দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা ও ফুচকা খাওয়ার অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন ফেরদৌস ফরিদপুর থাকলে আমার দিনকাল বেশ ভালই কাটে। কারণ আমি বাড়িতে বসে থাকতে একেবারেই পছন্দ করি না। ফেরদৌস না থাকলে আমার এই অপছন্দের কাজটাই করতে হয়। তবে ফেরদৌস এলে চিত্রটা পুরোপুরি পাল্টে যায়। দুই বন্ধু মোটরসাইকেলে করে মাঝে মাঝেই এদিক ওদিকে ঘুরতে চলে যায়। অবশ্য সেটা শহর থেকে খুব বেশি দূরে না। তারপরেও বিকালের এই সময়টাতে দুজন বাইরে ঘোরাফেরা করি তাতে দুজনেরই অনেক ভালো লাগে।

IMG_20230724_105607.jpg

গত পোস্টে আমি আপনাদেরকে দুই বন্ধুর সিঙ্গারা খেতে যাওয়ার গল্প বলেছি। আজকে বলব তার পরের দিনের গল্প। প্রথম দিন ঘোরাফেরা শেষে যথারীতি দুজনে পরিকল্পনা করলাম পরের দিনও আবার ঘুরতে বের হবো। কোন দিকে যাব সেটা অবশ্য ঠিক করিনি। যাই হোক পরদিন যথারীতি সময় মতো দুইজন এক জায়গায় মিলিত হলাম। তারপর দুজন মিলে কিছুক্ষণ চিন্তা করে ঠিক করলাম আমাদের শহর থেকে কিছুটা দূরে একটি বিল মতো জায়গা রয়েছে। সেই বিলের দিকেই ঘুরতে যাবো। সেই জায়গাটা আমাদের দুজনের কাছেই বেশ পছন্দের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে আমরা একাধিকবার সেই বিলের দিকে ঘুরতে যাই। কিছুদিন আগে অবশ্য এক বন্ধুর গ্রামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে সেই বিলে কিছুটা ঘুরে এসেছিলাম। যাইহোক দুই বন্ধু সময় মত এক জায়গায় হয়ে রওনা দিলাম আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

IMG_20230714_173818.jpg

সেই জায়গাটির নাম হঠাৎ বাজার। নামটা বরাবরই আমার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগে। আমাদের জেলাতে অবশ্য এই নামে একাধিক জায়গা রয়েছে। আমি যখন চাকরি সুত্রে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়াতাম তখন সেই জায়গাগুলোতেও যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। দুই বন্ধু মোটরসাইকেল করে সেই বিলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম আর গল্প করছিলাম। গল্পের মূল বিষয় ছিল সেই বিলে একটি ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্ট নিয়ে। যেটি সেখানকার স্থানীয় ছেলেরা তৈরি করেছিলো। সেই রেস্টুরেন্টটা আমরা দু'বন্ধুরই বেশ পছন্দ করেছিলাম। আমি ফেরদৌসকে জানালাম সেই ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্টটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ বছর সেটি বিলে চলবে কিনা সেটা এখনো জানিনা। কারন আমি কয়েকদিন আগে যখন বন্ধু রুবেলের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখন ওদের বাড়ির সামনেই আমি সেই ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্টটি ভেড়ানো দেখেছিলাম। রুবেলের চাচাতো ভাইদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এ বছর সেই রেস্টুরেন্টটি চলবে কিনা সেটা এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা।

IMG_20230714_171704.jpg

যাইহোক আমরা দুই বন্ধু এরকম গল্প করতে করতে সামনের দিকে আগাতে লাগলাম। আমরা একসময় সেই বিলটা অতিক্রম করে আরো সামনে যেতে লাগলাম। আমরা যে রাস্তাটা ধরে যাচ্ছিলাম সেই রাস্তাটা আসলেই অসম্ভব সুন্দর। রাস্তার এক পাশে নিচু জায়গায় পানি জমে বিল তৈরি হয়েছে আর অপরপাশে ফসলের মাঠ। সে এক অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য। বিকেলের সোনা রাঙা রোদে ফসলের মাঠ এবং বিল দুটোই অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো। আর আমরা দু বন্ধুও গল্পে মশগুল হয়ে সামনে আগাচ্ছিলাম। এভাবে চলতে চলতে এক সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি বেশ মেঘ করেছে। আকাশে মেঘ দেখে দুজনের মোটেও খারাপ লাগেনি। বরং মনে এক ধরনের প্রশান্তি তৈরি হলো। মনে হচ্ছিল যেকোনো সময় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তাই আমি ফেরদৌস কে বললাম মোটরসাইকেল এখান থেকে ঘোরানো উচিত। কারণ সামনে আর তেমন লোকালয় নেই। ওদিকে গিয়ে বৃষ্টি শুরু হলে আমরা বিপদে পড়বো।

