দিয়াবাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার বাজে অভিজ্ঞতা সাথে মজার খাওয়া দাওয়া (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতবার ঢাকা গিয়ে কাজের সাথে প্রচুর ঘোরাফেরা করেছি। আমি সাধারণত ঢাকায় গিয়ে আমার বড় বোনের বাসায় উঠি। তবে এবার আমার বড় বোন ঘুরতে গিয়েছিলো ইন্ডিয়াতে। সেই কারণে খালাতো বোনের বাসায় ছিলাম কয়েকদিন। সেই কয়েক দিনের ভেতরে আমি খালাতো বোনদের সাথে বেশ কয়েক জায়গায় ঘুরে ফিরে বেরিয়েছি। কাজের ফাঁকে যখনই সুযোগ পেয়েছি আমরা কোথাও ঘুরতে চলে গিয়েছি। একদিন আমরা সবাই মিলে ঠিক করলাম একটু দুরে কোথাও ঘুরতে যাবো। কোথায় যাওয়া যায় এটা নিয়ে আলোচনা করছিলাম সবাই মিলে। শেষ পর্যন্ত ঠিক হোলো আমরা উত্তরা দিয়াবাড়িতে যাবো ঘুরতে। দিয়া বাড়ির কথা অনেক জায়গায় শুনেছি। কিন্তু কখনো সেখানে যাওয়া হয়নি।

IMG_20240130_195349.jpg

এমনকি আমার খালাতো বোনেরা যারা ঢাকায় থাকে তারাও নাকি সেখানে কখনো যায়নি। এই কারণে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম দিয়াবাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার। যদিও সেখানের কি অবস্থা সেটা সম্বন্ধে আমাদের কারোরই ধারণা ছিলো না। তাছাড়া আমাদের কারোরই দিয়াবাড়িতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিলো না। সেই কারণে কিভাবে সেখানে পৌঁছাব সেটা নিয়েও কোন ধারণা ছিলো না। মোটামুটি নিজেদের ধারণার উপর ভিত্তি করে আমরা ঠিক করলাম মেট্রোতে করে আমরা সরাসরি উত্তরায় চলে যাবো। তারপর সেখান থেকে দিয়া বাড়িতে যাবো। পরিকল্পনা করা হলো পরদিন দুপুরবেলায় আমরা তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হবো। বাসা থেকে বের হয়ে শান্তিনগর থেকে মেট্রোর যে স্টেশনটা কাছে হয় সেখান থেকে গিয়ে আমরা মেট্রোতে করে উত্তরায় পৌঁছাবো। তারপর সেখান থেকে দিয়াবাড়িতে যাবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বের হতে হতে বেলা চারটা বেজে গেলো।


IMG_20240130_195553.jpg

বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা নিয়ে আমরা সচিবালয় মেট্রো স্টেশনের দিকে রওনা দিলাম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় জ্যামের কারণে আমাদের মেট্রো স্টেশনে পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। মেটাল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছোটখাটো একটা ঝামেলার কারণে আমাদের আরও কিছুটা দেরি হোলো। যখন আমরা টিকেট কেটে মেট্রোতে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্মে গিয়েছি ততক্ষণের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। তবে সেদিন মেট্রোতে উঠতে গিয়ে একটা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। আমরা যখন মেট্রো স্টেশনে গিয়েছি ততক্ষণে অফিস ছুটির সময় হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে মেট্রোতে উঠতে গিয়ে দেখি ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তারপরও বহু কষ্টে তার ভিতরে আমরা উঠে বসলাম। যদিও বসার জায়গা পায়নি। সবাই মোটামুটি দাঁড়িয়ে ছিলাম। এত ভিড়ের ভিতর বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে মেট্রোতে উঠে পরবর্তীতে মনে হচ্ছিল কাজটা মনে হয় ঠিক হয়নি। আমাদের আসলে এই সময়ে মেট্রোতে ওঠা উচিত হয়নি। কারণ অফিস ছুটির সময়ে মেট্রোতে প্রচন্ড ভিড় থাকে। তবে সেই ভিড়টা যে এতো পরিমাণে হবে সেটা আগে ধারণা করতে পারিনি। যাই হোক ভিড় হলেও মেট্রো দ্রুত গতিতে চলার কারণে আমাদের খুব একটা বেশি সমস্যা হচ্ছিল না। তাছাড়া মেট্রো মিরপুরে পৌঁছানোর পরে কিছু সিট খালি হোলো। তখন আমাদের সাথে থাকা মেয়েদেরকে সেখানে বসার ব্যবস্থা করে দিলাম। অবশ্য তার অল্প কিছু সময় পরেই আমরা উত্তরায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেটা ছিল মেট্রোর একেবারে শেষ স্টেশন।


