পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করা।
সেদিন পদ্মায় গোসল করতে গিয়ে হঠাৎ করে পুরনো অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। বিশেষ করে কলেজ জীবনের স্মৃতি। আমি জীবনে লেখাপড়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি বিভিন্ন স্কুলে পড়েছি। কখনো খুলনা কখনো ঢাকা। তবে অনার্স লেভেল থেকে ফরিদপুরেই ছিলাম। তখন আমার কলেজের একদল বন্ধু তৈরি হয়। এলাকার একদম ছোটবেলার বন্ধু বান্ধব ছাড়া এখন আমার বন্ধুবান্ধব বলতে অনার্স লেভেল এর সেই বন্ধুগুলোই রয়েছে। তাদের সাথে বেশ কয়েকটা বছর দারুণ সময় কাটিয়েছি।
একটা সময় আমাদের বন্ধু-বান্ধবের গ্রুপের ভেতর একটা জিনিস ছিল। সেটা হচ্ছে কেউ বিপথগামী ছিল না। সবাই খেলাধুলা করতে পছন্দ করতো। খারাপ কাজের দিকে কারো কোন ঝোঁক ছিল না। যার ফলে আমাদের সবার ভেতরে বন্ডিং ছিল অনেক বেশি। তাছাড়া আমাদের চিন্তা চেতনায়ও অনেক মিল ছিলো। আমরা সকলেই খেলাধুলা অত্যন্ত পছন্দ করতাম। প্রতি সপ্তাহে আমাদের খেলা লেগেই থাকতো। আর একটা জিনিস ছিলো যেটা আমরা সকলেই পছন্দ করতাম। সেটা হচ্ছে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়া অথবা নদীতে সবাই মিলে গোসল করতে যাওয়া। এটা ছিল আমাদের সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের এক্টিভিটিস। তবে বন্ধুবান্ধবদের পুরো গ্রুপের ভিতরে আমাদের পাঁচ ছয় জনের নদীর প্রতি দুর্বলতা ছিল বেশি। আমরা নদীর পাড়ে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করতাম।
যখনই আড্ডা কোথায় দেয়া যায় এটা নিয়ে কথা হত আমরা কয়েকজন সব সময় নদীর পাড়ে আড্ডা দেয়ার পক্ষে মত দিতাম। আর মাঝে মাঝে পদ্মা নদীতে গোসল করতে যাওয়া তো ছিলই। সেই গোসলও ছিল অনেক আয়োজনের। আমাদের এক বন্ধু ছিল যার নাম ছিলো মিজান। আমরা যখনই পিকনিকে যেতাম বা কোথাও ঘুরতে যেতাম সেইসময়ের খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্বও থাকত মিজানের ঘাড়ে। আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের ভেতর তখন শুধু মিজান চাকরি করতো। যার ফলে অন্য সবার থেকে ওর কাছে টাকা থাকত বেশি। আর ও বন্ধুবান্ধবদের পেছনে টাকা খরচ করতে বেশ পছন্দ করত। যার ফলে আমাদের যে কোন প্রোগ্রাম করতে চাইলে আমরা সেই দায়িত্বটা মিজানের ঘাড়ে দিতাম।
আমরা যখন পদ্মা নদীতে গোসল করতে যেতাম সেই গোসলও ছিল অনেক আয়োজনের। আমরা সাথে বিভিন্ন রকমের খাবার আর ড্রিঙ্কস নিয়ে যেতাম। সেই খাবারের ভিতর থাকত বিভিন্ন রকমের ফল, কেক, ২-১ রকমের স্নাক্স আর ড্রিংকস। আমরা সবাই গোসল করতে নামলে আর সহজে উঠতে চাইতাম না। টানা কয়েক ঘণ্টা গোসল করতাম। দীর্ঘ সময় পানিতে থাকার কারণে সকলের ক্ষুধা লাগতো। এই জন্য খাবারের এত আয়োজন থাকতো। এখন নদীতে গোসল করতে গেলে শুধু পুরনো সেই স্মৃতি মনে পড়ে।
এখনো মাঝে মাঝে আমি বন্ধু ফেরদৌসকে নিয়ে নদীতে গোসল করতে যাই। মাঝে মাঝে আমাদের সাথে আর এক বন্ধু রাফসান যোগ দেয় রাফসান যোগ দিলে আমাদের সদস্য সংখ্যা হয় ৩ আর ও যোগ না দিলে তখন আমরা শুধু দুজন নদীতে গোসল করি। অথচ আগে যখন আমরা নদীতে গোসল করতাম তখন আট দশজন বন্ধু-বান্ধব একসাথে আসতাম। সে এক দারুন মজার ব্যাপার ছিলো। জানি এখন পুরনো স্মৃতি মনে করে আফসোস করে লাভ নেই। কারণ সেই দিনগুলো আর কখনোই ফিরে আসবে না। জীবন ও জীবিকার তাগিদে সেই বন্ধু বান্ধবেরা এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যেহেতু এখন আর সেই সোনালী দিন গুলো ফিরে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করেই দিন কাটায়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করলেন যা পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার বন্ধু মিজান ভাইয়ের সাথে সময় কাটানো কোন ব্লগ পড়া হয়নি।আপনারা সবাই খুব মজা করতেন, সময়কে উপভোগ করতেন জেনে খুব ভালো লাগলো। যাদের খেলার দিকে ঝোক তারা খারাপ কোন সংস্পর্শে যায় না এটা সত্যি কথা।আপনাদের বন্ধুদের এতো সুন্দর আন্তরিকতা সত্যিই মুগ্ধ হই।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। আপনাদের সকলের জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা।
আসলে ভাইয়া ছোটবেলার সময় গুলো সত্যিই খুব আনন্দের ছিলো। যত দিন যাচ্ছে আনন্দ ততই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে। মাঝে মধ্যে পুরনো স্মৃতি মনে পড়লে বেশ ভালোই লাগে। তখন মনের মধ্যে অটোমেটিক ভাবে তুলনা চলে আসে বর্তমান সময় এবং পুরনো সময়ের মধ্যে। আপনারা একসময় সত্যিই দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বন্ধুদের সঙ্গে পুরোনো স্মৃতিগুলো বেশ আনন্দদায়ক।যেগুলো কখনো ভুলার নয়।আর নদীতে স্নান করার মাঝে আলাদা একটা শান্তি কাজ করে মনে।আপনারা বন্ধুরা মিলে নদীতে স্নান করতেন এটা বেশ আনন্দের সময় ছিল ,সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু হারিয়ে যায়।তবুও আপনার এক দুইজন বন্ধু এখনো স্নানে অংশ নেয় জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।