ফটোগ্রাফি পোস্ট।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজকে চলে এলাম আরো একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট নিয়ে। এখন আবহাওয়ার কারণে ও কাজের চাপে বাসা থেকে খুব একটা বের হওয়া হয় না। অবশ্য প্রতিদিন সকালে হাঁটাহাঁটি করার জন্য বাসা থেকে বের হতে হয়। তখন ভালো কোন দৃশ্য চোখের সামনে পড়লে সেটার ছবি তুলে নেই। তাছাড়া কখনো ঘুরতে গেলে তখনও কোন ভালো দৃশ্য দেখতে পেলে সেটা ছবি তুলি। গত কয়েকদিন বাইরে গিয়ে যে ছবিগুলো তুলেছি তার ভিতর থেকে কয়েকটি ছবি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশা করি ছবিগুলো আপনাদের ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের ছবিগুলো দেখে নেয়া যাক।

IMG_20231001_064850.jpg

সেদিন সকালে হাঁটাহাঁটির সময় হঠাৎ এই দৃশ্যটা দেখে চোখ আটকে গেলো। প্রথমে ভালোভাবে বুঝতে পারিনি। পরবর্তীতে খেয়াল করে দেখি এই দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর বর্বরতার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেয়াল চিত্রটি করা হয়েছে ফরিদপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন সেটেলমেন্ট অফিসের বাইরের দেয়ালে। পুরো বিল্ডিং এর দেয়াল জুড়ে এরকম শিল্প-কর্ম তৈরি করা হয়েছে। দৃশ্যটা দেখে একাত্তরে পাক বাহিনীর বর্বরতা সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।

IMG_20231001_172430_1.jpg

সেদিন মেয়েকে নিয়ে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে গিয়ে এই ছবিটি তুলেছিলাম। পদ্মা নদীর পাড়ে প্রতিদিন বিকালে অনেক মানুষের সমাগম হয়। সেখানে অনেক অভিভাবকেরা তাদের বাচ্চাদেরও নিয়ে আসেন। তাদের জন্যই মূলত এই মাটির তৈরি খেলনার দোকান দেয়া হয়েছে। যে এই দোকানটি দিয়েছে তার ব্যবসায়িক বুদ্ধি বেশ ভালই বলতে হবে। অবশ্য বেচাকেনা কেমন হয় সেটা বোঝা গেলো না। এখন তো সবাই প্লাস্টিকের তৈরি চাইনিজ খেলাগুলোর দিকে বেশি আগ্রহী। ধীরে ধীরে মাটির তৈরি সমস্ত খেলনার ব্যবহার আমাদের দেশ থেকে উঠে যাচ্ছে।

IMG_20231001_172100.jpg

ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন নদীর পাড়ে একটি নৌকা রয়েছে। এটা অবশ্য মূল নদী না। মূল নদীর শুরু এই নদীর পরে একটা ছোট্ট চর আছে তারপর থেকে। অবশ্য আর কিছুদিন পরে এই জায়গাতে আর পানি থাকবে না। সেখানে ধুধু বালির চর দেখা যাবে।

IMG_20231001_172434.jpg

এই ছবিটিও পদ্মার পাড় থেকে তোলা হয়েছে। ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন রাস্তার পাশে বসে একজন ভাজাপোড়া তৈরিতে ব্যস্ত। নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়ে অনেকেই এই সমস্ত দোকান থেকে পাপড় পেঁয়াজু এই সমস্ত খাবার কিনে খায়। এই দোকানদারের বেচাকেনা অবশ্য বেশ ভালোই। কারণ নদীর পাড়ে বসে গরম গরম পেয়াজু বা পাপড় খেতে কার না ভালো লাগে বলেন?

IMG_20231001_171817.jpg

এই ছবিতে নদীর ছোট্ট চরে কাশবন দেখা যাচ্ছে। এই সময়ে কাশবনের দেখা পাওয়া যায়। অনেক লোককে দেখলাম নৌকায় করে এই ছোট্ট চরে গিয়ে কাশবনের সাথে ছবি তুলছে। আমার মেয়েও এই চরে যেতে চেয়েছিলো। তবে ইদানিং নদীর পাড়ে এবং চরগুলোতে রাসেল ভাইপার নামক সাপের উপদ্রব শুরু হওয়ার কারণে আমি আর মেয়েকে নিয়ে সেখানে যাওয়ার সাহস করে উঠতে পারিনি।

