ঢাকায় গিয়ে পরিবার নিয়ে বড় আপুর সাথে ঘোরাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


এবার ঢাকায় গিয়ে প্রথমে উঠেছিলাম খালাতো বোনের বাসায়। কারণ আমরা যে কাজে গিয়েছিলাম সে কাজটা তার বাসায় থেকে করতে আমাদের জন্য সুবিধা হোতো। আপনারা জানেন ঢাকা শহরে রাস্তাঘাটে ট্রাফিক জ্যাম অনেক বড় একটা ইস্যু। এজন্য আপনি যদি কাজের জায়গার আশেপাশে থাকতে পারেন তাহলে আপনার কাজ করতে ঝামেলা হয় অনেক কম। যাই হোক খালাতো বোনের বাসায় থাকা অবস্থাতে আমরা কাজগুলো দ্রুত সমাধা করার পাশাপাশি বেশ ঘোরাঘুরিও করেছিলাম। সময়টা আসলেই দারুন কেটেছিলো। কারণ অনেকদিন পর এইভাবে পরিবারের লোকজন মিলে ঢাকায় গিয়ে ঘোরাফেরা করা হয়েছে। যাই হোক আমি যখন ঢাকায় পৌঁছে ছিলাম সেই সময় আমার বড়ো বোন ইন্ডিয়াতে গিয়েছিলো ঘুরতে। আমাদের কাজ শেষ হতে হতে তারা ইন্ডিয়া থেকে ঢাকায় ফিরেছিলো।

IMG_20240202_180738.jpg

ঢাকায় গিয়ে আপুর বাসায় না গেলে আপু খুব রাগ করে। এ কারণে তারা ইন্ডিয়া থেকে ফেরার দুদিন পরে আমি পরিবার নিয়ে চলে গেলাম আপুর বাসায়। এর আগের বার যখন এসেছিলাম তখন আপুর বাসাতেই বেশি সময় ছিলাম। আপু খুবই ব্যস্ত মানুষ। তার ব্যস্ততার কারণে সেবার আর ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পায়নি। এবার আমরা আসার আগেই আপু ঘোরাফেরা একটা প্ল্যান করে রেখেছিলো। পরিকল্পনা ছিল আমরা সবাই মিলে ৩০০ ফিটে ঘুরতে যাবো। আমরা যেদিন আপুর বাসায় গেলাম তারপর দিন দুপুরে আমাদের বের হওয়ার কথা ছিলো। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বের হতে হতে আমাদের চারটা বেজে গিয়েছিলো। আমাদের গাড়ি যখন বনশ্রী থেকে বের হয়ে একটু সামনের দিকে আগালো তখনই দেখতে পেলাম রাস্তায় প্রচুর গাড়ি ঘোড়া। বের হওয়ার আগে মনে করেছিলাম শুক্রবার হাওয়ায় আজ হয়তো রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া কিছুটা কম থাকবে। কিন্তু পরবর্তীতে মনে পড়লো শুক্রবার বিকালে ঢাকার রাস্তাঘাট প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে। কারণ সবাই সারা সপ্তাহের ক্লান্তি দূর করার জন্য কোথাও না কোথাও ঘোরার চেষ্টা করে।


IMG_20240202_180724.jpg

আর এমনিতেও এখন ৩০০ ফিটের দিকে মানুষ প্রচুর ঘোরাফেরা করে। তাছাড়া আবার বাণিজ্য মেলা ও চলছিলো। শুক্রবারে বাণিজ্য মেলাতে প্রচুর লোকসমাগম হয়। এ কারণেই রাস্তায় অন্যান্য দিনের থেকে আরো বেশি জ্যাম মনে হচ্ছিলো। কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত গাড়ি চললো খুবই ধীর গতিতে। তারপর অবশ্য মোটামুটি নির্ঝঞ্ঝাট ভাবেই ৩০০ ফিটের নীলা মার্কেটে পৌঁছেছিলাম। বছর দুয়েক আগে একবার নীলা মার্কেটে গিয়েছিলাম। এবার গিয়ে দেখি সেখানে বেশ পরিবর্তন এসেছে। দোকান পাটের সংখ্যাও বেড়েছে অনেক বেশি। নীলা মার্কেটের সেই ছোট্ট জায়গাটাতে প্রচুর মানুষ এসেছিলো। অবশ্য আমি সেখানে খাওয়া ছাড়া আর তেমন কোন কিছু দেখতে পেলাম না যেটার কারণে মানুষ এখানে আসতে পারে। নীলা মার্কেটের হাঁস ভুনা এখন ঢাকার মানুষের কাছে খুবই প্রিয় একটি খাবার। সাথে তারা এক ধরনের রুটি বা চাপরি তৈরি করে। খাবারটা অবশ্য আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে খেতে। কারণ আমি আগে কখনোই চাপরি খেতাম না। বছর দুয়েক আগে নীলা মার্কেটে এসে আমি প্রথম চাপরি খাই। সেই ক্রিসপি চাপরি গুলো খেয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো।


