অশনি সংকেত (প্রথম পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পোস্টের টাইটেল দেখে কি মনে করেছিলেন আমি কোন গল্প শুরু করতে যাচ্ছি? আজকে আমি কোন গল্প লিখবো না। আজকে আমি এমন একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যেটা নিয়ে এখন পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের চিন্তা ভাবনা করা উচিত। ঋতু গুলোর ভেতর আমার কাছে সবচাইতে পছন্দের হচ্ছে বর্ষাকাল। আমি বৃষ্টি ভীষণ পছন্দ করি। বৃষ্টিস্নাত দিনে মনটা কেমন যেন নস্টালজিক হয়ে যায়। পুরনো দিনের কথাগুলো মনে পড়তে থাকে। কাজে কর্মে কিছুটা অলসতা চলে আসে। মনে হয় বৃষ্টিস্নাত দিনগুলো নিজের মতো করে উপভোগ করি। কিন্তু গত দুদিন ধরে যে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটা আমি মোটেই উপভোগ করতে পারছি না। এই বৃষ্টিটাকে মনে হচ্ছে কোন একটা বিপদের অশনি সংকেত।

IMG_20231005_155749.jpg

তবে এবার বর্ষাকালেই বৃষ্টি হয়নি বললেই চলে। পুরো আষাঢ় মাসটা গিয়েছিলো প্রায় বৃষ্টিহীন। নদী-নালা,খাল-বিলে সাধারণ বৃষ্টির পানি ছিল না বললেই চলে। আপনারা জানেন বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। সময় মতো বৃষ্টি না হলে কৃষিক্ষেত্রে দারুন সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষ করে পাট চাষীদের নানা রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। সমস্যাটা যে শুধু পাট চাষীদের হয় তা নয়। এই সময় যে সমস্ত ফসল উৎপন্ন হয় সেই সমস্ত ফসলের ক্ষেত্রেই সমস্যাগুলো দেখা দেয়। যাই হোক আষাঢ় মাস চলে যাওয়ার পরে শ্রাবণ মাসে কিছুটা বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেলো। কিছুদিন আগেও যখন মনে মনে শীতের আমেজকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখনই হঠাৎ করে শুরু হয়ে গেলো বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি এমনই বৃষ্টি যেটা আমার জীবনে কখনো দেখেছি বলে মনে পড়ে না। আর এই বৃষ্টির সবচাইতে ভয়ংকর রূপ দেখছি গতকাল থেকে। অক্টোবর মাসে এমন টানা ভারী বর্ষণ আমি কখনোই দেখিনি। শুধু যে বৃষ্টি হচ্ছে তা নয়। দুদিন আগে বাংলাদেশ-ভারত নেপালে কয়েক দফা ভূমিকম্প হয়ে গেলো।


IMG_20231005_155802.jpg

গতকাল আবার খবরে দেখলাম সিকিমের একটি ড্যাম ভেঙে বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়েছে। প্রচুর মানুষজন মারা গিয়েছে। সাথে ব্যাপক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। আরো শুনতে পেলাম সেই পানি বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। যার ফলে বাংলাদেশ অসময়ে আবারো একটি বন্যার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। একটু চিন্তা করে দেখুন তো এগুলো কি সবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা? মোটেও তা নয় আমরা দীর্ঘদিন আগে থেকেই এই ধরনের ঘটনা ঘটার ইঙ্গিত পাচ্ছিলাম। পরিবেশবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই মানুষকে সতর্ক করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। মানুষের প্রকৃতি ধ্বংস বন্ধ না হলে প্রকৃতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করবে। এখন চারপাশে যেটা দেখতে পাচ্ছি সেটা তারই প্রভাব। প্রকৃতি এখন মানুষের বর্বরতার জন্য প্রতিশোধ নেবে এবং সেই প্রতিশোধ হতে যাচ্ছে ভয়াবহ।


গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে আমরা অনেক আগে থেকেই নানারকম কথা শুনে আসছিলাম। কিন্তু সেটার প্রভাব যে এত তাড়াতাড়ি আমাদের জীবনে পড়বে সেটা কখনো চিন্তা করিনি। এখন চারপাশে প্রকৃতির যে রুদ্রমূর্তি দেখতে পাচ্ছি সেটা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাবেই হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের করণীয় কি? আসলে এককভাবে কারো কিছুই তেমন একটা করার নেই। পুরো পৃথিবীর সমস্ত মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়তো কিছু একটা করা যেতে পারে। কিন্তু খেয়াল করলে অবাক হবেন বিশ্ব নেতারা প্রকৃতির এই রুদ্রমূর্তি দেখার পরেও তেমন কোনো উচ্চবাচ্য করছে না। তারা সবাই যার যার এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। অথচ এই সময়ে উচিত ছিল সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে কিভাবে এই পৃথিবীটাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যায় সেটা নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করা। আমার মত সাধারন মানুষ যেটা বুঝতে পারছে সেটা বিশ্ব নেতারা কেন বুঝতে পারছে না সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা যেহেতু বুঝতেছি প্রকৃতি ধ্বংসের কারণেই বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে, তাহলে বিশ্ব নেতারাও খুব ভালোভাবে এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে নিশ্চয়ই। কিন্তু তাদের এসবের প্রতি একেবারেই গুরুত্ব নেই। তারা শুধু ব্যাংক ব্যালেন্স নিয়ে ব্যস্ত। আসলেই প্রকৃতির এমন অদ্ভুত আচরণ আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না। অক্টোবর মাসে এমন বৃষ্টি একেবারে অকল্পনীয়। বর্ষাকালে এমন বৃষ্টি হলে মেনে নেওয়া যেতো। কিন্তু আষাঢ় মাসে অনাবৃষ্টির জন্য কৃষকদের ফসল ফলাতে খুবই কষ্ট হয়েছিল। আশানুরূপ ফসল কৃষকেরা ফলাতে পারেনি। যাইহোক আমাদের সবার উচিত যার যার নিজস্ব উদ্যোগে ছাদ বাগান করা। কোনো খালি জায়গা ফেলে না রেখে, বৃক্ষ রোপণ করা। সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

প্রকৃতির এই রুদ্র মূর্তি সত্যি ই খুব ভয়ের বিষয়।এবার বর্ষাকালে বৃষ্টি না হয়ে এখন বৃষ্টি হচ্ছে।সামনে যে কি আছে আমাদের ভাগ্যে তা আর কি বলবো।সচেতনতা আজ আমাদের অসচেতনতায় পরিনত হয়েছে।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.17
JST 0.029
BTC 69641.68
ETH 2498.43
USDT 1.00
SBD 2.56