পরিবার নিয়ে বাইরে ঘোরাফেরা (তৃতীয় পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


সুইচগেট থেকে পদ্মার পাড়ে পৌঁছতে আমাদের বেশি সময় লাগলো না। সেখানে পৌঁছে দেখি মানুষজনের বেশ ভিড়। আমি মনে করেছিলাম এখন হয়তো পদ্মার পাড়ে লোকজন কম থাকবে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে আমার ভুল ভাঙলো। পদ্মার পাড়ে পৌঁছতে পৌঁছতে আসরের আযান দিয়েছিলো। তাই সেখানে পৌঁছে আমি আমার স্ত্রী এবং মেয়েকে একটি জায়গায় বসিয়ে রেখে মসজিদে গেলাম নামাজ পড়তে। নামাজ পড়া শেষ হলে তাদেরকে নিয়ে নদির পাড়ের উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলাম।

IMG_20230710_174805.jpg

আমরা সুইচগেট থেকে আসার সময় পেয়ারা মাখা নিয়ে এসেছিলাম। আমরা পদ্মার পাড়ে পৌঁছে একটি ট্রলারের উপর বসে সেই পেয়ারা মাখা খেতে লাগলাম। এদিকে আমার মেয়ে বারবার জিদ করছিলো সে নৌকায় চড়বে। কিন্তু ভরা পদ্মার বুকে বাচ্চাকে নিয়ে নৌকায় উঠতে আমার একেবারেই মন টান ছিল না। সে কারণে আমি মেয়ের আবদারে কান দিলাম না। যখন সে বুঝতে পারল এখন আর নৌকায় চড়তে চেয়ে লাভ নেই। তখন সে দূরে একটি রাইড দেখিয়ে আমাকে বলল সে ওটাতে চড়বে। তখন তাকে আমি বললাম এই রাইডে আমি উঠবো না। তুমি ইচ্ছা করলে একা উঠতে পারো। তার মাও সেই রাইডে উঠতে রাজি হলো না।

IMG_20230710_180423.jpg

রাইডটি হচ্ছে একটি বড় নৌকার মতো। যেটি অনেক জোরে জোরে দোল খেতে থাকে। এই রাইডটা দেখলে আমার ভয় করে মনে হয় যে কোন সময় নৌকাটি ভেঙে পড়ে যাবে। যাই হোক আমরা পেয়ারা খাওয়া শেষ হলে নৌকার থেকে উঠে পাড়ের দিকে আসতে লাগলাম। পারে উঠে দেখি সেখানে একজন আইস গোলা বিক্রি করছে। আমরা চিন্তা করলাম এই গরমের ভেতরে আইস গোলা খেতে খারাপ লাগবে না। আমার মেয়েকে যখন জিজ্ঞেস করলাম তুমি খাবে কিনা? তখন সে বলল সে খাবেনা। তাই আমরা দুটো আইস গোলার অর্ডার দিলাম। তবে সত্যি কথা বলতে কি আইস গোলার স্বাদ আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনি। যাইহোক আইস গোলা খাওয়া শেষ হলে আমরা মেয়েকে একটি রাইডে চড়ালাম।

IMG_20230710_180720.jpg

তারপর তার রাইডে চড়া শেষ হলে আমরা সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। আম।দের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলাম সেই নতুন রেস্টুরেন্টে বসে কিছুটা সময় কাটাবো। তবে আমরা পদ্মার পাড়ে পৌঁছে খেয়াল করে দেখেছি রেস্টুরেন্টে এখন অনেক মানুষের ভিড়। এখন আর সেখানে গিয়ে নিরিবিলি বসে থাকা যাবে না। সেই কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সন্ধ্যার কিছুটা আগে আমরা সেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসবো। এই চিন্তা করে আমরা সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। উদ্দেশ্য ছিল সামনে কোন একটা বেঞ্চ পেলে সেখানে বসে কিছুক্ষণ রেস্ট নেবো। হাঁটতে হাঁটতে বেশ কিছুটা সামনে আগানোর পর আমরা একটি ফাঁকা বেঞ্চ পেয়ে গেলাম। এই বেঞ্চ গুলো পদ্মার পাড়ে তৈরি করা হয়েছিল দর্শনাথির বসার উদ্দেশ্যে। যদিও এখন বেশিরভাগ বেঞ্চ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

IMG_20230710_180717.jpg

যাই হোক সেখানে দেখতে পেলাম পাশেই এক কুলফি আইসক্রিমওয়ালা কুলফি আইসক্রিম বিক্রি করছে। আমার স্ত্রী আবার কুলফি আইসক্রিম খেতে পছন্দ করে। এবারও বরাবরের মত মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম সে গ্রুপে আইসক্রিম খেতে অস্বীকৃতি জানালো। তারপর আমরা দুটো কুলফি আইসক্রিমের অর্ডার দিয়ে দুজনে খেতে লাগলাম। আইসক্রিমটা মোটামুটি ভালই ছিলো। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে আমি যখন আইসক্রিম খাচ্ছিলাম তখন একটি কুকুর আমার আশপাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। আমি হঠাৎ করে একটু আইসক্রিম নিচে ফেলতে কুকুরটি দৌড়ে এসে সেই আইসক্রিম খেতে লাগলো। কুকুর যে আইসক্রিম খায় এটা আমার আগে জানা ছিল না। কুকুরের আইসক্রিম খাওয়া দেখে আমি খুবই অবাক হলাম।

IMG_20230710_180716.jpg

যাই হোক আইসক্রিম খাওয়া শেষ হলে আমরা পদ্মার পাড়ে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে লাগলাম। পদ্মার পাড়ে তখন হালকা বাতাস বইছিল। যার ফলে সেখানে বসে আমাদের গল্প করতে বেশ ভালই লাগছিল। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বসে আড্ডা দেয়ার পর খেয়াল করে দেখলাম প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম চলো এখন গিয়ে দেখি সে রেস্টুরেন্টের কি অবস্থা? যদি সেখানে ভিড় কম থাকে তাহলে গিয়ে বসা যাবে। চলবে

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানপদ্মার পাড়

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

বাপরে এই ভরা বর্ষায় নৌকায় চড়তে কিন্তু আমার ও বিষণ ভয় করে। তবে কি বচ্চারা তো আবদার করবেই । তাই বলে বাচ্চাদের সব আবদারে কান দিতে নেই। তবে বেশ মজা করে করেই পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বেশ ভালোই লেগেছে প্রকৃতির এতো সুন্দর ফটোগ্রাফি।

 last year 

আগের পর্ব গুলো যদিও আমার পড়া হয়নি, তবে এই পর্বটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরাঘুরি না করাই ভালো। পরিবার নিয়ে নদীর পাড়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন ভাই। এই গরমে কুকুরেরও ইচ্ছে হয়েছিল আইসক্রিম খাওয়ার জন্য 🤣। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 88605.96
ETH 3374.52
USDT 1.00
SBD 2.92