বন্ধুর সাথে আড্ডার ফাঁকে নদীর মাছ দেখতে মাছ বাজারে যাওয়া।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন আগে টেপাখোলা নামক স্থানে গিয়েছিলাম বাজার করতে। মূল উদ্দেশ্য ছিল বন্ধু প্রদীপের সাথে আড্ডা দিয়ে সেই সাথে বাজারটাও সেরে নেয়া। কলেজ লাইফে ওঠার পরে আমার বন্ধুবান্ধবদের একটা নতুন গ্রুপ তৈরি হয়েছিলো। তারা সকলেই ছিল ফরিদপুরের টেপাখোলা নামক এলাকার বাসিন্দা। যার ফলে কলেজ লাইফের পর থেকে আমার আড্ডা দেয়ার স্থান হয়েছিল ট্যাপাখোলা নামক এলাকাটি। সেখানে দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আসছি। যদিও এখন বেশিরভাগ বন্ধু বান্ধব জীবন ও জীবিকার তাগিদে এলাকার বাইরে চলে গিয়েছে। তারপরেও এখনো যখন ছুটিতে সবাই ফিরে আসে তখন আবার আমরা সেই এলাকাতেই আড্ডা শুরু করি।

IMG_20231113_174653.jpg

যদিও এখন ট্যাপাখোলায় যাওয়া আসার পরিমাণ আমার অনেক কমে গিয়েছে। কারণ বন্ধু-বান্ধবদের ভেতর প্রায় কেউই এলাকাতে থাকে না। এলাকাতে থাকার ভেতর শুধু দু তিনজন বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। তবে তারাও নিজেদের কাজ নিয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকে। যার ফলে তারা এলাকাতে থাকলেও তাদের সাথে তেমন একটা আড্ডা দেয়া হয় না। এদের ভেতর বন্ধু প্রদীপ কিছুটা ব্যতিক্রম। তার খুব একটা কর্মব্যস্ততা নেই। যে কারণে গেলে অন্তত তাকে পাওয়া যায় আড্ডা দেয়ার জন্য। যেহেতু আমি বেশ কয়েকদিন যাবত প্রায় ঘরেই বসে ছিলাম। তাই চিন্তা করলাম বন্ধু প্রদীপের সাথে আড্ডা দিয়ে আসি সাথে বাজারটাও করে নেয়া যাবে।


IMG_20231113_174434.jpg

তবে টেপাখোলা গেলে আমি সবসময় চেষ্টা করি সেখানকার মাছ বাজার থেকে একবার ঘুরে আসতে। যদিও সেখান থেকে আমার মাছ কেনা হয় খুবই কম। তার পরেও সেখানে বেশকিছু নদীর মাছ ওঠে সন্ধ্যার দিকে। সেই মাছ দেখতেই মূলত সেই মাছ বাজারে যাওয়া হয়। একটা সময় এই বাজারে মাছের দাম বেশ কম ছিলো। কিন্তু শহরের মানুষজন সেই বাজারে আসতে শুরু করায় সেখানকার জেলেরা মাছের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সত্যি কথা বলতে সৎ উপার্জন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে নদীর মাছ কিনে খাওয়া রীতিমতো অসম্ভব হয়ে গিয়েছে। বাজারে মাছের দাম আকাশ ছোঁয়া হলেও ক্রেতার অভাব হয় না। কারণ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রচুর দুর্নীতিবাজ মানুষ। তাদের দুর্নীতির টাকার কাছে সাধারণ মানুষ রীতিমতো অসহায়। আর এদের কারণেই বাজারে মাছের দাম আরো বেড়ে যায়।


IMG_20231113_174439.jpg

যাই হোক আমি মাছ বাজারে গিয়ে ঘুরে ফিরে বিভিন্ন মাছ দেখতে লাগলাম। এই মাসের সমস্ত বাজার আমি আগেই করে ফেলেছি। তারপরেও চিন্তা করছিলাম মাঝারি সাইজের বোয়াল মাছ পেলে একটা কিনতাম। কিন্তু সেদিন বড় সাইজের দু-একটা বোয়াল মাছ বাদে মাঝারি সাইজের কোন বোয়াল মাছ দেখতে পেলাম না। ঘুরেফিরে মাছ দেখতে দেখতে আমার মনে হোলো কিছু নদীর ছোট চিংড়ি কিনতে পারলে ভালো হতো। তবে এক মাছ বিক্রেতার কাছে দাম জিজ্ঞেস করতে সে জানালো বারোশো টাকা কেজি। এত ছোট সাইজের মাছ ১২০০ টাকা দিয়ে কিনতে মোটেও ইচ্ছা করছিল না। কারণ কয়েকদিন আগেই আমি অনেক বড় সাইজের একদম টাটকা চিংড়ি কিনেছি মাত্র ৯০০ টাকা কেজি দরে।


