জীবনে প্রথম ক্যাম্পিং করার অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব)।

শেষ পর্যন্ত যখন আমাদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছলাম তখন সমস্ত দ্বিধা দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে আমরা তাবু সেট করার দিকে মনোযোগ দিলাম। অল্প কয়েক মিনিটের ভেতরেই আমি তাবু সেট করে ফেললাম। তাবু সেট করার পর তিন বন্ধু তাবুর ভিতরে বসে চিন্তা করছিলাম এখন কি করা যায়? কারণ সামনে দীর্ঘ রাত পড়ে রয়েছে। তখন বুঝতে পারলাম আসলে দুই তিনজনে এইভাবে ক্যাম্পিং করে খুব একটা মজা হবে না। আমাদের উচিত ছিল আরো বড় করে আয়োজন করা। একসময় আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম আরো একটি তাবু কেনার জন্য। যাতে দুটি তাঁবুতে অন্তত ছয় জন বন্ধু মিলে ক্যাম্পিং করা যায়। যাই হোক যেহেতু সেটা আর হয়নি এখন আর সেটা নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। তখন আমরা তিন বন্ধু মিলে আলাপ করতে লাগলাম এখন আমরা সময়টা কিভাবে কাটাবো? তিনজনের সেখানে থাকতে খুব একটা ভালো লাগছিল না। তারপর আমাদের মনে পড়ল সন্ধ্যা থেকে আমাদের সাথে রাফসানদের এক ছোট ভাই ছিলো। সে ক্যাম্পিং করার ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিলো। তবে ছেলেটা অতিরিক্ত কথা বলার কারণে আমরা সবাই ওর উপর কিছুটা বিরক্ত ছিলাম।

আমরা যেখানে ক্যাম্পিং করছিলাম সেখান থেকে ছেলেটার বাড়ি মোটামুটি কাছাকাছি ছিলো। তাই আমরা চিন্তা করলাম যেহেতু ছেলেটা কাছাকাছি রয়েছে আর তার ক্যাম্পিংয়ের প্রতি বেশ আগ্রহ ছিলো। তাই ছেলেটাকে খবর দিয়ে দেখি সে আসে কিনা। সে আসলে তখন আমাদের সময়টা হয়তো কিছুটা ভালো কাটতে পারে। কিন্তু সমস্যা হোলো ছেলেটার নাম্বার আমাদের কারো কাছেই ছিল না। তখন আমরা বন্ধু রাফসানের সাথে যোগাযোগ করে ছেলেটার নাম্বার জোগাড় করলাম। ওর নাম ছিল জোবায়ের। পরিকল্প মোতাবেক ছেলেটাকে ফোন দেয়া হোলো। ফোন দিয়ে তাকে আমাদের তাবুর কাছে আসতে বলা হোলো। আমাদের কাছ থেকে ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে সে খুবই খুশি হোলো। কিছুক্ষণের ভিতর দেখলাম জোবায়ের আমাদের তাবুর কাছে এসে পৌঁছেছে। তখন সে এসে জিজ্ঞেস করলো ভাই আপনাদের আয়োজন কোথায়? শুনেছিলাম রাতে বারবিকিউ করা হবে। তখন তাকে বললাম কিছু সমস্যার কারণে আমরা সেই পরিকল্পনাটা বাতিল করেছিলাম। তখন সে বলতে লাগলো এই ধরনের ক্যাম্পিংয়ে ক্যাম্প ফায়ার আর বারবিকিউ না হলে কি মজা হয় নাকি? আমরা ছেলেটার সাথে সম্মতি প্রকাশ করলাম। তখন ওকে বললাম আসলে আমাদের পরিকল্পনা ছিলো সবকিছুই করার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কিছু সমস্যার কারণে আর সেগুলো করা হয়নি। তাছাড়া রাফসান বারবিকিউ এবং ক্যাম্প ফায়ার করার ব্যাপারে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করেছিলো। সেই কারণে আমরা আর সেগুলোর করার চেষ্টা করিনি।

ছেলেটা তখন বলতে লাগল তাহলে আপনারা এত বড় রাত কাটাবেন কিভাবে? আমরা তখন বললাম তুমি যদি ব্যবস্থা করতে পারো তাহলে আমাদের টাকা দিতে কোন সমস্যা নেই। ছেলেটা তখন বলল তাহলে আমার সাথে মোটরসাইকেল নিয়ে একজন চলেন। আমি সবকিছুর ব্যবস্থা করছি। আমরা চিন্তা করলাম বেকার বসে থাকার থেকে কোন কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সময়টা ভালো কাটবে। কিছু টাকা গেলে যাক। বারবিকিউ এর ব্যবস্থা করতে পারলে কিছুটা সময় বেশ আনন্দে কাটানো যাবে। তখন আমরা ফেরদৌসকে ছেলেটার সাথে পাঠিয়ে দিলাম মুরগি এবং আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র জোগাড় করার জন্য। আর এদিকে আমি আর বন্ধু রাসেল তাবুতেই রয়ে গেলাম। দুজনে কিছুক্ষণ পর তাবু থেকে বের হয়ে আশেপাশে হাঁটাহাঁটি করছিলাম। এর ভিতরে দেখতে পেলাম দূর থেকে একটি লাইট আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আমি প্রথমে মনে করেছিলাম ফেরদৌস মনে হয় ছেলেটাকে নিয়ে ফিরে আসছে। কিন্তু লাইটটা যখন আমাদের কাছাকাছি এলো তখন দেখলাম এটি মোটরসাইকেলের লাইট না। তার মানে ফেরদৌস ফিরে আসেনি অন্য কেউ আসছে। এত রাতে এই নির্জন স্থানে কারা আসছে সেটা চিন্তা করে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩

@rupok