IMG_20230724_125244.jpgIMG_20230714_171156.jpg
তৎক্ষনাৎ মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে আমরা বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম। কিন্তু কিছুদূর আসতেই হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। অবশ্য বৃষ্টি শুরু হওয়ার সময় আমরা একটি বাজারে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেখানে তড়িঘড়ি করে একটি দোকানের সামনে মোটরসাইকেল রাখা হলো। আমরা দুজন দোকানের ছাউনির নিচে গিয়ে বসলাম আর বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করতে লাগলাম। বেশ কিছুদিন পর বৃষ্টি দেখা পাওয়াতে আমাদের সবারই ভালো লাগছিলো। সবার ভিতর এক ধরনের স্বস্তি কাজ করছিলো। হঠাৎ করে ফেরদৌস বললো কিছু খাওয়া দাওয়া করা দরকার। তখন আমি বললাম আশেপাশে দেখি কোন ভাজাপোড়ার দোকান আছে কিনা। তখন ফেরদৌস বলল ভাজাপোড়া খাবো না। চলো আমরা দুজন গিয়ে আমাদের সেই প্রিয় ফুচকার দোকান থেকে ভাঙচুর খেয়ে আসি। এই খাবারটি আমার মত ফেরদৌসেরও অনেক প্রিয়। আমি ফেরদৌসকে বললাম তাহলে বৃষ্টি কমুক তারপর আমরা রওনা দেই। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

বন্ধু ফেরদৌসকে পেলে দুজন যে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেন তা আপনার পোস্টগুলো পড়েই বুঝতে পারি।পথটা সত্যি ই খুব সুন্দর। আপনারা দুজন মিলে সেই চিরচেনা বিলের কাছে গেলেন।এরপর বৃষ্টি আসবে ভেবে আবার রওনা দিয়ে আসার সাথে সাথেই বৃষ্টি নেমে গেলো।আপনারা মোটরসাইকেলটি পাশে রেখে একটি দোকানে বসে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন।দুজন কিছু খাবেন বলে ঠিক করলেন।আসলে এমন বৃষ্টির সময় কিছু খেয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিলে বেশ ভালো লাগে। ফুচকার দোকানে ভাঙ্গচুর খাবেন বলে ঠিক করলেন। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষন ভালো লাগলো ভাইয়া। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ভাই বেশ কয়েকদিন থেকে আমাদের এদিকে বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই। তাই অসহ্য গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে গেছে। তবে আপনাদের ওদিকে যেহেতু বৃষ্টি পড়েছে সেহেতু কিছুটা হলেও গরমের তীব্রতা কম বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক, ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে আপনার বন্ধুত্ব যে কতটুকু ঘনিষ্ঠ তা অনেক আগ থেকেই জানি। আর আপনারা দুই বন্ধ মিলে একসাথে বেশ সুন্দর সময় কাটান এটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে আপনারা যে জায়গাটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন সে জায়গাটির নাম বড়ই অদ্ভুত। "হঠাৎ বাজার"নামটি খুবই আনকমন। যাইহোক ভাইয়া দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা ও ফুচকা খাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রথম পর্ব পড়ে ভালো লাগলো তাই পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

তাহলে বৃষ্টির কারনে হঠাৎ বাজারের ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্টের খাবার আর খাওয়া হলো না। সেই পুরাতন দোকানের ফুচকাই খেতে হলো। যাক ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্টের খাবার পরেও একদিন খেতে পারবেন। বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

হঠাৎ বাজার নামটা সত্যি অনেক অদ্ভুত। তবে যাই হোক দুই বন্ধু মিলে কিন্তু বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আর হঠাৎ করে বৃষ্টি নামার কারণে হয়তো ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে আরও কিছুটা সময় কাটাতে পেরেছেন এবং পছন্দের ভাঙচুর খেতে পেরেছেন। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56688.84
ETH 2388.88
USDT 1.00
SBD 2.28