মেয়ের আবদার রক্ষা করতে বাইরে খেতে যাওয়া।

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


নতুন মাস চলে এসেছে। গত দুদিন থেকে মেয়েটা বাইরে খেতে যাওয়ার আবদার করছে। আমি চেষ্টা করি প্রতি মাসে পরিবার নিয়ে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে। বেশিরভাগ সময় খাওয়া-দাওয়া করা হয় মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তবে এবার মাসের শুরু থেকেই মেয়েটা বাইরে খেতে যাওয়ার আবদার করছে। গতকালকে তাকে কথা দিয়েছিলাম বাইরে খেতে নিয়ে যাবো। কিন্তু গতকাল আমার স্ত্রীর শরীর কিছুটা অসুস্থ থাকায় আর বাইরে যাওয়া হয়নি। তখনই মেয়েকে কথা দিয়েছিলাম আজ দুপুরে আমরা বাইরে খেতে যাবো। তবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না আসলে কোন রেস্টুরেন্টে যাবো। আমাদের শহরটা ছোট হলেও এখন সেখানে প্রচুর রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। অবশ্য বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টে একই রকমের খাবার দাবার পাওয়া যায়। অল্প কিছু রেস্টুরেন্ট আছে যেগুলিতে কিছু ব্যতিক্রমধর্মী খাবার পাওয়া যায়।

IMG_20230903_142003.jpg

ফেসবুকে ফরিদপুর ফুড ব্যাংক পেজে গেলে প্রায়ই দেখা যায় প্রতি সপ্তাহে একটা দুটো নতুন রেস্টুরেন্ট ওপেন হচ্ছে। এমনিভাবে কয়েকদিন আগে আমাদের এলাকার ভেতর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে। রেস্টুরেন্টটি চালু হওয়ার আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম এখানে একদিন পরিবার নিয়ে খেতে আসবো। রেস্টুরেন্টটি আমার বাসার একেবারেই কাছে। আমার বাসা থেকে হেঁটে যেতে সেখানে মাত্র দু-তিন মিনিট সময় লাগে। তবে আমার স্ত্রী আবার এই রেস্টুরেন্টে যেতে খুব একটা আগ্রহী ছিলো না। কারণ তার কথা হচ্ছে রেস্টুরেন্টে যখন আমরা খেতে যাই সেখানে একটু ঘোরাঘুরি করার ও সুযোগ থাকে। কিন্তু বাসার কাছের রেস্টুরেন্টে গেলে আর সেই ঘোরাঘুরিটা হবে না। সে কারণে সে বাসার কাছের রেস্টুরেন্টে যেতে কিছুটা অনাগ্রহী ছিলো।


IMG_20230903_142007.jpg

যাইহোক আজকে দুপুরে আমি আর আমার স্ত্রী মিলে পরিকল্পনা করলাম আমরা বাসা থেকে দূরে কোন একটি রেস্টুরেন্টে যাবো। সেই হিসেবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমি আমার স্ত্রী কে বলেছিলাম আমি যখন যোহরের নামাজ আদায় করতে যাবো তখন তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকবে। আমি নামাজ পড়ে এসে তোমাদেরকে নিয়ে রওনা দেবো। যদিও তার শরীরটা আজকেও খারাপ ছিলো। বাইরে খেতে যাওয়ার প্রতি তার খুব একটা আগ্রহ আজকেও ছিলো না। তারপরেও মেয়ের জিদের কারণে সে রাজি হয়েছে বাইরে খেতে যেতে। যাইহোক পূর্ব পরিকল্পনা মত আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর ভেতর হঠাৎ করে বাসায় চলে এলো আমার এক মামা। আমার এই মামাটি অত্যন্ত ভালো মানুষ। তাকে আমরা সবাই খুব পছন্দ করি। এদিকে মামা হঠাৎ করেই চলে এসেছে। কিন্তু বাইরে খেতে যাব এই কারণে বাসায় দুপুরে কোন রান্নাবান্না হয়নি। তাই আমরা দুজন চিন্তা করলাম মামাকে নিয়ে বাইরে থেকে খেয়ে আসি। মামাকে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা বললে সে প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না। পরে তাকে যখন বললাম রেস্টুরেন্টটি বাসায় একেবারে কাছেই তখন সে রাজি হোলো।


