কয় বন্ধু মিলে পেয়ারা বাগান দর্শন।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমরা কয় বন্ধু সেদিন বড়ই বাগান থেকে বের হয়ে অন্য আরেকটি বাগানে গিয়েছিলাম। যখন বড়ই বাগানে বড়ই পেলাম না তখন সেখান থেকে বের হওয়ার সময় বন্ধু রাফসান বললো সামনে একটি বাগান রয়েছে। সেখানে ভালো মানের পেয়ারা পাওয়া যায়। এই কথা শুনে আমরা সবাই আগ্রহী হয়ে উঠলাম। রাফসানকে বললাম আমাদেরকে সেই বাগানে নিয়ে চল। সাথে থাকা বন্ধু রাসেল এবং ফেরদৌস ও সেই বাগানে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলো। আমি মনে করেছিলাম সেই বাগানটা হয়তো অনেক দূরে হবে। তবে পেয়ারা বাগান থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল করে মাত্র মিনিট দুয়েকের ভিতরে সেই বাগানে পৌঁছে গেলাম।

IMG_20240208_175636.jpg

IMG_20240208_175655.jpg

সেখানে পৌঁছে দেখতে পেলাম একটি খালের উপরে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সেই বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বাগানে যেতে হবে। এই ধরনের বাঁশের সাঁকো আমার কাছে একটু রিস্কি মনে হয়। তারপরেও সবার সাথে সাথে আমিও সাঁকোটি পার হয়ে গেলাম। সাঁকো পার হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি চমৎকার একটি পেয়ারা বাগান। বাগানে তখন বাগান মালিক এবং একজন কর্মচারী কাজ করছিলো। আমরা প্রথমে বাগানে ঢুকে ঘুরেফিরে পুরো বাগানটি দেখতে লাগলাম। খেয়াল করে দেখলাম সেই বাগানে পেয়ারা গাছ ছাড়াও রয়েছে লেবু গাছ, বড়ই গাছ, আর কিছু কলা গাছ। তাছাড়া সেখানে একটি ঘরে গরু এবং ভেড়াও দেখতে পেলাম। সেখানে ভেড়া দেখতে পেয়ে ভেড়ার দাম বাগান মালিকের কাছে জিজ্ঞেস করলাম। ভেড়া দেখে আমরা কয় বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করলাম একবার একটা ভেড়া কিনে পিকনিকের আয়োজন করতে হবে। আমাদের কমিউনিটির এডমিন সুমন ভাই তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে ভেড়া দিয়ে পিকনিক করেছিলো। সেই পোস্ট পড়ার পরে আমারও ইচ্ছা হয়েছে ভেড়া দিয়ে একদিন পিকনিক করতে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে বাগানটা বেশ পছন্দ হোলো। তবে খেয়াল করে দেখি যে পেয়ারাগুলো একটু বড় হয়েছে সেই পেয়ারা গুলো এক ধরনের পলিথিন দিয়ে মুড়ে রাখা হয়েছে।


IMG_20240208_175219.jpg

বাগানের মালিক কে যখন সামনে পেলাম তখন তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলাম। বাগান মালিক বলল পলিথিন দিয়ে রাখলে এই ফলের ভেতরে আমরা গাছে যে কীটনাশক স্প্রে করি সেই বিষগুলো যাবে না। তাছাড়া পোকামাকড় থেকেও সুরক্ষিত থাকবে এই পলিথিন দেয়ার কারণে। আর ফলের কালারটাও ভালো আসবে। সেই বাগানে এক ধরনের বড়ই দেখতে পেলাম যেটার নাম বল সুন্দরী। এই ধরনের অদ্ভুত নামের বড়ই এই প্রথম। দেখলাম বড়ইটা দেখতে একেবারেই গোলাকৃতি বলের মতো। এ কারণেই বোধহয় বড়ইটির এই অদ্ভুত নাম দেয়া হয়েছে। বাগান মালিক বলল এই বড়ইটা যখন পাকে তখন খেতে খুবই মিষ্টি হয়। আমরা কিছু পেয়ারা দেখে মনে করেছিলাম সেগুলো পেকে গিয়েছে। পরে বাগান মালিক গাছ থেকে কয়েকটি বড়ই পেরে আমাদের খেতে দিয়ে বললো দেখেন খেতে পারেন কিনা। পরে আমরা দেখলাম বড়ইগুলোর উপরে সুন্দর রং আসলেও নিচের দিকটা এখনো গাঢ়ো সবুজ রয়ে গিয়েছে। সেটা থেকে বুঝতে পারছিলাম বড়ই গুলো পাকেনি। যার ফলে বড়ই গুলো খেতেও ভালো লাগলো না।


