এবারের ঈদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা।
ঈদের কেনাকাটা সবসময়ই একটি আনন্দময় অভিজ্ঞতা। তবে দিন যাচ্ছে আর কেনাকাটায় আনন্দের পরিমাণ কমে আসছে। এখন আমি কেনাকাটা করতে গেলে চেষ্টা করি যত দ্রুত সম্ভব কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরে আসতে। তবে এবার ঈদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম। ১০ রোজার পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রচন্ড গরম। এমনকি মহিলারা পর্যন্ত মার্কেটে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। অন্যান্য বার দেখা যায় মহিলাদের জন্য মার্কেটে ঢোকা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কিন্তু এবার গরমের তীব্রতা বেশি থাকায় অনেকেরই কেনাকাটায় আগ্রহ কমে গিয়েছিল। আমিও আমার পরিবার চিন্তা করছিলাম গরম কমলে তারপরে কেনাকাটা করতে যাবো। কিন্তু ভালো আবহাওয়ার আশায় বসে থাকতে থাকতে এদিকে রোজা প্রায় শেষ হয়ে এলো। তাই ২৮ রোজায় গিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে। তবে আমি যাওয়ার আগে আমার স্ত্রীকে শর্ত দিয়েছিলাম এমন কোন মার্কেটে যাওয়া যাবে না যেখানে এসি নেই। কারণ এই গরমে বাচ্চা সাথে নিয়ে ঘোরাফেরা করা একেবারেই অসম্ভব। যদিও আমার স্ত্রী তার বেশিরভাগ কেনাকাটা অনলাইন থেকে শেষ করে ফেলেছিল। বাকি ছিল আমার আর মেয়ের কেনাকাটা করা। আর স্ত্রীর স্যান্ডেল কেনা বাকি ছিল।
তাই বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমেই গিয়েছিলাম বাটা শোরুমে। কারণ সেখানে কয়েকদিন আগে আমি আমার মেয়ের জন্য স্যান্ডেল পছন্দ করেছিলাম। বাটার শোরুমে যেহেতু এয়ার কন্ডিশন আছে তাই সেখানে কেনাকাটা করতে কোন সমস্যা হয়নি। অবশ্য সেখানে বেশি সময়ও কাটাতে হয়নি। কারণ আমি যে স্যান্ডেলটি পছন্দ করেছিলাম আমার মেয়ের জন্য। সেখানে গিয়ে আমার মেয়েরও সেই স্যান্ডেলটা বেশ পছন্দ হয়েছিল। তাই আমার মেয়ের পায়ে স্যান্ডেলটি পরিয়ে ট্রায়াল দেয়ার পরে আমরা স্যান্ডেলটি কিনে নিলাম। তারপর আমার স্ত্রীকে বললাম তার জন্য স্যান্ডেল দেখতে। কিন্তু বাটার স্যান্ডেলের ডিজাইন তার আগে থেকেই অপছন্দ। সেজন্য সে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে দেখার পর জানালো তার কোন স্যান্ডেল পছন্দ হচ্ছে না।
তারপর সেখান থেকে বের হয়ে আমরা গেলাম স্টেপের শোরুমে। স্টেপের শোরুম গুলো বেশ ছোট হয়ে থাকে। তবে তাদের সেন্ডেলগুলো পড়ে বেশ আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু স্টেপের শোরুমে গিয়ে দেখি সেখানে এসি বন্ধ করে রেখেছে। জিজ্ঞেস করলে তারা জানালো ইলেকট্রিক সিটি নেই এজন্য এসি বন্ধ আছে। যাইহোক আমি আমার স্ত্রীকে তাড়া দিলাম তাড়াতাড়ি পছন্দ করার জন্য। সে কিছুক্ষণ দেখে একটা স্যান্ডেল পছন্দ করলো। তারপর দ্রুত সেই স্যান্ডেলটি কিনে আমরা অন্য একটি মার্কেটে গেলাম আমার মেয়ের জামা কেনার জন্য। সেখানে দু-তিন দোকান ঘোরার পরে আমার মেয়ের জন্য একটি জামা কেনা হলো। এখন বাকি ছিল শুধু আমার কেনাকাটা করার।
কিন্তু আমার আর মার্কেটে তখন থাকতে ইচ্ছা করছিল না। তাই তাদেরকে বললাম চলো এখন বাড়িতে যাই। আমি পরে একসময় এসে আমার কেনাকাটা করে যাবো। অবশ্য আমার কেনাকাটা করার জন্য আমার স্ত্রী আমাকে তিন হাজার টাকা দিয়েছিল। যাইহোক তখনকার মত তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গেলাম। কারণ আমরা মেয়ের জামা কিনেছিলাম যে মার্কেট থেকে। সেই মার্কেটটি এসি মার্কেট হওয়ার পরও তাদের এসি বন্ধ করে রেখেছিল। জিজ্ঞেস করলে কারণ হিসেবে তারা বলল কেবল মার্কেট খুলেছি এজন্য এখনো এসি চালু করা হয়নি। আমি বুদ্ধি করে পরিবার নিয়ে একটু সকাল সকাল মার্কেটে গিয়েছিলাম যেনো মানুষজনের ভিড় বাড়ার আগেই আমরা কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারি। বাড়ি ফিরে দেখি ইতিমধ্যে ঘেমে প্রায় গোসল করে ফেলেছি।
