ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ( তৃতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


এর আগে আপনাদের সাথে জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের দুটি পর্ব শেয়ার করেছি। আজ হাজির হয়েছি মেলা ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। আসলে এই মেলাটার সাথে আমাদের শহরের মানুষজনের এত রকম স্মৃতি জড়িত যে মেলায় গেলেই সেই পুরনো কথাগুলো মনে পড়ে যায়। সেই ছোটবেলায় যখন মেলায় আসতাম তখন মনের ভেতর যে উত্তেজনা কাজ করতো এখন অবশ্য আর ততোটা নেই। তারপরেও এখনো মেলায় গেলে সময়টা বেশ ভালো কাটে। ছোটবেলায় আসতাম অভিভাবকদের সাথে। নানা রকম বিধি নিষেধ মেনে তখন চলতে হোতো। তখন মেলায় যাওয়ার কথা শুনলেই মনে হতো মেলায় গিয়ে সার্কাস দেখবো। সময়ের পরিবর্তনে এখন আর সার্কাস দেখার আগ্রহ মনের ভেতরে কাজ করেনা।

তাছাড়া মেলায় যাওয়ার আরো একটা আকর্ষণ ছিলো মেলার নানারকম মুখরোচক খাবার খাওয়া। আমি ছোটবেলা থেকেই খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি। এই কারণে মেলায় যাওয়ার আগেই মনে মনে ঠিক করে রাখতাম মেলায় গেলে কি কি খাবো। তবে এখন আর মেলায় গিয়ে তেমন কিছু খাওয়া হয় না। কারণ এখন মেলার খাবারের মান আগে থেকে খারাপ হয়ে গিয়েছে। এখন মেলায় যে সমস্ত খাবারের ব্যবসায়ীরা আসে তারা খাবারের স্বাদ এবং মানের দিকে মনোযোগ না দিয়ে শুধু মেলায় আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে কিভাবে বেশি টাকা নেয়া যায় সেই চিন্তায় ব্যস্ত থাকে। যাইহোক তাহলে চলুন আজকে দেখে নেয়া যাক মেলার আরো কিছু ছবি।

IMG_20240220_155036.jpg

IMG_20240220_155006.jpg

মেলায় ঢুকে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পর এই স্টলের দিকে চোখ চলে গেলো। সেখানে দেখতে পেলাম নানা রকম মুখোরোচক খাবার সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা যখন ছোটো ছিলাম তখন কিন্তু মেলায় এই ধরনের খাবার কম দেখা যেতো। তবে এখনকার মেলায় দেখি এই ধরনের খাবারের ব্যাপক প্রচলন হয়েছে। ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন চিংড়ি মাছ ভেজে রাখা হয়েছে। চিংড়ি মাছ আমি এমনিতে খেতে খুব পছন্দ করি। তবে এই সমস্ত দোকানে চিংড়ি মাছ ভালোমতো পরিষ্কার না করেই ভেজে ফেলে। সেই কারণে আমি এই সমস্ত স্টল থেকে চিংড়ি মাছ ভাজা খাওয়া বাদ দিয়েছি।

IMG_20240220_155033.jpg

ছবিটা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন চিকেন বার্গার। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন মেলায় এ ধরনের খাবারের কথা আমরা চিন্তাও করতে পারতাম না। তবে বর্তমানে মেলাগুলোতে বার্গার, স্যান্ডউইচ এগুলোর খুব প্রচলন হয়েছে। শহরের ছেলে মেয়েরা এগুলো খেতে খুব পছন্দ করে। এই কারণে খাবারের স্টল গুলির মালিকেরা চাহিদা বুঝে তারাও এই ধরনের খাবার মেলায় বিক্রি করা শুরু করেছে। যদিও এই বার্গার গুলোর মান মোটেও ভালো ছিলো না।

IMG_20240220_155009.jpg

এখন আপনার ছবিতে যে খাবারটি দেখতে পাচ্ছেন এটা এক ধরনের পাকোড়া। সম্ভবত ছোট চিংড়ির সাথে ডাল মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই পাকোড়াটি। এগুলো খেতে বেশ ভালোই লাগে। বিশেষ করে যদি গরম গরম ভাজা অবস্থায় খাওয়া যায়। অবশ্য ঠান্ডা হয়ে গেলে তখন আর এই সমস্ত খাবার খেতে একেবারেই ভালো লাগেনা।

