সাগরের অদম্য মানসিকতার গল্প (দ্বিতীয় পর্ব)। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
প্রথম পর্বের-- লিংক
এমনি করে দিন কেটে যেতে থাকে। সাগর মাঝে মাঝে ওর বাবার কাজে সাহায্য করে। একদিন সাগর মন খারাপ করে রাস্তার পাশে বসেছিল। হঠাৎ করে ওর খুব ক্ষুধা লাগলো। আজকাল খাওয়া-দাওয়ার প্রতি ওর মোটেই নজর নেই। কিন্তু এখন ক্ষুধা এতটাই তীব্র যে ওর অস্থির লাগছিল। বাড়ির কাছেই একটি সিংগারা পুরির দোকান আছে।সেখানে গিয়ে একটি সিংগারা কিনলো। তারপর সেটি খেতে খেতে বাড়ির দিকে ফিরছিল। দোকানদার সিঙ্গারা দিয়েছিল একটি পুরোনো খবরের কাগজে মুড়ে। সিংগারাটা খাওয়া শেষ হলে সাগর কাগজটা দিয়ে হাত মুছে ছুঁড়ে ফেলতে গেলো। হঠাৎ করে ওর কাগজের দিকে নজর গেল।
ছবির সোর্স- লিংক
কাগজে কি লেখা আছে সেটা ও পড়তে শুরু করল। সেই কাগজে বাংলাদেশের এক শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতির দরিদ্র অবস্থান থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ধনী হওয়ার গল্প লেখা ছিলো। সাগর এক নিশ্বাসে পুরো লেখাটা পড়ে শেষ করলো। গল্পটা পড়ার পর সাগর নিজের ভেতর এক ধরনের আত্মবিশ্বাস অনুভব করলো। সাগর তখন চিন্তা করতে লাগল যে ওই লোকটাও আমার মত পরিস্থিতিতে ছিলো। সেখান থেকে যদি সে আজকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ধনী হতে পারে। তাহলে আমি কেন পারব না? সাগর সারাদিন এ ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করতে লাগল। রাতে এসে সিদ্ধান্ত নিল যেভাবেই হোক সে যে কোন একটা কাজ খুঁজে নেবে।
নিজে কাজ করে টাকা জমিয়ে সেই টাকা দিয়ে পড়ালেখা করবে। চিন্তা করতে লাগল কি কাজ করা যায়। তার তো কোন কাজেরই অভিজ্ঞতা নেই। তার হঠাৎ মনে পড়লো তার এক বন্ধুর বাবার ভ্যান আছে। সে মাঝে মাঝে দুষ্টুমি করে সেই ভ্যান চালিয়েছে। মুহূর্তেই সাগর সিদ্ধান্ত নিল সে শহরে গিয়ে আগামী এক বছর রিক্সা চালাবে। এই চিন্তা করে সাগর ঘুমাতে গেল। তার পাশের বাড়ির সগীর চাচা শহরে রিকশা চালায়। তার আয় রোজগার একেবারে খারাপ না।
সাগর সকালে উঠেই সগীর মিয়ার বাড়িতে চলে গেল। সগীর মিয়া সাগরকে এত সকালে দেখে খুব অবাক হল। সাগরকে জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার তুমি এত সকালে আমার বাড়িতে। কি মনে করে? সাগর বলল চাচা আমিও আপনার মত শহরে গিয়ে রিকশা চালাতে চাই। সাগরের কথা শুনে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল। সাগর তখন তাকে সবকিছু খুলে বলল। সাগরের কথা শুনে সগীর মিয়া সাগর কে বলল ঠিক আছে। আমি আজকে আমার মহাজনের সাথে কথা বলে আসি। কালকে তোকে নিয়ে যাব। সাগর খুশি হয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে গেল।
সাগরের মা ছেলেকে হঠাৎ কিছুটা হাসিখুশি দেখে জিজ্ঞেস করল। কিরে তোর মন ভালো হয়েছে? সাগর কিছু না বলে মুচকি হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল। সাগর তার এই রিকশা চালানোর কথা তার বাড়িতে কিছু জানায়নি। কারণ সে জানে তার বাবা এই কথাটা শুনে খুব কষ্ট পাবে। পরদিন সকালে সাগর তার মাকে বলল সে কাজ খুঁজতে শহরে যাবে। সাগরের মা শুনে খুবই খুশি হলো। তারপর সাগর সগির মিয়ার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হল।
তারপর তারা দুজন একসাথে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। সগির মিয়া সাগরকে তার মহাজনের কাছে নিয়ে একটি রিক্সা সাগরকে দেয়ার অনুরোধ করল। কিন্তু তার মহাজন' সাগরকে দেখে তাকে রিকশা দিতে রাজি হচ্ছিল না। সে বলছিল এতোটুকু ছেলে রিকশা চালাতে পারবে না। তাছাড়া ওর রিকশা চালানোর আগের অভিজ্ঞতা নেই। সাগর সাথে সাথে বলল না চাচা আমি রিকশা চালাতে পারব। আমি গ্রামে ভ্যান চালিয়েছি। তারপর সগির মিয়ার অনুরোধে মহাজন' সাগর কে একটি রিকশা দিল চালানোর জন্য। সগীর মিয়া আর সাগর দুজন দুটো রিক্সা নিয়ে একসাথে গ্যারেজ থেকে বের হয়ে গেল।
