পরিবার নিয়ে বাইরে টুকিটাকি কেনাকাটা করা ও খাওয়া দাওয়ার গল্প (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন ধরেই আমার মেয়ে মার্কেটে যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিলো। তার উদ্দেশ্য ছিল বাসায় পড়ার জন্য একজোড়া স্যান্ডেল কেনা। তার আগের স্যান্ডেল গুলি ছোট হয়ে গিয়েছে। আসলে বাড়তি বয়সের এই এক সমস্যা। কোন কিছু কেনা হলে সেটা অল্প কিছুদিন পরেই আর লাগেনা। কয়েকদিন ধরেই খেয়াল করছিলাম সে ঘরের ভেতর খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করছিলো। এখন হালকা ঠান্ডা পড়ে গিয়েছে। তাই ফ্লোরটা ঠান্ডা থাকে। আমার মেয়ের আবার ঠান্ডা সমস্যা লেগেই থাকে। সে কারণে আমি বারবার তাকে বলছিলাম স্যান্ডেল পড়ে হাটাহাটি করতে। কিন্তু সে আগেকার সেন্ডেল না পরে নতুন স্যান্ডেল কেনার জন্য আমাকে বলছিলো। তার কথা আগের সেন্ডেলগুলো ছোট হয়ে গিয়েছে। তাই এখন নতুন স্যান্ডেল কিনতে হবে।

IMG_20231029_182958.jpg

গত কয়েকদিন ধরেই আমার শরীর কিছুটা খারাপ যাচ্ছে। আমার ঠান্ডার সমস্যাটা যাচ্ছেই না। সেইসাথে যুক্ত হয়েছে মাথাব্যথা। সবকিছু মিলিয়ে বেশ খারাপ অবস্থায় রয়েছি। গত পরশুদিন মেয়েকে নিয়ে মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেদিন সমস্যার কারণে যেতে পারিনি। গতকালকেও যখন সে মার্কেটে যাওয়ার জন্য জেদ করছিল তখনও তাকে বলেছিলাম আগামীকাল যাবো। কিন্তু তার জোরাজুরিতে শেষ পর্যন্ত মার্কেটে যেতেই হোলো। প্রথমে আমাদের বিকালের দিকে মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এখনকার বিকালে সময় থাকে একেবারেই কম। এই কারণেই আমি আমার স্ত্রীকে বললাম আমরা মাগরিবের নামাজের পরে মার্কেটের দিকে যাবো।


IMG_20231029_183545.jpg

আমি আর আমার স্ত্রী ঠিক করলাম প্রথমে আমরা স্বপ্ন সুপার শপে যাবো। সেখান থেকে টুকিটাকি কিছু কেনাকাটা করে তারপর মেয়ের স্যান্ডেল কিনতে যাবো। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক মাগরিবের নামাজের পরপরই আমরা বাসা থেকে রওনা দিলাম স্বপ্ন সুপার শপের উদ্দেশ্যে। আমার বাসা থেকে স্বপ্ন সুপার শপের দূরত্ব এক কিলোমিটারের ও কম। সেখানে হেঁটে যেতে আমার সাত থেকে আট মিনিট মতো সময় লাগে। তবে যেহেতু পরিবার নিয়ে যাচ্ছি তাই সেখানে রিক্সা করেই গেলাম। মাত্র অল্প কয়েক মিনিটই রিক্সায় করে স্বপ্ন সুপার শপের সামনে পৌঁছে গেলাম। তারপর আমরা স্বপ্নতে ঢুকে বিভিন্ন জিনিস দেখতে লাগলাম। আমরা মূলত স্বপ্নতে গিয়েছিলাম সেখানে বেডশিট এবং কমফোর্টারের উপর একটা অফার চলছিলো সেটা দেখতে। তবে গিয়ে দেখতে পেলাম সেই বেডশীট এবং কমফোর্টার গুলো দেখতে খুব একটা ভালো ছিল না। যার ফলে আমরা আর সেগুলো কেনার আগ্রহ দেখালাম না।


IMG_20231029_183550.jpg

এই সুপারশপ গুলিতে আসলে একটা সমস্যা হয় সেটা হচ্ছে আপনার প্রয়োজন না থাকলেও কিছু না কিছু এখান থেকে কিনেই বের হবেন। তেমনি আমাদেরও কিছু টুকিটাকি জিনিসপত্র কেনা হলো। যেমন আমার স্ত্রী তার চুল মোছার জন্য একটা টাওয়েল কিনলো। মেয়ে নিল এক প্যাকেট বিস্কিট। আমি স্বপ্নতে গিয়েছিলাম মূলত ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানি চাট মাসালা কেনার জন্য। এই চাটমাসালা গুলি বাইরের দোকানে খুব একটা পাওয়া যায় না। আমিও আমার কাঙ্খিত আইটেমটি সেখানে পেয়ে গেলাম। আরো কেনা হলো এক প্যাকেট চিকেন নাগেটস। কেনাকাটা শেষ করে আমরা ঘুরে ফিরে স্বপ্নের পুরো আউটলেট টা দেখতে লাগলাম। এই ধরনের সুপার শপের জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি থাকে। আবার কিছু জিনিসপত্র কম দামেও পাওয়া যায়। যেমন আমি খেয়াল করে দেখলাম এখানে যে সবচাইতে ভালো মানের মিনিকেট চাউল বিক্রি হচ্ছে সেটা মাত্র ৬৫ টাকা কেজি। অথচ আমি বাইরে থেকে যখন ভালো মানের মিনিকেট চাউল কিনি সেটার দাম পড়ে ৭৫ টাকার কাছাকাছি।

তাছাড়া সেখানে দেখতে পেলাম কিছু পন্যে ডিসকাউন্টও চলছে। আবার কিছু পণ্যে দুটো কিনলে সাথে একটা ফ্রি এমন অফার চলছে। যদিও সেই প্রোডাক্টগুলি আমরা ব্যবহার করি না বা খাই না। সেই কারণে আর কেনা হয়নি। যাইহোক স্বপ্ন থেকে কেনাকাটা শেষ করে বিল মিটিয়ে আমরা বাইরে বেরিয়ে এলাম। এখন উদ্দেশ্য হচ্ছে মেয়ের জন্য স্যান্ডেল কেনা। স্বপ্ন থেকে বের হয়ে রাস্তাটা পার হতেই কিছুদূর আগানোর পরেই পেয়ে গেলাম মেয়ের জন্য স্যান্ডেল। স্যান্ডেল দেখে মেয়র পছন্দ হওয়াতে সাথে সাথেই নিয়ে নিলাম। এর ভেতর আমার ওয়াইফ বলল বাসার টুকিটাকি কিছু জিনিসপত্র কিনতে হবে। স্যান্ডেলের দোকানের পাশেই দেখতে পেলাম একটি দোকান রয়েছে। যেখানে বাসার ব্যবহৃত নৃত্য প্রয়োজনিয় সামগ্রীর প্রায় সবই পাওয়া যায়। সেই দোকান থেকে আমার স্ত্রী তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিলো। কেনাকাটা পর্ব শেষ হওয়ার পরে আমরা ঠিক করলাম এখন খেতে যাবো। আমি পরিবার নিয়ে যখনই বাইরে যাই চেষ্টা করি কিছু খাওয়া দাওয়া করার। তবে সেই খাওয়া-দাওয়ার গল্প সামনের পর্বের জন্য থাক। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

যাক তাহলে অবশেষে মেয়ের কথা আর ফেলতে পারলেন না আর সেজন্য বাহিরে যেতেই হলো। তবে এটা ঠিক এখন শীতকাল শুরু হওয়ার জন্য বিকাল বেলা একদমই সময় থাকে না। সেজন্য আমিও বাহিরে গেলে সন্ধ্যার পর বের হই। আপনারা স্বপ্নতে গিয়ে তাহলে অনেক কিছুই কিনেছেন। আমাদের এখানেও স্বপ্ন সুপার শপ রয়েছে আর মাঝে মাঝেই যাওয়া হয়। সেখান থেকে জিনিসপত্র কিনতে আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে। আপনার মেয়ের জন্যও স্যান্ডেল কিনেছেন দেখে ভালো লাগলো। বাহিরে যাওয়া মানেই কেনাকাটা আর খাওয়া দাওয়া। আপনাদের বাহিরে খাওয়া দাওয়ার গল্প পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

মেয়ের জেদ এর কাছে অবশেষে তাহলে হার মানতেই হলো। আসলে বাচ্চাদেরকে বাহিরে যাওয়ার কথা বললে,না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই। স্বপ্ন আউটলেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে আমার খুব ভালো লাগে। একসাথে সবকিছু কেনা যায় এবং অনেক পণ্যে বিভিন্ন ধরনের অফার থাকে। কেনাকাটা শেষ করে তাহলে খাওয়া-দাওয়া করতে গিয়েছেন। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ঠান্ডা এবং মাথাব‍্যাথা যখন একসঙ্গে হয় তখন অসহনীয় মনে হয়। এই ব‍্যাপারটা আমারও মাঝে মাঝে হয়। সুপার শপ এক জায়গাই অনেক কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু এইরকম নিয়ম সত্যি বেশ অবাক করা। আর উঠতি বয়সে সবারই এইরকম হয়। জামা কাপড় পায়ের জুতা ছোট হয়ে যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ভাইয়া ঠান্ডা আর মাথা ব্যথা হলে শরীরটা খুবই খারাপ লাগে।হঠাৎ ওয়েদার চেঞ্জ হওয়াতে এই অবস্থা।ঠান্ডা পরতে না পরতেই ফ্লোর ঠান্ডা হয়ে যায়। আর যেহেতু মেয়ের ঠান্ডার সমস্যা তাই ঘরে খালি পা না রাখাই ভালো। আপনি মেয়ের স্যান্ডেল কিনতে বাইরে গেলেন।আগে স্বপ্ন সুপার শপে গেলেন।সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু কিনলেন।এটা ঠিক বলেছেন এসব শপে গেলে কিছু না কিছু কেনা হয়ই।এরপর বের হয়ে মেয়ের স্যান্ডেল কিনলেন।এই দোকানের পাশেই আর একটি দোকান থেকে বাসার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনলেন।আর বাইরে গেলে তো খাওয়া-দাওয়া হবেই।আগামী পর্বে ইনশা আল্লাহ দেখতে পাবো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

মেয়েটা তো ধীরে ধীরে বড় হয়ে যাচ্ছে আর সেজন্যই পায়ের মাপও বড় হচ্ছে।তবে মেয়ের বায়নাতে বাইরে গিয়ে ভালোই হয়েছে।একে তো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পেরেছেন সাথে মেয়ের আবদার পূরণ করেছেন।তাছাড়া বাইরে গিয়ে সবাই মিলে একসাথে খাওয়াদাওয়া করেছেন।সবমিলিয়ে প্রয়োজন পূরণ এবং আনন্দ দুটোই হলো।খুব ভালো লাগলো ভাইয়া,আপনাদের এই মুহুর্তটা পড়তে পেরে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 59181.56
ETH 2521.00
USDT 1.00
SBD 2.47