তিন বন্ধুর নতুন পুকুরে গোসলের অভিজ্ঞতা।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ করে বন্ধুর রাফসানের ফোন পেলাম। এত সকালে ওর ফোন দেখে কিছুটা অবাক হলাম। চিন্তা করতে চেষ্টা করছিলাম এত সকালে কেন ফোন করেছে ও। একবার মনে হল হয়তো ও শহরে এসেছে এই কারণেই ফোন দিয়েছে। যাই হোক ফোন রিসিভ করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার এত সকালে ফোন দিলি যে? ও বলল গোসল করার জন্য ভালো একটা জায়গার সন্ধান পেয়েছি একদম পরিষ্কার পানি। যদি গোসল করতে চাস তাহলে আমাদের এলাকায় চলে আয়।
তখন আমি বললাম এমনিতেই সকালবেলায় ফেরদৌসের সাথে বের হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ফেরদৌসের সাথে কথা বলে দেখি যদিও যেতে রাজি হয় তাহলে আমরা দুজন চলে আসবো। ফোন রাখতেই আমি ফেরদৌসকে ফোন দিলাম। তবে ফেরদৌস ফোন রিসিভ করলো না। দু তিনবার ফোন দিয়ে তারপর আমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। এদিকে বেলা বারোটার দিকে ফেরদৌস আমাকে ফোন দিলো। আমি ফোন ধরেই ওকে একটা ঝাড়ি দিয়ে বললাম ফোন দিলে ফোন ধরো না কেন? ও বলল মোবাইল কাছে ছিলো না।
তখন আমি ওকে রাফসানের প্রস্তাবের কথাটা বললাম। প্রস্তাবটা শুনে ও রাজি হয়ে গেলো। ফেরদৌস বলল বাইরে চমৎকার আবহাওয়া চলো দুজন মিলে রাফসানের এলাকায় যাই। আমি বললাম আমার ইউসুফ ভাইয়ের দোকানে আসতে ২০ মিনিট সময় লাগবে। এর ভিতরে তুমি ওখানে আসো আমি রওনা দিচ্ছি। ফেরদৌসের সাথে কথাবার্তা বলে আমি ফ্রেশ হয়ে জামা কাপড় পড়ে ইউসুফ ভাইয়ের দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
সেখানে গিয়ে দেখি ফেরদৌস বসে রয়েছে। দোকানে ঢুকতেই ফেরদৌস জিজ্ঞেস করলাম কিছু খাবা নাকি? আমি বললাম না এসিডিটির সমস্যা বেড়েছে এখন আর কিছু খাবো না। তারপর দুই বন্ধু রওনা দিলাম রাফসানের শোরুমের উদ্দেশ্যে। অল্প সময়ে আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। তবে রাস্তায় আমাদের গায়ে দু চার ফোঁটা বৃষ্টি পড়েছিলো। খেয়াল করে দেখলাম আকাশের বেশ মেঘ জমেছে। আকাশের মেঘ দেখে আমি কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলাম। চিন্তা করছিলাম যখন গোসল করতে নামবো। তখন হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে কাপড়-চোপড়ের সাথে মোবাইলটাও ভিজে যাবে।
তারপর আবার চিন্তা করলাম যখন বৃষ্টি হবে তখন দেখা যাবে। তারপর আমরা রাফসানের শোরুমে ঢুকে ওর সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলাম। তারপর ও বলল চল দেরি করা যাবে না। এখনই গোসল করতে যাই। তখন আমরা জিজ্ঞেস করলাম জায়গাটা কোথায়? ও বলল ওর বাড়ির কিছুটা আগেই বড় একটা পুকুর কাটা হয়েছে একেবারে নতুন। সেখানকার পানিটা একেবারেই পরিষ্কার। ওর কথা শোনার সাথেই আমি আর ফেরদৌস জায়গাটা চিনতে পারলাম। কারণ কিছুদিন আগে যখন আমরা তিন বন্ধু নদীতে গোসল করেছিলাম। সেখান থেকে ফেরার পথে আমরা সেই পুকুরটা দেখেছিলাম। সেই পুকুরটা দেখে আমি আর ফেরদৌস বলাবলি করছিলাম নদীর ঘোলা পানিতে গোসল না করে এই পুকুরের পরিষ্কার পানিতে গোসল করলেই ভালো হতো। কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার। কয়েকদিন পরেই যে সেই পুকুরটাতে আমরা গোসল করতে নামবো সেটা তখনো চিন্তাই করেছিলাম না।
