চমৎকার আবহাওয়ায় পরিবার নিয়ে পদ্মার পাড়ে কিছুটা সময় কাটানো।
দু তিন দিন আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখছিলাম। ভিডিওটি ছিল আমাদের লোকাল এক ফুড ব্লগারের। তিনি পদ্মার পাড়ের তৈরি হওয়া নতুন রেস্টুরেন্টের একটি ভিডিও করে সেটি ফেসবুকে আপলোড করেছিলো। সেই ভিডিওটি দেখতে গিয়ে হঠাৎ করে একটা দৃশ্যে আমার চোখ আটকে গেলো। দৃশ্যটা হচ্ছে পদ্মা নদীর পানির দৃশ্য। মাত্র অল্প কিছুদিন আগে আমি কয়েকদিন পদ্মা নদীতে গোসল করে এসেছি। তখন নদীতে পানির পরিমাণ ছিল খুবই কম। নদীর বুকে বিরাট চর জেগেছিলো। কিন্তু ভিডিওর একটি দৃশ্যে দেখতে পেলাম সেই বিশাল আকারের চর প্রায় ডুবে গিয়েছে। পুরো পদ্মা নদী পানিতে টইটম্বুর অবস্থা।
দৃশ্যটা দেখে আমার হজম করতে বেশ কিছুটা সময় লাগলো। কারণ এত দ্রুত এত পানি বাড়বে এটা আমি কখনো চিন্তাই করিনি। যাইহোক গত কয়েকদিন থেকেই পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আর সেটা হয়ে উঠছিল না। পদ্মা নদীতে এতটা পানি দেখে আমি ঠিক করলাম তাহলে পরিবার নিয়ে পদ্মারপাড় থেকে ঘুরে আসি। তাছাড়া সেদিনকার আবহাওয়াটা ছিল চমৎকার। মেঘলা আকাশ সাথে এলোমেলো বাতাস। দীর্ঘদিন হলো এমন চমৎকার আবহাওয়া দেখি না। এত সুন্দর আবহাওয়ায় ঘরে বসে থাকতে ইচ্ছা করে না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে বিকালে পরিবার নিয়ে পদ্মা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাবো। সাথে আরো কিছু পরিকল্পনা ছিলো। যাইহোক সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম বিকাল চারটার দিকে আমরা বাসা থেকে বের হবো। এই পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
ঠিক বেলা চারটার সময় আমরা বাসা থেকে বের হলাম। আমাদের বাসা থেকে পদ্মা পাড়ের দূরত্ব চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার মত হবে। রিক্সা করে সেখানে যেতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় লাগে। আমরা বাসা থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে সরাসরি পদ্মার পাড়ে পৌঁছলাম। তবে পদ্মার পাড়ে যাওয়ার আগের সময়টা বেশ ভালই লাগছিলো। কারণ ইঞ্জিন চালিত রিকশা বেশ জোরে চলছিলো আর এদিকে এলোমেলো বাতাসে মনটা দারুন ফুরফুরে হয়ে উঠেছিলো। রিকশায় বসে যাত্রা সময়টা উপভোগ করছিলাম। তবে বেশিক্ষন উপভোগ করতে পারলাম না। কারণ আমরা অল্পক্ষণই পদ্মার পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। পদ্মার পাড়ে পৌঁছানোর রাস্তাটা পুরোটাই ভালো। তবে একদম নদীর কাছাকাছি রাস্তাটুকু বেশ খারাপ। প্রতিদিন এই পদ্মার পাড়ে অসংখ্য দর্শনার্থী ঘুরতে আসে। তারপরেও যে কর্তৃপক্ষ কেন রাস্তা ঠিক করছে না সেটি বুঝতে পারি না।
যাইহোক পদ্মার পাড়ে পৌঁছে বিস্ময়ে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ ভিডিওতে যেটা দেখেছিলাম নদীর কাছে পৌঁছে দেখি আসলেই ঠিক তাই। এইমাত্র ৭/৮ দিনের ব্যবধানে নদীতে পানি বেড়েছে অনেক। আমি এত দ্রুত আর কখনো এতটা পানি বাড়তে দেখিনি। যাইহোক পদ্মার পাড়ে পৌঁছে আমরা বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম। এর ভেতরে আসরের আযান হয়ে গিয়েছিলো। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম তোমরা দুজনে বসো আমি একটু নামাজটা পড়ে আসছি। এই কথা বলে আমি নামাজ পড়তে চলে গেলাম। যাওয়ার আগে অবশ্য মেয়ের জন্য এক প্লেট ফুচকার অর্ডার করেছিলাম।
