সকাল বেলায় বন্ধুদের সাথে হাঁটাহাঁটি ও নাস্তা করার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রতিদিনের মতো আজও সকালে উঠে আমি হাটতে বের হয়েছিলাম। তবে হাঁটাহাঁটির জন্য বাইরে কোথাও না গিয়ে ছাদে গিয়েছিলাম। ইদানিং আমার এই সমস্যাটা হচ্ছে। সকালে উঠে হাঁটাহাঁটির জন্য বাইরে যেতে ইচ্ছা করে না। তখন আমি ছাদে চলে যায় হাটাহাটি করার জন্য। যদিও বাইরে হাটাহাটি করা আর ছাদে হাঁটাহাঁটি করার ভেতরে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। বাইরে হাঁটাহাঁটি করলে তাতে শরীরের জন্য বেশি উপকার হয়। কারণ ছাদে আপনি খুব দ্রুত হাঁটতে পারবেন না। এজন্য ছাদে হাঁটার থেকে বাইরে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করা ভালো। আমার যখন হাঁটাহাঁটি প্রায় শেষের দিকে তখন ছাদ থেকে নামতে গিয়ে হঠাৎ দেখি পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠলো। পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখি বন্ধু রুবেল ফোন দিয়েছে।

IMG_20230908_064016.jpg

এতো সকালে রুবেলের ফোন পেয়ে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ রুবেল হচ্ছে নিশাচর প্রাণী। সারারাত জেগে থেকে সে ভোর বেলার দিকে ঘুমাতে যায়। যার ফলে এত সকালে রুবেলের ফোনপেয়ে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। ফোন রিসিভ করে ওকে আগে জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার কোন সমস্যা হয়েছে নাকি? তখন ও বলল না কোন সমস্যা হয়নি। আজকে হঠাৎ করে সকালে ঘুম ভেঙে গিয়েছে। আর আমি যেহেতু সকালে হাটাহাটি করি সে কারণে ও আমাকে ফোন দিয়েছে। ও আমাকে ফোন দিয়ে বলল নিচে নেমে আয়। আমি তোর বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমি নিচে নেমে দেখি সত্যিই রুবেল আমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রুবেলের সাথে আমি অনেকবার পরিকল্পনা করেছি সকালে হাটাহাটি করার জন্য। কিন্তু রুবেল কে কখনোই সকালে ঘুম থেকে উঠাতে পারিনি। যার ফলে আমাকে একা একাই হাটাহাটি করতে হয়। দুজনে মিলে হাঁটলে তখন ভালো লাগে। কারণ গল্প করতে করতে হাটাহাটি করলে হাঁটার পরিশ্রমটা বোঝা যায় না।


IMG_20231128_075924.jpg

যাই হোক নিচে নামতেই দুজনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে লাগলাম। কথায় কথায় রুবেল আমাকে জানালো ও আরো দুই বন্ধুকে ফোন দিয়েছে। তাদের ভেতর একজন ঘুমাচ্ছিল তাই সে হয়তো ফোন ধরেনি। আর দ্বিতীয় জন জানিয়েছে সে একটু পরে বের হবে। যাইহোক আমরা দুই বন্ধু বাসার সামনে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি সেই বন্ধু ফোন দিয়েছে। তখন তাকে বললাম আমরা সামনের মোড়ে রয়েছি দ্রুত সেখানে চলে আয়। কয়েক মিনিটের ভেতরেই আমাদের সেই বন্ধু এসে আমাদের সাথে যোগ দিলো। যেহেতু সকালের সময় তাই আমরা তিনজন শহরের কোন হোটেলের সকালের নাস্তা ভালো সেটা নিয়ে আলাপ করছিলাম। হঠাৎ করে বন্ধু রুবেল প্রস্তাব দিলো চল তিনজনে গিয়ে কোথা থেকে নাস্তা করে আসি।