যাইহোক আমরা রাফসানের শোরুম থেকে বের হয়ে সরাসরি সেই পুকুরের পাড়ে চলে গেলাম। আমি আর ফেরদৌস ছিলাম এক মোটরসাইকেলে। রাফসান ছিল ওর নিজের মোটরসাইকেলে। কিন্তু আমরা সামনে আগানোর সময় হঠাৎ করে খেয়াল করলাম রাফসান অন্যদিকে চলে গেলো। যেহেতু আমরা জায়গাটা চিনি তাই আমরা রাফসানের জন্য অপেক্ষা না করে সরাসরি সেখানে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে রাফসানের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মিনিট দশেক পরে রাফসান সেই পুকুর পাড়ে এলো। তারপর তিন বন্ধু মিলে পুকুরপাড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম। পুকুরটা দেখে আমার খুবই পছন্দ হয়েছিলো শুধু একটা ব্যাপার বাদে। পুকুরের এক পাশে দেখি একজন মানুষ পাট ধুচ্ছে। আমি শুনেছিলাম পাট ধুলে সেই পানিতে গোসল করলে গা চুলকায়। এজন্য আমি নামবো কিনা সেটা চিন্তা করছিলাম। আমি চিন্তা করতে করতেই ফেরদৌস আর রাফসান দুজন পুকুরে নেমে গেলো। তখন আমি চিন্তা করলাম ওরা যেহেতু নেমে গিয়েছে তাহলে আর চিন্তা করে লাভ কি? কয়েকটি ছবি তুলে কাপড়চোপড় পাল্টে আমিও পুকুরে নেমে গেলাম।
পুকুরে নেমে বেশ ভালোই লাগলো। অনেকদিন পর এমন পরিষ্কার পানির কোন জলাশয় গোসল করতে নেমেছিলাম। পরে তিন বন্ধু মিলে বেশ কিছুক্ষণ পানির ভেতরে ঝাপাঝাপি করলাম। কিছুটা সাঁতারও কেটেছিলাম আমি। যদিও আমি খুব বেশিক্ষণ সাঁতার কাটতে পারি না। তবে ফেরদৌস আর রাফসান সাঁতার কাটার ব্যাপারে বেশ দক্ষ। সাঁতার কাটার একপর্যায়ে আমি হাতে কিছুটা ব্যথা পেলাম। ব্যথাটা এখন পর্যন্ত রয়েছে। ব্যাথাটা কিভাবে হলো সেটা আমি এখনো বুঝতে পারছি না। যাই হোক সেখানে ঘন্টাখানেক গোসল করার পর আমরা উঠে কাপড়চোপড় পাল্টে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। চমৎকার একটা স্মৃতি সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
| ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @rupok |
| স্থান | গজারিয়া |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি ধারাবাহিকভাবে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্ত বিভিন্ন সময়ের গল্প ভালই শেয়ার করে চলেছেন। এরকম আমারও অনেকগুলো বন্ধু আছে তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে সময় পার করি । আজকে বন্ধুদের সাথে গোসল করার মুহূর্তটি দারুন ছিল। আমরাও মাঝে মাঝে এরকম সুন্দর জায়গা পেলে গোসল করতে যাই । তাছাড়া বন্ধুদের সাথে এভাবে গোসল করার মজাই আলাদা অনেক মজা হয় ।পুকুরটি অনেক বড় দেখছি ভালো লাগলো পুকুরের পরিষ্কার পানিতে গোসল করার অনুভূতিটা দারুন ছিল।
ভাইয়া আপনি প্রতিনিয়ত বন্ধুদের সাথে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন যা পড়ে ও ভীষণ ভালো লাগে।বন্ধুদের সাথে আনন্দ করার মূহুর্তগুলো আপনি খুব চমৎকার ভাবে শেয়ার করেন।রাফসান ভাইয়ার এই পুকুরটার কথা কোন এক পোস্টে পড়েছিলাম।আপনি ফেরদৌস আর রাফসান ভাইয়া নতুন এই পুকুরটিতে গোসল করার জন্য গেলেন।পুকুরের পানি সত্যি ই টলমলে।দেখে খুব ভালো লাগলো।তবে এক লোক পাট ধুয়ে রাখছিল পুকুরে।এজন্য আপনি পুকুরে নামতে না চাইলেও বন্ধুদের দেখে আর থাকতে পারলেন না।সুন্দর অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য ।
বন্ধু তোর বরাত নিয়ে আমি যাবো। আপনি তো দেখছি বন্ধু ছাড়া অচল। আপনাদের বন্ধুত্বের কথা শুনতে শুনতে তো আমার মনে হচেছ একটি গল্প লিখে ফেলি আপনাদের কে নিয়ে। আর এমন বন্ধু হলে তো তাদের কে নিয়ে এমন পুকুরে প্রতিদিনই গোসল করতে মনে চাইবে। দোয়া করি আপনাদের এই বন্ধুত্ব থাকুক অটল আর অবিচল।
কত দিন হয়ে গেল পুকুরে সাঁতার দিয়ে গোসল করা হয়। আপনারা বন্ধুরা যে পুকুরে গোসল করলেন সে পুকুরের পানিটা খুবই সচ্চ,পরিষ্কার। পরিবেশটা দারুন। বাড়িঘর থেকে দুরের পুকুর গুলো এমনিতেও অনেক পরিষ্কার পরিছন্ন থাকে। ধন্যবাদ ভাইয়া।