ঢাকায় গিয়ে পরিবার নিয়ে বড় আপুর সাথে ঘোরাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া ( শেষ পর্ব)।
আমরা যখন বাণিজ্য মেলার গেটের কাছাকাছি পৌঁছলাম। তখন সেখানে মেলা থেকে ফিরতি মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখতে পেলাম বাসের জন্য। বাণিজ্য মেলায় আগতো দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। এই বাসে করে ফেরার জন্য মানুষ দীর্ঘ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলো। এত মানুষ দেখে আমি আসলেই বেশ অবাক হয়েছিলাম। যাইহোক বাণিজ্য মেলার কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে আমরা মেলায় প্রবেশ করলাম। এবারের বাণিজ্য মেলা অন্যান্য বারের বাণিজ্য মেলা থেকে আমার কাছে কিছুটা কম জাকজমক পূর্ণ মনে হয়েছে। বাণিজ্য মেলায় প্রবেশ করেই প্রথমে দেখতে পেলাম সেখানে কয়েকটি ফোয়ারা বানানো হয়েছে। সেই ফোয়ারার আশেপাশে লোকজনের অনেক ভিড় দেখতে পেলাম। সবাই দেখলাম সেই ফোয়ার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে রয়েছে। আমরা কিছুক্ষণ সেই ফোয়ারার কাছে দাঁড়িয়ে সেটার সৌন্দর্য দেখতে লাগলাম। তারপর আমরা যেই বিল্ডিং এর ভেতর বাণিজ্য মেলার স্টল গুলো অবস্থিত ছিলো সেখানে প্রবেশ করলাম।
সেখানে ঢুকে আমরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম। বাণিজ্য মেলায় আমি সব সময় একটা জিনিস খেয়াল করেছি। সেখানে জিনিস পত্রের দাম বাইরের তুলনায় কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। অথচ এই ধরনের মেলায় জিনিসপত্রের দাম বরং কিছুটা কম হওয়া উচিত। যাই হোক বাণিজ্যমেলার যে জিনিসটা আমার কাছে সবচাইতে ভালো লাগে সেটা হচ্ছে সেখানে সবকিছু পাওয়া যায়। এমনকি আস্ত বাড়ি পর্যন্ত তৈরি করে রাখা হয়েছিলো দর্শনার্থিদের দেখার জন্য। সাথে যেহেতু আমার মেয়ে ছিল সে মাঝে মাঝেই কিছু উল্টাপাল্টা জিনিস কেনার বায়না ধরছিলো। আমি বাণিজ্য মেলায় ঘোরাফেরা করছিলাম আর বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলাম। কারণ বাংলাদেশ সময়ের রাত দশটায় দাদার সাথে আমার একটা মিটিং ছিলো। আমি বারবার চিন্তা করছিলাম যে কোনভাবেই হোক আমাকে দশটার আগে বাণিজ্য মেলা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসতে হবে। কারণ বাণিজ্য মেলায় এই হইচইয়ের ভেতরে আমি মিটিং এর কোন কথা শুনতে পারবো না। গাড়ির ভেতর থাকলে অন্তত দাদা কি বলছে আমি সেটা ভালোভাবে শুনতে পারবো।
আমি মনে প্রাণে চাচ্ছিলাম সবাই তাড়াতাড়ি ঘোরাফেরা শেষ করে ফিরে চলুক। কিন্তু তাদের ঘোরাফেরা কিছুতেই শেষ হচ্ছিলো না। আসলে বাণিজ্য মেলায় এত রকমের জিনিসপত্র থাকে যেটা আপনি অল্প সময়ে দেখে শেষ করতে পারবেন না। আর সাথে মেয়ে মানুষ থাকলে তো কথাই নেই। আমার বড় বোন এবং আমার ওয়াইফ দুজনেই বিভিন্ন রকম স্টল ঘুরে ফিরে দেখছিলো
এর ভিতর একটি স্টলে দেখতে পেলাম দুটি ম্যাসাজ চেয়ার রাখা আছে। সেই ম্যাসাজ চেয়ারটা বিক্রির জন্য তারা ফ্রী ডেমোর ব্যবস্থা করেছিলো। মানে সেখানে আপনি বসে দশ মিনিট ম্যাসাজ নিতে পারবেন। চেয়ার দুটো আমার কাছে দারুন লেগেছিলো। তবে চেয়ারগুলোর দাম ছিল অনেক বেশি। এক একটা চেয়ারের দাম ছিলো সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। এইভাবে ঘুরেফিরে আমরা অনেকগুলো স্টল দেখার পরে মেলা থেকে বের হয়ে গেলাম। যদিও তখনও আরো অনেক স্টল ছিল যেগুলো আমাদের দেখা হয়নি। মেলা থেকে বের হয়ে আমি রীতিমতো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কারণ তখনও দশটা বাজতে কয়েক মিনিট বাকি রয়েছে। আমি চিন্তা করতে লাগলাম যাক এবার অন্তত মিটিংয়ে জয়েন করে মিটিং এর কথাগুলো শুনতে পারবো। কিন্তু খেয়াল করে দেখি এদিকে আমার মোবাইলের চার্জ অনেকটা কমে গিয়েছে। মোবাইলে চার্জের অবস্থা দেখে মাথায় নতুন টেনশন ঢুকলো। যাই হোক তারপরেও শেষ পর্যন্ত মিটিংটা ভালোমতো শেষ করতে পেরেছিলাম। আর মিটিং শেষ করতে করতে বাসার অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। আর এভাবেই আমাদের ঘোরাফেরা আর খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হয়ে গেলো। সেদিন আমরা আসলেই দারুন সময় কাটিয়েছিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | আগারগাঁও |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আপনার গত পর্ব কিছু দেখেছি আর কিছু দেখি নি ৷ যা হোক আপনি ঢাকায় গিয়ে বড় আপু পরিবারের সবাই মিলে বানিজ্য মেলায় অনেক সুন্দর একটা সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ আসলে বানিজ্য মেলার অর্থই হলো যে কোনো জিনিস বাজারের চেয়ে কম হবে আবার সবকিছু পাওয়া যায় ৷ যা হোক ম্যাসাজ করার কথাটা ভালো লাগলো আপনিও ১০ মিনিট করতে পারতেন ৷ হিহিহিহি
আগারগাঁওয়ে যখন বাণিজ্য মেলা হতো, তখন নিঃসন্দেহে প্রচুর মানুষের আনাগোনা ছিলো। তবে এখানেও প্রচুর মানুষ হয়। আমি গতবছর গিয়েছিলাম বাণিজ্য মেলায়,কিন্তু এই বছর এখনো যাওয়া হয়নি। যাইহোক আপনারা মেলায় গিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন ভাই। এই ধরনের ম্যাসাজ চেয়ার গুলোতে বসলে শরীরটা একেবারে রিফ্রেশ হয়ে যায়। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে থাকা অবস্থায় এই ম্যাসাজ চেয়ার গুলোতে বসে ১/১.৫ ঘন্টাও কাটিয়ে দিতাম। ১০ মিনিট পরপর শেষ হতো, আবার নতুন করে শুরু করতাম। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।