কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।
ভার্জিন মোহিতো আমি প্রথম খাই আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে। কক্সবাজার গিয়েছিলাম ঘুরতে। সেখানে দুপুরে কেএফসি থেকে খাবার পার্সেল নিয়েছিলাম। সাথে নিয়েছিলাম একটি ড্রিঙ্কস। তখনো ভার্জিন মোহিতর সাথে আমার খাওয়া হয়নি। তবে প্রচন্ড রোদের ভেতরে সেই ড্রিঙ্কস টি হাতে নিয়ে যখন চুমুক দিলাম। তখন সেটির সাদে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে মিনিট খানেকের ভেতরেই সেই ড্রিঙ্কস টি শেষ করে ফেলেছিলাম। যদিও হাতের গ্লাসটির সাইজ একেবারেই ছোট ছিল না। কিন্তু তারপরও এত দ্রুত কিভাবে ড্রিংকসটি শেষ হয়ে গেল সেটাই চিন্তা করছিলাম।
কেএফসি থেকে আপনারা যারা পার্সেল নিয়েছেন তারা জানেন।কে এফসি ওয়ান টাইম গ্লাসে যখন পার্সেল দেয় সেই গ্লাসগুলো এক ধরনের ঢাকনি দিয়ে ঢাকা থাকে। ড্রিংকস শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি সেই ঢাকনি খুলে ভিতরে দেখতে গেলাম কি কি রয়েছে। দেখতে পেলাম বরফের বড় বড় টুকরো, এক পিস লেবু আর পুদিনা পাতা রয়েছে। আমি চিন্তা করতে লাগলাম সামান্য এই তিনটি উপকরণ দিয়ে বানানো ড্রিঙ্কসটি এত মজা লাগলো কেনো? এরপরে আমি আরো নানা রকম ড্রিঙ্কস খেয়েছি। কিন্তু ভার্জিন মোহিতর সেই সাদটা এখনো মুখে লেগে আছে। একটা সময় এই ড্রিংকসগুলোর এত বেশি কদর ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যে কোন ভালো মানের রেস্টুরেন্টে গেলে দেখবেন। মানুষ প্রথমে টেবিলে বসেই এই ধরনের একটা ড্রিঙ্কস অর্ডার করে। তবে আমি খেয়াল করে দেখেছি। রেস্টুরেন্ট গুলো সবচাইতে বেশি টাকা লাভ করে এই ড্রিংকসগুলো বিক্রি করে। কারণ এই ড্রিঙ্কসগুলো বানাতে তাদের খুবই সামান্য টাকা খরচ হয়। কিন্তু ড্রিঙ্কস গুলোর দাম রাখে তারা অনেক বেশি। যেমন আজ থেকে ১০ বছর আগে আমি কেএফসি থেকে যখন ভার্জিন মোহিতো খেয়েছিলাম তখন সেটার দাম পড়েছিল ১৬০ টাকা। এখনো আপনি ভালো কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে এই ধরনের একটা ড্রিংসের অর্ডার করলে দেড়শ থেকে আড়াইশো টাকা মত দাম পড়বে।
যাইহোক আপনারা জানেন আমি একজন ভোজন রসিক মানুষ। সেই কারণেই আমি প্রায় রেগুলার ফুড ব্লগারদের নানা রকম ভিডিও দেখি। তাছাড়া মাঝে মাঝে নানা রকম রেসিপি ভিডিও দেখি। সেই ভিডিও দেখতে দেখতে একদিন হঠাৎ করে চোখ পড়ে গিয়েছিল এই ভার্জিন মোহিতর রেসিপিতে। সেখানে কিভাবে খুব সহজেই বাড়িতে ভার্জিন মোহিত তৈরি করা যায় সেটাই দেখানো হয়েছিল। রেসিপিটি দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম যে এত সামান্য উপকরণ দিয়ে এত মজার ড্রিঙ্কস তৈরি করা সম্ভব? তারপর থেকে মাঝে মাঝে বাসায় এটা বানানোর চেষ্টা করেছি। তবে এই ড্রিঙ্কস টি বানানো দেখতে যতটা সহজ বাস্তবে এখানে কিছুটা জটিলতা আছে। কারণ এই ড্রিঙ্কস তৈরিতে যে উপকরণ লাগে সেগুলোর অনুপাত পরিমাণ মতো না হলে খেতে মজা লাগবে না। যাইহোক আজ আমি আপনাদেরকে দেখাবো কিভাবে খুব সহজেই বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারবেন ভার্জিন মোহিত। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
🍹ভার্জিন মোহিতো🍹
উপকরণ সমূহ
★স্প্রাইট
★বিটলবণ
★চিনি
★লেবু
★পুদিনাপাতা
★বরফ
তৈরির প্রনালী
প্রথমে গ্লাসের ভেতরে ছোট করে কাটা লেবুর টুকরো গুলো দিয়ে দেই।
