ভাই বোনের খুনসুটি ।। জোর করে ট্রিট আদায় 😅

নমষ্কার,,

সেদিন মাসি আর মেসোর বাস ছিল রাত সাড়ে এগাোটায়। আমার দায়িত্ব ছিল ছোট বোনকে বগুড়ায় নিয়ে এসে মামার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া। ওর নাম তমালিকা। আমার দুই বছরের ছোট। যত রকম শয়তানি আর ফাজলামো আছে কোনটাই বাদ যায় না করতে আমার এই বোনটার সাথে। সত্যি কথা বলতে আমরা মামাতো মাসতুতো ভাই বোন গুলো সবাই এমন। যতোই বড় হই না কেন সব সময় মাথায় খেলে কি করে আরেক জনের পকেট খসিয়ে খাওয়া যাবে।

IMG20221120192430.jpg

তমালিকা আগে থেকেই বলছিল আমাকে যে বগুড়াতে এসে চুন্নুর চাপ থেকে চিকেন ফ্রাই খাবে। বেশ নাম করা একটা ফাস্টফুডের দোকান এটা বলা যায়। সন্ধ্যার পর থেকে এত ভিড় থাকে যে লাইন ধরে খাবার নিতে হয় সেখান থেকে। তো মাসিদেরকে গুছিয়ে দিয়ে আমাদের বগুড়ার দিকে রওনা দিতে দিতে একটু দেরি হয়ে যায়। আমাদের বগুড়া ঢুকতে সন্ধ্যা পার হয়ে যায়। আমি বারবার বলছিলাম আজ আর গিয়ে কাজ নেই। খাওয়ার সিরিয়ালই পাওয়া যাবে না। কিন্তু তমালিকা নাছোড় বান্দা। বলছে দাদা তোমাকে আজ ছেড়ে দিলে আর সহজে পাব না। আমি তখন ওকে বললাম ঠিক আছে তোকে আমি নিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু যাওয়ার পর খেতে যদি না পারি তাহলে পরবর্তীতে জলেশ্বরিতলা নিয়ে এসে রেস্টুরেন্ট থেকে তুই খাওয়াবি। রাজি তো? বোন আমার হাসতে হাসতে রাজি হয়ে গেল।

IMG20221120192434.jpg

সাত মাথা থেকে বেশ দূরে যেতে হয় চুন্নু মিয়ার চাপ খেতে। মজার ব্যাপার হলো যাওয়ার সাথে সাথে আমরা দেখতে পেলাম মারাত্মক রকমের ভিড়। মিনিমাম দুইশ মানুষ হবে মনে হয়। আমার বোনের তো মাথায় হাত। কারণ রাত হয়ে যাচ্ছে। বেশি লেট করা যাবে না। বাড়ি থেকে বার বার ফোন দিচ্ছে। আমরা তো জ্যামের কথা বলে খেতে এসছি। ওদিকে আমিও সুযোগ পেয়ে গেলাম। চল এবার আমাকে খাওয়াতে হবে। একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে গেলাম জলেশ্বরিতলা। বোন বললো দাদা এখানে নতুন একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে। বেশ ভালো পরিবেশ। তো ওখানে গিয়েই বসলাম। বার্গার আর কোক অর্ডার করলাম।

IMG_20221124_195652.jpg

IMG20221120191650.jpg

IMG20221120193234.jpg

হাতে সময় খুব কম ছিল। এক রকম বলা যায় তাড়াহুড়ো করেই খাবারটা শেষ করলাম। এবার তো বিল দিতে হবে। আমি তো মুচকি মুচকি হাসছি। বোন বলছে ঠিক আছে আমিই দিচ্ছি। হিহিহিহি। পরে তো ওকে দিয়েই দেওয়ালাম। ও তো বলছে এরপরের বার সুযোগ একবার পাই, তারপর খবর আছে 😀। হিহিহিহি।

সত্যি বলতে আমাদের ভাই বোনদের মাঝে এসব খুনসুটি সব সময় চলতেই থাকে। এই ভালোবাসা গুলো অন্যরকম একদম। এই মজা গুলো পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। কোটি টাকার চাইতেও মূল্যবান এক সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার পোষ্ট শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়েছি এবং মনে মনে খুবই হেসেছি। সেইসাথে ভাই বোনের খুনসুটির গল্প করে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। মূলত আমি মনে করি সকল বোনেরা এমনই সবসময়ই ভাইয়ের পকেটের টাকা কিভাবে খসানো যায় সেই ধান্দায় পড়ে থাকে। আমারও মাঝে মাঝে এরকম বিপাকে পড়তে হয় যদিও আমি ওদের সাথে তেমন একটা বের হই না তবে আমি যখন ওদের সঙ্গে বের হই তখন একটি চালাকি করি, চালাকিটা হচ্ছে কিছু টাকা মানিব্যাগের অন্য পকেটে রেখে দিই আর সামান্য কিছু টাকা সামনে রেখে দিই যাতে করে বেশি কিছু খেতে চাইলে মানি ব্যাগ বের করে বলতে পারি এই যে মাত্র এই কটা টাকা আছে এর মধ্যে যা হয় খাও হাহাহা। আসলে ওদের সঙ্গে একটু চালাকি না করলে দেউলিয়া হয়ে যেতে হয়।

