বন্ধু প্রদীপের বিয়েতে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব)।
তবে আমরা যারা আগেই কনেদের বাড়ির গেটে পৌঁছে গিয়েছিলাম তারা শুনেছিলাম বাস থেকে নেমে বরযাত্রীরা সব হেঁটে আসছে। আর আমরা মোটরসাইকেলে যারা ছিলাম তারা তো অনেকটা আগেই কনেদের বাড়ির গেটে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমরা সেখানে পৌঁছে দেখি কনে পক্ষের লোকজন গেট ধরার জন্য রেডি হয়ে গিয়েছে আমাদের আসার খবরে। অবশ্য তাদেরকে বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে বাস আটকে যাওয়ার কারণে। শেষ পর্যন্ত অনেকক্ষণ পরে বাসের যাত্রীরা গেটে এসে উপস্থিত হলে আমরা সকলে মিলে গেটের আনুষ্ঠানিকতা সেরে বাড়িতে প্রবেশ করলাম। অবশ্য বিয়ে বাড়ির গেটেই সবচাইতে বেশি মজা হয়। এখানেও কিছু সময় বেশ ভালোই কথাবার্তা হচ্ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে লগ্নের সময় কাছাকাছি হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে আর আমাদের বেশিক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখেনি। বাড়িতে প্রবেশ করে আমরা ভেতরে গিয়ে বসে পড়লাম। সেখানে যাওয়ার পরে দেখলাম বিভিন্ন রকম আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে।
এর আগে আমার কখনো হিন্দুরীতির বিয়ে পুরোপুরিভাবে অ্যাটেন্ড করা হয়নি। যার ফলে অনেক কিছুই আমার কাছে নতুন লাগছিলো। যাই হোক আমরা প্রথমে সেখানে ঢুকে কিছু সময় নিয়ে সবকিছু দেখতে লাগলাম। এর ভেতরে বরযাত্রীদের তাড়াতাড়ি খাওয়ার জন্য তাড়া দিতে লাগলো কনে পক্ষের লোকজন। আমার মনে হল হয়তো বরযাত্রীদের জন্য অন্য গেস্টদের খাবার দেয়া হয়নি। তাই আমরা বরযাত্রীরা সবাই খেতে বসে গেলাম। অবশ্য প্রথমে আমাদেরকে হালকা নাস্তা দেয়া হলো। নাস্তা শেষ হতে না হতেই টেবিলে খাবার চলে এলো। খাবারের আয়োজনে কমতি ছিলো না। খাবারের শুরুতেই দিয়েছিল চিংড়ি মাছ ভাজা, রুই মাছ ভুনা, পটল ভাজা। পরবর্তীতে দিয়েছিল মাছের মাথা দিয়ে রান্না করা ডাল, মুরগির রোস্ট আর খাসির রেজালা। আর খাওয়ার শেষে ছিলো দই।
কিন্তু শুরুতে হালকা নাস্তা খাওয়ার কারণে আমার ক্ষুধাটা সম্ভবত নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে আমি খেয়ে মজা পাচ্ছিলাম না। তবে আমার আশেপাশে অনেককেই দেখলাম রীতিমতো খাবারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। যাই হোক খাওয়া দাওয়া শেষ হতেই দেখলাম প্রায় শোয়া আটটা বেজে গিয়েছে। এদিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছিলো। আমি খাওয়া শেষ করে উঠে সেই আনুষ্ঠানিকতার কিছু ছবি তুললাম। পরবর্তীতে চিন্তা করতে লাগলাম এখন যদি রওনা না দিতে পারি তাহলে আর হ্যাংআউট শুরু হওয়ার আগে বাসায় পৌঁছাতে পারবো না। তাই তড়িঘড়ি করে বিদায় নিয়ে আমি রাফসান আর বন্ধু রাসেল তিনজনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে আমি ট্যাপাখোলা নামক স্থানে এসে পৌঁছে যখন রিক্সার খোঁজ করছি। তখন হঠাৎ করে শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। ততক্ষণে নটা বেজে গিয়েছে। আমি সেই বৃষ্টির ভেতরেই একটি দোকানের শেডের নিচে দাঁড়িয়ে হ্যাংআউটে জয়েন করলাম।
