বাচ্চাদের নিয়ে ফুচকা খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

rupok (80)modCommunity Moderator 🇧🇩 ✨in আমার বাংলা ব্লগ • last year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।

আজ হঠাৎ করেই সন্ধার পরে আমার মেয়ে আর ভাস্তিকে নিয়ে গিয়েছিলাম ফুচকা খাওয়ার জন্য। আমার ভাস্তির তার মায়ের সাথে থাকে। অনেকদিন পর পর আমাদের বাসায় বেড়াতে আসে। আজকে আমরা আগে থেকে জানতাম সে বেড়াতে আসবে। তবে তার আসার কথা ছিল বিকালের দিকে। আমার মেয়ে তার জন্য দুপুরের পর থেকে অপেক্ষা করছিলো। একটু পর পর বাসার বারান্দায় গিয়ে নিচে রাস্তার দিকে দেখছিল সে আসছে কিনা। এভাবে দেখতে দেখতে এক সময় সন্ধ্যা পার হয়ে গেলো। তখন আমরা আমার ভাস্তির আসার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম আজকে হয়তো সে আর আসবে না।

কিন্তু সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ করে কলিং বেলের আওয়াজ শুনতে পেলাম। বুঝতে পারলাম আমার ভাতিজী এসেছে। আমার মেয়ে তো প্রচন্ড খুশি তার চাচাতো বোনকে দেখতে পেয়ে। আসলে আমার মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই একা একা বড় হয়েছে। সেজন্য অন্য কোন বাচ্চাকে কাছে পেলে সে খুবই খুশি হয়। তাছাড়া আমার ভাতিজী যখনই আসে তখনই তারা দুই বোন বেশ ভালো সময় কাটায়। অনেকদিন পর ভাসতিকে দেখতে পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছিলো। আমরা চাচা ভাসতি কিছুক্ষণ কথা বলার পর আমার ভাসতি বলল ফুচকা খেতে যাবে।

আমি আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম বাইরে খেতে যাওয়ার জন্য। তাই আমার ভাস্তি ফুচকা খাওয়ার কথা বলার সাথে সাথে আমি আমার মেয়েকে বললাম তৈরি হয়ে নিতে। আমার মেয়ে রেডি হলে আমরা রওনা দিলাম ফুচকা খাওয়ার জন্য। আর এখন আমরা ফুচকা খাওয়ার জন্য একটা দোকানেই রেগুলার যায়। কারণ এখন আর অন্য কোন জায়গার ফুচকা আমাদের কাছে তেমন ভালো লাগেনা। কথায় কথায় জানতে পারলাম আমার ভাস্তিও সেই দোকান থেকেই ফুচকা খায়। আসলে এই দোকানটা আমাদের শহরের ভেতর এখন ফুচকা প্রেমীদের কাছে সবচাইতে জনপ্রিয় স্থানে পরিনত হয়েছে। যাই হোক আমরা বাসা থেকে বের হয়ে একটি রিক্সা নিয়ে সেই ফুচকার দোকানে উপস্থিত হলাম।

তবে ফুচকার দোকানের সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম সেখান থেকে অনেক মানুষ বের হচ্ছে। আমরা ফুচকার দোকানে গিয়ে ফুচকার অর্ডার করতে গিয়ে দেখতে পেলাম অনেকগুলি আইটেম তাদের কাছে নেই। তারা জানালো সেই আইটেম গুলি ফুরিয়ে গিয়েছে। তারপরেও যে কটা আইটেম ছিল আমরা তার ভিতর থেকেই দুই ধরনের ফুচকা অর্ডার করলাম। সাথে অর্ডার করলাম আমার ভাস্তির জন্য কোল্ড কফি আর আমার মেয়ের জন্য সেভেন আপ আর আমার জন্য জিরা পানি। অর্ডার দেয়ার পর তারা জানালো খাবার পরিবেশন করতে বেশ কিছুটা দেরি হবে। কারণ তাদের বেশিরভাগ আইটেম শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন ফুচকা বানানো জন্য যেই উপকরণগুলো দরকার তার ভিতর দু একটি তৈরি করে তারপর তারা খাবার পরিবেশন করবে।

অগত্যা কি আর করা? আমাদেরকে অপেক্ষা করতে সম্মত হতে হলো। অর্ডার দিয়ে আমরা টেবিলে বসে গল্প করছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমি রেস্টুরেন্টের লোকজনকে বললাম আগে কোল্ড কফি আর সেভেন আপ টেবিলে দিয়ে দিন। তারা কিছুক্ষণের ভেতর টেবিলে কোল্ড কপি আর সেভেন আপ দিয়ে গেলো। অবশ্য তার কিছুক্ষণের ভেতরেই টেবিলে ফুচকা চলে এলো। এদিকে ফুচকা আসার আগেই আমার ভাস্তি আর মেয়ে সেভেন আপ আর কোল্ড কফি শেষ করে ফেলেছিলো। তারপর ফুচকা কাছে পেয়ে তারা দুজন খেতে শুরু করল। তবে আমার মেয়ে ফুচকার যে আইটেমটি নিয়েছিল সেটার নাম ছিল ভাঙচুর। আমার বিভিন্ন পোস্টে আপনারা এই খাবারটির নাম আগেও শুনেছেন।

আমি খেয়াল করে দেখলাম আমার মেয়ে খুব একটা খেতে পারছে না। কারণ আমরা বাসা থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ আগে চিকেন চাপ আর নান রুটি দিয়ে নাস্তা করেছিলাম। যার ফলে তার পেট ছিল ভরা। সে কারণে সে খেতে পারছিল না। তাছাড়া খাওয়ার আগে সে এক বোতল সেভেন আপ শেষ করেছে। তারপর আবার আমার ভাস্তির কোল্ড কফি খাওয়া দেখে তারও কোল্ড কফি খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল। তার জন্য কোল্ড কফি অর্ডার করলেও সে খেতে পারেনি। কারণ তার পেটে একেবারেই জায়গা ছিল না। তবে আমার ভাস্তি ফুচকা পুরোপুরি শেষ করে ফেললো। আর কোল্ড কফি তো আগেই শেষ করেছে। তাদের ফুচকা পরিবেশন করার পর আমার জন্য জিরা পানি দিয়ে গিয়েছিলো। অবশ্য তাদের জিরা পানিটা একটু বেশি মিষ্টি হয়ে গিয়েছিল। আমি জিরা পানিতে কম মিষ্টি পছন্দ করি। তারপরে খাওয়া দাওয়া শেষ হলে আমরা বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম। আপনারা কি চিন্তা করছেন আমি বিল না দিয়েই বাড়িতে চলে এসেছি। ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই তা নয়। এই ফুচকার দোকানের সিস্টেম হচ্ছে পে ফার্স্ট। মানে আপনি যখন খাবার অর্ডার করবেন তখনই খাবারের বিল পরিশোধ করতে হবে। যার ফলে বিল দেয়ার ঝামেলা আগেই চুকিয়ে ফেলেছিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।