বন্ধু প্রদীপের বিয়েতে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমাদের বন্ধুবান্ধবদের ভিতর সবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। অবশ্য সবার বলাটা ঠিক হলো না। কারণ আমাদের বন্ধু প্রদীপ কয়েক দিন আগ পর্যন্ত ছিলো অবিবাহিত। আমরা একটা সময় ধরেই নিয়েছিলাম প্রদীপের আর এই জীবনে বিয়ে করার শখ পূরণ হচ্ছে না। কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ করে শুনতে পেলাম প্রদীপের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। যথারীতি দাওয়াত পেয়ে গেলাম। প্রদীপ নিজেই আমাকে ওর বিয়ের দাওয়াত দিলো। দাওয়াত পেয়েছিলাম বরযাত্রীতে যাওয়াসহ। এর আগে আমি কখনো হিন্দু রীতির কোন বিয়েতে বরযাত্রী যেতে পারিনি। যদিও এর আগে আমাদের বন্ধু দেবাশীষ ব্যানার্জীর বিয়েতে দাওয়াত পেয়ে ছিলাম বরযাত্রি যাওয়ার জন্য। কিন্তু একটা সমস্যার কারণে তখন যাওয়া হয়নি।

IMG_20231012_194634.jpg

যাইহোক প্রদীপ আমার অত্যন্ত কাছের একজন বন্ধু। তার বিয়েতে তো না যাওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না। তবে আমাদের অন্যান্য বন্ধুর বিয়েতে খেয়াল করেছি যে বন্ধু যেখানেই থাক না কেনো কোনো বন্ধুর বিয়ে আমরা কেউ মিস করতাম না। যে যেখানেই থাকুক সবাই ঠিক সময় বিয়েতে এসে হাজির হোতো। কিন্তু এখন সবার সাংসারিক জীবনের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রদীপের বিয়েতে খুব বেশি বন্ধু আসেনি। বন্ধু-বান্ধবদের ভেতর বর যাত্রীতে গিয়েছিলাম আমরা চার বন্ধু। আমি রাফসান, রাসেল এবং দেবাশীষ ব্যানার্জি। যদিও ফেরদৌসের ও দাওয়াত ছিলো। কিন্তু ফেরদৌস তার কর্মস্থল থেকে ফরিদপুরে ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে তার আর বরযাত্রী তে যাওয়ার এনার্জি ছিল না। যাইহোক আমাদের বলা হয়েছিল বিকাল পাঁচটার দিকে বরযাত্রীতে রওনা দেবে। আপনারা জানেন হিন্দু রীতির বিয়েতে রাতে লগ্ন থাকে। যার ফলে তাদের বিয়েতে বর যাত্রীতে যেতে হয় সন্ধ্যার দিকে বা রাতের দিকে।


IMG_20231012_194629.jpg

তো আমরা যথারীতি সময় মত প্রদীপের বাড়িতে পৌঁছলাম। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে যা হয় সেটাই হলো আর কি। আমরা পৌঁছে দেখি তখনও বরযাত্রীতে যাওয়ার লোকজনেরা তৈরি হতে পারেনি। আমরা বুঝতে পারলাম যেতে বেশ খানিকটা দেরি হবে। সেজন্য আমরা প্রদীপদের বাড়ি থেকে বের হয়ে কয়েক বন্ধু মিলে আড্ডা দিতে লাগলাম। এদিকে আমি বন্ধু রাফসানকে ফোন দিয়ে বললাম বর যাত্রীতে যাবি না? সে বলল প্রদিপের বরযাত্রী আজকে নাকি? দেখলাম ব্যাটা বেমালুম ভুলে বসে আছে। আমি বললাম হ্যাঁ আমরা আর কিছুক্ষণ পরে রওনা দেবো। তুই তৈরি হয়ে থাকিস। আমরা যেহেতু তোদের এলাকার ভেতর দিয়ে যাবো তাই তোকে সেখান থেকে উঠিয়ে নেবো। রাফসানের সাথে কথাবার্তা শেষ হতে আমরা আবার আড্ডায় মশগুল হয়ে পড়লাম। এদিকে সন্ধ্যা যখন হয় হয় অবস্থা তখন দেখলাম একে একে সবাই গাড়িতে উঠে বসছে।


