মায়ের জন্য কেনাকাটার অভিজ্ঞতা।
যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমার জোড়াজুড়িতে কিনতে যেতে রাজি হয়েছিলো। আমার স্ত্রী এবার আমার মায়ের জন্য কেনাকাটা করেছে। এ ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমার স্ত্রী মায়ের জন্য জামা কেনার পর আম্মা বলছিলো যে জামা তো কেনা হয়েছে। আর কিছু কেনার দরকার নেই। তখন আমি তাকে বললাম তুমি যেহেতু বোরখা পড়ো তাহলে আমি তোমার জন্য একটা বোরখা কিনি। কিছুটা জোড়াজুড়ি করার পর সে রাজি হয়েছিলো। গতকালকেই মাকে বলে রেখেছিলাম আজকে আমরা শপিংয়ে যাবো। আমার মায়ের সকালে ফরিদপুর ডায়াবেটিস হসপিটালে ফিজিওথেরাপি নিতে যাওয়ার কথা ছিলো। তাই আমি মাকে বলে রেখেছিলাম তোমার ফিজিওথেরাপি নেয়া শেষ হলে তুমি আমাকে একটা ফোন দিও। তখন আমি তোমাকে সেখান থেকে নিয়ে তারপর বোরখা কিনতে যাবো।
যথারীতি আম্মার ফিজিওথেরাপি নেয়া শেষ হলে আমাকে ফোন দিলো। আমি সাথে সাথেই একটা রিকশা নিয়ে চলে গেলাম ডায়াবেটিস হসপিটালে। আমার পরিকল্পনা ছিলো যে রিক্সাতে গিয়েছি সেই রিক্সাতেই মাকে উঠিয়ে তারপর বোরখা কিনতে যাবো। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমার মায়ের সাথে আমাদের এক প্রতিবেশী আন্টিও ছিলো। তিনিও কেনাকাটার সময় থাকতে চাইছিলেন। তাই আমি রিকশা ছেড়ে দিয়ে একটি অটোরিকশা নিলাম। তারপর আমরা তিনজন মিলে চললাম বোরকার দোকানের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথে সেই আন্টি পরামর্শ দিলো ইরানি বোরখা বাজারে যাওয়ার জন্য। তিনি বললেন সেখানে বেশ ভালো বোরখা পাওয়া যায়। তার আইডিয়াটা আমারও পছন্দ হোলো।
আমরা সরাসরি চলে গেলাম ইরানি বোরখা বাজারে। যদিও সেখানে যেতে গিয়ে প্রথমে একটু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। কারণ আমাদের শহরে ইনফিনিটির যে শোরুমটা রয়েছে তার উপরে ইরানি বোরখা বাজারের অবস্থান। কিন্তু এই একই নামে আরো একটা দোকান হয়েছে সেই বিল্ডিংটা থেকে একটু সামনে। আমি মনে করেছিলাম সেটাই মনে হয় আসল দোকান। তাই প্রথমে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে বুঝতে পারলাম নাম একই হলেও এরা অন্য দোকান। তারপর আমরা ইনফিনিটি শপিং মলের তিন তলায় চলে গেলাম। যেখানে ইরানি বোরকা বাজার অবস্থিত। সেখানে গিয়ে আমি আমার মাকে বললাম এখান থেকে তোমার পছন্দমত যে কোনো বোরখা নাও। সেই আন্টি আম্মাকে পছন্দ করার ব্যাপারে হেল্প করতে লাগলো। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও দেখলাম তাদের বোরখা পছন্দ হচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত যে বোরখাটা পছন্দ করেছিলো সেটা আবার সাইজে হচ্ছিলো না। তবে আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছিলাম। আমাদের সাথে থাকা সেই আন্টি তার পছন্দমত বোরখা আমার মাকে পছন্দ করে দিয়েছিলো। সেই বোরখাটা আবার আমার খুব একটা বেশি পছন্দ হয়নি। তখন আমি সে কথাটা বলতে পারছিলাম না। তবে ভাগ্য ভালো থাকায় সেই আন্টির পছন্দ করা বোরকাটা সাইজে মিল ছিলো না।