IMG_20240131_194841.jpg

সেদিনের মেট্রো ভ্রমনে প্রচন্ড ভিড় বাদে সবকিছু ভালো লেগেছিলো। যাইহোক আমরা শেষ স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে নিচে নেমে এলাম। তারপর চিন্তা করতে লাগলাম এখন দিয়া বাড়িতে যাবো কিভাবে বা এখন যাওয়া ঠিক হবে কিনা? কারণ ততক্ষণে দিনের আলো প্রায় নিভু নিভু। তারপরেও তিনটা রিক্সা নিয়ে আমরা দিয়া বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। অবশ্য রিক্সাওয়ালা আমাদেরকে যেখানে নিয়ে গেলো সেটাকে দিয়াবাড়ি বলে কিনা সেটা নিয়ে আমাদের মনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যেহেতু আমরা দিয়াবাড়ি ভালোভাবে চিনি না তাই কিছু বলতেও পারছিলাম না। রিক্সাওয়ালারা আমাদেরকে উত্তরায় একটি ব্রিজের গোড়ায় নামিয়ে দিলো। সেখানে একটি জায়গা দেখতে পেলাম যেখানে কিছু দোকানপাট ছিল আর নৌকায় চড়ার ব্যবস্থা ছিলো। যদিও খালের পানি শুকিয়ে প্রায় দুর্গন্ধ বের হওয়া শুরু হয়েছিলো। অতএব এর ভেতরে নৌকা চড়ার প্রশ্নই আসে না।


আমি আমার সাথের লোকজনকে বললাম আপনারা সবাই এখানে ঘোরাফেরা করতে থাকুন। আমি একটু নামাজ আদায় করে আসি। কারন ততক্ষণে মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে গিয়েছিলো। আমি নামাজ পড়ে এসে তাদেরকে ফোন দিলে জানতে পারলাম তারা সেখানেই রয়েছে। সেখানে একটি জায়গা দেখতে পেয়েছিলাম যেটাকে তারা পার্ক বলে দাবি করছিলো। তবে সেখানে গিয়ে আমি পার্কের কোন আলামত দেখতে পাইনি। সেখানে একটি জায়গায় ফুল এর নার্সারি দেখতে পেয়েছিলাম আর সে জায়গাটার ভিতরে ছিল কিছু রেস্টুরেন্ট। অবশ্য ওগুলোকে রেস্টুরেন্ট না বলে টং দোকান বলাই ভালো। যাই হোক আমি সেখানে পৌঁছানোর পর সবাই জানালো এখানে দেখার মত কিছুই নেই। শুধু শুধু দাঁড়িয়ে মশার কামড় খেতে হচ্ছে। অবশ্য আমরা সেখানে যাওয়ার পথে একটি জায়গা দেখেছিলাম। যেটার নাম ছিলো বউবাজার। সেই জায়গাটাতে দেখেছিলাম অনেক মানুষের আনাগোনা। সেখানে বিভিন্ন রকম খাবারের ব্যবস্থা দেখতে পেয়েছিলাম। আমরা ঠিক করেছিলাম ঘোরাফেরা করে যাওয়ার পথে সেখান থেকে খাওয়া দাওয়া করে তারপর ফিরবো। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থান

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

বিকেল ৫ টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচুর চাপ থাকে মেট্রোরেলে। এমন একটা অবস্থা যে দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত থাকে না। পুরুষ মানুষ হলে ঠিক আছে, তবে মহিলা এবং শিশু নিয়ে এই সময়ে মেট্রোরেলে উঠলে অনেক ঝামেলা হয়ে যায়। আমিও কিছুদিন আগে আমার ওয়াইফকে নিয়ে এই সময়ে মেট্রোরেলে উঠে ঝামেলায় পরেছিলাম ভিড়ের জন্য। যাইহোক দিয়াবাড়িতে ঘুরতে ভালো লাগে যখন কাশফুল থাকে তখন। লেক ভিউটা দারুণ লাগে তখন। আমি প্রায়ই সেখানে যাই উত্তরা বিআরটিএ। দিয়াবাড়িতে ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড রয়েছে এবং সেটা খুব সুন্দর। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ব্যস্ততম শহরে রাস্তায় জ্যাম লেগেই থাকে ৷ অনেক ঝামেলা পেরিয়ে এসে সন্ধ্যায় টিকিট কেটে মেট্রোরেলে এমন বাজে অবস্থায় পড়েছেন জেনে খারাপ লাগলো ৷ অফিস ছুটি হওয়াতে বোধহয় মেট্রোরেলে এতো ভীর পড়েছে ৷ এমন ভীরের মাঝে চলাচল করা আসলেই কষ্টসাধ্য কাজ ৷ যাই হোক , এরপর রেস্টুরেন্টে খাওযা দাওয়া এবং ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য , আশা করি এর পরের পর্ব খুবই শীঘ্রই শেয়ার করবেন ৷ অপেক্ষায় রইলাম

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

বর্তমান লোকজন ট্রেনে যাতায়াত বেশি কমফোর্ট ফিল করে।এজন্য ট্রেনে যাত্রীদের খুব চাপ।আরো অফিস ছুটির টাইম হওয়ায় আপনাদের ভিড়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে।দিয়াবাড়ি জায়গাটা আপনাদের অপরিচিত তাই রিক্সাওয়ালার উপরেই নির্ভর করতে হয়েছে বলা যায়।আপনার সাথে লোকদের অপেক্ষা করতে বলে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন আপনি।অন্যরা পার্ক দাবি করলেও সেখানে পার্কের আলামত পাননি আপনারা।আর টং দোকান ছিল কিছু সেখানে।অপরিচিত জায়গায় গেলে এরকমই হয় সাধারণত। বৌউবাজার থেকে ঘোরাফেরা করে খাওয়া দাওয়া করে ফিরবেন বলে ঠিক করেছিলেন।এর পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।বাজে অভিজ্ঞতা সাথে মজার কি অভিজ্ঞতা ছিল আপনাদের সেটা জানতে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 64865.94
ETH 3547.45
USDT 1.00
SBD 2.33