শত ব্যস্ততার মাঝেও পদ্মার পাড়ে কিছু স্বস্তিময় মুহূর্ত কাটানো।
যাই হোক মার্কেটে কাজ শেষ করে আমি একটি অটো রিক্সায় উঠে বসলাম সেই নার্সারিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু অটো রিক্সা চলতে চলতে একসময় কখন নার্সারি পার হয়ে গিয়েছে আমি বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ করে তাকিয়ে দেখি নার্সারি ফেলে আরো অনেকটা দূর সামনে চলে এসেছি। যখন বিষয়টা খেয়াল করেছি তখন আমি পদ্মা নদীর পাড়ের কাছাকাছি। তাই চিন্তা করলাম এখন আর উল্টো পথে না গিয়ে আরেকটু সামনে গিয়ে নেমে যাবো। কারণ কিছুদিন পরপর নদীর পাড়ে না যেতে পারলে আমার ভালো লাগেনা। পদ্মা নদীর প্রতি কেমন যেনো একটা আবেগ তৈরি হয়ে গিয়েছে। বেশিদিন বিরতি হলে তখন নদীর পাড়ে আসার জন্য মন অস্থির হয়ে ওঠে। যাই হোক অটো রিক্সা আরেকটু সামনে এগিয়ে একটি ঘাটের কাছে আসলে আমি সেখান থেকে নেমে গেলাম। সেখানে নেমে আমি সোজা চলে গেলাম পদ্মার পাড়ে। এই জায়গাটা আমরা সবসময় পদ্মা নদীর যে অংশটাতে ঘুরতে যাই সেটা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। তবে সেখানে গিয়ে আমার জন্য যেটা ভালো হয়েছিলো সেটা হচ্ছে আমি নদীর পানির কাছাকাছি যেতে পেরেছিলাম।
এর আগের দিন পদ্মা নদী দেখতে গেলেও নদীর পানি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। তবে গতকাল পদ্মার পাড়ে পৌঁছে দেখলাম নদীতে পানির পরিমাণ আসলেই কম। অবস্থা এমন হয়েছে নদীর বেশিরভাগ অংশ আপনি হেঁটে পারি দিতে পারবেন। খেয়াল করে দেখলাম কিছু বাচ্চা নদীর সেই অগভীর অংশে খুব মজা নিয়ে খেলাধুলা করছে। প্রচণ্ড গরমের ভেতর ওদের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল আমিও নেমে যাই। নদীর পানি দেখে মনে হচ্ছিল গোসল করার জন্য একেবারে পারফেক্ট। মনে মনে পরিকল্পনা করে ফেললাম ফেরদৌস আসলেই ফেরদৌস কে সাথে নিয়ে নদীতে গোসল করতে আসবো। আমি পদ্মার পাড়ের যে অংশটাতে দাড়িয়েছিলাম সেখানে বেশ কিছু গাছপালা ছিলো। যার ফলে বাইরে প্রচন্ড গরম থাকলেও সেখানে ছায়া-ঘেরা পরিবেশে বেশ ঠান্ডা লাগছিলো। নদীর পাড়ে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে মনে হয় সবারই ভালো লাগে। যদিও আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। কারণ সেখানে বসার তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিলো না। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আমি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম।
এর ভেতরে নদীর উপর তৈরি হতে থাকা ব্রিজটা দেখে নিলাম। এই ব্রিজ তৈরি হয়ে গেলে চরের মানুষের জন্য অনেক সুবিধা হবে। তারা যে কোনো প্রয়োজনে অতি দ্রুত শহরে চলে আসতে পারবে। আবার এই ব্রিজের একটা খারাপ দিকও আছে। শুনেছি ব্রিজের কাজ শেষ হয়ে গেলে ব্রিজের পিলার গুলোর জন্য নদীর প্রবাহ বাধা প্রাপ্ত হবে। তখন এই নদীতে আরো বেশি করে চর পড়বে। হয়তো দেখা যাবে কয়েক বছরের ভেতর এখান থেকে নদী বিলীন হয়ে গেলো। পদ্মার যে ছবিগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আজ থেকে ২৫-২৬ বছর আগে নদীটা এখানে ছিলো না। অনেকদিন আগে একবার আমাদের এই অঞ্চলে প্রচন্ড নদী ভাঙ্গন হয়েছিলো। সেই ভাঙ্গনের ফলেই পদ্মা নদী শহরের অনেকটা কাছে চলে এসেছিলো। বহু মানুষজন তাদের বাড়িঘর হারিয়েছিল। আবার সেই সমস্ত জায়গায় চর জেগে উঠছে।
