বিপদে পড়ে রান্না করার অভিজ্ঞতা।
দীর্ঘদিন বৃষ্টিবিহীন থাকার পর গতকাল বৃষ্টি হয়েছে। এত দিন পর সেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পেয়ে মনটা ভালো হয়ে গিয়েছে। তবে মনটা ভালো হলেও গত দুদিন যাবত কিছুটা ঝামেলার ভেতর আছি। গত দুদিন থেকে আমার স্ত্রী কিছুটা অসুস্থ। যদিও তেমন গুরুতর কোন কিছু না। এসিডিটির সমস্যা হয়েছে তার। তবে এসিডিটির সমস্যা বাড়লে সে অনেকটা কাহিল হয়ে পড়ে। এবারও সেটাই হয়েছে। বাসায় আমরা মানুষ সর্বসাকুল্যে তিনজন। আমি আমার স্ত্রী আর আমাদের ছোট্ট একটা মেয়ে। অল্প লোক থাকার ফলে যে কোন একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে আরেকজনের উপর কিছুটা চাপ পড়ে। তবে আমি অসুস্থ হলে খুব একটা সমস্যা হয় না। কারণ আমার স্ত্রী সবকিছু ম্যানেজ করে নেয়। তবে ও অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি বেকায়দায় পড়ে যায়। মেয়েদের জীবনের এই জিনিসটা আমাকে আসলেই অবাক করে। যতো যাই হোক তাকে পরিবারের খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হয়।
যাই হোক বেকায়দায় পড়লেও কিছু করার নেই। যেহেতু সে অসুস্থ তাই আমি চেষ্টা করেছি তাকে কিছুটা সাপোর্ট দেয়ার। তার কাজগুলো কিছুটা করে করে দেয়ার চেষ্টা করছি। সেই কারণেই গত দুদিন আমি কয়েকবার রান্নাঘরে গিয়েছি। আমি খেতে অত্যন্ত ভালবাসি। তবে রান্না করাটা আমার খুব একটা প্রিয় কাজ না। তবে প্রিয় কাজ না হলেও মানুষকে অনেক সময় অনেক কাজ করতে হয়। আমাকেও এই দুদিন তেমন কিছু কাজ করতে হয়েছে। যদিও আমার মন মানসিকতা আগে থেকে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেমন রান্না ঘরে কখনো ঢুকতেই চাইতাম না। তবে এখন মাঝে মাঝে মনে হয় দু-একটা জিনিস রান্না করলে মন্দ হয় না। তাতে আমার নিজের মনেও এক ধরনের তৃপ্তি আসে। আর আমার স্ত্রীর ও কিছুটা রেস্ট নেয়া হয়।
যদিও এই সমস্ত চিন্তাভাবনা তেমন একটা বাস্তবায়ন করা হয় না। তবে এবার তার অসুখের উপলক্ষে আমি রান্নাবান্নার কিছুটা চেষ্টা করেছিলাম। গতকাল দুপুরে একটা মাছের তরকারি রান্না করেছিলাম আমি। সেই রেসিপি অন্য আরেকদিন শেয়ার করব। আজ সকালে আমি ঘুম থেকে যখন উঠি তখন দেখি ওর শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাই আমি ওকে বললাম না তুমি হালকা কিছু খেয়ে নাও। আমি নিজের নাস্তা নিজেই করে খেতে পারবো। কথাটা বলেই তো বিপদে পড়ে গেলাম। এখন চিন্তা করতে লাগলাম কি করা যায়? একবার চিন্তা করেছিলাম বাইরে থেকে গিয়ে নাস্তা করে আসি। কিন্তু পরবর্তীতে ভাবতে লাগলাম গতকাল একবার বাইরে থেকে নাস্তা করে এসেছি। তাতে আমার এসিডিটির সমস্যা ফেস করতে হয়েছে। আজকে আবার যদি বাইরে খেতে যাই তাহলে এসিডিটি আরো বাড়বে।
এই কথা চিন্তা করে বাইরে খেতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ করে দিলাম। পরক্ষণে চিন্তা করতে লাগলাম তাহলে কি দিয়ে নাস্তা করা যায়? আমার পক্ষে রুটি পরোটা বানানো খুবই অসম্ভব একটা ব্যাপার। তাই আমি ফ্রিজে খুঁজতে লাগলাম এমন কোন কিছু যেটা সহজে প্রসেস করে নাস্তা করা যাবে। হঠাৎ করে আমার চোখে পড়ল একদিন আগেই রান্না করা খিচুড়ির দিকে। খিচুড়ি আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার। সেটা গরম খিচুড়ি হোক অথবা আগের দিনের ফ্রিজে রেখে দেয়া খিচুড়ি। যাইহোক ফ্রিজে খোঁজাখুঁজির কিছুক্ষণের ভিতরে খিচুড়ি পেয়ে গেলাম যেটা আগের দিন খিচুড়ি খাওয়ার পরে বেঁচে গিয়েছিলো। গরম খিচুড়ি ছাড়াও আমার কাছে খিচুড়ির আরো একটা প্রিপারেশন ভালো লাগে সেটা হচ্ছে মরিচ পেঁয়াজ দিয়ে খিচুড়ি ভাজি করা। এই খাবারটা আমার অত্যন্ত পছন্দের।
