দীর্ঘদিন পর বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা, আড্ডা দেয়া ও রাতে ব্যাডমিন্টন খেলা (প্রথম পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত পরশুদিন ফেরদৌস ফরিদপুর এসেছে। ফরিদপুরে আসার আগেই ওর সাথে কথাবার্তা হয়েছিলো। দুজনে ঠিক করেছিলাম ফেরদৌস যে দুদিন ফরিদপুর থাকবে সে দুদিন আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে বেড়াবো। ফেরদৌস ফরিদপুর পৌঁছেছিলো বৃহস্পতিবার দুপুরের ভেতরেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার আমার প্রচন্ড ব্যস্ততা ছিলো। কমিউনিটির বেশ কিছু কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে সেদিন আর ফেরদৌসের সাথে বাইরে যেতে পারিনি। তবে রাতে ফেরদৌসের সাথে কথা হয়েছিলো পরদিন বিকালে ঘুরতে বের হওয়ার ব্যাপারে। পরদিন যথারীতি ফেরদৌসের সাথে কথা বলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুজন এক জায়গায় দেখা করলাম। তারপর আমি সোজা ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে উঠে বসলাম।

IMG_20231124_162524.jpg

তখন ফেরদৌস আমাকে জিজ্ঞেস করল কোন দিকে যাবো? আমি বললাম আজকে রাফ্সানের এলাকার দিকে চলো। অনেকদিন হলো তিন বন্ধু মিলে আড্ডা দেয়া হয় না। সেখানে গেলে তিনজনে মিলে আড্ডা দেয়া যাবে। তারপর আমরা ধীরেসুস্থে রাফসানের এলাকার দিকে আগাতে লাগলাম। দীর্ঘদিন পর দুই বন্ধুর দেখা হওয়াতে আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করছিলাম। এদিকে আমরা যখন রাফসানের এলাকার কাছাকাছি পৌঁছেছি ততক্ষণে আসরের নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিলো। তাই রাফসানের শোরুমের সামনে যখন ফেরদৌস মোটরসাইকেল থামালো তখন আমি ওকে বললাম তুমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো আমি নামাজ পড়ে আসি। অবশ্য ইতিমধ্যে আমরা খেয়াল করে দেখেছি রাফসানের শোরুমটি বন্ধ রয়েছে। আমি ফেরদৌসকে বললাম তুমি ফোনে রাফসানের সাথে যোগাযোগ করে দেখো ও কোথায় আছে। এই কথা বলে আমি নামাজ পড়তে চলে গেলাম।

IMG_20231124_162452.jpg

আমি নামাজ পড়ে এসে ফেরদৌস কে জিজ্ঞেস করলাম রাফসানের সাথে কথা হয়েছে নাকি? ফেরদৌস বললো হ্যাঁ রাফসানের সাথে কথা হয়েছে। ও কিছুক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে বলেছে। তবে এই কথা বলার পরে ফেরদৌস সিদ্ধান্ত নিলো আমরা রাফসানের বাড়ির দিকে আগাবো। তবে আমরা কিছুদূর আগানোর পরেই দেখতে পেলাম রাফসান ওর মোটরসাইকেলে করে শোরুমের দিকে আসছিলো। রাফসানকে দেখতেই আমি বললাম চল প্রথমে তিনজনে সেই ব্রিজের উপর গিয়ে আড্ডা দেই। তারপর তোর শোরুম খুলিস। আমার আইডিয়াটা রাফসানেরও পছন্দ হোলো। তারপর তিন বন্ধু সোজা রওনা দিলাম আমাদের সেই প্রিয় জায়গার উদ্দেশ্যে। যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন রাফসানদের এলাকায় একটি জায়গায় একটি ব্রিজ রয়েছে। সেই জায়গাটি আমাদের তিন বন্ধুরই বেশ পছন্দের জায়গা। আমরা সময় সুযোগ পেলেই সেখানে গিয়ে আড্ডা দেই। সেই ব্রিজের দুপাশ দিয়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ রয়েছে।

IMG_20231124_162457.jpg

ব্রিজটি তৈরি করা হয়েছিল একটি খালের উপরে। কিন্তু সেই খালটি এখন মানুষের দখলে একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে। তবে জায়গাটি আসলেই চমৎকার। সেখানে বসলে দুই পাশেরই নয়ন জুড়ানো দৃশ্য চোখে পড়ে। যাই হোক আমরা সেখানে আড্ডা দিচ্ছিলাম। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। তার ভেতরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো আমাদের ক্যাম্পিং করার পরিকল্পনা। আপনারা জানেন আমি কিছুদিন আগে একটি ছোট্ট তাবু কিনেছি ক্যাম্পিং করার উদ্দেশ্যে। রাফসানের ও দেখলাম ক্যাম্পিং করার প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে। তখন আমরা ঠিক করলাম আমাদের আরেক বন্ধু রাসেল ফরিদপুর এলে আমরা চার বন্ধু মিলে ক্যাম্পিং করবো। সাথে অবশ্য বন্ধু প্রদীপও থাকবে। যদিও তাবুটার আকার বেশ ছোট। সেখানে বড়জোর তিনজন ঘুমাতে পারবে। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যেই রাতে আমরা ক্যাম্পিং করব সেই রাতটা আমরা গল্প করেই পার করে দেবো। অবশ্য ক্যাম্পিংয়ের সময় ক্যাম্প ফায়ারেরও ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেটা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা বুঝতে পারছি না। কারণ ক্যাম্পফায়ার করতে হলে সেই পদ্মার চর পর্যন্ত আমাদেরকে শুকনো কাঠ নিয়ে যেতে হবে। যেটা খুবই ঝামেলা পূর্ণ একটা কাজ।

IMG_20231124_163737.jpg

IMG_20231124_171400.jpg

যাই হোক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এর ভেতরে আমি প্রস্তাব দিলাম চল সবাই মিলে চা খেয়ে আসি। আমার প্রস্তাবে ওরা দুজনেই রাজি হয়ে গেলো। তারপর তিনজন মিলে রওনা দিলাম চায়ের দোকানের উদ্দেশ্যে। রাফসানদের এলাকার চা এমনিতেই বেশ বিখ্যাত। শহর থেকেও অনেক ছেলে মেয়ে আসে এখানকার চা খাওয়ার জন্য। রাফসানদের এলাকায় একটি চা বিক্রি হয় যেটাকে তারা বলে ডাবল হিটের চা। এই চাটা খেতে আসলেই বেশ সুস্বাদু। আমি যদিও বাইরে থেকে চা খুব একটা খাই না। শুধু রাফসানদের এলাকাতে এলে আমি এক কাপ চা খাই। খাঁটি গরুর দুধ দিয়ে বানানো চাটা আসলেই বেশ মুখরোচক। যাইহোক চায়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে আরো কিছু আড্ডা হোলো। এর ভিতরে মাগরিবের আজান হয়ে গেলে আমি ওদেরকে বসিয়ে রেখে নামাজ পড়তে গেলাম। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাইয়া আপনার পোস্টে রাফসান ভাইদের এলাকার ব্রিজটির কথা শুনতে শুনতে আমারও মন চাইছে সেখানে যেয়ে আড্ডাবাজি করার। আপনাদেরকে দেখলে আমার সেই একটি ছবির কথা মনে পড়ে। সুমন রাজন মোহন। যাইহোক আপনাদের সুন্দর মুহূর্তের কথা পড়তে পড়তে আমার কিন্তু বেশ ভালো লাগছিলো ভাইয়া।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

হ্যাঁ রাফসান ভাইদের এলাকার এই ব্রিজের আশেপাশের জায়গাটা আসলেই খুব সুন্দর। এই জায়গাটা প্রকৃতি প্রেমীদের অবশ্যই ভালো লাগবে। মনে হচ্ছে আপনারা খুব শীঘ্রই ক্যাম্পিং করতে পারবেন। তাঁবুর ভেতরে ৪/৫ জন বসে আড্ডা দিতে দারুণ লাগবে। গরুর দুধের চা খেতে ভালোই লাগে, তার চেয়ে বেশি ভালো লাগে মালাই চা খেতে। আমাদের এখানে বেশ কয়েকটি মালাই চা এর দোকান রয়েছে। দুই দিন আগেও মালাই চা খেয়েছিলাম। যাইহোক দীর্ঘদিন পর ফেরদৌস ভাইকে পেয়ে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

দীর্ঘদিন পর আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাই এলাকায় এসেছে এবং আপনাদের ঘোরাঘুরি আড্ডা আবার শুরু হয়েছে। খাল এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে ব‍্যাপারটা কিন্তু খুবই দুঃখজনক ভাই। এবং শেষমেশ তিনজন মিলে খাঁটি গরুর দুধের চা বাহ সবমিলিয়ে বেশ ছিল আপনাদের সময় টা। এখন তো গরুর দুধের চা পাওয়া যায় খুব কম জায়গাই।।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

অবশেষে ফেরদৌস ভাইয়া এলো তবে।আমার ও কেন জানি আনন্দ লাগছে।তিনজন এক হলেন এটা জেনে।আসলে বন্ধুরা এক হলে খুব সুন্দর সময় অবিবাহিত হয়।আপনারা রাফসান ভাইয়ার এলাকায় সেই ব্রিজে বসে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। ইচ্ছে হচ্ছে আমিও চলে যাই।কি সুন্দর সবুজ প্রকৃতি, ফসলের মাঠ।গল্প হলো এবার চা খাওয়ার পালা।রাফসান ভাইয়াদের এলাকায় এক দোকানে চা বিক্রি করে, যা খুব মজার বললেন।শহর থেকেও ছেলে মেয়ে এই চা খেতে আসে।তবে তো চা খুব মজারই বলতে হয়।গরুর দুধের চা। তাও আবার ডাবল হিটের চা।দারুন মজার চা।শুনেই খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষন ভালো লাগলো ভাইয়া।বন্ধুদের নিয়ে সব সময় আনন্দে থাকবেন এমনটাই আশাকরি। সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 92446.68
ETH 3289.43
USDT 1.00
SBD 2.88