আমার বাংলা ব্লগ ।। স্ট্রীট ফুড রিভিউ কনটেস্ট -০৫ ।। "হঠাৎ সন্ধ্যায় লাল মিয়ার গ্যারেজে"
রোজ সন্ধ্যেবেলা ২০ থেকে ২৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করার অভ্যেস আমার অনেক আগে থেকেই। তবে প্রতিদিন এক রাস্তায় হাঁটতে ভালো লাগেনা আমার। এক এক দিন এক এক রাস্তায় হাঁটি। বিশেষ করে নিরিবিলি রাস্তায় হাঁটতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আজও ঠিক প্রতিদিনকার মত বেরিয়েছিলাম। কিন্তু আজ হাঁটতে হাঁটতে কোন রাস্তা দিয়ে আগবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আর এই সময় হঠাৎ করে মনে আসলো স্ট্রীট ফুড রিভিউ প্রতিযোগিতার কথা। সত্যি বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। ব্যাস সাথে সাথে মাথায় আসলো লাল মামার গ্যারেজের কথা।
"লাল মামার গ্যারেজ" নামটা অনেক মজার তাই না! আসলে স্কুল এবং কলেজের বেশিরভাগ সময় সব বন্ধুরা মিলে লাল মিয়ার দোকানে আড্ডা দিতাম বলে আমরা মজার ছলে সেটাকে ডাকতাম লাল মামার গ্যারেজ । মুখরোচক সব খাবার যেমন ডাল পুরি ,সিঙ্গারা ,পিয়াজু, চপ ,ভেজিটেবল রোল, বার্গার, এরকম আরো বেশ কিছু রকমের খাবার তার দোকানে অস্বাভাবিক মজা হত। বন্ধুরা এখন যে যার মত কর্মে ব্যস্ত, মোটামুটি ৩ বছর ওই রাস্তার দিকে আর যাওয়া হয় না। বাড়ী থেকে বেশ দুর। তাই আজ ভাবলাম এই সুযোগে লাল মামার গ্যারেজ থেকে আর একবার ঘুরে আসি এবং সেইসাথে মামার সেই বিখ্যাত খাবারগুলো খেয়ে আসি।
রাস্তা দিয়ে যত সামনের দিকে এগোতে লাগলাম আমি যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। চারপাশের কত কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন নতুন সব বিল্ডিং উঠে গেছে ফাঁকা জায়গা গুলোতে। আর যে ব্যাপারটি সবথেকে আমাকে বেশি চমক দিয়েছে সেটি হলো লাল মামার গ্যারেজ আর গ্যারেজ নেই। টিন আর বাঁশের বেড়া দেয়া দোকানটি এখন ইট বালু রড সিমেন্টের মহাপ্রসাদ। ভেতরটা এত সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন, না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারতাম না। অনেকদিন পর সেই চেনা মানুষটার সাথে দেখা হল। মোটামুটি তিন বছর পর তার সাথে আমার দেখা। তবে চিনতে ভুল করেননি একটুও। পুরনো কত কথা দুজনের ভিতরে একের পর এক হতে থাকলো। কথা বলতে বলতে দুজনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে গেছিলাম যে আমি ওখানে খেতে গেছি সে কথাটি ভুলে গেছি। 😊😊
তারপর লাল মামা আমাকে বলল, কি খাবেন মামা এতদিন পরে আসলেন,, আমি এক কথায় উত্তর দিলাম আপনার দোকানে যেটাই খাব তাই অমৃতের মত লাগবে। আপনি ভালোবেসে যেটা খাওয়াবেন সেটাই খাবো। লাল মামা আমাকে বললেন, মামা পুরনো বার্গারটা কিছুটা পরিবর্তন করে এখন নতুন স্বাদে বিক্রি করছি, খেয়ে দেখবেন কি একবার। আমি আর না করতে পারলাম না।
মামা নিজ হাতে আমার জন্য বার্গার বানাতে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আমাকে পরিবেশন করলেন। সত্যি যেমন দেখতে ছিল বার্গার টি তেমন অসাধারন ছিল খেতে। সমাজের আধুনিক রুচির সাথে তাল মিলিয়ে তিনি ও তার খাবারের স্বাদ এ নতুনত্ব এনেছেন। একদম তৃপ্তি ভরে খেলাম।