IMG_20230903_143646.jpg

আমরা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ফেলেছিলাম। কারণ ইতিমধ্যে অনেক বেলা হয়ে গিয়েছিলো। তাই চিন্তা করলাম এখন আর দূরে না গিয়ে বাসার কাছের রেস্টুরেন্ট থেকেই খাওয়া-দাওয়াটা সেরে নেই। কারণ এখন দূরের কোন রেস্টুরেন্টে যেতে গেলে আরো অনেক সময় লাগবে। তারপর আমরা তৈরি হয়ে মামাকে নিয়ে সেই রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম। রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখি আমরা বাদে আর কোন কাস্টমার সেখানে নেই। মফস্বল শহরের আবাসিক এলাকার ভেতরে এই ধরনের রেস্টুরেন্ট চলা আসলেই একটু কঠিন। যাইহোক রেস্টুরেন্ট ফাঁকা পেয়ে আমরা একটু খুশি হলাম। তারপর আমরা সেখানে বসে মেনু কার্ড দেখে খাবারের অর্ডার করলাম। তারা জানালো ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগবে খাবার পরিবেশন করতে। যদিও শেষ পর্যন্ত ২০ মিনিটের বেশি সময় লেগেছিলো খাবার পরিবেশন করতে। রেস্টুরেন্ট মালিকের সাথে কথায় কথায় জানতে পারলাম তাদের ব্যবসা নাকি মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে তাদের মূল বেচাকেনা হয় বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত। আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সাথে কথা হতে লাগলো।


যাইহোক এভাবে কথাবার্তার একপর্যায়ে দেখলাম আমাদের টেবিলে খাবার পরিবেশন করেছে। খাবারের চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল খেতে খারাপ হবে না। খাবার মুখে দিয়েও সেই একই অনুভূতি হোলো। খাবারের স্বাদ মোটামুটি ভালোই ছিলো। যেহেতু রেস্টুরেন্টে কোন লোকজন ছিল না তাই আমরা ধীরে সুস্থে আমাদের খাবার শেষ করলাম। আমরা সেখানে বসে অর্ডার করেছিলাম একটি সেট মেনু। সেই সেট মেনুতে ছিলো ফ্রাইড রাইস, বারবিকিউ চিকেন, চাইনিজ ভেজিটেবল, আর পটেটো ওয়েজেস। খাবারগুলো ফ্রেশ থাকার কারণে খেতে বেশ ভালোই লেগেছিলো। আর পরিমাণটাও ছিল মোটামুটি যথেষ্ট। যাই হোক খাওয়া দাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে আমরা বাড়ি চলে আসলাম। এভাবেই পরিবার নিয়ে আজকের খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ হোলো।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 9 months ago 

বাবা মা হিসাবে ছেলেমেয়ের আবদার পূরণ করাই কিন্তু প্রতিটি পিতামাতার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আর সন্তান যেহেতু আমাদের চোখের মনি। তাই সন্তানের কিছু কিছু আবদার তো আমারে কে রাখতেই হয়। বেশ ভালোই করেছেন। মাঝে মাঝে এভাবে পরিবার নিয়ে বাহিরে গেলে কিন্তু মন্দ হয় না। বেশ ভালোই কিন্তু খাওয়া দাওয়া হলো।

মেয়ের আবদার পূরণের জন্য বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন।রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখেন রেস্টুরেন্টে প্রায় ফাকা হয়ে আছে।পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও গেলে ফাকা থাকলে একটু সুবিধাই হয়।অনেক ব্যস্ততার মাঝে পরিবারকে সময় দিচ্ছেন জেনে ভালো লাগলো পরিবারে সকলের জন্য শুভকামনা রইল।

 9 months ago 

মাঝে মাঝে ফ্যামিলি নিয়ে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে গেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। আর আপনার মেয়ের আবদার রাখতে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। বাচ্চাদের মাঝে মাঝে বাইরে নিয়ে গেলে তারা অনেক বেশি খুশি হয়। সত্যি বলতে এ ধরনের রেস্টুরেন্ট বিকেল থেকে জমজমাট হয়। আর এটাও ঠিক বলেছেন আবাসিক এলাকার মধ্যে এ ধরনের হোটেল আসলেই কতটুকু ভালো চলে সেটা মালিকরাই জানেন।মালিক যদিও আপনাকে বলেছে ভালো চলছে। যাই হোক ভালো লাগলে আপনারে পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ।

 9 months ago 

আমাদের শহরের অবস্থা টাও একই। ছোট বড় মিলে অনেক রেস্টুরেন্টে এবং সবার খাবার ভ‍্যারাইটি প্রায় একই। আপনার স্ত্রীর শরীর খারাপ তার উপর আপনার মামার আগমন কিন্তু তারপরও বাইরে খাওয়া টা বাতিল হয়নি বিষয়টি ভালো লাগল। আর খাবার পজেটিভ রিভিউ দেখে ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মেয়ের আবদার রাখার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

ভাইয়া আপনারা রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছেন এবং অনেক খুশি হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। শরীর খুব একটা ভালো ছিল না তারপরেও মেয়ের জেদের কারনে আপনারা বাইরের খাবার খেতে গিয়েছেন। এবং সেখান থেকে সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70434.55
ETH 3761.18
USDT 1.00
SBD 3.84