IMG_20240220_155012.jpg

IMG_20240220_155014.jpg

উপরের ছবি দুটিতে দেখতে পাচ্ছেন ডিম চপ এবং স্যান্ডউইচ। যদিও এই তেলে ভাজা স্যান্ডউইচ গুলো আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনা। এগুলো খেলে আমার এসিডিটির সমস্যা হয়। তবে ডিমের চপ গুলো খেতে বেশ ভালো লাগে। যদিও ওটাতেও এসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার পরেও জীভের স্বাদের কাছে স্বাস্থ্যগত সমস্যা মাঝে মাঝে হেরে যায়। তখন এরকম দু-চারটে চাপ পেটের ভেতর চালান করে দেয়া যায়। হা হা হা

IMG_20240220_155002.jpg

এখন ছবিটা আপনারা সেই স্টলটি দেখতে পাচ্ছেন যেখানকার ছবিগুলো এতক্ষন শেয়ার করেছি আপনাদের সাথে। স্টলটা বেশ বড় ছিলো। তবে সেখানে ভেতরে বসে খাওয়ার কোন ব্যবস্থা ছিলো না। আর স্টলটার আরো একটা জিনিস আমার কাছে কিছুটা ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে বেশিরভাগ খাবারগুলো পলিথিন দিয়ে ধুলোবালি থেকে আড়াল করে রাখা ছিলো। যেখানে মেলার বাদবাকি স্টল গুলি বেশিরভাগই খোলা অবস্থায় খাবার বিক্রি করছিলো। এখন কোথাও খেতে গেলে সেখানকার পরিবেশটা মাথায় রাখার চেষ্টা করি। আর রাস্তার পাশের খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়াই ভালো। কারণ এগুলোতে নানা রকম জীবাণু থাকতে পারে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লীমেলা ভ্রমণের প্রথম দুটো পর্ব দেখা হয়নি আমার ।আজকের পর্বে মেলার নানান স্বাদের মজার মজার খাবারের ফটোগ্রাফি দেখে লোভ লেগে গেলো ভাইয়া। সত্যি মেলায় গেলে ছোট সময় কতো কিছুই না খাওয়া হতো।এখন বড় হয়ে বুঝতে শিখেছি বাইরের খাবার খাওয়া ঠিক নয়।সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

একেবারে ঠিক বলেছেন আপু। ছোটবেলায় যখন মেলায় যেতাম তখন মুখরোচক খাবার খাওয়া থাকতো প্রধান লক্ষ্য। তবে এখন কোন কিছু খেতে গেলে স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় থাকে।

 4 months ago 

আসলেই ভাই ছোটবেলায় মেলায় গেলে যতটা আনন্দ হতো,এখন সেটার দশ ভাগের এক ভাগও হয় না। আমাদের এখানে সোনারগাঁও জাদুঘরের মেলা পুরো এক মাস ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ছোটবেলা যতটা ভালো লাগতো, এখন ততটা ভালো লাগে না। মেলার খাবার গুলোর মান অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যাইহোক বেশ মুখরোচক কিছু খাবারের ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন ভাই। মাঝেমধ্যে ভাজাপোড়া খেতে বেশ ভালোই লাগে। তবে খাওয়ার সময় একটু একটু ভয়ও লাগে। ভয় মূলত এসিডিটির সমস্যা কিংবা অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টির ভয়। তবে গরম গরম ডিম চপ আমার ভীষণ পছন্দ। কিন্তু বার্গার আমার একেবারেই পছন্দ না। আমি পিজ্জা খেতে খুব পছন্দ করি। খাবারের স্টলটা আসলেই বেশ বড়। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। এখনকার মেলাগুলো যেন কেমন কমার্শিয়াল মনে হয়।

