স্ত্রীকে নিয়ে বৈশাখী মেলা দর্শন।
আমার আইডিয়াটা আমার স্ত্রীরও বেশ পছন্দ হোলো। যদিও সে চাচ্ছিলো আমাদের মেয়েকে সাথে নিয়ে যেতে। কিন্তু মেয়েকে নিতে হলে আবার উপরে যেতে হবে। তারপর তাকে তৈরি হতে হবে। তাই আমি বললাম আজকে আপাতত আমরা দুজনেই যাই। এরপরে মেয়েকে নিয়ে একদিন ঘুরে আসা যাবে। আমার প্রস্তাবে সে রাজি হয়ে গেলো। তারপর দুজনে মিলে রওনা দিলাম বৈশাখী মেলার উদ্দেশ্যে। মেলার অবস্থান আমাদের বাসা থেকে বেশ কাছেই ছিলো। যার ফলে সেখানে পৌঁছতে আমাদের বেশি সময় লাগেনি। এই মেলাটি আমাদের বেশ পরিচিত। প্রতি বছরই ফরিদপুর কোর্ট চত্বরে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই মেলার একটা সমস্যা হচ্ছে মেলাটি খুবই অল্প জায়গায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড়ে চলাফেরা মুশকিল হয়ে পড়ে। যাই হোক আমরা সেখানে পৌঁছে প্রথমেই দেখতে পেলাম ঠিক চত্বরের উপরে একটি ভাস্কর্যের গোড়ায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটা মেলার অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য। আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করলাম।
তারপর মেলার স্টল গুলোতে ঘুরতে লাগলাম। তবে খেয়াল করে দেখলাম অন্যান্য মেলায় যে ধরনের স্টল থাকে এখানেও সেই একই রকমের স্টল। যদিও মেলার শুরুতেই আমরা মাটির খেলনার একটি স্টল দেখতে পেয়েছিলাম। সেই স্টলটি দেখে আমাদের দুজনেরই বেশ ভালো লেগেছিলো। কারণ আজকালকার মেলায় এই ধরনের স্টল দেখা যায় না। অবশ্য বৈশাখী মেলায় এই ধরনের স্টল না থাকলে মেলাটা কে অসম্পূর্ণ মনে হোতো। যাইহোক আমরা ঘুরে ফিরে দোকান গুলো দেখছিলাম। তবে যেহেতু মেলাটি অল্প জায়গা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় তাই সেখানে দেখার খুব একটা বেশি কিছু ছিলো না। আরেকটা জিনিস খেয়াল করে দেখলাম সেখানে বেশিরভাগ স্টল প্রায় একই রকমের মানে একই রকমের পন্য সামগ্রী নিয়ে স্টল গুলি বসেছে। তবে মেলার শেষের দিকে দেখতে পেলাম সেখানে কাচ এবং সিরামিকস এর তৈরি বাসনপত্র নিয়ে কয়েকটি স্টল হয়েছে। তাদের বেচাকেনা ও দেখলাম বেশ ভালো। আমরাও সেই স্টল গুলিতে উঁকি ঝুঁকি দিয়ে দেখতে লাগলাম কি নেয়া যায়? আমাদের দুজনেরই একসেট কালো প্লেট পছন্দ হয়েছিলো। তবে সেদিন ভিড় বেশি থাকায় আমি ঠিক করেছি মেলা শেষ হওয়ার আগে একদিন গিয়ে সেই প্লেট সেটটা কিনে আনতে হবে।
ঘোরাফেরার এক পর্যায়ে সেখানে দেখতে পেলাম একটি ফুড কার্টে চিকেন ফ্রাই বিক্রি করছে এক বিক্রেতা। আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম চিকেন ফ্রাই খাবে কিনা? সে সম্মতি জানালে তার জন্য চিকেন ফ্রাই অর্ডার করলাম। যদিও ফ্রাইটা দেখে আমার কাছে খুব একটা ভালো মনে হয়নি সেজন্য আমি আমার জন্য অর্ডার করিনি। পরবর্তীতে আমার ধারনাই সত্য প্রমাণিত হোলো। আমার স্ত্রী চিকেন ফ্রাই টা খেতে গিয়ে আমাকে জানালো খেতে খুব একটা ভালো না। যাইহোক তার খাওয়া শেষ হলে তারপরে দুজন আবার মেলায় ঘুরতে লাগলাম। মেলায় যখন প্রবেশ করি তখন দেখেছিলাম একটি স্টলে আইসক্রিম তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। আমি মেলায় প্রবেশ করার সময় চিন্তা করেছিলাম এই দোকান থেকে আইসক্রিম খেতে হবে। মনে মনে চিন্তা করেছিলাম ফেরার সময় সেখান থেকে আইসক্রিম খাবো। আমাদের মেলায় যখন ঘোরাফেরা শেষ হল তখন আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে সেই দোকানে গেলাম। তবে সেখানে গিয়ে আমাকে হতাশ হতে হোলো। দোকানদার জানালো তাদের আইসক্রিম আজকের মতো শেষ হয়ে গিয়েছে। আইসক্রিম না খেতে পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়ে দুজনে বাড়ির পথে ফিরতে লাগলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দেরিতে হলেও ভাই আপনাকে জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা। নববর্ষের দিন সবাই চাই একটু অনুষ্ঠানে মেতে উঠি। আর সেই অনুষ্ঠানে শুধু আপনি নয় বৌদিও গিয়েছিল। দুজনায় মিলে বৈশাখী মেলাটা খুবই সুন্দর ভাবে উদযাপন করেছেন দেখে মনে হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির একটি অন্যরকম উৎসবের সবাই মেতে ওঠে নতুন রূপে নতুন নতুন সাজের নতুন পোশাকে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম মাটির তৈরি বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র দেখতে বেশি ভালো লাগলো। কারণ এগুলো আর এখন দেখা যায় না। তবে মাঝে মাঝে বৈশাখীতে এগুলো দেখা যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
বাংলা নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে। বৈশাখ মানেই বৈশাখি মেলা।তবে আপুর ডাক্তার যেহেতু চলে গিয়েছিল তাই আপনারা দুজন মেলায় ঘুরতে গেলেন। যদিও বাসা থেকে কাছেই ছিল।মেলার প্রধান আকর্ষন এই মাটির জিনিসগুলো। আমার তো মাটির জিনিস ভীষণ পছন্দ। মাটির খেলনা গুলো দেখলে ছেলেবেলার মেলায় যাওয়ার অনুভূতি গুলো মনে পরে যায়।আপনারা দুজন চমৎকার সময় কাটিয়েছেন।মেলাটি ছোট হলেও মন্দ নয়।আপনাদের এক সেট কালো প্লেট পছন্দ হয়েছিল।তা এসে পরে নেবেন জেনে ভালো লাগলো।তবে দুঃখের বিষয়টি হচ্ছে আইসক্রিম খেতে গিয়ে দেখলেন আইসক্রিম শেষ।কিছু খেতে গিয়ে না পাওয়া গেলে খারাপই লাগে আসলে।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
ডাক্তার সাহেব না থাকায় আপুকে নিয়ে মেলায় চলে গেলেন। আমাদের দিকে কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি। এজন্য উপভোগও করতে পারলাম না। তবে আপনাদের ফরিদপুরে মেলা হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে কম জায়গায় মেলা হলে ভালো লাগে না। এই গরমের মাঝে মেলার ভিতরে থাকতে মুশকিল হয়ে যায়। আপনার এক সেট প্লেট চয়েস হয়েছিল। তবে সেটি পরে পাবেন কি না সেটাই দেখার বিষয়! বিক্রি না হয়ে গেলেই হলো ।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক সুমা আপুকে নিয়ে বৈশাখী মেলায় গিয়েছেন,এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দোকান মোটামুটি অনেক দিন পর দেখলাম। তাছাড়া অন্যান্য দোকানের ফটোগ্রাফি গুলো দেখেও খুব ভালো লাগলো। আইসক্রিম খেতে পারলে আপনাদের কাছে আরও বেশি ভালো লাগতো। যাইহোক সবমিলিয়ে পোস্টটি খুব ভালো লাগলো ভাই। এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।