মামা তার দোকানের গ্রিল নান ও রেখেছেন। আমাকে অনেক জোর করলো কিন্তু সত্যি বলছি পেটে জায়গা ছিল না একদম। আসলে স্কুল লাইফে বার্গার খাওয়ার মজাটা পেয়েছি এই লাল মামার দোকান থেকেই। তখন অবশ্য তিনি এত মজা করে বানাতে পারতেন না। কিন্তু এখন তিনি বার্গারের ভেতরে মেয়োনিজ, চিকেন ,সালাদ ,চেরি আরো অনেক ধরনের আইটেম যোগ করেছেন। স্বাদে ভরপুর করতে যা যা প্রয়োজন মোটামুটি সব কিছু যোগ করেছেন। বার্গার এর ভেতরের এই মেয়োনিজ আমার অপূর্ব লাগে খেতে।
লাল মামার দোকানের লোকেশন, নাম দিয়েছেন ফ্যামিলি বাজার ক্যাফেটেরিয়া
যাই হোক অবশেষে দুজনের গল্পের সমাপ্তি হলো। আমিও বাড়ির পথে রওনা হলাম। ঘন্টা খানেক সময় তার ওখানে ছিলাম। পুরনো কত স্মৃতি যে মনে আসছিল ,! ফেরার পথে একা একাই হাসছিলাম সেগুলো মনে পড়ে।
আমার মনে হয় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন টা যদি না হতো তাহলে হয়তো আজকে এত মজার একটি অভিজ্ঞতা কখনোই হতো না আমার। আমার বাংলা ব্লগের সকলকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ধন্যবাদ।
ভাই খুব সুন্দর পোস্ট। আপনার ছোটবেলার গল্প এখনকার অভ্যাস এবং স্ট্রিট ফুড রিভিউ সবই ছিল এই পোস্টে। খুব সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা। তবে এই বার্গার জিনিসটা আমার খুব একটা পছন্দ না।
যাক অন্তত একজনকে পেলাম যে লেখাটা মন দিয়ে পড়েছে এবং আমার মনের ভাবটা একটু হলেও বুঝতে পেরেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। এক এক মানুষের খাবারের পছন্দ এক এক রকম, এটাই স্বাভাবিক।
ধন্যবাদ ভাই।🙂
দাদা বার্গার টা আমার দিকে তাকায় আছে। খেয়ে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে 😄
মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নে,, অলরেডি আমার পেটে ঢুকে গেছে। 🤗🥰
ভাই আমার মনে হয় আপনার এই পোস্ট স্ট্রীট ফুড রিভিউ এর মধ্যে পড়বে না।কারণ আপনি যে রেস্টুরেন্ট এ গেছেন ঐটা ফার্স্ট ফুড এর রেস্টুরেন্ট।@rex-summon ভাই।
লেখাতে আমি পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরেছি, আমি নিজেই ওখানে চমকে গেছি। যা ভেবে গিয়েছি হয়েছে তার উল্টো,, সম্মানিত বিচারকমণ্ডলী যারা আছেন সঠিক মনে করলে পোস্টটি গ্রহণ করবেন ,, আর যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে গ্রহণ করবেন না। 😊 খুব সহজ একটা ব্যাপার।
সুন্দর লিখেছেন,তবে প্রতিযোগিতার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য নেই বলে আমার মনে হয়🙃
আসলে ছাদ আর ইটের দেয়াল না থাকলে হয়তো বা প্রতিযোগিতার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য থাকতো ,, ব্যাপারটা কি এমন? আমি যতদূর জানি স্ট্রীট স্ট্রিটফুড হিসেবে বার্গার ও এখন বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার।
