নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রাম সফল করা দ্বিতীয় পর্ব
আমরা রওনা দিয়েছিলাম দুটি মোটরসাইকেল এবং একটি ভ্যানে করে। কারণ ক্যাম্পিং করার সমস্ত সরঞ্জাম একটি ভ্যানে উঠিয়ে নিয়েছিলাম আমাদের কেনাকাটা করা আর কেমনে সরঞ্জাম মিলে অনেক জিনিসপত্র হয়েছিলো। দুটি মোটরসাইকেলে ফেরদৌস আর রাফসানের সাথে ছিলো আরো দুজন। আর ভ্যানে ছিলাম আমি রাসেল আর রাজু নামের সেই ছেলেটি। তবে কিছুদূর আগানোর পর হঠাৎ করে মনে পড়লো আমরা বারবিকিউ করার জন্য নেট এবং কয়লা কিনিনি। তখন ফেরদৌসকে বললাম সেগুলো কিনে আনতে। ফেরদৌস মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে চলে গেলো নেট এবং কয়লা কিনতে। আমি আর রাসেল ভ্যান নিয়ে নদীর পাড়ের দিকে আগাতে লাগলাম। কিছুদূর আগানোর পর খেয়াল করে দেখি রাফসানের মোটরসাইকেল আর আমাদের সাথে নেই। কোন ফাঁকে যেন সে অন্য দিকে চলে গিয়েছে।
এর ভেতর আমরা নদীর পাড়ে গিয়ে ওদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এদিকে দেখি সন্ধ্যা হয়ে আসছে। তখন মেজাজটা চরম খারাপ হোলো। অবশ্য ইতিমধ্যে ফেরদৌস নেট এবং কয়লা কিনে সেখানে চলে এসেছিলো। কিছুক্ষণ পরে জানতে পারলাম রাফান হঠাৎ করে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছে কোনো একটা জিনিস সেখানে পৌঁছে দিতে। কিন্তু সেটা আমাদের কাউকেই বলেনি। পরে আমরা রাফসানকে ফোন দিয়ে দিলে সে জানালো সে ১০-১৫ মিনিটের ভেতর চলে আসছে। তবে যতক্ষণে সে এসে পৌঁছালো ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আমরা নদীর পাড়ে বসে নিজেরা আলোচনা করছিলাম রাফসান এসে নিশ্চয়ই এটা বলবে যে নদীর ওপারে গিয়ে আর কাজ নেই। এবারের ক্যাম্পিংটা এপারেই সেরে ফেলি। এই কথা বলে এপারে ক্যাম্পিং করার পক্ষে নানারকম যুক্তি দাড় করাবে। শেষ পর্যন্ত হোলোও তাই। রাফসান সেখানে এসে আমাদেরকে বোঝাতে লাগলো ওপারে ক্যাম্পিং করার নানা সমস্যার কথা। অবশ্য আমরা তাতে মোটেও কনভিন্স হলাম না। ওকে বেশ কিছুক্ষণ ইচ্ছামত গালাগাল করলাম।
কিন্তু যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে তাই আমাদেরও আর ওপারে গিয়ে ক্যাম্পিং করার খুব একটা ইচ্ছা ছিলো না। কারণ অন্ধকারের ভেতরে অজানা একটি জায়গায় গিয়ে কোথায় ক্যাম্পিং করবো কোথায় খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করবো সেটা নিয়ে একটা ঝামেলা হতে পারে। পরবর্তীতে সবার সম্মতিতে আমরা প্রথমবার যেখানে ক্যাম্পিংয়ের জন্য তাবু ফেলেছিলাম তার আশেপাশেই কোন একটা জায়গায় ক্যাম্পিং করার ব্যাপারে মনস্থির করলাম। তারপর আমরা সেদিকে রওনা দিলাম। নদীর পাড়ের যে অংশটাতে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম খেয়া পার হওয়ার জন্য। তার থেকে আধা কিলোমিটার সামনেই একটি জায়গায় আমরা তাবু সেট করলাম। তবে রাফসানের এই কর্মকাণ্ডের জন্য তার উপরে চূড়ান্ত মেজাজ খারাপ হোলো।
ঠিক করলাম এরপর থেকে এই ধরনের প্রোগ্রামে ওর উপর আর নির্ভর করা যাবে না। সমস্ত কিছুর আয়োজন নিজেদেরকেই করতে হবে। তবে তাবুটা সেট করতে আমাদেরকে বেশ কষ্ট করতে হোলো। কারণ আমরা যে তাবুটা কিনেছি তাবুটা আকারে বেশ বড়ো। প্রথমে তো সবাই একটু সন্দেহ পোষণ করেছিলো আসলে তাঁবুর ভিতরে কয়জন থাকা যাবে। যখন তাবুটা আমরা পুরোপুরি সেট করলাম তখন দেখা গেল ভেতরে ৮ থেকে ১০ জন মানুষ মোটামুটি ভালোভাবে থাকা যাবে। ভিতরে আসলেই প্রচুর জায়গা ছিলো। যদিও আমাদের তাবু সেট করা খুব একটা ভালো হয়েছিল না কোন একটা সমস্যার জন্য মনে হয়েছিলো না। আমরা প্রায় ৪/৫ জন মিলে তাবুটা সেট করলাম। ততক্ষণে অবশ্য চারপাশে আধার ঘনিয়ে এসেছে। নদীর সেই অংশটাতে আমরা ছাড়া তখন আর কেউ ছিলো না। এই অনুভূতিটা বেশ দারুন লাগছিলো। মনে হচ্ছিল ক্যাম্পিংয়ের মূল মজাটা কেবল শুরু হোলো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রাফসান ভাই তো দেখছি একের পর এক ঝামেলার সৃষ্টি করেই চলেছিল। এমন করলে আসলেই মেজাজ খারাপ হয়। বিকেলের দিকে হলে নদীর ওপারে গিয়ে, তাবু সেট করে ক্যাম্পিং করতে পারতেন। যাইহোক যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল,তাই ওপারে না গিয়ে বেশ ভালোই করেছেন আপনারা। অবশেষে তাহলে আপনাদের ক্যাম্পিং করা হয়েছে। আসলেই অনেক ঝামেলার পর অবশেষে ক্যাম্পিং প্রোগ্রাম সফল করতে পেরেছেন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
সব মিলিয়ে দারুণ ছিলো ৷ আসলে এভাবে সবাই মিলে ক্যাম্পিং করে সময় কাটানোর মজাই আলাদা ৷ প্রত্যেকটা মুহূর্ত অনেক আনন্দময় এবং উপভোগ্য হয় ৷ তবে আপনার বন্ধু হঠাৎই শ্বশুর বাড়ি চলে গেলো কাউকে কিছু না বলে , নিশ্চয়ই ওনার শ্বশুর বাড়ি খুব কাছেই ৷ যাই হোক , অনেক ভালো লাগলো আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্তের কিছু অংশ পড়ে ৷ আশা করি খুব শীঘ্রই পড়ের পর্ব নিয়ে আসবেন ৷ অপেক্ষায় রইলাম , ধন্যবাদ