IMG_20240208_175840.jpg

IMG_20240208_175833.jpg

বাগানে ঘোরাফেরা করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। এদিকে মাগরিবের আজান দিয়ে দিয়েছিল ততক্ষণে। ঘোরাফের শেষে আমি আর ফেরদৌস সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা কিছু পেয়ারা কিনে নিয়ে যাবো। তখন দুই বন্ধু মিলে সাত কেজি পেয়ারা কিনলাম বাগান থেকে। বাগানের টাটকা পেয়ারা দেখে আর লোভ সামলাতে পারিনি। আমি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছি আপনি গাছ থেকে পেড়ে যখন কোন টাটকা ফল খাবেন সেটার সাথে বাজার থেকে কিনে খাওয়া ফলের পার্থক্যটা অনেক বেশি থাকে। আমার অবশ্য ইচ্ছা ছিলো কিছু কলাও কেনার। তবে দেখলাম কলা তখনো পাকেনি। তখন আমি রাফসানকে বললাম আমরা এখন থেকেই মাঝে মাঝে এসে এখান থেকে পেয়ারা কলা এগুলো কিনে নিয়ে যাবো। রাফসানেরও দেখলাম যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে এই বাগানে আবার আসার ব্যাপারে। পরবর্তীতে কথায় কথায় বাগান মালিকের সাথে আমাদের বেশ ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গেলো। একপর্যায়ে বাগান মালিক জানতে পারল তার ছোট ভাইয়ের সাথে আমাদের প্রায় সবারই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কারন আমরা টেপা খোলায় যে দোকানে বসে চা খেতাম আর আড্ডা দিতাম। তার ছোট ভাইও সেখানে যেতো। যাই হোক সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে সেদিন দ্রুত পেয়ারা কিনে সেই বাগান থেকে আমরা চলে এলাম।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগজারিয়া

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আসলে ভাইয়া বন্ধুরা পাশে থাকলে ঘুরতে খুবই ভালো লাগে বিশেষ করে কোন কিছু দর্শন করতে তার বেশি ভালো লাগে। তবে আপনি দেখছি আপনার বন্ধুসহ আপনি পেয়ারা বাগান দর্শন করেছেন আসলে ফলের বাগান দর্শন করতে খুবই ভালো লাগে ধন্যবাদ আপনাকে পেয়ারা বাগান দর্শন করে আমাদের মাঝে বেশ কয়েকটি সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

সেদিন বরই খেতে না পারলেও দুই মিনিটের মধ্যে ই পেয়ারা বাগানে পৌঁছে গেলেন। সেখানে শুধু পেয়ারা নয়,ছিল বরই,লেবু, কলা গাছ।তবে এখানকার গাছে ও বরই পাকেনি।তবে আপনারা অনেক পেয়ারা কিনেছেন।বাগান মালিকের ভেড়া দেখে আপনার সুমন ভাইয়ার পিকনিকের কথা মনে পরে গেলো।আপনারা ও আলোচনা করলেন পিকনিক করবেন।আপনাদের সময়টা খুব ভালো ই কেটেছে তাহলে। অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

সুমন ভাই এবং আরও কয়েকজন মিলে ভেড়া কিনে দারুণ পিকনিক করেছিলো। সবাই মিলে পিকনিক করার মজাই আলাদা। যাইহোক ফল বাগানে ঘুরাঘুরি করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। দেখে দেখে অনেক কিছু কেনা যায়। এমন তাজা ফল খাওয়ার মজাই আলাদা। কাসুন্দি দিয়ে পেয়ারা মাখা খেতে দারুণ লাগে। আমি প্রায়ই কাসুন্দি এবং পেয়ারা বাসায় এনে রাখি। আসলে বরই না পাকলে খেতে তেমন ভালো লাগে না। আশা করি পরবর্তীতে এই বাগান থেকে কলা এবং বরইও কিনতে পারবেন। যাইহোক বাগানে ঘুরাঘুরি করে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 56948.01
ETH 3056.88
USDT 1.00
SBD 2.40