পরবর্তীতে আমি দুটো বোরখা পছন্দ করে আমার মাকে দিলাম। বললাম এখান থেকে তোমার পছন্দ যেটা হয় সেটা নাও। সেই বোরখা দুটো আমার মায়েরও পছন্দ হোলো। তারপর সেখান থেকে একটি বোরখা কিনে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম। আসলে মায়ের জন্য কেনাকাটার ভেতরে এক মানসিক প্রশান্তি কাজ করে। মাকে কিছু দিতে পারলে প্রত্যেকটা সন্তানেরই মনে হয় ভালো লাগে। মায়ের জন্য কেনাকাটা করে আমারও বেশ ভালো লাগছিলো। সেই ভালোলাগা নিয়ে আমি মাকে রিক্সায় উঠিয়ে দিলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। আর আমি চলে গেলাম আমার কাজে। এভাবে মায়ের জন্য বোরখা কেনা শেষ হোলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই ভাই মায়েরা এমনই হয়। আমি যখন সাউথ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে আসতাম ছুটিতে, মা'কে জিজ্ঞেস করতাম কি আনবো,তখন বলতো কিছুই লাগবে না। তবুও নিজে থেকেই এটা সেটা নিয়ে আসতাম। কারণ মা'কে কিছু দিতে পারলে সত্যিই খুব ভালো লাগে। মনে হয় যে নিজের দায়িত্ব কিছুটা হলেও পালন করতে পারছি। যাইহোক সেই পরিচিত আন্টির পছন্দ করা বোরকার সাইজ যদি থাকতো, তাহলে তো সেটাই নিতে হতো। যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে তাহলে। অবশেষে আপনার পছন্দ করা বোরকা কেনা হয়েছে, এটা জেনে ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
যখন নিজের পছন্দের জিনিস গুলো পছন্দ করে মা বাবাকে দেওয়া যাই বেশ ভালো লাগে। যেহেতু অনেকদিন পর মাকে পেলেন কিছু কিনে দিতে চেয়েছিলেন আপনি। অবশেষে আপনি কিনেও দিতে পারলেন আপনার ইচ্ছে পূর্ণ হল। মা বাবার এমনই সহজে কোন কিছু কিনতে চাই না। ভাগ্যিস আপনার পছন্দের বোরকাটি আপনার আম্মুর পছন্দ হয়ে গেল। অনেক ভালো লেগেছে কিছু কিনে দিতে পেরেছেন জানতে পেরে। আপনার বিস্তারিত লেখা গুলো পড়ে বেশ ভালো লেগেছে।
মায়েরা এমনি হয়! দিতে চাইলেও কখনো বলবে না যে কিছু লাগবে। উল্টো আমাকে দিবে তবুও কিছু নিতে চাইবে না। নিজের মাকে এখনও ওরকমভাবে কিছু কিনে দিতে পারেনি। তবে স্বপ্ন অবশ্যই আছে। যাক, আপনার মায়ের জন্য ইরানি বোরখা কিনেছেন এবং উনি খুশি হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। সাথে আপুও আপনার মায়ের জন্য কিছু কিনলো এটাও ভালো লাগার বিষয় ছিল। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা। 🌼
আসলে মায়েরা এমনই হয়। আমি এ বছর আমার মাকেও বেশ কয়েকবার বলেছি তোমার কি কিছু লাগবে কিন্তু তার একটাই কথা না। সত্যি বলতে জানি না তারা কেন এমনটা বলে কেন তারা আমাদেরকে এতটা ভালোবাসে আমরা তো অনেক সময় তাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে ফেলি তারপরেও তারা কিভাবে পারে এতটা নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসতে। যাইহোক আপনি আপনার মাকে নিয়ে আপনার মায়ের জন্য বোরকা কিনতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। প্রথমে তো আপনার ওই আন্টি একটা বোরখা পছন্দ করে দিয়েছিল যেটা আপনার ভালো লাগছিল না কিন্তু ভাগ্যবশত সেই বোরখাটা আপনার মায়ের গায়ে ঠিকমতো হয় না এবং শেষে আপনি আপনার মায়ের জন্য নিজের পছন্দ মত দুইটা বোরকা চয়েস করে দিলেন এবং সেখান থেকে একটি বোরখা কিনে আপনার বাড়ি ফিরে আসলেন জেনে ভালো লাগলো। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সব মিলিয়ে এই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মায়েরা আসলে এমনই হয়।তাই আপনার মা ও ভাইয়া এমনটাই বলছে।আসলে মায়েরা সন্তানের টাকা খরচ হোক তা চায় না।যাই হোক শেষে আপনার পছন্দের দুটো বোরকা থেকে একটি বোরকা নিলেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।