পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়া ও ঘোরাফেরা।
যদিও মেয়ে তার আগের দিন সন্ধ্যার সময় খুব জেদ করছিল বাইরে যাওয়ার জন্য। তারপরে তাকে শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজী করেছিলাম পরদিন দুপুরে খেতে যাওয়ার জন্য। যাই হোক গতকাল সকালে উঠেই আমি আর আমার স্ত্রী ঠিক করলাম আজকে দুপুরে বাইরে খেতে যাবো। কোন রেস্টুরেন্টে যাব এটা নিয়ে কিছুটা দোটানায় ভুগছিলাম। কারণ আমার স্ত্রী বিরিয়ানি খেতে চাচ্ছিলো। আমার মেয়ে ও বিরিয়ানি খেতে রাজি হয়েছিলো। কিন্তু যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ করে সে মত পাল্টে ফ্রাইড রাইস খাওয়ার বায়না ধরলো। তারপর আমি আর আমার স্ত্রী চিন্তা ভাবনা করে একটি রেস্টুরেন্টে যাওয়ার ব্যাপারে মনস্থ করলাম। সেই রেস্টুরেন্টে ফ্রাইড রাইস সহ চাইনিজ আইটেম গুলি যেমন পাওয়া যায় সাথে বিরিয়ানিও পাওয়া যায়। আমি আর আমার স্ত্রী ঠিক করলাম আমরা দুজনে মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি খাবো। আর মেয়ের জন্য অর্ডার করবো ফ্রাইড রাইস।
যাই হোক আমি যোহরের নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পরে সবাই তৈরি হতে লাগলাম। কিছুক্ষণের ভেতরেই তৈরি হয়ে বাসা থেকে সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের বাসার অবস্থান শহরের মাঝামাঝি হওয়ার কারণে আমাদের বাসা থেকে সব রেস্টুরেন্টই মোটামুটি কাছাকাছি। কোন রেস্টুরেন্টে যেতেই আমাদের খুব একটা বেশি সময় লাগে না। তবে গতকালকে আমাদের কাঙ্খিত রেস্টুরেন্টে যেতে কিছুটা সময় লেগেছিলো। কারণ আমাদের এই ছোট্ট শহরটায় হঠাৎ করে যানজটের দেখা দিয়েছে। বছরখানেক ধরে দেখছি শহরের কয়েকটি পয়েন্টে দিনের বেশিরভাগ সময় জ্যাম লেগে থাকে। যাই হোক যে রাস্তাটুকু জ্যাম ছিল সেটুকু পার হওয়ার পরে রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে আমাদের আর বেশি সময় লাগেনি।
রেস্টুরেন্টে পৌঁছে আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। কারণ প্রচন্ড গরম ছিলো বাইরে। রেস্টুরেন্টে আসতে আসতে এই গরমে আমাদের অবস্থা খুবই কাহিল হয়ে পড়েছিলো। তাই এসি রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই কিছুটা স্বস্তি পেলাম। রেস্টুরেন্টে ঢোকার পরে একজন ওয়েটার এসে আমাদের কাছে মেনু কার্ড দিয়ে গেলো। তখন মেয়ের জন্য খাবার অর্ডার করতে গিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে কিছু খাবার দেখে জিজ্ঞেস করলাম এগুলি খাবে নাকি? আমার স্ত্রী সম্মতি জানালে আমরা মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ার প্ল্যান বাতিল করে অন্য খাবার অর্ডার করলাম। আমরা যে খাবারগুলি অর্ডার করেছিলাম সেগুলি হচ্ছে থাই ফ্রাইড রাইস, চিকেন সিজলিং, চিকেন চিলি অনিয়ন আর থাই ফ্রাইড চিকেন। খাবার অর্ডার করার পরে আমি ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম খাবার সার্ভ করতে কত সময় লাগবে। ওয়েইটার জানালো ২০ থেকে ২৫ মিনিট মতো সময় লাগবে। আমি বললাম ঠিক আছে।
তারপর আমরা নিজেদের ভেতর গল্প করতে লাগলাম। যদিও এদিকে আমাদের সকলের বেশ ক্ষুধা লেগেছিলো। আমি চিন্তা করছিলাম আসলেই কি এরা ২০-২৫ মিনিটের ভেতর খাবার পরিবেশন করতে পারবে? আমরা বসে বসে গল্প করছিলাম আর টেলিভিশন দেখছিলাম। রেস্টুরেন্টে একটি ৪০ ইঞ্চি সাইজের এলইডি টেলিভিশন লাগানো ছিলো। সেখানে ইউটিউবে বিভিন্ন জনপ্রিয় গান চলছিলো। আমরা বসে বসে সেই গানগুলো উপভোগ করছিলাম। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ কাটানোর পর দেখলাম প্রথমে প্লেট দিয়ে গেলো। আমি মনে মনে চিন্তা করতে লাগলাম এখন খাবারগুলো দিলে বাঁচি। কিছুক্ষণের ভেতরে দেখলাম ওয়েটার একে একে আমাদের সবগুলো খাবার নিয়ে এলো। তবে আমরা যে টেবিলটাতে বসেছিলাম সেই টেবিলটা আকারে খুব একটা বড় ছিলো না। যার ফলে আমাদের সবগুলো খাবার রাখতে সমস্যা হচ্ছিলো। তবে আমি যখন খাবার অর্ডার করেছিলাম তখন আমার স্ত্রীকে বলছিলাম আরো কোন একটা আইটেম অর্ডার করবো কিনা। কিন্তু খাবার পরিবেশন করার পর খাবারের পরিমাণ দেখে বুঝতে পারলাম এত খাবার আমাদের পক্ষে শেষ করা সম্ভব হবে না।
