মেয়ের ফাস্টফুড খাওয়ার আবদার পূরণ।
গতকাল রাতে হঠাৎ একটি দুঃসংবাদ পেয়ে আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। আমার এক আত্মীয় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। রাত ১১ টার দিকে আমি খবর পাওয়ার কিছুক্ষণ পরে হসপিটালে চলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আসতে আসতে প্রায় রাত একটা বেজে গিয়েছিল।বাসায় ফিরে টুকিটাকি কিছু কাজ সেরে ঘুমোতে ঘুমোতে রাত দুটো বেজে গিয়েছিলো। ইদানিং আমার প্রায়ই ঘুম খুব কম হচ্ছে। রাতের বেলায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টার বেশি ঘুমানো হয় না। আবার দিনের বেলাতেও আমি খুব একটা ঘুমাতে পারি না। যার ফলে মাঝে মাঝেই শরীর বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা জানান দিচ্ছে।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার হসপিটালে গিয়েছিলাম তার খবর নিতে। গিয়ে দেখতে পেলাম আমার সেই আত্মীয় এখন কিছুটা ভালো আছে। তারপর বাসায় ফিরে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে ছিলাম। তবে গত রাতে ঘুমের অভাবটা টের পাচ্ছিলাম। মাঝে মাঝেই মনে হচ্ছিল দু চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। এভাবেই বিকাল পর্যন্ত সময় কেটে গেলো। বিকালের দিকে মেয়েকে স্কুলে থেকে আনতে গেলাম। মেয়ে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দেখে তার মা নেই। আমার স্ত্রী তার মায়ের বাড়িতে গিয়েছে একটি কাজে। সন্ধ্যার দিকে তার ফিরে আসার কথা। মেয়ে বাসায় ফিরে যখন দেখতে পেল তার মা বাসায় নেই। সাথে সাথেই বাবার কাছে আবদার করে বসলো বাইরে খেতে যাওয়ার জন্য।
আমি বেশ কিছুদিন আগে তাকে বলেছিলাম শহরে নতুন একটি ফাস্টফুডের দোকান হয়েছে। কথা দিয়েছিলাম সেখানে তাকে একদিন খাওয়াতে নিয়ে যাব। মেয়ে আজকে জিদ ধরে বসলো সে আজকেই সেই ফাস্টফুডের দোকানে যাবে। অগত্যা কি আর করা? আমাকেও রাজি হতে হলো। তারপর দুই বাপ বেটি মিলে রওনা দিলাম। আমরা যে ফাস্টফুড এর দোকানে গিয়েছিলাম সেটির নাম টেস্টি ট্রিট। এটি ঢাকা শহরের একটি ফাস্টফুড চেইন শপ। আমার মনে হয় ঢাকা শহরের এমন কোন এলাকা নেই যেখানে টেস্টি ট্রিটের দু-চারটি আউটলেট নেই। কিন্তু ফরিদপুরে এই প্রথম তারা তাদের আউটলেট ওপেন করেছে।
এমনিতে আমার কাছে এই ফাস্ট ফুডের দোকানের খাবারগুলি মোটামুটি পছন্দের। যাই হোক মেয়েকে নিয়ে সেই ফাস্টফুড এর দোকানে প্রবেশ করলাম। তারপর তাকে যেখানে খাবার ডিসপ্লে করা ছিল সেখানে নিয়ে গিয়ে বললাম এখন তুমি পছন্দ করো কোন খাবার তুমি খেতে চাও? মেয়ে পছন্দ করলো হটডগ এবং একটি পেস্ট্রি। খাবার অর্ডার দিয়ে আমরা সেখানে দুটি সোফা রাখা ছিল তার একটিতে বসলাম। অল্পক্ষণের ভিতরেই তারা খাবার পরিবেশন করলো। অবশ্য আমি আমার জন্য কোন খাবার অর্ডার করিনি। কারণ আজকে দুপুরে একটু ভারি খাবার খাওয়া হয়েছিল। সেজন্য পেটে একেবারে ক্ষুধা ছিল না। সেজন্য আমি আর আমার জন্য কোন খাবার নেইনি।