তাই চিন্তা করলাম যেহেতু ফ্রিজে খিচুড়ি রয়েছে তাই আমার প্রিয় রেসিপিটি তৈরি করি। মেনু ঠিক করার পর দ্রুত হাতে সবকিছু গোছাতে লাগলাম। এই খাবারটি তৈরি করা যেমন সহজ খেতে তেমনি সুস্বাদু। এই রান্নাটি করতে খুব সামান্য উপকরণ লাগে। শুধু পেঁয়াজ কুচি, আর কাঁচা মরিচ। ফ্রিজ থেকে সবকিছু বের করে আমি রান্না ঘরে গেলাম। তারপর একটি কড়াই নিয়ে সেটি চুলায় চড়িয়ে দিলাম। কড়াই সামান্য গরম হলে তার ভেতরে সামান্য সয়াবিন তেল দিয়ে দিলাম। তেলটা গরম হয়ে এলে তার ভিতরে পেঁয়াজ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিলাম। পেঁয়াজ কিছুক্ষণ ভাজার পরে কড়াইয়ের ভেতর কাঁচামরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভেজে নেই।
তারপর কড়াইয়ের ভেতরে ফ্রিজ থেকে বের করা খিচুড়ি গুলো ঢেলে দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে ভাজতে থাকলাম। এভাবে তিন চার মিনিট ভাজলে হয়ে যাবে মজাদার খিচুড়ি ভাজা। অবশ্য সাথে একটি ডিম ভাজি হলে খাবারটা একেবারে জমে যাবে। তাই আমি অন্য আরেকটি চুলায় একটি ডিম ভেজে নিলাম। সেই সাথে খাওয়ার সময় নিয়েছিলাম এক টুকরো আমের আচার। সবকিছু মিলিয়ে আজকে সকালের নাস্তাটা আসলেই দারুন হয়েছিল। এটা কিন্তু কোন রেসিপি পোস্ট না। আপনাদের সাথে আমি আমার রান্না করার অভিজ্ঞতাটা ভাগ করে নিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
খুব দ্রুত ভাবির সুস্থতা কামনা করছি।অসুস্থ হওয়ায় আপনি নিজের হাতে রান্না করেছেন। আসলেই ভাবি ভাগ্যবতী।আপনার ভাই তো কখনো আমাকে একটা ডিমও ভেজে খাওয়ায়নি।🤭যখন অসুস্থ হতাম বাহির থেকে খাবার কিনে আনা হতো। আমার আবার বাহিরের খাবার ভালো লাগে না তখন দেখা যেত অসুস্থ শরীর নিয়েই রান্না করতাম। যাইহোক ভাবি অসুস্থ হওয়ায় আপনার রান্না করার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া।
আপনিও অনেক ভাগ্যবতী ভাবী। শুভ ভাই আপনাকে অনেক ভালোবাসে। তবে একেকজনের ভালোবাসার প্রকাশ একেক রকম। তবে রান্না করে সেদিন ভালোই লেগেছিলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমেই সুমা আপুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আসলে আমাদের সবার উচিত প্রিয় মানুষটিকে বিভিন্ন কাজে যতটা সম্ভব সাহায্য করা। তাহলে প্রিয় মানুষ খুব খুশি হয়। আপু অসুস্থ হওয়ায় আপনি রান্না করেছেন, দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। বাহিরের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম ঠিক বলেছেন। কাজ কর্মে সহযোগিতা করলে আসলেই প্রিয় মানুষটি অনেক খুশি হয়।
একদম ঠিক বলছেন ভাইয়া সংসারে যখন মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন খুব ঝামেলায় পড়তে হয় বিশেষ করে ছোট বাচ্চা থাকলে। আপনি তো মাঝে মাঝে হেল্প করেন শুনে অনেক ভালো লাগলো। যদি কাজের মধ্যে স্ত্রীদেরকে হাজবেন্ডেরা একটু হেল্প করে তাহলে অনেক বেশি ভালো লাগে তখন। যাক অবশেষে আপনি বেশ মজার একটি খিচুড়ি রান্না পেয়ে গেলেন। এমন ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশে এমন খাবার খেতে দারুন লাগে। আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল আপু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন সেই কামনা করি।
আসলে ভাইয়া আমাদের আগে থেকেই সব ধরনের কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করে রাখা উচিত। বিশেষ করে রান্না করার কাজটি মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও শেখা উচিত। আপনার স্ত্রী অসুস্থ থাকার কারণে আপনাকে রান্নার কাজ সুসম্পন্ন করতে হয়েছে। আর এই রান্নার কাজ করতে গিয়ে আপনি দারুন একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছেন। রান্না করার ক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতার কথাগুলো জেনে নিশ্চয় অনেকেই আগে থেকে রান্নার কাজ শেখার জন্য আগ্রহী হবে।