শুরু হলো সাগরের সংগ্রামী জীবন। সগীর মিয়া সাগরকে কিছু পরামর্শ দিল। বলল শহরের ব্যস্ত রাস্তায় যাওয়ার দরকার নেই। যেহেতু তুই নতুন রিকশা চালাবি। তাই ব্যস্ত রাস্তায় গেলে অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে। প্রথমে কিছুদিন শহরের আশেপাশে ফাঁকা রাস্তায় ভাড়া মারবি। তারপর রিক্সা চালানো ভালোমতো শিখে গেলে তখন যেকোনো জায়গায় ভাড়া মারতে পারবি। এই বলে সগীর মিয়া চলে গেল। সাগর আস্তে আস্তে রাস্তা দিয়ে রিকশা চালাতে লাগলো।
এর ভেতর হঠাৎ করে একজন ডাক দিলোঃ এই রিক্সা যাবে?(চলবে)
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
ভাইয়া আপনার আজকের গল্পটি বেশ অনুপ্রেরণা মূলক এবং শিক্ষনীয় একটি গল্প।
কোন কাজই ছোট নয়। আপনার গল্পের প্রতিটি চরিত্রের এরকম সংগ্রামী মনোভাব এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজ করা এ বিষয়গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। গল্পটি বেশ বাস্তবতাবাদী।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইয়া আপনার গল্পটি আমার সত্যি খুব সুন্দর লেগেছে। আপনার গল্প থেকে শিক্ষণীয় অনেক বিষয় রয়েছে। আর আপনার গল্পটি সত্যিই বাস্তবতার সাথে অনেক মিল রয়েছে ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। নেক্সট পার্ট এর জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমাদের সমাজে এরকম হাজারো সাগরের গল্প লুকায়িত আছে। অদম্য ইচ্ছা কাজ করার শক্তি এবং সবথেকে যে জিনিসটা বেশি দরকার তা হচ্ছে পরিশ্রম করার মন মানসিকতা থাকলে আপনি যে অবস্থায় থাকুন না কেন আপনাকে কেউই দমাতে পারবে না। বাস্তব একটি উদাহরণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এমন অনেক ছেলে আছে যারা রাতে রিক্সা চালাই দিনে পড়াশোনা করে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি পত্রিকাতেও লেখালেখি হয়েছিল। এটি একটি সত্যিই গর্বের বিষয়। আপনার গল্পটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে এবং অনুপ্রেরণা পেয়েছি পরিশ্রম করার। ভাইয়া এতো সুন্দর একটি গল্প বলার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
জীবনে যারাই।সফল ব্যক্তি তাদের জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তাদের দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম,প্রচেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির দ্বারা সম্ভব হয়েছে।সাগরের অদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রম ও সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।গল্পটি সুন্দর ও শিক্ষনীয়,ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া জাস্ট দারুণ লিখছেন।
বাস্তবার গল্পগুলো এমন ই হয় প্রায়,
জাস্ট অসাধারণ।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
সাগরের অদম্য মানসিকতার গল্পের দুটি পর্ব একসঙ্গে পড়ে নিলাম ভাই। প্রথম গল্পটি পড়ে মনে হল তারা হয়তো আর কোন উপায় নেই শহরের ভালো স্কুলে পড়ার জন্য। তবে এই পর্বটি পড়ার পর বুঝতে পারলাম সে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। জীবনে চলার পথে কোন পেশাকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। জীবিকা অর্জনের জন্য যেকোনো সব পেশায় উত্তম। সুন্দর লিখেছেন। ভালোবাসা নিবেন সব সময়।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইয়া গল্পের কাহিনীটি অসাধারণ লাগলো। অনেক শিক্ষার আছে এই গল্প থেকে। তবে ভাইয়া আপনার প্রতিটি গল্পের কথা গুলো অসাধারণ লাগে। অনেক গুছিয়ে আর সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেন
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
জ্ঞান গর্ভে ভরা গল্পটির উপাস্থাপন সাবলীল ভাষায় উপহার দিলেন।আমাদের মাঝে।পড়ে ভাল লাগল।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
🌹
না ভাই চলবে না বাকিটা লাগবে, গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছে যে কারো জীবন কে কেন্দ্র করে আপনি গল্পটা লিখেছেন, আর সত্যিই এটি একটি মোটিভেশনাল গল্প হতে যাচ্ছে। তাই জলদি করে বাকি অংশটুকু দিবেন আমরা পড়বো।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।