ঢাকায় গিয়ে পরিবার নিয়ে বড় আপুর সাথে ঘোরাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া (প্রথম পর্ব)।
ঢাকায় গিয়ে আপুর বাসায় না গেলে আপু খুব রাগ করে। এ কারণে তারা ইন্ডিয়া থেকে ফেরার দুদিন পরে আমি পরিবার নিয়ে চলে গেলাম আপুর বাসায়। এর আগের বার যখন এসেছিলাম তখন আপুর বাসাতেই বেশি সময় ছিলাম। আপু খুবই ব্যস্ত মানুষ। তার ব্যস্ততার কারণে সেবার আর ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পায়নি। এবার আমরা আসার আগেই আপু ঘোরাফেরা একটা প্ল্যান করে রেখেছিলো। পরিকল্পনা ছিল আমরা সবাই মিলে ৩০০ ফিটে ঘুরতে যাবো। আমরা যেদিন আপুর বাসায় গেলাম তারপর দিন দুপুরে আমাদের বের হওয়ার কথা ছিলো। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বের হতে হতে আমাদের চারটা বেজে গিয়েছিলো। আমাদের গাড়ি যখন বনশ্রী থেকে বের হয়ে একটু সামনের দিকে আগালো তখনই দেখতে পেলাম রাস্তায় প্রচুর গাড়ি ঘোড়া। বের হওয়ার আগে মনে করেছিলাম শুক্রবার হাওয়ায় আজ হয়তো রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া কিছুটা কম থাকবে। কিন্তু পরবর্তীতে মনে পড়লো শুক্রবার বিকালে ঢাকার রাস্তাঘাট প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে। কারণ সবাই সারা সপ্তাহের ক্লান্তি দূর করার জন্য কোথাও না কোথাও ঘোরার চেষ্টা করে।
আর এমনিতেও এখন ৩০০ ফিটের দিকে মানুষ প্রচুর ঘোরাফেরা করে। তাছাড়া আবার বাণিজ্য মেলা ও চলছিলো। শুক্রবারে বাণিজ্য মেলাতে প্রচুর লোকসমাগম হয়। এ কারণেই রাস্তায় অন্যান্য দিনের থেকে আরো বেশি জ্যাম মনে হচ্ছিলো। কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত গাড়ি চললো খুবই ধীর গতিতে। তারপর অবশ্য মোটামুটি নির্ঝঞ্ঝাট ভাবেই ৩০০ ফিটের নীলা মার্কেটে পৌঁছেছিলাম। বছর দুয়েক আগে একবার নীলা মার্কেটে গিয়েছিলাম। এবার গিয়ে দেখি সেখানে বেশ পরিবর্তন এসেছে। দোকান পাটের সংখ্যাও বেড়েছে অনেক বেশি। নীলা মার্কেটের সেই ছোট্ট জায়গাটাতে প্রচুর মানুষ এসেছিলো। অবশ্য আমি সেখানে খাওয়া ছাড়া আর তেমন কোন কিছু দেখতে পেলাম না যেটার কারণে মানুষ এখানে আসতে পারে। নীলা মার্কেটের হাঁস ভুনা এখন ঢাকার মানুষের কাছে খুবই প্রিয় একটি খাবার। সাথে তারা এক ধরনের রুটি বা চাপরি তৈরি করে। খাবারটা অবশ্য আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে খেতে। কারণ আমি আগে কখনোই চাপরি খেতাম না। বছর দুয়েক আগে নীলা মার্কেটে এসে আমি প্রথম চাপরি খাই। সেই ক্রিসপি চাপরি গুলো খেয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো।
নীলা মার্কেটের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি খাল। সেখানে অবশ্য দিনের বেলা পৌঁছাতে পারলে নৌকায় করে ঘোরার ব্যবস্থা রয়েছে । তবে সেই খালের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। সেই খালের পানি দেখলাম নিকষ কালো। ভয়াবহ দূষণের কারণে খালের পানি কালো রং ধারণ করেছে। তাছাড়া সেখান থেকে হালকা দুর্গন্ধ ও আসছিলো। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে সমস্ত মানুষজন খালের পাড়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বসে রয়েছে তাদের কাছে এই গন্ধটা তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। অথচ আমাদের কাছে বেশ খারাপ লাগছিলো। আমরা প্রথমে নীলা মার্কেটে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে ঘোরাফেরা করলাম। সেখানে দেখতে পেলাম হাস ভুনা আর রুটির পাশাপাশি কিছু চা বিক্রির দোকানও তৈরি হয়েছে। সেই চায়ের দোকানগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে তারা মাটির পাত্রে তান্দুরি চা বিক্রি করে। আমি অবশ্য চা লাভার নই। যার ফলে আমার এই চা খাওয়ার খুব একটা আগ্রহ ছিলো না। তবে আমার বোন আর আমার ওয়াইফ দুজনই চা বেশ পছন্দ করে। দুজনে দেখলাম বলাবলি করছিলো খেয়ে দেয়ে ফেরার সময় এখান থেকে চা খেয়ে ফিরতে হবে। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | নিলা মার্কেট |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হ্যাঁ ভাই শুক্রবার বিকেলের দিকে এমনিতেই রাস্তায় বেশ জ্যাম থাকে। তবে সকালের দিকে রাস্তা ঘাট মোটামুটি ফ্রি থাকে। যাইহোক নীলা মার্কেটের দিকে বেশ পরিবর্তন হয়েছে এখন। পূর্বাচলের রাস্তাটিও বিশাল বড় করেছে এবং দেখতেও খুব সুন্দর লাগে। গত বছর বাণিজ্য মেলায় গেলেও, এই বছর এখনো যাওয়া হয়নি। আমাদের শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে তো প্রচুর দুর্গন্ধ বের হয়। কারণ মিল কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হয়ে গিয়েছে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি। তবে রেস্টুরেন্টের পাশে এমন দূষিত পানির খাল থাকলে খুবই বিরক্ত লাগে খাবার খেতে। যাইহোক নীলা মার্কেটের দিকে আপনারা সবাই বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন। আশা করি পরবর্তী পর্বে আরও বিস্তারিত জানতে পারবো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঢাকা এসে পরিবার ও বড় বোনকে নিয়ে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।শুক্রবার ঢাকায় সকালের দিকটা রাস্তা ফাঁকা পাওয়া যায় কিন্তু দুপুরের পর থেকে প্রচুর ভীড় হয়।তাই আমি সব সময় সকালের দিকটাতেই কোথাও গেলে বের হয়ে যাই।আপনারা সবাই মিলে ৩০০ ফিটে ঘুরতে গেলেন। সেখানে গিয়ে সুন্দর কিছু মূহুর্ত কাটিয়েছেন।আপনি চা লাভার নন, কি বলেন ভাইয়া। আমার চা ভীষণ পছন্দ। যাক আপুরা দুজন চা খাবে জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।