বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত দেশ।
গত কয়েকদিন ধরে সংবাদ মাধ্যমে এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে যে খবরটা ভেসে বেড়াচ্ছিল শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি প্রমাণিত হলো। আজকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন দেশের অন্যতম বড় একটা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আগামীকাল থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জ্বালানির অভাবে। অথচ মাত্র ২৪ ঘন্টা আগেও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক ব্যক্তি বলেছিলেন আগামী কয়েক দিনের ভেতরেই লোডশেডিং আর থাকবে না। ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ঠিক এই ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভিতরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এই সত্যটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে বাংলাদেশ সত্যিই বড় একটা ক্রাইসিস মোকাবেলা করতে যাচ্ছে।
অবশ্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থার এই বিপর্যয়ের কারণে আমি মোটেই অবাক হইনি। কারণ এটা আজ না হোক কাল হওয়ার কথা ছিলো। গত দশ বার বছরে দেশ থেকে সবচাইতে বেশি টাকা পাচার হয়েছে এই বিদ্যুৎ সেক্টরের মাধ্যমে। রীতিমতো হরিলুট চলেছে। লুটপাট যারা চালিয়েছে তারা দেশের বাইরে রাজার হালে রয়েছে। সমস্যা শুধু আমাদের মতো সাধারণ মানুষের। একদিকে প্রচন্ড তাপদাহে জীবন যায় যায় অবস্থা অন্যদিকে এই ভয়াবহ লোডশেডিং। আগামীকাল থেকে জীবন কিভাবে চলবে সেটাই চিন্তা করছি। এখন সৃষ্টিকর্তার দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সৃষ্টিকর্তা যদি দয়া করে আবহাওয়া ভালো করে দেন তাহলে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। না হলে আগামীকাল থেকে পুরো দেশের মানুষ ভয়াবহ অবস্থার ভেতর দিয়ে যাবে।
একটা সময় ছিল দেশের মানুষ জন বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেটার বিল সময় মত পরিশোধ করত না। অনেকেরই বিল বকেয়া থাকতো। কিন্তু এখন ক্ষুদ্র গ্রাহক পর্যায়ে সেটা নেই বললেই চলে। তবে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হয়তো ব্যাপারটা এমন না। তাছাড়া সরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছেও বিদ্যুৎ বিভাগ অনেক টাকা পায়। আজকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানালো বৈশ্বিক সমস্যার কারণে বাংলাদেশ সরকার কয়লা আমদানির জন্য ডলারের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এখন অল্প কিছু ডলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ডলারের ব্যবস্থা হলেও চীন থেকে কয়লা এসে বাংলাদেশে পৌঁছাতে প্রায় ২৫ দিন মতো সময় লাগবে। এর অর্থ হচ্ছে আগামী ২৫ দিন আমাদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে।
অনেকে বলতে পারেন বিদ্যুৎ না থাকলে এমন কি আর হবে? আমরা যারা শহরে থাকি বিদ্যুৎ তাদের কাছে একটি মৌলিক চাহিদার মতো। বিদ্যুৎ ছাড়া এখন একটা মুহূর্ত আমরা আমাদের জীবন চিন্তা করতে পারি না। বিদ্যুৎ না থাকলে শহুরে জীবনের সবকিছু স্থবির হয়ে যায়। আগামীকাল থেকে বাংলাদেশে সেটাই হবে। মানুষের জীবনের ভয়াবহ অবস্থা তো হবেই। সেই সাথে কলকারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। দেশ আরো গভীর সংকটের দিকে এগিয়ে যাবে। অথচ সময় মত পদক্ষেপ নিলে আজকে এই অবস্থাটা এড়ানো যেতো। কিন্তু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করার মত লোকের বড় সরকারে।
দুদিন আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। যেখানে দেশ বিদ্যুতের এমন ভয়াবহ সংকটের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে সরকার এবার সোলার প্যানেলের উপরে বাড়তি ট্যাক্স বসিয়েছে। মানুষ কতটা অবিবেচক হলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারি আমি সেটাই চিন্তা করছি। সরকারের উচিত ছিল সোলার প্রযুক্তির সবকিছু ট্যাক্স ফ্রি করে দেয়া। আর মানুষজনকে বেশি বেশি সৌরশক্তি ব্যবহারে উৎসাহী করে তোলা। সেটা না করে উল্টো সোলার প্যানেলের উপর ট্যাক্স বাড়ানো। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে সরকারের মনোভাবকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যাই যাই হোক দিনশেষে আমাদের মত সাধারন মানুষজনের এত বেশি হিসাব নিকাশ করে লাভ নেই। শুধু চিন্তা একটাই মাথা তে কাজ করছে সেটা হচ্ছে এই বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান কত দিনে হবে? যদিও দ্রুত কোন সমাধান হওয়ার সুযোগ দেখছি না। তবে এই ভয়াবহ আবহাওয়ায় যদি এক মাস মানুষজনকে প্রায় বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হয়। তাহলে দেশের মানুষের জন্য আসলেই অনেক খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে বলতে হবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন টেলিভিশনে খবর শুনলাম যে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন আমার মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। আসলে এমনটা আমাদের কারো প্রত্যাশা ছিল না। বর্তমানে বিদ্যুতের যে বিপর্যয় ঘটেছে সেটার সমাধান দ্রুত হওয়ার কোন সম্ভাবনা আদৌ দেখা যাচ্ছে না। এরকম ভয়াবহ গরম আবহাওয়ার মাঝে বিদ্যুতের বিপর্যয় সত্যিই মেনে নেওয়াটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন।