সাগরের অদম্য মানসিকতার গল্প (তৃতীয় পর্ব)। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রথম পর্বের লিংক

দ্বিতীয় পর্বের লিংক

প্রথম ভাড়া পেয়ে সাগর খুশি হয়ে যায়। লোকটি সাগর কে জিজ্ঞাসা করে বাজারে যাবে? সাগর বলে ভাই আমি তো চিনি না আপনি আমাকে একটু চিনিয়ে দিয়েন। আমি সব জায়গায় যাবো। লোকটি ভাড়ার কথা জিজ্ঞেস করলে সাগর বললো যেটা ন্যায্য ভাড়া আপনি সেটাই দিয়েন। তারপর সাগর লোকটির দেখানো পথে তাকে বাজারে পৌঁছে দেয়। রিক্সা থেকে নেমে লোকটা সাগরকে ২০ টাকা ভাড়া দেয়। প্রথম ইনকামের টাকা পেয়ে সাগর খুবই খুশি হয়।

12.jpg

ছবির সোর্স

এভাবে সাগর টানা দুপুর পর্যন্ত রিকশা চালাতে থাকে। রিক্সা চালাতে চালাতে সাগর অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে সাগর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। ক্লান্ত অবস্থায় রিক্সার উপরই ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ করে এক প্যাসেঞ্জারের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। আবার সাগর রিকশা চালাতে শুরু করে। এভাবে রাত পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে সাগর রিকশা গ্যারেজে জমা দিতে যায়। সেখান থেকে একসাথে দুজনে বাড়ি ফিরে আসে। সাগরকে সগির মিয়া জিজ্ঞেস করে কি রে প্রথমদিন কত টাকা আয় করলি? সাগর বলে ৩০০ টাকা। সগির মিয়া বলে প্রথম দিন হিসাবে ইনকাম খারাপ হয় নাই তোর।

সাগর সগীর মিয়া কে বলে আমার প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে। মনে হয় আর একটুও শক্তি নাই শরীরে। সাগর বাড়ি ফিরে খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠে আবার তাকে রিকশা চালাতে যেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সাগরের মা তাকে জিজ্ঞেস করে কিরে শহরে কি কাজ পেলি? সাগর বলে একটি দোকানের কর্মচারীর কাজ পেয়েছি। শুনে ওর মা খুব খুশি হয়। ওর মা ওকে পরামর্শ দেয় দোকানে কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ালেখাটা চালিয়ে যা। সাগর মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়। তারপর ভাত খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। সগীর মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দুজনে একসাথে শহরের পথে রওনা দেয়।

আজ সাগরের শরীরটা অনেক ব্যথা করছে। আসলে তার এত পরিশ্রম করার অভ্যাস নেই। এই ব্যথা শরীর নিয়েই সাগর রিকশা চালাতে এসেছে। সাগর গ্যারেজ থেকে রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে গেল। এভাবে সারাদিন রিক্সা চালিয়ে সাগর রাত রাতের বেলায় বাড়ি ফিরে যায়। আজকে বাড়ি ফেরার সময় সাগর কিছু বাজার করে নিয়েছে। ওর মা-বাবা দুজনেই সাগরের হাতে বাজার দেখে অনেক খুশি হয়। সাগর বাড়িতে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে সাগরের মা সাগর কে জিজ্ঞেস করে কিরে দোকানের কাজে কি অনেক বেশি পরিশ্রম নাকি? তুই দেখি বাড়িতে এসে কোনো কথা বার্তা না বলে শুধু খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়িস। সাগর বলে অনেক পরিশ্রম হয় মা। তারপর সাগর খেয়েদেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এভাবেই তিন-চার মাস কেটে যায়।

একদিন সাগর রিক্সা নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। এক লোক তাকে ডাকে এই রিক্সা যাবে? সাগর বলে হ্যাঁ যাবো বলে সাগর লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখে সাগর প্রথম যে ভাড়া মেরেছিল সেটা ছিল এই লোকটা। লোকটা রিক্সায় উঠার পর সাগর রিক্শা চালাতে থাকে। সাগর লোকটাকে বলে স্যার আপনি ছিলেন আমার রিক্সার প্রথম প্যাসেঞ্জার। লোকটা বলে তাই নাকি?

তারপর রিক্সা চালাতে চালাতে সাগর লোকটার সাথে গল্প করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর লোকটা বলে তোমার কথা শুনে তো তোমাকে রিক্সা চালক মনে হচ্ছে না। সাগর লোকটাকে সবকিছু খুলে বলে। সাগর শিক্ষিত ছেলে এটা জানার পর লোকটা একটু অবাক হয়। এত ভালো রেজাল্ট করেও সে কেন রিকশা চালাচ্ছে লোকটা বুঝতে পারে। এভাবে গল্প করতে করতে তার গন্তব্যে পৌঁছে যায়। লোকটা রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিয়ে সাগরকে বলে তুমি আমার দোকানে কাজ করবে?

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok


Polish_20211012_184119287.jpg

আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।

Sort:  
 3 years ago 

সাগরের অদম্য মানসিকতার গল্পের তিনটি পর্বে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ভাই। এ পর্বে সাগরের কাজ সম্পর্কে জানতে পারলাম। সারাদিন পরিশ্রম করে রিকশা চালিয়ে সাগর ধীরে ধীরে নিজেকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এবার সাগরের কাজ ভিন্ন দিকে মোড় নেবে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। পরিশ্রম করলে কখনো কেউ বিফল হয় না। আমরা আপনার গল্পের মাধ্যমে এক অদম্য সাগরের কথা জানতে পারলাম। এবং কোন কাজকে ছোট মনে করা যাবে না। আপনার গল্পের অদম্য মানসিকতার সাগর আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74