IMG_20231128_074936.jpg

প্রস্তাবটা আমাদের সবারই পছন্দ হলো। তখন আমি আর রুবেল বাসায় ঢুকলাম কাপড়চোপড় পরিবর্তন করার জন্য। কাপড় পাল্টে দুজন বাইরে এসে তারপর তিনজন মিলে রওনা দিলাম শহরের অত্যন্ত পুরাতন একটি হোটেলের দেশে উদ্দেশ্যে। সেই হোটেলের নাম ঠাকুরের হোটেল। সেই হোটেলটির অবস্থান ফরিদপুর কোর্ট চত্বরের পাশে। সেখানে নাস্তার আইটেম খুবই সীমিত। তবে সেই খাবারগুলো দারুন স্বাদের। শহরের স্থানীয় সবাই এই হোটেলটা চেনে তাদের সকালের নাস্তার জন্য। সেখানে নাস্তায় পাওয়া যায় লুচি, সবজি দিয়ে এক ধরনের ডাল রান্না করা আর সাথে পানতোয়া। এই নাস্তাটা আমার খুবই পছন্দের। যাইহোক বাসা থেকে বের হয়ে তিন বন্ধু হেঁটে সেই হোটেলের দিকে যেতে লাগলাম। হোটেলটির দূরত্ব আমাদের এলাকা থেকে দেড় কিলোমিটার এর মতো। যার ফলে আর রিকশা না নিয়ে হেঁটে যেতে লাগলাম। যাতে করে একসাথে দুই কাজ হয়ে যায়। সকালের হাঁটাও হলো আবার নাস্তা ও করা হোলো।


IMG_20230908_063920.jpg

যাইহোক ঠাকুরের হোটেলে আমরা অল্প সময়ের ভেতরেই পৌছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে হাত ধুয়ে বসে তিনজনের জন্য নাস্তা অর্ডার করলাম। সাথে সাথেই আমাদের সামনে চলে এলো গরম গরম লুচি সাথে ডাউল আর মিষ্টি। নাস্তা সামনে আসতেই তিনজনে খাওয়া শুরু করে দিলাম। কিছু কিছুটা খাওয়ার পরে মনে পড়ল ছবি তোলা হয়নি। তখন আমি পকেট থেকে মোবাইল বের করে কয়েকটি ছবি তুললাম। তারপর তিন বন্ধু মিলে আয়েশ করে নাস্তা করতে লাগলাম। যদিও আমার কোলেস্টেরল কিছুটা বেশি রয়েছে তাও সকালে ঠাকুরের দোকানের লুচি পেয়ে সে কথা বেমালুম ভুলে গেলাম। বেশ কয়েকটা লুচি সহযোগে নাস্তা শেষ করলাম। নাস্তা শেষ করার পর যখন আমি বিল দিতে যাবো তার আগে দেখি বন্ধু রুবেল বিল পরিশোধ করে দিয়েছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও বিল দিতে পারলাম না। নাস্তা করা শেষ হলে আমরা বাড়ির দিকে আগাতে লাগলাম। তবে কিছুদূর আগানোর পরে একটি চায়ের দোকান দেখতে পেয়ে সেখান থেকে চা খেলাম। তারপর ধীরেসুস্থে তিন জনে বাড়ি ফিরে চললাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন বাইরে হাঁটাহাঁটি আর ছাদে হাঁটাহাঁটি তে বিস্তর পার্থক্য।স্বল্প জায়গায় হাঁটলে সেইভাবে সুবিধা হয়না।অন্যদিকে রাস্তায় হাঁটলে সেটা বেশ ভালো।বন্ধুরা মিলে হাঁটাহাঁটি করলেন সকালে নাস্তা করলেন চা পান করলেন তারপর বাড়ি ফিরে এলেন।আপনার পোস্টটি ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

সকালে হাঁটাহাঁটি করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তবে বাসার ছাঁদের চেয়ে বাহিরে হাঁটাহাঁটি করা বেশি ভালো। প্রথমত সকালের পরিবেশটা বেশ ভালোভাবে উপভোগ করা যায়, দ্বিতীয়ত খুব দ্রুত হেঁটে শরীর থেকে ঘাম জড়ানো যায়। যাইহোক তিন বন্ধু মিলে ঠাকুরের হোটেলে গিয়ে একেবারে জমিয়ে নাস্তা করলেন। সকালে হাঁটাহাঁটি করে বাহিরে নাস্তা করতে আসলেই খুব ভালো লাগে। কয়েকদিন আগে যখন শীতকালীন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা চলছিল, তখন সকালে হাঁটাহাঁটি করে হোটেলে নাস্তা করতে দারুণ লেগেছিল আমার কাছে। যাইহোক সবমিলিয়ে সকাল সকাল দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন। এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 64937.78
ETH 3242.80
USDT 1.00
SBD 2.63