আমি মনে করেছিলাম কিছুক্ষণের ভেতর বৃষ্টি থেমে যাবে। কিন্তু সেই বৃষ্টি চলল টানা ৪০ মিনিট। এই ৪০ মিনিট আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হ্যাংআউটে জয়েন ছিলাম। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি কমে এলে আমি একটি রিকশা পেলাম বাসায় ফেরার জন্য। আর দেরি না করে রিকশায় উঠে বসলাম। বাসায় পৌঁছে যখন দৌড়ে কম্পিউটারের সামনে বসেছি তখনই আরিফ ভাই কুইজ পর্ব শুরু করার ঘোষণা দিচ্ছিলেন। এভাবে আমার বন্ধুর বিয়ের অংশগ্রহণ প্রথম দিনের মতো শেষ হোলো। তারপর আমি বাকি সময়টুকু মোটামুটি ঝামেলাহীন ভাবেই কাটিয়েছিলাম। যদিও বিয়ের কেবল একটা পর্ব শেষ হলো। পরবর্তীতে বৌভাতের অনুষ্ঠান আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সরু রাস্তায় ট্রাক ড্রাইভাররা ট্রাক পার্ক করে প্রায়ই চলে যায়। আর তখন রাস্তার মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়। কনের বাড়ি সেখান থেকে কাছে হওয়ায় অনেকে হেঁটে হেঁটে চলে যেতে পেরেছে। খাবারের আইটেম তো বেশ ভালোই ছিলো। হিন্দু রীতির বরযাত্রী সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা পেলাম ভাই। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। বৌভাত এর পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
রুপক ভাই তো হিন্দু বিয়ের আসল পর্বই মিস করে গেছেন। রাত জেগে ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখে বিয়ে দেখার মজাটাই আলাদা 🤣🤣। আর আসলেই বিয়ের অনেকাংশে মূল আনন্দ হচ্ছে গেট ধরায়। দুইপক্ষের প্রথম মূলামুলি বেশ ভালোই লাগে। সবাই চান্সে খুনসুটি করে নেয় দুই পক্ষের সাথেই।
বাহ! ভাইয়া খাবারের আইটেম তো বেশ ভালই ছিল বিয়ে বাড়ি বলে কথা। তবে আগে নাস্তা খাওয়ার কারণে আপনি সেভাবে খেতে পারেননি বিষয়টা অনেক আফসোসের ব্যাপার। তারপর আবার বাসায় ফিরতে গিয়ে ৪০ মিনিট বৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়েছিলেন সেখানেও আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবে বিয়ে বাড়িতে একটু কষ্ট হবেই তারপরও মজাই অন্যরকম। আপনার বন্ধুর বিয়েতে অংশগ্রহণ করে এরপর অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিয়ে বাড়িতে আগে নাস্তা খাওয়ার কারণে আপনি সেভাবে খেতে পারেন নি।অনেক আইটেম ছিল খাবারের যেহেতু বিয়ে বাড়ি।এছাড়াও হিন্দু বিয়ে গুলোতে বেশ মজা হয়।রাতে বিয়ে হওয়ায় সবারই মনে হয় এক অবস্থা ছিল। ঘুম ঘুম চোখে বিয়ে দেখার মুহূর্ত।আপনি আপনার বন্ধুর বিয়েতে বেশ মজাই করেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।বৌভাতের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
বিয়ে বাড়ির খাবারগুলো তো বেশ ভালোই ছিল। আপনাদের প্রথমে কিছু নাস্তা দিয়েছিল তাই আপনি খেতে পারলেন না পরবর্তী খাবারগুলো ভালো করে।বাসায় ফিরতে ও বৃষ্টি পেলেন সেখানেও কিছুটা ঝামেলা হলো।যাক এরপর বৌভাতের বিষয়ে জানাবো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ সুন্দর কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।