 4 months ago 

আসলেই ভাইয়া সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। এক সময় আমরা মেলায় গিয়ে সার্কাস বিভিন্ন রাইডে ওঠা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে অনেক আগ্রহ প্রকাশ করতাম সেগুলো এখন আর কাজের চাপের কারণে হয়ে ওঠেনা। মেলায় বর্তমান যে সকল দোকানগুলি বসে সেগুলো মূলত কিভাবে দর্শনার্থীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায় সে দিকটাই খেয়াল রাখে খাবারের মান যেমনই হোক না কেন। পাকোড়া এবং ডিম চপ মেলায় গেলে এ দুটি বিষয় খাওয়ার বেশি চেষ্টা করি। বর্তমান সময়গুলোতে মেলাতে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী দোকানদাররাও শহরের বিভিন্ন খাবার মেলায় তৈরি করছে। আর আমাদের অবশ্যই উচিত ভাইয়া যে বাইরের খাবার কম খাবার চেষ্টা করা।

 4 months ago 

আসলে আমাদের এখন মেলাটা ভালোভাবে উপভোগ করার মত পর্যাপ্ত সময় ও হাতে থাকে না। মেলায় গেলে আগে থেকে এটা মাথায় থাকে যে মেলা থেকে ফিরে আমাকে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। মানুষ এখন অনেক ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে।

 4 months ago 

জি ভাই আপনার সাথে একমত পোষন করছি ৷ আসলে ছোট বেলায় মেলায় যাওয়ার যে একটা অনুভুতি ৷ কিংবা মেলায় যাওয়ার জন্য বাহানা সত্যি এখনো মনে পরে ওই সব কথা ৷ আর মেলার যাওয়ার উদ্দেশ্যে তখন খাওয়া দাওয়া ৷

তবে এখন পুরো ভিন্ন ধর্মী এখন তো আমি মনে করি ৷ মেলায় শুধু ঘুরতে যাই ৷ এর বেশি কিছু আর ভয় লাগে যদি আত্মীয় দেখা হয় ৷ টাকা খরজ হিহিহি

যা হোক জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের তৃতীয় পর্বে বেশ সুন্দর একটি ব্লগ উপস্থাপনা করলেন ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই

 4 months ago 

ছোটবেলায় মেলায় যাওয়ার সেই স্বাদ আর কখনোই পাবো না। এটা মনে পড়লেই আফসোস লাগে।

 4 months ago 

সময়ের সাথে সাথে আমাদের ভালোলাগাগুলো যেমন বদলে যায় তেমনি ইচ্ছে গুলো হারিয়ে যায়। ছোটবেলায় যেই কাজগুলো করতে বেশি ভালো লাগতো বড় হওয়ার পর সেই কাজগুলোই আর করা হয়ে ওঠে না। তবে মেলায় গেলে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। কিন্তু আগের মত সেই আনন্দ হতো এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে আমার কাছে কেন জানি মেলার সেই খাবারের দোকানগুলো থেকে খাবার খাওয়া একেবারেই ভালো লাগেনা। তবে যদি স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কিংবা পলিথিন দিয়ে প্যাকিং করে খাবারগুলো বিক্রি করা হয় তাহলে নির্দ্বিধায় খাওয়া যেতে পারে। ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 4 months ago 

আমিও এখন বাইরে থেকে খাবার ক্ষেত্রে এ বিষয়টা খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। যদি খাবার ঢেকে রাখা থাকে তাহলে খেতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু ধুলোবালির ভেতরে খোলা খাবার খেতে এখন রুচিতে বাধে।

 4 months ago 

ছোটবেলার স্মৃতি অনুভূতি এসব আসলে ভুলে যাওয়ার মতো নয় ৷ তবে সমযের সাথে সাথে মানুষের মাঝে নিজে থেকেই অনেক পরিবর্তন আসে ৷ আগের ইচ্ছে অনুভূতি কিছুই কাজ না ৷ যদিও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় , তবে সেটা ইচ্ছেতেই থেকে যায় ৷ যাই হোক , মেলা মানেই মুখরোচক সবার খাবারের দোকানপাট ৷ এসব দোকান পাট দেখে সেই লোভনীয় খাবার গুলোর লোভ সামলানো আসলে মুশকিল ব্যাপার ৷ যাই হোক , পল্লী মেলা ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব পড়ে বেশ ভালোই লাগলো ভাইয়া ৷ ধন্যবাদ আপনার সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য ৷

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আসলেই ছোটবেলার স্মৃতি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57346.65
ETH 3107.45
USDT 1.00
SBD 2.40