IMG_20231113_174357.jpg

আসলে এই সমস্ত মাছ বিক্রেতা ওজনে মাছ বিক্রি করতে চায় না। তারা ডালার উপর মাছ এমন ভাবে সাজিয়ে রাখে যেটা দেখে মনে হয় অনেক মাছ। কিন্তু আপনি যখন মাছ কিনবেন তখন দেখবেন সেখানে মাছের পরিমাণ খুবই কম। এরা কেজি দরে বিক্রি করার থেকে ভাগ হিসেবে বিক্রি করতে বেশি আগ্রহী থাকে। এজন্য কেজি দরে মাছ কিনতে চাইলে তখন মাছের উল্টাপাল্টা দাম বলে। আর নদীর এই মাছগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ার আরো একটা কারণ হচ্ছে নদী থেকে জেলেরা মাছ ধরার পরে সেটা কয়েক হাত ঘুরে এই মাছ বিক্রেতাদের কাছে আসে। এর ভেতর প্রত্যেক লেভেলের মধ্যসত্ত্বভোগিরা সেই একই মাছ থেকে মুনাফা করে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত মাছের দাম অনেক বেড়ে যায়। যাই হোক বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে মাছগুলো দেখা শেষ হলে আমি বন্ধু প্রদীপের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। তারপর প্রদীপ এলে দুজনে মিলে আবার আড্ডা দিতে লাগলাম। এভাবেই সেদিনের ট্যাপাখোলা মাছ বাজারের মাছ দেখার পর্ব শেষ হয়েছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 10 months ago 

আপনার টেপাখোলা যাওয়ার প্রথম পোস্ট টা দেখেছিলাম। বেশ ভালো লেগেছিল। একটা সময় গিয়ে সব বন্ধুবান্ধব ব‍্যস্ত হয়ে যায় এটাই নিয়ম। একটা কথা আমার কাছে দারুণ লেগেছে আসলেই সৎ উপার্জন দিয়ে এই মূহুর্তে নদীর মাছ কেনা এককথায় অসম্ভব ভাই। চিংড়ি কিনেছেন শুধু তার দামও ৯০০ টাকা কেজি। পোস্ট টা বেশ ভালো লাগল ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

আসলেই জীবন জীবিকার তাগিদে কাছের বন্ধু বান্ধবরাও দূরে চলে যায়। আর সেজন্য মাঝেমধ্যে দেখা হয় তাদের সাথে। আসলে জীবনটা এমনই। যাইহোক টেপাখোলা মাছ বাজারে গিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন। একেবারে ঠিক বলেছেন ভাই, সৎ পথে উপার্জন করে নদীর মাছ খাওয়াটা আসলেই বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এতো ছোট ছোট চিংড়ি ১২০০ টাকা কেজি কেউ কিনবে না। বড় সাইজের ফ্রেশ চিংড়ি মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি পাওয়া যায়। যাইহোক মাছ বাজারে ঘুরে এবং আপনার বন্ধুর সাথে আড্ডা দিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

কর্মব্যস্ত জীবন শুরু হয়ে গেলে তখন কোন বন্ধুকেই আর সব সময় কাছে পাওয়া যায় না।তবে যে খুব কাছাকাছি থাকে আর কিছুটা ব্যস্ত কম থাকে তাকে নিয়েই সময়টাকে উপভোগ করা যায়। গল্প ও হলো মাছ ও দেখা হলো।নদীর মাছগুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে খেতেও ভীষণ মজার হয়। তবে এতো দাম মাছের, এই নদীর মাছ আসলে সব সময় কেনার মতো সম্ভব হয়ে উঠে না।আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। এমন সাজানো মাছ দেখলে আসলে আমারই কেনার জন্য ইচ্ছে হয়।কিন্তু দাম যা বললেন এতো দাম দিয়ে আসলে কেনা সম্ভব নয়।মাছ দেখা আর বন্ধুর সাথে গল্প করে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আশাকরি।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

সত্যি বলতে ভাইয়া বন্ধুত্ব মানেই হচ্ছে আরেকটি অনন্য পরিবার। যে পরিবারের মধ্যে অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ না হলেও যাতে কোন মলিনতা আসে না। আর বন্ধুত্ব নামক শব্দটা সত্যিই অক্ষয়। আর নদীর মাছ সচরাচর অত্যন্ত সুস্বাদু হয় যদি সেটা খাঁটি নদীর মাছ হয়। আর বর্তমান যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি তাতে খেটে খাওয়া মানুষদের মাছের বাজার করা সত্যিই অসাধ্যকর বিষয় হয়ে গেছে সে তো নদীর মাছ হলে কোন কথাই নেই। কেননা বর্তমান সাধু লোকের মাঝেই অসাধু লোক লুকায়িত আর যাদের উৎপাতে সাধারণ মানুষ সবখানেই হয়ে উঠেছে অতিষ্ঠ। আপনার মাছের ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ডালার উপরে এমন ভাবে সাজিয়ে রাখে দেখলে মনে হয় অনেক মাছ আর কেজি দরে কিনতে চাইলে এমন দাম হাকায় যে নাগালের বাইরে চলে যায় সাধারণ মানুষের। দূর্নীতি বাজদের তো টাকার অভাব নেই তাই তাদের পছন্দ হলে দাম না করেই কিনে ফেলে।আর সাধারণ মানুষের উপরে এর প্রভাব পড়ে।তবে সব গুলো মাছ খুব সুন্দর। ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54276.23
ETH 2281.40
USDT 1.00
SBD 2.35