যাইহোক খাবার পরিবেশনের পর আমার মেয়ে আমাকে বলল তাকে খাইয়ে দিতে। আমি আস্তে আস্তে থেকে খাইয়ে দিতে লাগলাম। প্রথমে সে পেস্ট্রি খেতে চাইল। পেস্ট্রি বেশ কিছুটা খাওয়ানোর পর সে বলল এখন হটডগ খাবো। পেস্ট্রি পুরোটা শেষ না করেই সে হটডগ খাওয়া শুরু করল। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি শেষ করতে পারল না। আসলে পেস্ট্রির সাইজটি ছিল বেশ বড়। আবার হট ডগ এর সাইজও বেশ বড় ছিলো। যার ফলে সে কোনটাই শেষ করতে পারেনি।মেয়ের খাওয়া শেষ হলে আমাকে বলল পানি পিপাসা লেগেছে। তখন আমি সেখান থেকে একটি ড্রিংস অর্ডার করলাম।
টেস্টি ট্রিট প্রাণের একটি প্রতিষ্ঠান। যার ফলে সেখানে সব বেভারেজ আইটেম ছিল প্রাণ কোম্পানির। যদিও প্রাণের জুস ছাড়া অন্য বেভারেজ আইটেম গুলো বাজারে খুব একটা প্রচলিত না। তারপরেও যেহেতু আর অন্য কোন ড্রিংকস নেই তাই প্রাণের একটি কোলা ফ্লেভারের ড্রিঙ্কস নিলাম। যেটার নাম ছিল ম্যাক্স কোলা। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যখন বিল মিটিয়ে বের হয়ে আসবো। তখন সে আরেকটি জিনিস কেনার বায়না ধরলো। অগত্যা কি আর করা? তাকে সেটিও কিনে দিতে হলো।তারপর আমরা দুজনে বাড়ি ফিরে এলাম।
আমার মেয়ে বাইরে খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে। অবশ্য বেশিরভাগ বাচ্চাই এটা পছন্দ করে। ফেরার পথে তার হাসিখুশি মুখ দেখে আমার মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। আসলে সন্তানের মুখে যখন হাসি দেখা যায় তখন বাবা-মার মনটা এমনিতেই খুশিতে ভরে ওঠে। নিজে যখন ছোট ছিলাম তখন এই ব্যাপারগুলো এভাবে বুঝতে পারতাম না। তবে এখন যখন সন্তানের বাবা হয়েছি। এই ব্যাপারগুলি ভালোভাবে বুঝতে পারি। তাই এইসব মুহূর্তে নিজের বাবা-মার কথাও মনে পড়ে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ঝিলটুলি |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার যে আত্মীয় অসুস্থ হসপিটালে ভর্তি আছে তার সুস্থতা কামনা করি। তিনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান। ভাইয়া আপনার মেয়ে ফাস্টফুড খাবে ছোট বাচ্চারা এই ধরনের খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা অনেক সুন্দর ছিল যাই হোক তার পছন্দমত খাবার উপভোগ করেছে জেনে ভালো লাগলো।
ভাইয়া প্রথমে আপনার যে আত্মীয় অসুস্থ তার সুস্থতা কামনা করছি। আশাকরি তিনি ভাল হয়ে যাবেন।আপনি আপনার মেয়েকে কথা দিয়েছিলেন ফাস্ট ফুড খাওয়াবেন নতুন দোকানটাতে নিয়ে।আপনি আপনার কথা রাখলেন।খুব ভাল লাগলো জেনে।মেয়ে হটডগ আর পেস্ট্রি খাবে।এটা ঠিক এত বড় সাইজের দুটোই একই সময় শেষ করা সম্ভব নয়।যাই হোক মেয়ে খেয়ে খুশি হল, জেনে ভাল লাগলো। বাচ্চাদের মুখে হাসি দেখলে মা -বাবার ও তখন খুব ভাল লাগে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
ভাবি বাসায় না থাকায় অবশেষে মেয়ের আবদার পুরন করতে টেস্টি ট্রিটে গেলেন। আমার অবশ্য এখনো টেস্টি ট্রিটে যাওয়া হয়নি। মানে যাওয়ার প্রয়োজন হয় নি। যায়হোক বাবু যদি খুশি থাকে তাহলে আর সমস্যা নেই। আর ঘুমের প্রবেলমটা এদানিং আমারও হচ্ছে। ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারছি না। ছুটির দিন ছাড়া ভালভাবে ঘুম হয় না। ধন্যবাদ ভাইয়া।