খাবার গুলো দেখেই মনে হচ্ছিল খেতে খুবই মজা হবে। প্লেটে খাবার নিয়ে খেতে শুরু করলে বুঝতে পারলাম আমাদের ধারণাটা সঠিক ছিলো। খাবারগুলি আসলেই ছিল দারুণ। আমরা তিনজনেই বেশ মজা করে খাবার গুলো খেতে লাগলাম। তবে তিনজনের খাওয়া শেষ হলে দেখা গেলো রাইস প্রায় অর্ধেক রয়ে গিয়েছে। চিকেন সিজলিংটাও প্রায় অর্ধেক রয়ে গিয়েছে। আর চিকেন ফ্রাই শুধু আমার মেয়ে এক পিস খেয়ে ছিলো বাদবাকিটা রয়ে গিয়েছিলো। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমি ওয়েটারকে ডেকে বললাম এগুলো পার্সেল করে দিন। ওয়েটার খাবার পার্সেল করে দিলে আমরা রেস্টুরেন্টের বিল মিটিয়ে দিলাম তারপর আমরা সেখানে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। কারণ আমাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল পদ্মার পাড়ে ঘুরতে যাওয়া। তবে যেহেতু তখনো বাইরে সূর্যের প্রচণ্ড রোদ দেখতে পাচ্ছিলাম। সেই কারণে রেস্টুরেন্টে বসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিচ্ছিলাম। আজ এ পর্যন্তই। পদ্মা পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার গল্প পরের দিন করবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাবা মায়ের কাছে সন্তান এমন একটা জিনিস যদি কোন কিছু আবদার করে তাহলে সেটা ফেলতে পারে না। এই বিষয়টা আমার কাছে ভালো লেগেছে ভাই আপনার পরিবারকে নিয়ে মাঝে মধ্যে মাসের ভিতরে বাইরে খেতে যাওয়াট ও বেড়াতে যাওয়াটা। এটা করা দরকার রয়েছে। এতে পরিবারে মানসিকতা ভালো থাকে। নিজের পরিবারকে নিয়ে এভাবে একত্রে বসে খাওয়া অনেক ভালো একটা ব্যাপার। এই বিষয়গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ভাই। অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার পরিবারের জন্য দোয়া রইলো।
আসলে কিছুদিন পর পর এভাবে বাইরে খেতে যেতে সবারই ইচ্ছে করে। আপনারা তো দেখছি অনেক দেরি করে খাবার পেয়েছিলেন। আর দুপুরের খাবার যদি দেরিতে পাওয়া যায় তাহলে এমনিতেই অনেক ক্ষুধা লেগে যায়। যাইহোক খাবার দেখতে ভালো ছিল আবার খাবার খেতে ভালো ছিল জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া দাওয়া করলেন আর আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। খুব ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। আসলে বাচ্চারা বাইরে খেতে খুব পছন্দ করে।আপনাদের খাবার গুলো সত্যিই খুব লোভনীয় লাগছে। খেতে ও বেশ মজার ছিল বললেন।তবে খুব সুন্দর উপভোগ করলেন খাবারগুলো।ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
মাসে দুএকবার রেস্টুরেন্টে গিয়ে না খেলে আসলেই ভালো লাগে না। দুপুরে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে বেশ ভালো করেছেন ভাই। এতে করে দুপুরের রান্না করার ঝামেলা হয়নি বাসায়। বাচ্চারা এমনই হুটহাট সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলে। যাইহোক রেস্টুরেন্টে গিয়ে বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া করলেন। খাবার বেশি বেঁচে গেলে আমিও পার্সেল করে বাসায় নিয়ে আসি। খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন আপনারা। পদ্মার পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
রেস্টুরেন্টে পরিবারকে নিয়ে বেশ ভালই খাওয়া-দাওয়া করেছেন এবং আমাদের সাথে এই সুন্দর মুহূর্তটা শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। খাবার গুলো দেখতে সত্যিই অনেক লোভনীয় লাগছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য।
আসলে ভাইয়া প্লেটে খাবারের পরিবেশন করার ধরন দেখলে অনেকটা আন্দাজ করা যায় যে খাবারের টেস্ট কেমন হবে। যেহেতু দেখতে এত সুন্দর লাগছে আর খেতে মজার হবে সেটা স্বাভাবিক।