধরে। কিন্তু আজ দুপুরে হঠাৎ করে আমার আর আমার স্ত্রীর বাইরের খাবার খেতে খুব ইচ্ছা করছিল। তখনো বাসায় দুপুরে রান্না হয়নি। দুজন মিলে চিন্তা করছিলাম বাইরে থেকে খেয়ে এলে মন্দ হয় না। আমরা দুজনেই বাইরের খাবার খেতে বেশ পছন্দ করি। যাইহোক কিছুক্ষণ আলোচনার পর ঠিক করলাম আজকে দুপুরে আমরা বাইরে খাবো।
আমার স্ত্রীর আবার কাচ্চি বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছিলো। সে আমার কাছে জানতে চাইলো যে ফরিদপুরে কোন দোকানের কাচ্চি সবচাইতে ভালো হবে? আমাদের শহরের মোটামুটি বেশিরভাগ জায়গা থেকে আমার বিরিয়ানি খাওয়া হয়েছে। যার ফলে আমার এ সম্বন্ধে ভালো একটা ধারণা আছে। তখন আমি চিন্তা ভাবনা করে তাকে বললাম স্টার কাবাব এন্ড রেস্টুরেন্ট নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। আমাদের শহরের ভেতরে ওদের কাচ্চি সবচাইতে ভালো। আমরা তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম এই ষ্টার কাবাব এন্ড রেস্টুরেন্ট থেকেই আজকে কাচ্চি বিরিয়ানি খাব।
তখন আমরা ঠিক করলাম দুপুরে জোহরের নামাজ পড়ে তারপর আমরা কাচ্চি খাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হবো। এর ভেতর আমার মেয়ের দুপুরে ইস্কুলে যাওয়ার কথা ছিল। তাকে বললাম আজকে আমরা বাইরে খেতে যাব। সাধারণত সে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। বাইরের খাবার তার খুবই পছন্দের। কিন্তু সে আজকে যেতে রাজি হচ্ছিল না। কারণ তার নাকি স্কুলে কি জরুরী একটা কাজ আছে। যাই হোক তারপর তাকে বুঝিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করালাম। তারপর আমি গোসল করে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। যাওয়ার আগে আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম তোমরা তৈরি হয়ে থেকো। আমি নামাজ পড়ে এসেই রওনা দেবো। কিন্তু আমি যখন নামাজ পড়ে ফিরলাম তখন দেখলাম তারা তৈরি হয়নি। অগত্যা কি আর করা? আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম তারপর সবাই তৈরি হয়ে একসাথে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
রেস্টুরেন্টটির অবস্থান আমাদের বাসা থেকে খুব একটা দূরে নয়। যার ফলে একটি অটো রিক্সায় করে আমরা অল্প সময়ে সেখানে পৌঁছে গেলাম। এই রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা এর আগেও কাচ্চি বিরিয়ানি খেয়েছি। তবে সেটা ফুড পান্ডার মাধ্যমে বাসায় নিয়ে খেয়েছি। কখনো এই রেস্টুরেন্টে বসে কাচ্চি খাওয়া হয়নি। এবারই ছিল আমাদের প্রথমে সেই রেস্টুরেন্টে বসে কাচ্চি খাওয়া। যাইহোক আমরা সেখানে পৌঁছে পছন্দমত একটি টেবিলে বসে পড়লাম। তারপর ওয়েটারকে দেখে আমাদের খাবারের অর্ডার দিলাম। আমরা মোট চারজন লোক ছিলাম। আমাদের সাথে আমার খালাতো ভাই ও ছিলো। চারজনের জন্য পর্যাপ্ত কাচ্চির অর্ডার দিয়ে আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম। সাথে অবশ্য ড্রিংস হিসেবে নিয়েছিলাম বোরহানি।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা আমাদের টেবিলের বিরিয়ানি পরিবেশন করলো। দেখেই মনে হচ্ছিল খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হবে। মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি আমার এমনিতেই অত্যন্ত পছন্দের। সেই সাথে যদি রান্নাটা হয় ভালো তাহলে খাওয়াটা একেবারে জমে যায়। অবশ্য কাচ্চি বিরিয়ানি টেবিলে পরিবেশন করার আগে তারা বোরহানি দিয়ে গিয়েছিল। বোরহানি গ্লাস সামনে পেয়ে আর চুমুক না দিয়ে বসে থাকতে পারিনি। বোরহানির গ্লাসে প্রথম চুমুক দিয়ে বুঝতে পারলাম এদের বোরহানির টেস্ট যথেষ্ট ভালো। অতঃপর টেবিলে কাচ্চি পরিবেশন করা হলে আমরা খাওয়া শুরু করলাম। খেতে বেশ ভালোই ছিল কাচ্চিটা। ভেতরে থাকা মাটন পিস গুলো চমৎকারভাবে সিদ্ধ হয়েছিল। মাংসগুলো এতটাই ভালভাবে সিদ্ধ হয়েছিল যে হাত দিয়ে ধরলেই খুলে আসছিল। তাছাড়া কাচ্চিতে মসলার পরিমাণ মোটামুটি ঠিক ছিল। যাইহোক আমরা অল্প কিছুক্ষণের ভিতরে খাওয়া শেষ করলাম। তারপর বিলমিটিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভজন রসিক বাঙালি খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে। নতুন নতুন খাবার খেতে নতুন খাবারের স্বাদ নিতে কার না ভালো লাগে। আর রেস্টুরেন্টের মজার মজার খাবার দেখলে তো নিজেকে কন্ট্রোল করার মুশকিল।। যতই ভাবি নিজেকে কন্ট্রোল করব ওজন কমাবো কিন্তু সম্ভব হয় না।।
প্রতিনিয়তই আপনি ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করে থাকেন আপনার পোস্টগুলো পড়লেই বোঝা যায় আপনারা ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তি।।
রেস্টুরেন্টে গিয়ে মজার খাবার খেয়ে সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন খুবই ভালো লাগলো।।
আহা! কত মজার খাবার কাচ্চি বিরিয়ানি আমার মেয়েদের অনেক প্রিয় তবে আমি একটু কম খেয়ে থাকি। মাঝে মাঝে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাইরে খাওয়ার মজায় আলাদা। আসলে ডায়েট করতে গেলে বাইরের খাবারটা না খাওয়াই ভালো। তবে বেশিদিন গ্যাপ গেলে ভালো লাগেনা। সবাই মিলে তো বেশ মজার করে খাওয়া দাওয়া করলেন কাচ্চি বিরিয়ানি দেখে লোভ লেগে গেছে। আমাদের কক্সবাজারে ও বেশ কয়েকটা কাচ্চি ডাইন আছে কাচ্চি বিরিয়ানি গুলো খেতে অনেক মজার হয়।
কাচ্চি বিরিয়ানি নামটি শুনলেই যেন খেতে ইচ্ছে করে। কেননা কাচ্চি বিরিয়ানির উপর আমার খুবই দুর্বলতা রয়েছে। তাই আমিও আমার পরিবারসহ মাঝে মাঝেই বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ গ্রহণ করে আসি। আপনার পরিবারসহ বাইরে খাওয়া দাওয়ার কথা শুনে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া। পরিবারসহ বাইরে খাওয়ার অনুভূতিটুকু খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া, খুবই চমৎকার একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।ষ্টার কাবাব এন্ড রেস্টুরেন্ট পরিবারসহ কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ার মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে আপনি খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ার পূর্বে বোরহানির স্বাদ গ্রহণ করাটা সত্যিই চমৎকার ছিল। কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ার মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।