এখন গ্লাসের ভেতর পুদিনা পাতাগুলো দিয়ে দেই। আপনারা চেষ্টা করবেন সবসময় ফ্রেশ পুদিনা পাতা ব্যবহার করতে। আমার পুদিনা পাতাগুলো কয়েকদিন আগে আনা। তাই কিছুটা কালো হয়ে গিয়েছে।
এখন গ্লাসের ভেতর বিট লবণ দেই। বিট লবণ পরিমাণ মতো দিতে হবে। একটু কম বেশি হয়ে গেলে স্বাদের তারতম্য হবে।
এখন গ্লাসের ভেতর পরিমাণ মতো চিনি দিয়ে দেই।
এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। একটি চামচ বা অন্য যেকোনো ধরনের শক্ত কিছু দিয়ে গ্লাসের ভেতর রাখা সবকিছু চেপে চেপে সেগুলো থেকে রস বের করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এমন ভাবে জোরে চাপতে হবে সবকিছু যাতে লেবুর রস বের হয় সাথে পুদিনা পাতার রসও বের হয়। এই ধাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এখন গ্লাসের ভেতরে বরফ দিয়ে দেই।
এখন গ্লাস ভর্তি করে স্প্রাইট ঢালী। তারপর একটা চামচ দিয়ে নেড়েচেড়ে একটু মিটিয়ে নেই। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো মজাদার ভার্জিন মোহিতো। এই গরমের ভেতরে এই ধরনের একটি ড্রিংসের গ্লাসে চুমুক দিলে মনটা প্রশান্তিতে ছেয়ে যায়। তবে যেহেতু এই ড্রিংকস তৈরিতে কার্বনেটেড বেভারেজ ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এটি সারাদিন রোজা থাকার পর না খাওয়াই ভালো। এটি চেষ্টা করবেন রাতের খাবার খাওয়ার আগে বা পরে খেতে। কারণ শরীরে পানি শূন্যতা থাকা অবস্থায় এই ধরনের ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলাই ভালো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
ফটোগ্রাফার | @rupok |
Support
@heroism Initiative by Delegating your Steem Power
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
@rupok
ভার্জিন মোহিতো ড্রিংকস দেখে তো বেশ লোভনীয় লাগছে ভাইয়া। খুব সহজেই দেখছি বাসায় তৈরি করা যায় এই ড্রিংকস। তবে উপকরণের অনুপাত ঠিক রাখা জরুরী। এটা ঠিক সারাদিন রোজা রেখে এই ড্রিংকস না খেয়ে অন্য সময় খাওয়া ভালো। এতো মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
স্প্রাইট পুদিনা পাতা লেবুর মিশ্রণে অনেক ইউনিক একটি ড্রিংক আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমার কাছে ড্রিংকসটি অনেক ভালো লেগেছে। গরমে এই ধরনের ড্রিমসপান করলে শরীরে শান্তি ফিরে আসে। ইউনিক একটি ড্রিংকস আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
কক্সবাজার গিয়ে আপনি যে ভার্জিন মোহিত খেয়েছেন তার স্বাদ এখনো ভুলতে পারিনি। আর সে ভার্জিন মোহিত সম্পর্কে আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার এই ভার্জিন মোহিত খাওয়ার খুব ইচ্ছা জাগলো। এই ভার্জিন মোহিত আমার এর আগে কখনো খাওয়া হয়নি। নামটা যেমন সুন্দর দেখতেও খুবই লোভনীয়। আপনার রেসিপিটা দেখে শিখে নিলাম। অবশ্যই বাসায় একদিন ট্রাই করে দেখব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুস্বাদু একটি ড্রিংকসের রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ভার্জিন মোহিতো আমার খুবই পছন্দের। যদিও 10 বছর আগে খাওয়া হয়নি। কিছুদিন আগেই খাওয়া হয়েছিল। যখন থেকে এই ড্রিংসটির সাথে পরিচিত হয়েছি তখন থেকেই ভালো লাগে। আমি এই প্রতিযোগিতার জন্য এই ভার্জিন মোহিতো তৈরি করতে চেয়েছিলাম। যাইহোক ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ প্রসেস তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।