তিন বন্ধুর পুরান ঢাকা অভিযান (দ্বিতীয় পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


লালবাগ কেল্লাতে এর আগেও আমি একবার এসেছিলাম। তবে তখন প্রচন্ড গরম থাকার কারণে সেখানকার সৌন্দর্য খুব একটা ভালোভাবে উপভোগ করতে পারিনি। তবে সেদিন যখন আমরা তিন বন্ধু মিলে প্রবেশ করলাম তখন আবহাওয়া মোটামুটি ভালই ছিলো। যেহেতু ছুটির দিন ছিলো তাই সেখানে ছিলো রীতিমতো উপচে পড়া ভিড়। তার ভেতরেই আমরা লালবাগ কেল্লার সব জায়গায় ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম। অবশ্য এখন ডিসেম্বর মাস হলেও ঢাকা শহরে এখনও শীতের দেখা নেই। যার ফলে লালবাগ কেল্লার ভেতরে কিছুটা গরম লাগছিলো। ঢাকার পুরাতন ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিংগুলোর ভেতরে লালবাগ কেল্লাটা কিছুটা ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বিশেষ করে লালবাগ কেল্লার ভেতরের অংশটা বেশ সুন্দর পরিপাটি করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হয়েছে।

IMG_20231201_152418.jpg

IMG_20231201_152444.jpg

সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এসেছে লালবাগ কেল্লার সৌন্দর্য দেখার জন্য। আমরাও তিন বন্ধু ঘুরেফিরে একে একে সব কিছু দেখতে লাগলাম। তবে ইদানিং যে সমস্যাটা হয়েছে মানুষের ছবি তোলারআগ্রহের কারণে যে কোন জায়গায় গিয়ে ঘুরে ফিরে দেখাটা বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। কারণ সবার হাতেই ক্যামেরা সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। যেখানেই যেতে চায় সেখানেই দেখা যায় কেউ না কেউ বিশেষ ভঙ্গিমায় ছবি তুলছে। আর আমাদের চলাফেরার কারণে খেয়াল করলাম অনেকেই বিরক্ত হচ্ছে। আসলে যে কোন পাবলিক প্লেসে নিজের ব্যক্তিগত ছবি তোলার ক্ষেত্রে মানুষের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ দর্শনীয় স্থানগুলোতে প্রচুর মানুষজন যাবে। তারা সবাই সেখানে ঘুরেফিরে দেখার জন্যই যাবে। এখন আপনি যদি সেই জায়গাটাকে নিজের ব্যক্তিগত ফটোসেশনের জায়গা বানিয়ে ফেলেন তাহলে সেটা অন্যের বিরক্তির কারণ হয়। কিন্তু এই বোধটা বেশিরভাগ মানুষের ভেতরে নেই দেখলাম।


IMG_20231201_152440.jpg

IMG_20231201_152433.jpg

যাইহোক কি আর করা? যেহেতু মানুষের কমনসেন্সে ঘাটতি রয়েছে তাই এগুলোর প্রতি মনোযোগ না দিয়ে আমরা নিজেদের মতো করে সবকিছু ঘুরেফিরে দেখতে লাগলাম। লালবাগ কেল্লার ভেতরে বেশ কয়েকটি পানির ফোয়ারা ছিলো একসময়। এখন দেখলাম সেখানে কোন পানি নেই। এ ধরনের দর্শনীয় স্থানের ফোয়ারা গুলি সব সময় চালু রাখা উচিত। কারণ এগুলো দর্শনার্থীদের আরো বেশি করে আকর্ষণ করে। তবে লালবাগ কেল্লার ভেতরে আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছে যখন উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়েছি। তখন সাজিয়ে গুছিয়ে পরিপাটি করে রাখা বাগানগুলো দেখে। একটা জিনিস খেয়াল করে কিছুটা অবাক হলাম। দেখলাম আশেপাশের এলাকা থেকেও প্রচুর মানুষজন এখানে এসেছে সময় কাটাতে। তাদের কথাবার্তা থেকে বিষয়টা বুঝতে পারছিলাম।


IMG_20231201_154702.jpg

IMG_20231201_154547.jpg

অবশ্য তাদের জন্য এখানে আসাটা অস্বাভাবিক কিছু না। কারণ পুরাতন ঢাকায় এখন খোলা জায়গা নেই বললেই চলে। অত্যন্ত জনবহুল এবং ঘিঞ্জি একটা এলাকায় পরিণত হয়েছে পুরো পুরাতন ঢাকা। যার ফলে হয়তো সপ্তাহের একটা দিন একটু খোলামেলা জায়গায় সময় কাটানোর জন্যই তারা এখানে এসেছে। কেউ এসেছে পুরো পরিবার নিয়ে, আবার কেউ এসেছে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে, আবার কেউ আত্মীয়-স্বজন নিয়েও এসেছে। এভাবে সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম এবং ছবি তুললাম। একটা সময় গিয়ে মনে হল এখন যদি বের না হই তাহলে আহসান মঞ্জিলে আর যাওয়া হবে না। তখন আমরা তিন বন্ধু লালবাগ কেল্লা থেকে বেরিয়ে গেলাম। তবে বের হয়ে যখনই আহসান মঞ্জিলে যাওয়ার জন্য রিক্সা ঠিক করতে গেলাম তখনই দেখলাম রাস্তাঘাটে ভয়াবহ জ্যাম। কিছুক্ষণ আমরা রিক্সা ঠিক করার চেষ্টা করে পরে হাল ছেড়ে দিলাম। কারণ ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। বুঝতে পারলাম আজকে আর আহসান মঞ্জিলে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই আমরা আমাদের পরবর্তী গন্তব্য নাজিরা বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভুরিভোজ করা। সেই গল্প থাকবে পরের পর্বে। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

লালবাগ কেল্লা তে ঘুরাঘুরি করতে বেশ ভালোই লাগে। আমিও মাঝেমধ্যে সেখানে ঘুরতে যাই। সেখানকার পানির ফোয়ারা গুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের। আপনারা বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন এবং বেশ কিছু চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন। সময় থাকলে আহসান মঞ্জিলে গিয়ে ঘুরাঘুরি করতে পারতেন। যাইহোক নাজিরা বাজারে গিয়ে কি কি খাওয়া দাওয়া করলেন, সেটা তাহলে পরবর্তী পর্বে জানতে পারবো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago (edited)

জীবনে একবার সৌভাগ্য হয়েছিল লালবাগ কেল্লা ঘুরে দেখার। বাপরে বাপ কি যে কষ্ট সেখানে যাওয়া। তবে সব কষ্ট দূর হয়ে গিয়েছিল ভিতরের সৌন্দর্য দেখে। তবে সেখানে কিন্তু মানুষের ভিড়ে চলা ফেরা করাই দায়। আর ফটোসেশনের কথা নাই বা বললাম। তবে আপনাদের ঘুরাফিরার গল্প পড়তে বেশ ভালোই লাগছে। নাজিরা বাজারে কি কি খেলেন সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 75924.44
ETH 2901.21
USDT 1.00
SBD 2.67