বাড়ি ফিরে যখন রেস্ট নিচ্ছিলাম এর ভেতরে বন্ধু ফেরদৌসের সাথে কথা বলি। ও জানালো ও মার্কেটে আসছে। আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি আসতে পারবো কিনা? প্রথমে একবার চিন্তা করেছিলাম এখন আর মার্কেটে যাবো না। পরে আবার চিন্তা করলাম এখন মার্কেটে গেলে ওকে সাথে নিয়ে আমার কেনাকাটাও করে নেয়া যাবে। তারপরে আমি কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার মার্কেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে পৌঁছানোর পর ফেরদৌসকে সাথে নিয়ে গেলাম ইজির শোরুমে। ফরিদপুরে ইজির নতুন একটি বড় শোরুমের উদ্বোধন হয়েছে কিছুদিন আগে। সেখানে গিয়ে ফেরদৌস জানালো ও এর আগে এই শোরুমে আসেনি। পরে সেখান থেকে ফেরদৌস নিজের জন্য একটি শার্ট কিনলো আর ওর ভাইয়ের জন্য কিনলো একটি গেঞ্জি।
তারপর ফেরদৌস আমাকে বলল ওর জন্য একজন লোক অপেক্ষা করছে। ওকে তাড়াতাড়ি ওর গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে। অগত্যা কি আর করা? আমি ওকে বললাম ঠিক আছে তুমি যাও। আমি আমার কেনাকাটা শেষ করে তারপর বাড়ি যাবো। তারপরে আমি মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা শেষ করে বাড়িতে ফিরে গেলাম। আমি কেনাকাটা শেষ করেছি মাত্র দুটি দোকান থেকে। আমার কেনাকাটা করতে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লেগেছে। এই অল্প সময়ে ভেতরে আমার অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই কেনাকাটা শেষ করে আমি দ্রুত বাড়িতে ফিরে এলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাবির কাছ থেকে তাহলে শপিং করার জন্য ৩০০০ টাকা বোনাস পেয়েছেন 😁😁
হ্যাঁ ভাইয়া এই রমজানে শেষের দিন গুলো তে যে পরিমাণে গরম পড়েছে তাতে মার্কেটে গিয়ে শপিং করা যেন অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তবে এই আইডিয়াটা ঠিক যে মার্কেটে এসি আছে শুধু সেখানেই যাবেন কারণ গরম অনেকটাই কম লাগবে। আর বড় শপিংমলে গেলে এমনিতেই ভালো কাপড় গুলো চোখে পড়ে খুব একটা ঘুরতে হয় না।
গরম তখন এতটাই বেশি ছিল যে অনেক রকম চিন্তা ভাবনা করে তারপর মার্কেটে যেতে হয়েছিল। এই কারণেই চেষ্টা করেছিলাম এসি মার্কেট গুলোতে যাওয়ার।
আর উপহার পেতে আমাদের সকলেরই ভালো লাগে। টাকাটা পেয়ে আমারও খারাপ লাগেনি। হা হা হা....
আসলে ভাইয়া ঈদের আগে প্রচন্ড গরমের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করা খুবই কঠিন ছিল। ভাইয়া আপনার ঈদের কেনাকাটা করার কথা গুলো জানতে পেরে বেশ ভালোই লাগলো আমার। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে আপনার মার্কেট করার কথাটা জানতে পেরে বেশ ভালই লাগলো। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি সব সময় চেষ্টা করি দ্রুত কেনাকাটা শেষ করতে। তবে এর কিছু খারাপ দিক ও আছে। মাঝে মাঝেই বিক্রেতারা খারাপ পণ্য ধরিয়ে দেয়।
এবার আসলে মাত্রাতিরিক্ত গরম ছিল ভাই। কেনাকাটা তো দূরের কথা রাস্তায় বের হওয়ার কথা মনে হলেই ভয়ে বুক শুকিয়ে যাওয়ার কথা। আপনিতো তবু দেখেশুনে এসি শো রুমে গিয়ে শপিং করেছেন। আর আমার এক বন্ধু আমাকে জোর করে মার্কেটে নিয়ে গিয়ে কেনাকাটা করে অবস্থা বারোটা বাজানোর পরে আমাকে এসির শো রুমে নিয়ে গেছে ঠান্ডা করতে,, ভাবেন অবস্থা 😂।
রোজা থেকে এই প্রচন্ড গরমে মার্কেটে যেতে আসলেই ভয় করত। এই কারণেই এসি মার্কেট গুলো টার্গেট করেছিলাম কেনাকাটার জন্য।