বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড এর ম্যাচ নিয়ে আমার বিশ্লেষণ।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকাল বাংলাদেশের সাথে ইংল্যান্ডের খেলা ছিলো। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারানোর ফলে বাংলাদেশী দর্শকদের এই ম্যাচটা নিয়ে অনেক আশা ছিলো। ওদিকে আবার ইংল্যান্ড প্রথম ম্যাচটা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাজেভাবে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলো। সব মিলিয়ে আমরা চিন্তা করেছিলাম বাংলাদেশ হয়তো ইংল্যান্ডের সাথে একটা ভালো ফাইট দেবে। সেই আশা নিয়েই ম্যাচ দেখতে বসে ছিলাম। মনে মনে খুব করে চাইছিলাম যেন বাংলাদেশ টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয়। হয়েছিলো ও তাই। প্রথমে বাংলাদেশের শুরুটাও খুব একটা খারাপ হয়েছিলো না। কারণ রান রেট মোটামুটি ছয়ের আশেপাশেই ছিলো ইংল্যান্ডের।

IMG_20231011_171128.jpg

স্ক্রিনশট নেয়া হয়েছে Ns Meethi Vani নামক চ্যানেল থেকে

যারা ইংল্যান্ডের খেলা দেখেন তারা জানেন ইংল্যান্ড এখন প্রচন্ড আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে। প্রথম থেকেই তারা প্রতিপক্ষের উপরে চড়াও হয়ে ওঠে। তবে এদিন শুরু থেকে তাদের এপ্রোচ ছিল কিছুটা রক্ষণাত্মক। রান বেশি করার থেকে উইকেট রক্ষার দিকেই তারা মনোযোগী ছিলো। অবশ্য এর ভিতর খারাপ বল পেলেই তারা সেগুলো বাউন্ডারি ছাড়া করছিলো। তবে যতই সময় গড়াচ্ছিলো ততই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছিলো। দশ ওভার যাওয়ার পরেও যখন তাদের উইকেট পড়েনি তখনই বুঝেছিলাম আজকে ইংল্যান্ড অনেক বড় একটা স্কোর করবে। যদিও ইংল্যান্ডের দুর্ধর্ষ ওপেনিং ব্যাটসম্যান জনি বেয়ার স্টো কিছুটা শান্ত মেধাজেই ছিলো। তিনি অশান্ত হয়ে ওঠার আগেই বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। কারণ অপরপ্রান্ত থেকে ডেভিড মালান দারুন খেলছিলেন। জনি বেয়ারস্টো আউট হয়ে যাওয়ার পর তাকে দারুন ভাবে সঙ্গ দিচ্ছিলেন জো রুট।


IMG_20231011_171208.jpg

স্ক্রিনশটটি নেয়া হয়েছে NBI SPORTS চ্যানেল থেকে

যদিও বাংলাদেশি বোলাররা শেষের দিকে মোটামুটি ভালোই বল করেছিলেন। একটা সময় যখন মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড ৪০০ উপরে রান করবে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশী বোলারদের দারুন বোলিং এর সুবাদে ইংল্যান্ডকে ৩৬৪ রানে আটকে রাখতে সমর্থ হয়। যদিও এই ৩৬৪ রান ছিল বাংলাদেশের জন্য পাহাড় সমান রান। উইকেট যদিও ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়ক ছিলো। তারপরেও বাংলাদেশের মতো দলের জন্য ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে এত রান চেজ করা খুবই কঠিন কাজ ছিলো। সেই কাজটাকে আরো কঠিন করে ফেলে ইংল্যান্ডের পেসার রিস টপলি। শুরুতেই বাংলাদেশের টপ অর্ডারের তিনটি উইকেট ফেলে দিয়ে তিনি বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছুড়ে ফেলেন। দ্রুত তিনটি উইকেট হারানোর পর আর কখনোই মনে হয়নি বাংলাদেশ এই ম্যাচটি জিততে পারবে। তারপরে ব্যাটসম্যানরা শুধু হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে গেছেন। এদিন অবশ্য দীর্ঘদিন পর লিটন দাসের ব্যাটে কিছুটা রান দেখা গেছে। সেই সাথে মুশফিকুর রহিম এবং তৌহিদ হৃদয় মোটামুটি ভালো খেলেছেন।


শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৮ ওভারে ২২৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। যার ফলে ইংল্যান্ড ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে নেয়। অন্য আর ১০ জন বাংলাদেশি সমর্থকের মত আমিও এদিন প্রচন্ড হতাশ হয়েছি। আমরা আশা করেছিলাম ইংল্যান্ডের সাথে জিততে না পারলেও একটা ভালো ম্যাচ দেখতে পাবো। কিন্তু এমন বাজেভাবে হার হবে এটা আমরা কখনো চিন্তা করিনি। যাই হোক পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু ম্যাচ রয়েছে। এখন সেই ম্যাচগুলোর দিকে তাকিয়ে রয়েছি। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা আমাদের জন্য একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। কারণ এই বিশ্বকাপে বেশিরভাগ ম্যাচ হবে হাই স্কোরিং ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোতে টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার এর পক্ষে ম্যাচ জেতানো মুশকিল হয়ে যাবে। এর জন্য এখন একটাই কামনা করি যত দ্রুত সম্ভব টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানেরা যেন ফর্মে ফিরে। তাছাড়া আমাদের পেইস বোলারর নতুন বলে উইকেটেও নিতে পারছে না। এটাও একটা বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে যদি ফাস্ট বোলারেরা প্রতিপক্ষ দলের দু তিনটি উইকেট তুলে নিতে পারে। তাহলে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করা সহজ হয়। এদিকেও বাংলাদেশ বোলিং কোচের একটু নজর দেয়া দরকার। দেখা যাক পরবর্তী ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম কেমন করে?

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।




🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশাল জয় পাওয়ার পর, এই ম্যাচটি নিয়ে আসলেই আশাবাদী ছিলাম যে বাংলাদেশ দারুণ ফাইটিং করবে এই ম্যাচে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না। বিশাল ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। খেলাটি দেখে সত্যিই হতাশ হয়েছি। তবে শুরুতে মোস্তাফিজুর রহমান এর বেশ কয়েকটি ডেলিভারি ভীষণ উপভোগ করেছিলাম। লিটন দাস অনেকদিন পর দারুণ ব্যাট করেছে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশ কি করে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

ভাই বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের এই ম্যাচ যখন শুরু হয়, তখন আমার ভাগ্নে কিবরিয়া কে আমি বলেছিলাম, ইংল্যান্ড মিনিমাম ৩৫০ থেকে ৪০০ করবে। আমার কথা শুনে ও হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার কথাটা ঠিক হয়েছে। আপনার মত আমারও একটা চাওয়া ছিল হেরে যাবে কিন্তু বীরের মতো হারবে। বাহিরের মাটিতে বাংলাদেশ কখনোই ভালো খেলতে পারে না। আমার মনে হয় না একটা ম্যাচও আর জিতবে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

যেহেতু ইংল্যান্ড দল অনেক বেশি রান করে ফেলেছিল তাই বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা এমনিতেই ব্যাকফুটে ছিল। তারপরে আবার বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান গুলো খুব তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায়। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের খেলা যেন এখন শুধুমাত্র মিডিল অর্ডারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছে। আর এভাবে খেলতে থাকলে জয় লাভ করাটা অনেক কঠিন হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 99357.59
ETH 3318.45
USDT 1.00
SBD 3.07