IMG_20240202_181749.jpg

নীলা মার্কেটের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি খাল। সেখানে অবশ্য দিনের বেলা পৌঁছাতে পারলে নৌকায় করে ঘোরার ব্যবস্থা রয়েছে । তবে সেই খালের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। সেই খালের পানি দেখলাম নিকষ কালো। ভয়াবহ দূষণের কারণে খালের পানি কালো রং ধারণ করেছে। তাছাড়া সেখান থেকে হালকা দুর্গন্ধ ও আসছিলো। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে সমস্ত মানুষজন খালের পাড়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বসে রয়েছে তাদের কাছে এই গন্ধটা তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। অথচ আমাদের কাছে বেশ খারাপ লাগছিলো। আমরা প্রথমে নীলা মার্কেটে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে ঘোরাফেরা করলাম। সেখানে দেখতে পেলাম হাস ভুনা আর রুটির পাশাপাশি কিছু চা বিক্রির দোকানও তৈরি হয়েছে। সেই চায়ের দোকানগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে তারা মাটির পাত্রে তান্দুরি চা বিক্রি করে। আমি অবশ্য চা লাভার নই। যার ফলে আমার এই চা খাওয়ার খুব একটা আগ্রহ ছিলো না। তবে আমার বোন আর আমার ওয়াইফ দুজনই চা বেশ পছন্দ করে। দুজনে দেখলাম বলাবলি করছিলো খেয়ে দেয়ে ফেরার সময় এখান থেকে চা খেয়ে ফিরতে হবে। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থাননিলা মার্কেট

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

হ্যাঁ ভাই শুক্রবার বিকেলের দিকে এমনিতেই রাস্তায় বেশ জ্যাম থাকে। তবে সকালের দিকে রাস্তা ঘাট মোটামুটি ফ্রি থাকে। যাইহোক নীলা মার্কেটের দিকে বেশ পরিবর্তন হয়েছে এখন। পূর্বাচলের রাস্তাটিও বিশাল বড় করেছে এবং দেখতেও খুব সুন্দর লাগে। গত বছর বাণিজ্য মেলায় গেলেও, এই বছর এখনো যাওয়া হয়নি। আমাদের শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে তো প্রচুর দুর্গন্ধ বের হয়। কারণ মিল কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হয়ে গিয়েছে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি। তবে রেস্টুরেন্টের পাশে এমন দূষিত পানির খাল থাকলে খুবই বিরক্ত লাগে খাবার খেতে। যাইহোক নীলা মার্কেটের দিকে আপনারা সবাই বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন। আশা করি পরবর্তী পর্বে আরও বিস্তারিত জানতে পারবো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ঢাকা এসে পরিবার ও বড় বোনকে নিয়ে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।শুক্রবার ঢাকায় সকালের দিকটা রাস্তা ফাঁকা পাওয়া যায় কিন্তু দুপুরের পর থেকে প্রচুর ভীড় হয়।তাই আমি সব সময় সকালের দিকটাতেই কোথাও গেলে বের হয়ে যাই।আপনারা সবাই মিলে ৩০০ ফিটে ঘুরতে গেলেন। সেখানে গিয়ে সুন্দর কিছু মূহুর্ত কাটিয়েছেন।আপনি চা লাভার নন, কি বলেন ভাইয়া। আমার চা ভীষণ পছন্দ। যাক আপুরা দুজন চা খাবে জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57173.66
ETH 3067.89
USDT 1.00
SBD 2.39