প্রিয় জায়গায় প্রিয় মানুষের সাথে আড্ডা দেয়া।
কয়েকদিন আগে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম অনেক দূরে একটি দোকানের সিঙ্গারা খেতে। সে অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে ইতিমধ্যে শেয়ার করেছি। তবে সেদিন আমি আর ফেরদৌস একটি জায়গায় বসে অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়েছিলাম। সেই গল্পটা আপনাদের কাছে করা হয়নি। আজকে সেই আড্ডার গল্পটাই করবো। আমরা যখন আমাদের বন্ধু রাফ্সানের এলাকায় পৌঁছলাম। তারপর সেখান থেকে আমরা তিনটি মোটরসাইকেল যোগে সেই সিঙ্গারার দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।
তবে আমাদের তিনটি মোটরসাইকেল থাকলেও দুটি মোটরসাইকেলে আমরা একটু আগে রওনা দিয়েছিলাম। আরও একটি মোটরসাইকেলে আমাদের যে বন্ধুরা ছিল তারা কিছুটা পরে রওনা দিয়েছিল। কারণ তারা তখন মোটরসাইকেলে তেল ভরায় ব্যস্ত ছিল। কিছু দূর আসার পরে হঠাৎ করে চিন্তাটা মাথায় এলো যে আমরা যে এদিকে এসেছি সেটা কি ওরা জানে? না জানলে ওরা হয়তো অন্য রাস্তায় চলে যাবে। কিছু দূর আগানোর পর যেটা চিন্তা করেছিলাম সেটাই হোলো। যারা পেছনে পড়েছিল তারা বুঝতে পারছিল না কোন দিকে যাবে। পরবর্তীতে বন্ধু রাফসান তাদেরকে ফোন দিয়ে জানালো আমরা কোন রাস্তায় আছি। তারপর আমরা চিন্তা করলাম যেহেতু ওরা অনেকটা পিছনে পড়েছে তাই ওদের জন্য আমরা একটি জায়গায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি।
আমরা যখন ওদের সাথে যোগাযোগ করছিলাম তখনও আমাদের মোটরসাইকেল গুলো চলছিল। চলতে চলতে আমরা এমন একটি জায়গায় এসে পড়েছিলাম সেই জায়গাটা আমাদের সকলেরই বেশ প্রিয় একটি জায়গা। রাফসানদের এলাকা থেকে কিছু দূরে একটা ব্রিজ রয়েছে। আমি আর ফেরদৌস রাফসানের এলাকায় এলে মাঝে মাঝেই এই ব্রিজের উপর বসে আড্ডা দেই। আমরা তখন ঠিক করলাম যেহেতু ব্রিজ এর কাছে চলে এসেছি তাই আমরা ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে ওদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। ওরা আসুক তখন আমরা একসাথে রওনা দেবো। ব্রিজের উপর পৌঁছে আমাদের মনটা ভালো হয়ে গেলো। কারণ বিকালের সময়টাতে সূর্য অনেকটা হেলে পড়েছিলো। তাছাড়া দারুণ বাতাস বয়ে যাচ্ছিল। ব্রিজের ওখানে সময় কাটানোর জন্য এই ধরনের আবহাওয়া একেবারে পারফেক্ট।
তবে সেখানকার পরিবেশ আমরা খুব বেশিখন উপভোগ করার সুযোগ পায়নি। কারণ আমাদের যে বন্ধুরা পেছনে পড়েছিল তারা অল্পক্ষণের ভিতরে সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলো। যদিও আমার আরো কিছুক্ষণ সেখানে বসে থাকতে ইচ্ছা করছিলো। কিন্তু আমরা অনেকটা দূরে যাব তাই আর সেখানে সময় নষ্ট করিনি। যাইহোক আমরা যখন সিঙ্গারা খেয়ে ফিরে আসছিলাম তখন ওই ব্রিজের কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। ইতিমধ্যে মাগরিবের আজান হয়ে গিয়েছিলো। তখন আমি ফেরদৌস কে বললাম একটি মসজিদের কাছে মোটরসাইকেল থামাতে। তারপর সেখানে মোটরসাইকেল থামিয়ে আমি নামাজ পড়ে নিলাম। নামাজ পড়ার পরে ফেরদৌস আমাকে বলল চলো আমরা কিছুক্ষণ ব্রিজের উপর বসে আড্ডা দেই। তারপর বাড়ি ফিরে যাবো।
ফেরদৌসের প্রস্তাবে আমি সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেলাম। কারণ ফেরদৌস ঠিক আমার মনের কথাটাই বলেছিলো। সেদিন আবহাওয়াটা ছিল আসলেই চমৎকার। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তখনও দারুণ বাতাস বয়ে চলছিলো। আমি যে মসজিদে নামাজ পড়েছিলাম সেখান থেকে ব্রিজের দূরত্ব ছিল একেবারেই সামান্য। যার ফলে আমরা দু এক মিনিটের ভেতরে ব্রিজে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের সাথের বন্ধুরা সবাই চলে গিয়েছে। যাই হোক ওরা যাওয়ার সময় ফেরদৌসকে বলে গিয়েছে ওদের নাকি কি একটা জরুরী কাজ আছে। তাই আমি আর ফেরদৌস আমরা দুই বন্ধু বসে সেই ব্রিজের উপরে আড্ডা দিতে লাগলাম। দীর্ঘ সময় দুই বন্ধু বসে সেখানে গল্প করছিলাম। সময়টা দারুন কাটছিলো। খোলা আকাশের নিচে মৃদু বাতাসে শরীর মন দুটোই জড়িয়ে যাচ্ছিল। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর হঠাৎ ফেরদৌসের বাড়ি থেকে ফোন এলো। ফেরদৌস তখন জানালো তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে। আমিও বললাম চলো তাহলে বাড়ি ফেরা যাক। দারুন কিছু স্মৃতি নিয়ে সেদিনের মতো বাড়ি ফিরে এলাম। কারণ দিনশেষে আমাদের সকলকেই ঘরে ফিরতে হয়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বন্ধুর সাথে আড্ডা দিতে কার না ভালো লাগে, এছাড়াও ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে আপনি চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছেন এবং চমৎকারভাবেই সেই সময়ের অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সত্যি ভাইয়া ব্রিজের উপর সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে। খোলামেলা পরিবেশ আর সুন্দর বাতাস হৃদয় শীতল করে দেয়। বন্ধুরা মিলে সিঙ্গারা খেতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আর ফেরার পথে যেহেতু আরেকটু সময় সেখানে কাটিয়েছেন তাহলে সময়টা বেশ ভালো কেটেছে বোঝাই যাচ্ছে। অনেকদিন পর বন্ধুদের সাথে এভাবে আড্ডা দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।
ভাইয়া আপনি আপনার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপনার প্রিয় স্থানে। আপনার প্রিয় স্থানে কাটানো মুহূর্তটুকু আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে আপনার নামাজ আদায়ের কথাটি জানতে পেরে। আসলে নামাজ আমাদের সকলের জন্য আবশ্যিক একটা ইবাদত। দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।