আমাদের মূল পরিকল্পনা ছিল পদ্মারপাড় থেকে ঘোরাফেরা করে একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া করা। মেয়ের জন্য ফুচকার অর্ডার দিয়ে দিয়ে আমি নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ পড়ে এসে দেখি তাদের ফুচকা খাওয়া শেষ। তখন আমি আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম এখন কি করবে? সেই রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করতে যাবে নাকি কিছুক্ষণ পদ্মার পাড়ে ঘোরাফেরা করবে? তবে এত চমৎকার আবহাওয়ায় আমাদের কারোরই পদ্মারপাড় থেকে যেতে ইচ্ছা করছিল না। তাই আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম পদ্মার পাড়ে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে তারপর সেই রেস্টুরেন্টে যাবো। আমরা পদ্মার পাড় ধরে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম।
চমৎকার আবহাওয়ায় নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছিলো। আকাশ ছিল হালকা মেঘলা নদীর পাড়ের খোলা বাতাস আমাদের সবারই বেশ ভালো লাগছিলো। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে আমরা আবার ফিরতি পথ ধরলাম। তবে আমরা সেখান থেকে আসার আগে নতুন যে রেস্টুরেন্টটি তৈরি হয়েছিলো সেখানে গিয়েছিলাম দেখতে। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ জানালো আগামীকাল থেকে রেস্টুরেন্ট চালু হবে। রেস্টুরেন্টটি দেখে আমাদের কাছে বেশ ভালো লেগেছে। যখন নদী পুরো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে তখন এই রেস্টুরেন্টের বারান্দায় বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বেশ ভালোই লাগবে। আমি মনে মনে পরিকল্পনা করলাম রেস্টুরেন্টটি উদ্বোধন হওয়ার পরে একবার এসে এখান থেকে ঘুরে যেতে হবে। এই পরিকল্পনা করে নদীর পাড় থেকে আমরা আমাদের অন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার পাড় |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আশা করি ভাইয়া ভালো আছেন? প্রকৃতির পরিবেশে পদ্মার পাড়ে দুর্দান্ত মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। শান্ত পরিবেশ গোধূলি বিকেলে নদীর পাড়ে সময় পার করার মুহূর্তগুলো সত্যি খুব অসাধারণ হয়ে থাকে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই দুর্দান্ত হয়েছে। নদীর পাড়ে চমৎকার মুহূর্ত কাটানোর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বষাকাল তাই নদীর পানি হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে।আর নদী যখন পানিতে ভরে উঠে তখন নদীর সৌন্দর্য অনেকখানিই বেড়ে যায়। আপনি পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর সময় নদীর পাড়ে উপভোগ করলেন।যা আপনার লেখায় খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। নদীর পাড়ে রেস্টুরেন্ট হলে সেখানে বসে নদীর দৃশ্য দেখতে আরো ভালো লাগবে।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনাদের জন্য।
সত্যিই পদ্মা পাড়ের দৃশ্যটা অসাধারণ সুন্দর এবং খুবই মনোরম। আর এরকম সুন্দর পরিবেশে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মুহূর্তটুকু নিঃসন্দেহে খুবই আনন্দের। পদ্মা নদীর পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় আপনার নামাজ পড়তে যাওয়ার কথাটি জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। পরিবারসহ পদ্মার পাড়ে কাটানো অত্যন্ত সুন্দর মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।