IMG_20231001_171329.jpg

এই ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন নদীর পাড়ে বেশ কিছু নৌকা এবং স্পিড বোট বেঁধে রাখা হয়েছে। এই স্পিডবোট গুলি সব বিভিন্ন সরকারি ডিপার্টমেন্টের। তাছাড়া কিছু স্পিড বোট এসেছে পদ্মার পার থেকে। আগে এই স্পিডবোট গুলি মাওয়া থেকে কাঠালবাড়িয়া ঘাট পর্যন্ত যাত্রী পারাপার করতো। তখন এদের অত্যাচারে যাত্রীদের খুব সমস্যা হোতো। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস আজ এদেরকে পদ্মার পাড়ে এসে বেকার বসে থাকতে হচ্ছে।

IMG_20231001_171110.jpg

এই ছবিটাতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমাদের শহরের পদ্মার পাড়ে অবস্থিত একমাত্র রেস্টুরেন্টটি। রেস্টুরেন্টটি এ বছর বেশ ভালই ব্যবসা করেছে। কারণ যখনই পদ্মার পাড়ে গিয়েছে তখনই দেখেছি সেখানে প্রচন্ড ভিড়। অবশ্য আর কিছুদিন পরে এই রেস্টুরেন্টটির কি হবে সেটা জানতে আমি আগ্রহী। কারণ নদীতে এখনো প্রচুর পানি থাকার কারণে লোকজন এই রেস্টুরেন্টে বসে সুন্দর একটা দৃশ্য দেখতে পারছে। কিন্তু কিছুদিন পর এই রেস্টুরেন্টের সামনে ধু ধু বালুর চর ছাড়া আর কিছু দেখা যাবে না। তখনো কি এই রেস্টুরেন্ট চলবে কিনা সেটাই চিন্তা করছি।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

আপনি সকালে হাঁটাহাঁটি অব্যাহত রেখেছেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। সকালে হাঁটতে গেলে বা বাইরে ঘুরতে গেলে যা কিছু দেখতে ভালো লাগে তার ফটোগ্রাফি করেন।আমিও এমনটা করি।প্রথম ফটোগ্রাফিটি দেখে আমিও থমকে গিয়েছিলাম। আর এমন কিছুই ধারনা করেছিলাম।যাই হোক আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি চমৎকার লেগেছে ভাইয়া।বর্ননার কারনে আরো বেশী উপভোগ্য লেগেছে।

 10 months ago 

এই ধরনের চিত্র দেখলে পাক বাহিনীর বর্বরতার কথা মনে পড়ে যায়। যারাই এই দেয়াল চিত্রটি দেখে তারাই কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার লাগছে ভাইয়া।এর মধ্যে থেকে বেশিরভাগ জায়গায় আমার পরিচিত।এখন অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে এই পদ্মার পাড়।এখানে গেলে মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।পাক বাহিনীর বর্বরতার ফটোগ্রাফিটি আমিও প্রথমে বুঝতে পারিনি,আপনার লেখা খেয়াল করে তারপর বুঝতে পারলাম।সকালে হাঁটাহাঁটি করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।ভালো লেগেছে পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

দেয়াল চিত্রটি খেয়াল করে না দেখলে প্রথম দেখায় বোঝা মুশকিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

পদ্মার পাড়ে কোয়ালিটি ফুল সময় অতিবাহিত করেছেন এবং বেশ চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই খুব ভালো লাগলো দেখে। আর যে রেস্টুরেন্টে কথা বলছেন সেটা হয়তো এখন জমজমাটের একটাই কারণ সেটা হচ্ছে মানুষজন পানির দৃশ্য দেখার জন্য এখানে আসে। তবে বালুচর হয়ে গেলে তখন আর মানুষজন মনে হয় না আসবে। যাই হোক অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আমিও সেটাই চিন্তা করছিলাম। যখন নদীর পানি শুকিয়ে চর পড়ে যাবে তখন এই রেস্টুরেন্টে কোন লোকজন আসবে কিনা।

 10 months ago 

দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন ভাই। বিকেল বেলা নদীর পাড়ে ঘুরতে আসলেই খুব ভালো লাগে। পদ্মা নদীর পাড়ে তো দেখছি মাটির তৈরি জিনিসের চমৎকার একটি দোকান রয়েছে। তাছাড়া খাবারের দোকান এবং রেস্টুরেন্টও রয়েছে। আসলেই নদীকে কেন্দ্র করে অনেক দোকান গড়ে উঠে। তবে নদী শুকিয়ে গেলে তখন মানুষজন বেশি যায় না এবং তাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়। হ্যাঁ ভাই ইদানীং রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই ছোট্ট চরে কাশফুল দেখতে না গিয়ে খুব ভালো করেছেন। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46