হঠাৎ করে পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন আগেই পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে। অবশ্য সেই সাথে টুকটাক কেনাকাটাও করা হয়েছিলো। সমস্যা হচ্ছে আমি এবং আমার পরিবারের সকলেই বাইরের খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে। এই কারণে ২/৪ দিন পর পর আমাদের বাইরে যেতে ইচ্ছা করে। তবে ইচ্ছা করলেই তো আর সব সময় যাওয়া সম্ভব হয় না। তার পরেও আমি চেষ্টা করি প্রতি মাসে অন্তত দুবার বাইরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে। অবশ্য সব মাসে সেটা সম্ভব হয় না। এই মাসের শুরু থেকেই প্রচন্ড গরম পড়ছিলো। কিন্তু গত দু-তিন দিন হল আবহাওয়া অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। সব সময় আকাশ মেঘলা থাকছে। আর মাঝে মাঝেই হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই ধরনের আবহাওয়ায় আমার সব সময় ভালো মন্দ খেতে ইচ্ছা করে।

IMG_20230920_141716.jpg

তাই গতকালকে চিন্তা করছিলাম বাইরে থেকে খাওয়া-দাওয়া করতে পারলে মন্দ হতো না। আমার স্ত্রীকে কথাটা বলার সাথে সাথে সে খুশি হয়ে গেলো। আমরা সাধারণত দুপুরেই বাইরে খাওয়া দাওয়া করি। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করতে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দুপুরে বাইরে খেতে গেলে আর বাসায় রান্নাবান্না করতে হয় না। আমার স্ত্রী রান্না বান্নার ঝামেলা থেকে বেঁচে যায়। আর রান্নাবান্না থেকে তাকে ছুটি দিলে, সে সবচাইতে বেশি খুশি হয়। এই কারণে আমি সবসময় চেষ্টা করি রেস্টুরেন্টের খাওয়া দাওয়ার পর্বটা দুপুরের দিকে করতে। যাতে করে সে একটা দিন একটু রিলাক্স থাকতে পারে। যাইহোক গতকালকে তাকে রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়ার পরে আর আমি তেমন কিছু বলিনি।


IMG_20230920_135045.jpg

আজকে সকালে এসে সে আমার কাছে জিজ্ঞেস করছিল সত্যি সত্যি বাইরে খেতে যাবো কিনা? আমি কিছুক্ষণ এই ব্যাপারটা নিয়ে তার সাথে মজা করলাম। তারপর বললাম আজকে দুপুরে আমরা বাইরে খাবো। অবশ্য বাইরে খাবারের বিল দেওয়ার সময় সে মাঝে মাঝে আমার সাথে বিল শেয়ার করে। তো বাইরে খেতে যাওয়ার কথা বলাতে সে বলল মেয়ের জন্য সে টুকিটাকি কিছু জিনিসপত্র কিনবে। তখন আমি তাকে বললাম তাহলে এক কাজ করা যায়। আমরা সাড়ে বারোটার দিকে বাসা থেকে বের হই। তারপর কেনাকাটা শেষ করে রেস্টুরেন্টে গিয়ে তোমাদের বসিয়ে আমি নামাজ পড়ে আসবো। আমি নামাজ পড়ে ফিরতে ফিরতে রেস্টুরেন্টের খাবার রেডি হয়ে যাবে। পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা ঠিক সাড়ে বারোটার দিক বাসা থেকে বের হলাম মার্কেটের উদ্দেশ্যে। মার্কেটে পৌঁছে প্রথমে মেয়ের জন্য টুকিটাকি কিছু জামা কাপড় কেনাকাটা করা হলো। জামা কাপড় কেনা হলে তারপর আমরা মার্কেটের দোতালায় গেলাম মেয়ের জন্য একটা ঘড়ি কিনতে। দুটি দোকান ঘুরে আমরা একটি দোকান থেকে মেয়ের জন্য ঘড়িটি কিনে ফেললাম। ঘড়ি কেনা হলে আমরা সবাই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


IMG_20230920_135051.jpg

যে রেস্টুরেন্টে আমরা যাওয়ার কথা ঠিক করেছিলাম সেটার অবস্থান ছিলো নিউমার্কেটের একেবারে কাছাকাছি। নিউ মার্কেট থেকে সেখানে হেঁটে যেতে চার পাঁচ মিনিট মতো সময় লাগে। সেখানে পৌঁছে আমি দ্রুত খাবার অর্ডার করলাম। ততক্ষণে দেখি প্রায় ১:২২ বেজে গিয়েছে। তাই আমি দ্রুত খাবারের অর্ডার দিয়ে ওদেরকে বসিয়ে চলে গেলাম কাছের একটি মসজিদে নামাজ পড়তে। নামাজ পড়ে এসে দেখি তখনো খাবার পরিবেশন করেনি। অথচ খাবার যখন অর্ডার করেছিলাম তখন ওয়েটার জানিয়েছিল খাবার পরিবেশন করতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগবে। এদিকে সকলেরই ক্ষুধা লেগে গিয়েছিলো।


IMG_20230920_135709.jpg

যাইহোক আমি ওয়েটারকে একটু তাড়া দিতে সে জানালো খাবার প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে অল্পক্ষণের ভেতরেই আমরা পরিবেশন করছি। এই কথা বলার কয়েক মিনিটের ভেতরেই টেবিলে খাবার দিয়ে গেলো। খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছিল খেতে বেশ ভালই হবে। তবে আমার কাছে পরিমাণ কিছুটা কম মনে হয়েছিলো। আমরা অর্ডার করেছিলাম চাইনিজ সেট মেনু। সেখানে ছিল ফ্রাইড রাইস, চিকেন মাসালা কারি, চাইনিজ ভেজিটেবল, চিকেন কাটলেট আর সাথে ছোট্ট এক গ্লাস ড্রিংকস। খাবার মুখে দিতেই বুঝতে পারলাম ধারণাটা সঠিক ছিলো। খাবারগুলো খেতে বেশ ভালই ছিলো। তবে খাবার খাওয়ার পর বুঝতে পারলাম পরিমাণে আসলেই কম ছিল খাবারটা। যাই হোক খাবার শেষ হলে আর সময় নষ্ট না করে বিল দিয়ে দ্রুত রেস্টুরেন্ট থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

আপনি মাসে অন্তত দুবার করে বাইরে খেতে যান ভাইয়া পরিবার নিয়ে।আপনার পরিবারের সবাই বাইরে খেতে পছন্দ করে এজন্য।আর দুপুরে খেতে গেলে ভাবিও রান্নার ঝামেলা থেকে বেঁচে যায়।এটা শুনে ভালো লাগলো যে,বিল ভাবিও শেয়ার করে থাকেন।শপিং সেরে আপনারা রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে পছন্দের খাবার খেলেন।সব মিলিয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

রান্না বান্না করা সত্যিই অনেক ঝামেলার কাজ। তাইতো বাহিরে খেতে গেলে সেই ঝামেলা আর পোহাতে হয় না। একদিকে খাওয়া-দাওয়া হয় অন্যদিকে আপু অনেক খুশি হয়ে যায়। আর একটি সংসার সুখের হয় তখনই যখন দুজনের বোঝাপড়া ভালো হয়। আপনি যেমন আপুকে একটু রিলাক্স দেওয়ার চেষ্টা করেন তেমনি আপুও নিজের সাধ্যমত বিল শেয়ার করার চেষ্টা করে। সত্যি ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। খাবারের পরিমাণ কম হলেও খাবারটা মজার ছিল জেনে ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59493.68
ETH 2649.33
USDT 1.00
SBD 2.45