ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।
এই মেলা শুরুর আগে থেকেই শহরের মানুষের ভেতর মেলা নিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করে। প্রতিবছর আমি একাধিকবার এই মেলায় যেয়ে থাকি। কখনো বন্ধু-বান্ধবদের সাথে, কখনো এলাকার ভাই ব্রাদারদের সাথে, আবার কখনো পরিবারের সাথে। তবে এবার বিভিন্ন সমস্যার কারণে মেলায় গিয়েছিলাম শুধু একবার। আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে মেলা ভ্রমণের ছবি এবং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এবার একদিনই মেলায় গিয়েছিলাম সেটা আবার পরিবার নিয়ে। পরিবার নিয়ে আমি যখনই মেলায় যাই তখন চেষ্টা করি একটু আগে মেলায় যেতে। কারণ বিকালের সময় থেকে শুরু করে সন্ধ্যার দিকে মেলায় প্রচুর ভিড় হয়। সেই ভিড়ের ভেতরে মেলাটা ভালোভাবে ঘুরেফিরে দেখা যায় না। স্টল গুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে সেই কারণে জিনিসপত্রগুলো নেড়েচেড়ে দেখতে সমস্যা হয়। তাছাড়া আরো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা তৈরি হয়। সেই কারণে আমি পরিবার নিয়ে মেলায় গেলে সবসময় চেষ্টা করি তিনটা সাড়ে তিনটার দিকে মেলায় যেতে।
এই সময়ে মেলার দোকানগুলো সব চালু হয়ে যায় আবার লোকজনও খুব একটা বেশি থাকে না। যার ফলে পুরো মেলাটা খুব ভালোভাবে ঘুরেফিরে দেখা যায়। যেহেতু আগে থেকেই মেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম তাই পরিবারের লোকজন তৈরি হয়েই ছিলো। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ পরে আমরা বাসা থেকে রওনা দিলাম। আমার বাড়ি থেকে মেলার দূরত্ব তিন কিলোমিটার মতো হবে। যার ফলে ইঞ্জিন চালিত রিক্সায় সেখানে যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে নি। মেলার গেটের সামনে রিকশা থেকে নেমে প্রথমে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। তারপর আমরা ঠিক করলাম মেলার ভিতর ঢুকে একদিক থেকে সবগুলো স্টল দেখতে থাকবো। সে হিসেবে মেলায় প্রবেশ করে প্রথমে আমরা ডান দিক থেকে স্টলগুলো দেখতে লাগলাম। এই মেলায় একসময় হাতের তৈরি অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যেতো যেগুলো গ্রামীন ঐতিহ্যের অংশ। কিন্তু বর্তমান মেলাগুলোতে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ছাড়া আর তেমন কিছুই পাওয়া যায় না। প্লাস্টিকের খেলনা এবং চাইনিজ প্লাস্টিকের জিনিসপত্রে পুরো মেলাটা ভরা থাকে। এখন অবশ্য পুরো দেশের সবগুলো মেলার চরিত্র প্রায় একই রকম হয়ে গিয়েছে।
একটা সময় মেলায় সার্কাস, পুতুল নাচ এরকম আরো নানা আয়োজন থাকতো। তবে এবার মেলায় গিয়ে দেখলাম সার্কাস বাদে অন্য আর তেমন কিছু নেই। তবে বাচ্চাদের জন্য কিছু রাইড এর ব্যবস্থা ছিলো। অবশ্য সেগুলোর অবস্থা দেখে আমার কাছে খুব একটা ভালো মনে হয়নি। কিছু কিছু রাইড দেখে মনে হয়েছিলো এগুলোতে চড়া কিছুটা অনিরাপদ। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর আমাদের এই মেলাটাতে সবচাইতে বড় যে সমস্যা থাকে সেটা হচ্ছে খাবারের জন্য কোন ভালো দোকান পাওয়া যায় না। মেলায় যে সমস্ত লোকজন খাবারের স্টল দেয় তারা বেশিরভাগই বাইরে থেকে আসে। শহরের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় স্টল নেয় না। যার ফলে মেলায় অবস্থিত খাবারের স্টল গুলোর খাবারের মান থাকে খুব খারাপ। সেটাও আবার উচ্চমূল্যে কিনে খেতে হয়। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে যে কোন বিষয়ের মেলা হোক না কেন সেই মেলাগুলোতে মূলত একদম বিকেলের দিকে প্রচুর পরিমাণে জ্যাম থাকে যার কারণে আপনি তিনটার দিকে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত টা ঠিকই নিয়েছিলেন। আর মেলার মধ্যে বর্তমান সময়ে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র দিয়েই ভর্তি। আর মেলার মধ্যে যেকোনো জিনিসের দাম একদম আকাশ ছুই ছুই। পরিবারকে সাথে নিয়ে যেয়ে ভালোই করেছেন ভাইয়া। কারণ পরিবারকে সাথে নিয়ে এরকম মেলা উৎসবে ঘুরতে আসলেই অনেক ভালো লাগে।
আসলেই ভাই পরিবার নিয়ে মেলায় গেলে দুপুরের পর অর্থাৎ ৩ টার দিকে গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ সন্ধ্যার পর যেকোনো মেলায় প্রচুর ভিড় হয়ে থাকে। তখন সবদিক দিয়েই সমস্যা হয়ে যায়। আমিও সবসময় চেষ্টা করি এমন সময়ে পরিবার নিয়ে মেলায় যেতে। যাইহোক মেলায় ঘুরাঘুরি করতে ভালো লাগে, তবে আগের মতো ততোটা ভালো লাগে না। মেলায় এখন হস্তশিল্প দেখা যায় না বললেই চলে। সাধারণত আমরা মার্কেটে যেসব জিনিসপত্র সারা বছর দেখি,সেগুলোই এখন মেলায় বিক্রি করা হয়। তেমন স্পেশাল কিছু খুবই কম পাওয়া যায়। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এবং পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
প্রতিবার মেলায় সবার সাথে অনেকবার গেলেও এবার মাত্র একবার গিয়েছিলেন।মেলায় বিকেলের দিকে গেলেই ভালো।কারণ সন্ধ্যার দিকে আসলেই প্রচুর ভিড় যেটা সমস্যার কারণ।এবার মেলার গেট টি দারুন করেছে।আমার কয়েক বছর আগে যাওয়া হয়েছিল এই মেলায়।খুব বিশেষ আকর্ষণ নেই বলে মেলায় যাওয়া হয়না আমার।ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এখনকার মেলা গুলো আসলে এমন হয়ে গেছে যে, পুরোটাই ব্যবসা ক্ষেত্র। আগের যে মেলাগুলো হতো সেখানে মাটির তৈরি বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জিনিস পাওয়া যেত, তবে এখন সব কিছু প্লাস্টিকে রূপান্তরিত হয়ে গেছে, এটা সত্যি কথা দাদা। আর মেলার যে রাইড গুলোর কথা বলছেন, ওইগুলোতে উঠা এমনিতেই অনেক বেশি রিস্কি হয়ে থাকে। তাছাড়া প্রায় সব মেলার খাবার গুলোই অস্বাস্থ্যকর ভাবে তৈরি হয় যা আমাদের জন্য ভালো না। যাইহোক, আপনি যেহেতু পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে গেছিলেন তার মানে ভালো সময়ই কাটিয়েছিলেন, এটাই আশা করছি দাদা।