তা হয়তো ঠিক বলেছেন কিন্তু স্ট্রিট ফুড বলতে মূলত আমরা রাস্তার পাশে অস্থায়ী যে খাবারের দোকানগুলো থাকে সেই দোকানগুলোর খাবার বুঝি।
কথার পৃষ্ঠে আসলে অনেক কথা এসে যায়। তাই তর্কে বহুদূর না গিয়ে , বিচারকদের হাতেই পুরোটা ছেড়ে দিলাম।
বার্গার আমারও খেতে ভালো লাগে। খুব সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন কিন্তু ভাইয়া স্ট্রীট হিসেবে কি এটা গন্য করা হয়? আমি সত্যি জানি না তাই জিজ্ঞেস করলাম কিছু মনে করবেন না ।
হিহিহি,,, ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আর আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলবো,আমি নিজেই কনফিউজড। বিচারকরা যা বিচার করবেন সেটাই মেনে নেব। তবে আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, বর্তমানে স্ট্রিটফুড আর ফাস্টফুডের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য আছে বলে আমার মনে হয় না। স্ট্রিটে এমন অনেক দোকান আছে যাদের রাস্তার পাশে ছাউনি দিয়ে চেয়ার টেবিলে সুন্দর পরিবেশে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা আছে।
খুবই লোভনীয় খাবার ।দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। খুব সুন্দর উপস্থাপনার সাথে শেয়ার করেছেন। তবে এটা স্ট্রিট ফুড রিভিউ মধ্যে পড়বে কিনা আমাদের সম্মানিত বিচারক দাদারা ও বন্ধুরা সঠিক ভাবে বলতে পারবেন। অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
বর্তমানে স্ট্রিটফুড হিসেবে বার্গার পাওয়া যায় না এমন জায়গা পৃথিবীতে বোধ হয় কম আছে। বার্গার যে একটি অতি জনপ্রিয় স্ট্রিটফুড তার প্রমাণ হিসেবে বলতে গেলে আমি বলব, 2018 সালে ব্রিটিশ বেস্ট স্ট্রিটফুড অ্যাওয়ার্ড হিসেবে বার্গারকে নির্বাচিত করা হয়েছে। আমেরিকাতেও স্ট্রিটফুড হিসেবে বার্গার সমান জনপ্রিয়। আর এখন মোটামুটি সব দেশেই ফাস্টফুড গুলো স্ট্রীট ফুডে যেমন খুব সহজে পাওয়া যায় ঠিক তেমন স্ট্রীট ফুডও ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়। প্রতিযোগিতায় বলা হয়েছে স্ট্রীট ফুড রিভিউ এর কথা , আর আমি তাই স্ট্রিটফুড হিসেবে বিবেচিত এমন একটি খাবারকে বাছাই করে তার উপরে রিভিউ দেয়ার চেষ্টা করেছি,, আমার দিক থেকে বলতে গেলে স্ট্রিটফুড হিসেবে যে খাবার গুলো কে আমরা গণ্য করে থাকি সেটাই মুখ্য , রাস্তায় দাঁড়িয়ে খেলাম নাকি একটি ভালো জায়গায় বসে খেলাম সেটি গৌণ ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য নিয়ে আমার লেখা টি পড়ার জন্য।
খুব সুন্দর ছিল আপনার বাছাই করা খাবারটি।পুরোনো দিনগুলির কথা মনে পড়লে সত্যিই কখনো হাসি আবার কখনো বা কান্না পেয়ে যায়।ধন্যবাদ দাদা।
😊😊🙏
You have been upvoted by @tarpan A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.
Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject
For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.
খুব ভালো লাগছে বার্গারে র সম্মুখে বসে থাকা সজীব প্রাণ কে । কোনটা খাবো কনফিউজড হয়ে পড়েছি 😅😜