হাহাহাহা,, যাক আপনার এই ব্যাপার গুলোর সাথে পরিচয় টা বেশ ভালোই আছে দেখি। আমার অনুভুতি টা বেশ ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন তাহলে। ভালো লাগলো সত্যি। এই মজাগুলো জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার ভাই।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া ভাই বোনের এই খুনসুটি সম্পর্ক লাগ টাকা দিলেই পাওয়া যায় না।তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম আপনি দেখছি আপনার ছোটবোনের কাছ থেকে খাবার টাকা নিলেন,অসাধারণ। তবে বার্গার আর কোক অর্ডার দেখে লোভ লেগে গেল।যাইহোক আপনাদের ভাই বোন সুন্দর সময় কাটানোর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভাই বোনের এই বন্ধন আর সম্পর্ক পৃথিবীর সব থেকে মূল্যবান জিনিস মনে হয় আমার কাছে। খুব মিষ্টি সময় গুলো কেটে যায় সবাই এক সাথে থাকলে 😊। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

সত্যি ভাই-বোনের সম্পর্ক খুবই আলাদা। যতই ঝগড়া করুক না কেন যতই খুনসুটি করুক না কেন তারা সবসময় একে অপরের পাশে থাকে এবং একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসে। শেষ পর্যন্ত আপনি সুযোগ পেয়ে গেলেন আপনার বোনের কাছ থেকে খাবার খাওয়া। দেখে তো মনে হচ্ছে দুজনে খুবই ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছেন। খাওয়া-দাওয়া ও বেশ ভালো করেছেন দেখছি। যখন আপনার বোন আপনাকে ধরবে খাবার খাওয়ানোর জন্য তখন কিন্তু আপনি আর ছাড় পাবেন না। খুবই ভালো লাগলো পড়ে।

হাহাহাহা,, আমি আর ওদের সামনে সহজে যাচ্ছি না 😅। কয়দিন পর থেকেই শুরু হবে আমাকে ডাকার মিশন । কিন্তু আমি আর যাচ্ছি না 😉😉😉

 2 years ago 

ভাই আপনার মত বুদ্ধি আমাকেও একটু ধার দিন। ছোট বোনকে খাওয়ানোর বদলে তাকে দিয়েই বিল দেওয়া। এত বুদ্ধি নিয়ে চলেন কিভাবে? তাই আপনার থেকে আমাকে কিছু বুদ্ধি ধার দিন। যাইহোক ভাই, খুবই মনোরম পরিবেশে অত্যন্ত চমৎকার একটি রেস্টুরেন্টে লোভনীয় খাবার গুলো খেয়েছেন। আর আমাদের কেউ লোভ লাগিয়ে দিয়েছেন😋। ছোট বোনকে বলে দিব এর পরে যেন আর কখনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে বিল না দেয়। তা না হলে তো আপনার পকেট খসানো যাবে না। ভাই, আপনাদের ভাই ও বোনের খুনসুটির কথা জেনে খুবই ভালো লাগলো, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

হিহিহিহি,,, আমাদের মাঝে এসব সব সময় চলতেই থাকে ভাই। কে কখন বলির পাঠা হবে বলা মুশকিল। 😅। সম্পর্ক গুলো এভাবেই যেন ভালোবাসায় মোড়ানো থাকে এই দোয়াই করবেন ভাই। ভালোবাসা রইলো।

 2 years ago 

আপনার বোনের নামের সঙ্গে আমার নামের মিল আছে। কিন্তু আপনার বোন আমার মত না😜 ঠিকই আপনার চিপায় পরে তাকে খাবারের বিল দিতে হলো। আমি হলে অন্য কোন বুদ্ধি ঠিকই বের করে নিতাম। আপনার অবশ্য ভালো হয়েছে অনেক লোকের ভিড় হওয়ার কারণে বিল দেওয়া থেকে বেঁচে গেলেন। খাবারটি বেশি লোভনীয় ছিল। ভালো সময় কাটিয়েছেন নিশ্চয়ই।

তাই তো বোনের সাথে তো বড় বোনের নাম বেশ মিলে গেছে 👌👌। কপাল ভালো যে আপনার থেকে কোন ট্রেনিং পায় নি আমার বোন। পেলে খবর খারাপ ছিল আমার জন্য 😉🤪।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি একেবারেই ঠিক বলেছেন।মামাতো ভাই বোন, চাচাতো ভাই বোন, খালাত ভাই বোনের সম্পর্ক গুলো সব সম্পর্ক গুলো থেকে আলাদা হয়। আমরাও যত ভাই বোন আছি, একসাথে হলে বেশ বদমাশি, দুষ্টামি, হাসিঠাট্টা করতেই থাকি। আমরা তো খাবার এর কথা ভুলে যাই,আম্মু, খালারা, মামিরা এসে বকা ঝকা দিয়ে,খাবার খাইয়ে দিয়ে যায়😁। আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার সব ভাই বোনের কথা মনে পড়ে গেল। বোনের থেকে জোর করে ট্রিট খাওয়া।আপনার বোন কিন্তু বলে দিয়েছে সময় পেলে আপনার বোন আপনাকে এভাবে ধরবে। রেডি থাকেন।

হাহাহাহা,,, আমার এই দুষ্টু ভাই বোন গুলো সব সময় টার্গেটে থাকে কখন দাদাদের ধরা যাবে 😉। মাঝে মাঝে তো বলির পাঠা হতেই হয় 🤪।

 2 years ago 

আপনাদের ভাইবোনের এত সুন্দর খুনসুটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। বিশেষ করে আপনাদের তো চুন্নু মিয়ার চাপ খাওয়া হলো না। আপনার বোন হেরে গেল। আপনি জিতেছেন এটা দেখে ভালই লাগলো। আসলে হারজিত বড় কথা নয়। দুই ভাই বোনের মধ্যে অনেক মজা হলো। শেষ পর্যন্ত বিলটা আপনার বোন দিল দেখছি। তবে মনে হচ্ছে আপনার বোন একেবারে দল নিয়ে রেডি হবে আপনাকে খালি করার জন্য।

হিহিহিহি সে কথা আর বলতে ! এর পরের বার তো আমার অবস্থা খারাপ আছে। তবে এই মজা গুলোই জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া মনে হয়। সব থেকে মধুর স্মৃতি হয়ে থাকবে সারা জীবনের জন্য।

টাইটেল পড়ে আমি তো ভেবেছিলাম মনে হয় আপনার থেকে জোরজবস্তি করে ট্রিট নিয়েছে। এখন তো দেখছি উল্টে আপনি বোনের থেকে ট্রিট নিয়ে নিলেন।🤣 তবে ভাই বোনের এই খুনসুটি গুলো সত্যি খুব ভালো লাগে। আমার বোনের সাথে যখন আমার বছরে দু একবার দেখা হয় তখন আমার মাথার চুল অর্ধেক হয়ে যায়। কারণ সবগুলোই টেনে টেনে ছিড়ে ফেলে দেয়।

মজার ব্যাপার হলো যাওয়ার সাথে সাথে আমরা দেখতে পেলাম মারাত্মক রকমের ভিড়। মিনিমাম দুইশ মানুষ হবে মনে হয়

আমি যখন দুর্গাপূজাতে দাদা বৌদির বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলাম তখনও প্রায় 200 লোকের ভিড় ছিল। তবে টেস্টের কাছে এগুলো কোন ব্যাপারই না। রীতিমতো ২ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তারপর বিরিয়ানি খেয়ে বাড়ি এসেছিলাম।

দাদা বৌদির বিরিয়ানিতে এবার যাওয়ার প্ল্যান ছিল রে ভাই। কিন্তু কি থেকে কি করতে যেন ভেস্তে গেল সব। অল্প সময়ে বেশি কিছু করা যায় না আসলে। তবে পরের বার অবশ্যই যাব।

 2 years ago 

ভাই - বোনের খুনসুটি পড়ে বেশ ভাল লাগলো। শেষ পর্যন্ত আপনি সুযোগ পেয়ে গেলেন বোনের থেকে খাবার খাওয়ার। দেখে বেশ মজাই পেলাম।দেখে মনে হলো খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। দুজনের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।

হ্যাঁ আপু সত্যিই খুব ভালো সময় কেটেছে। অনেক হাসি ঠাট্টা করেছি। অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61042.80
ETH 2605.92
USDT 1.00
SBD 2.65