তবে বর্তমানে যেভাবে নদীতে চর পড়ছে তাতে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি আগামী কয়েক বছরের ভেতর নদী তার পূর্বের স্থানে ফিরে যাবে। ইতিমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার অনেকটা অংশ জেগে উঠেছে। নদীটা তার পূর্বের স্থানে ফিরে গেলে আমাদের শহরের মানুষজনের জন্য একটু সমস্যা হবে। কারণ ফরিদপুর শহরে মানুষের বিনোদনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। তাই মানুষজন বিকালে চলে আসে পদ্মা নদীর পাড়ে। নদীটা আবার দূরে চলে গেলে মানুষজনের বিনোদনের এই ব্যবস্থাটা শেষ হয়ে যাবে। তারপরেও প্রকৃতির নিয়মেই সবকিছু চলতে থাকবে। এখানে আমাদের করার তেমন কিছু নেই। তবে নদীটা না থাকলে তখন ব্রিজটা কি কাজে লাগবে আমি সেটা নিয়ে চিন্তা করছি। দেখা গেলো এই ব্রিজটাও সরকারি অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের মত পড়ে রইলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া নদীর পাড়টি দেখে বেশ লোভ হচ্ছে একটু সময় ঘুরে আসার । আসলে পদ্মা নদীতে এত সুন্দর সেটা আপনার আজকের পোস্ট না দেখলে মিস হয়ে যেত। ফেরদৌস ভাইকে নিয়ে আপনার নদীতে গোসল করার পরিকল্পনা শুনে আমার নিজেরও লোভ হচ্ছে একটু ঘুরে বেড়াতে। বেশ দারুন ছিল আপনার আজকের পদ্মা নদীর পাড়ে ভ্রমন পোস্ট পড়ে।
গতকাল অনেক ব্যস্ত সময় পার করেছেন দেখছি, তবে মাঝে মাঝে আমার ক্ষেত্রে এমন হয়। যে গন্তব্যে যাবো মাঝে মাঝে সেই গন্তব্য পার হয়ে যাই। আসলে অনেকটা কাজের চাপে থাকলে মন মানসিকতা মাঝে মাঝে ঠিক থাকে না ঠিক এমনটাই আপনার হয়েছে। বর্তমানে পানির পরিমাণ আসলেই অনেক কম কারণ যে পরিমাণ গরম পড়েছে সব পানি বাষ্প হয়ে উঠে যাচ্ছে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া নদীর পাড়ে গেলেই মনে হয় গোসল করি।নদীতে গোসল করার মজাই আলাদা।আপনি আপনার বন্ধুর সাথে গোসল করার পরিকল্পনা করেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো।নদীর পাড়ের গাছের ছায়ায় দাড়িয়ে থাকার মজাই আলাদা। সত ব্যাস্ততার মধ্যেও সুন্দর কিছু সময় উপভোগ করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া রমজান মাসে বাইরে ঘুরে বেড়ানোটা সত্যিই খুবই কষ্টকর। তবুও তো আপনি শত ব্যস্ততার মাঝেও পদ্মার পাড়ে স্বস্তির সময় কাটিয়েছেন। ভাইয়া, নদীর পাড়ের দৃশ্য সবসময় আমাকে টানে। আর নদীর পাড়ে গিয়ে সময় কাটাতে পারলে সেই সময়টা খুবই উপভোগ্য হয়। আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগে নদীর হাওয়া ও মনমুগ্ধকর পরিবেশ। যদিও বা এখন নদীগুলোর পানি শুকিয়ে গেছে, তাই নদীগুলোকে দেখতে অনেকটাই প্রাণহীন মনে হয়। তবুও নদীরপাড়ের সৌন্দর্য কিন্তু কম নয়। যাইহোক ভাইয়া, আপনার কাটানো সুন্দর সময় টুকু শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপনার সাথে পদ্মার একটা আত্মার সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। বেশিদিন গ্যাপ হয়ে গেলেই খারাপ লাগে। এটা স্বাভাবিক। নদীতে অতিরিক্ত চর পড়া মোটেই ভালো লক্ষণ না। পদ্মা আপনাদের একমাএ ঘোরাঘুরি এবং বিনোদন এর জায়গা। সত্যি এটা সরে গেলে বেশ সমস্যায় পড়তে হবে আপনাদের।
সেই কবে নদীতে গোসল করেছিলাম মনে নেই। তবে বাচ্চাদের গোসল দেখে আমারও খুব ইচ্ছ করলো নদীতে গোসল করতে। ফেরদৌস ভাই আসলে তাহলে ঝাপ দিবেন নদীতে। সেইরকমের একটা ফিলিংস পাবেন। তবে নদীতে চর জাগলে ব্রিজটা আমার মনে হয় না দরকার হবে। শেষ ব্রিজের কাজটা শেষ হয় কিনা সেটাই দেখার বিষয় থাকবে তখন
নার্সারিতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, শেষ পর্যন্ত পদ্মা নদীর পাড়ে চলে গিয়েছিলেন তাহলে। আসলে অনেক সময় আমরা ভাবি একরকম, আর হয়ে যায় আরেক রকম। তবে নদীর পাড়ে সময় কাটাতে ভীষণ ভালো লাগে। পানি দেখেই তো বুঝা যাচ্ছে একেবারে পরিষ্কার। এতো সুন্দর পানিতে গোসল করতে আসলেই খুব ভালো লাগবে। আর আমাদের শীতলক্ষ্যা নদীর পানি এতো কালো যে,পানি থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ বের হয়। নদীর পাড়ে থাকা গাছগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো ভাই। সবমিলিয়ে পোস্ট বেশ উপভোগ করলাম। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।