অনেকে আলোচনা করতে লাগলো আটটার সময় লগ্ন। সময় মত পৌঁছাতে না পারলে সমস্যা হবে। আবার অনেকে বলছিল মেয়েদের বাড়িতে এখান থেকে খুব একটা দূরে নয়। যার ফলে আমাদের গাড়িতে করে যেতে সেখানে খুব একটা সময় লাগবে না। যাইহোক সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে বরযাত্রীবাহী গাড়িগুলো ছেড়ে দিলো। আমি বন্ধু রাসেল, অসীম আর দেবাশীষ ব্যানার্জি আমরা তিনজন ছিলাম অন্যান্য বরযাত্রীদের সাথে বাসে। বাসে সকলে মিলে আড্ডা দিতে দিতে যেতে ভালই লাগছিল। সেই সাথে কিছুক্ষণ পরপরই ব্যান্ড পার্টি বাজনা বাজাচ্ছিল। এদিকে আমরা যখন রাফসানদের এলাকার কাছাকাছি পৌঁছলাম তখন আমি রাফসানকে ফোন দিয়ে বললাম রাস্তায় এসে দাঁড়াতে। রাফসানদের এলাকায় পৌঁছে গাড়িটা থামাতে বললাম। গাড়ি থামিয়ে আমি আর বন্ধুর রাসেল নামলাম রাফসানকে খোঁজার জন্য। সেই সাথে আরো কয়েকজন বাস থেকে নামলো ছোটখাটো কিছু কাজের জন্য। বাস থেকে নেমে রাফসানকে খুঁজতে গিয়ে দেখলাম ও রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে মোটরসাইকেল নিয়ে।


তখন আমি রাফসানকে বললাম মোটরসাইকেল রেখে আয়। সবাই মিলে একসাথে বাসে করে যায়। রাফসান তখন বলল বরযাত্রী ফিরতে অনেক দেরি হবে। মোটরসাইকেল নিয়ে যাই তাতে করে আমরা তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারবো। আইডিয়াটা আমার কাছে খুবই পছন্দ হলো। কারণ আমি ঠিক করেছিলাম হ্যাংআউট এর আগেই বাসায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবো। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার আমি যেখানেই থাকি না কেন চেষ্টা করি হ্যাংআউট শুরু হওয়ার আগে বাসায় পৌঁছতে। আমি রাসেল আর রাফসান ঠিক করলাম আমরা গিয়ে সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসব। এই চিন্তা করে আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা দিলাম। অবশ্য আমাদের সাথে আরও বেশ কয়েকটা মোটরসাইকেল আগে থেকেই ছিলো। কারণ প্রদীপদের এলাকার কিছু ছেলে এসেছিল মোটরসাইকেল নিয়ে। ছেলেগুলো আমাদের ছোট ভাই ব্রাদার। সকলেই আমাদের বেশ পরিচিত। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 9 months ago 

আসলে কর্ম ব্যস্ততার জন্য অনেক সময় কাছের বন্ধুদের বিয়েতেও উপস্থিত থাকা যায় না। যাইহোক আপনারা চার বন্ধু বরযাত্রী হিসেবে গিয়েছিলেন,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আসলে কাছের বন্ধুদের বিয়েতে না যেতে পারলে নিজের মধ্যে খারাপ লাগা কাজ করে। ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার সময় একাউন্টিং টিউশন টিচারের বিয়েতে যাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু একটা সমস্যার কারণে যেতে পারিনি। এই প্রথম হিন্দু রীতির বিয়েতে যাওয়ার কথা থাকলেও যাওয়া হয়নি শেষ পর্যন্ত। যাইহোক মেয়েদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন অবশেষে। দেখা যাক লগ্নের সময় পৌঁছাতে পারেন কিনা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

ব্যস্ততার জন্য অনেক সময় অনেক সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব হয় না । কিন্তু গেলে অনেক ভালো লাগে। পুরাতন অনেক বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। বেশ সুন্দর সময় কাটে তাদের সাথে। হিন্দু রীতির বিয়ে দেখতে কিন্তু বেশ মজা লাগে । কত যে নিয়ম । আর অনেক্ষন সময় নিয়ে চলে তাদের বিয়ে।আমার অভিজ্ঞতা আছে হিন্দু রীতির বিয়ে । তাই কিছুটা জানি। দেখা যাক বিয়ে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল কিনা আপনার। মাঝ পথে না আপনাদের মোটর বিগড়ে যায়!

 9 months ago 

সবার বিয়ে হয়ে গেলেও প্রদীপ ভাইয়ার বিয়েটা বাকি ছিল।অবশেষে ভাইয়ার বিয়ের ফুল ফুটেছে।বৃহস্পতিবার আপনারা বরযাত্রি গেলেন।আসলে আগে সবাই ফ্রি ছিল তাই যখন তখন যেকোনো প্রোগ্রামে খুব সহজেই অংশগ্রহন করতে পারতো। এখন সবাই নানান কাজে ব্যস্ত।ফেরদৌস ভাইয়া বাড়ি পৌঁছতে অনেক রাত। তাই সেও যেতে পারেনি।আপনারা চার বন্ধু গেলেন।এরপর কি হলো তা জানার অপেক্ষায়।কারন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়েগুলোর অনেক নিয়ম নিষ্ঠা থাকে।কখনও দেখার সুযোগ হয়নি।যা একটু মুভিতে দেখা।আর রাতের বেলাতেই ওদের বিয়ের সময় নির্ধারন করা হয়।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64599.25
ETH 3467.96
USDT 1.00
SBD 2.55