বন্ধুত্বের অভিশাপ
বন্ধু
জন্মের পর থেকে একটা শিশু যেমন প্রথম মা ডাকতে শেখে, ঠিক তেমনি শৈশব থেকে বেড়ে ওঠে যখন তখন থেকেই তার চারপাশের মানুষ গুলো থেকে কাছের কিছু মানুষকে বেছে নিতে শেখে। যাদের সাথে নিজের সুখ দুঃখ কষ্ট সব কিছুর অনুভূতি সে ভাগাভাগি করে নিতে পারে। বিপদে আস্থার কাধ টা যেন চোখ বুজে খুঁজে পায়। আর সেই মানুষ গুলোও নিঃস্বার্থভাবে পাশে এসে দাঁড়ায়। সকল বাঁধা হাসি মুখে মেনে নিয়ে এক সাথে পথ চলতে সদা প্রস্তুত। বাস্তবিক অর্থে আমরা হয়তো তাদেরই বন্ধু বলে থাকি। তবে এক এক জনের কাছে বন্ধু শব্দের মানে টা এক এক রকম। এটাই স্বাভাবিক।
এই বন্ধু আবার কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। প্রকৃত বন্ধু এবং অপ্রকৃত বন্ধু। প্রকৃত বন্ধু কি সেটা আমরা সবাই জানি। আমাদের সবার জীবনেই কেউ না কেউ এমন আছেই। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। সেই সকল প্রকৃত বন্ধু আমাদের জীবনে যে কতটা আশীর্বাদস্বরূপ সেটা আমরা সবাই উপলব্ধি করি সব সময়।
কিন্তু কিছু বন্ধু আছে যারা স্বার্থলোভী, স্বার্থের জন্য কাছে আসে। কাজ হাসিল করে চলে যায়। আবার কেউ কেউ আছে যারা সারা জীবন আমাদের পাশে থাকবে কিন্তু সুযোগ সন্ধানী। ভালো মানুষের মুখোশ পরে ক্ষতি করে যাবে সারা জীবন। এদের মুখে মিষ্টি কথার শেষ নেই। অনেক সময় এমনও হয় যে, এরা যে অপরের ক্ষতি করে চলেছে তার কাজের আড়ালে সেটা বুঝেও না বোঝার মত হয়ে থাকে।
আমার কাছে ব্যাক্তিগত ভাবে মনে হয় এমন বন্ধু আমরা কেউই চাই না। আর এমন বন্ধু থাকার চাইতে না থাকা আরো বেশি ভালো। কারণ কাছের মানুষ ছাড়া কেউ কখনো কারো ক্ষতি করতে পারে না। আর আমরা এই বন্ধুদের এতটাই কাছে নিয়ে চলে আসি যে, নিজের পরিবারের চাইতেও এরা বেশি আপন হয়ে যায়। বিশ্বাস করে ফেলি নিজের চেয়েও বেশি। ভুল টা হয়তো আমাদের তখনই হয়ে যায়। অন্ধ মোহের বসে পরে আমরা এমন কিছু করে ফেলি অথবা সেই বন্ধু করে ফেলে যার জন্য সারাটা জীবন আমাদের জীবনে দাগ থেকে যায়। যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয় আজীবন।
আসলে কিছু ভুলের জন্য মাশুল গুনতে হয় প্রতিটা মুহূর্তে। আর আমি আমার নিজের জীবন সহ কাছের অনেক মানুষের ক্ষেত্রেও এই একই ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। আমরা তো মানুষ। তাই আবেগ টা অনেক বেশি। আর ঠিক এই জন্যই আমি বলবো বন্ধু নির্বাচন করতে আমাদের সকলেরই একটু সতর্ক হওয়া উচিত। যে কাউকে হঠাৎ করেই জীবনের সবচে আস্থার জায়গায় স্থান দেওয়া উচিত না। সব কাজের জন্যই সময় নেওয়া প্রয়োজন। বুঝে শুনে তারপর পা ফেলা উচিত। না হলে নিজেদের ভুলে নিজেদেরই চোখের জল ফেলতে হবে সারা জীবন।
জীবন এবং চলার পথে বন্ধু নির্বাচন করাটা খুবই জরুরী। বন্ধুকে নিয়ে আমার লেখা একটি কবিতা আপনার সাথে শেয়ার করলাম আশাকরি কবিতাটি আপনার ভালো লাগবে। কারণ আপনার লেখার বিষয়বস্তু সেটা আমার কবিতার অন্তরালে অন্তর্ভুক্ত।
আমরা যাকে বন্ধু বলি,
আসলে তারা কি বন্ধু হয়?
স্বার্থপর ঐ লোকগুলো সব,
কখনো মোদের বন্ধু নয়।
বন্ধু মানে বনলতা,বন্ধু মানে মাথার ছাতা,
বন্ধু মানে শীত কালে গায়ে জড়ানো নকশীকাঁথা।
সুখ দুঃখ, বিপদ আপদ
যদি জীবনে আসে,
সত্যিকারের বন্ধু যারা
তারাই থাকে পাশে।
স্বার্থপর ঐ বন্ধুগুলো মনে হয় যেন ঘুণে ধরা কাঠ,
যেথায় সেথায় সুযোগ পেলে নেয় তারা পার্ট।
বন্ধু মানে একই দেহে
দুটি যেন প্রাণ,
বন্ধু মানে যেথায় সেথায়
গাওয়া পাগলা গান।
বন্ধু মানে মহাসম্পদ,বন্ধু মানে খুব নিরাপদ।
বন্ধু মানে স্বার্থ ছাড়া যেন এক অভিবাবক।
যার অন্তরে স্বার্থ রয়,
তাকে বন্ধু বলতে ভয় হয়।
স্বার্থ নিয়ে যারা আসে
তারা কখনো বন্ধু নয়।
মুগ্ধ হয়ে গেছি ভাই আপনার লেখাটা পড়ে। সত্যিই জীবন থেকে নিয়ে লিখেছেন সবটা। কবিতা টা নোট প্যাড এ রেখে দিলাম। বন্ধু নিয়ে খুব মন খারাপ হলে আবার পড়বো। অনেক ভালোবাসা রইলো ভাই।
অনেক ভালো লাগলো ভাই এবং আপনিও যে বন্ধুর বিষয়ে খুবই সিরিয়াস সেটা বুঝতে পারলাম। সত্যি বলতে বন্ধু নির্বাচনে ভুল হলে জীবনটাই বৃথা ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। ভালবাসা অবিরাম।
আমাদের অনেকের কাছে বন্ধুত্ব একটি স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু আমার কাছে বন্ধুত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সর্বদাই বন্ধুত্ব নির্বাচন করতে আমি সতর্ক থাকি। যে কাউকে আমাদের জীবনে বন্ধু বানায় আনতে পারি না। সাথে যদি আমার মেন্টালিটি না মেলে আমার চিন্তা শক্তিগুলোর না মেলে তাহলে সে কোনভাবেই আমার বন্ধু হতে পারেনা।বন্ধুত্ব মানে তার সাথে প্রায় সকল বিষয়গুলো খোলামেলা আলোচনা করা হয়। নিজের ব্যক্তিগত বিষয় গুলো বন্ধুর সাথে শেয়ার করা যায় কিন্তু সেই বন্ধু যখন প্রতারণা করে স্বার্থপরের মতো আচরণ করে তখন আসলে মন ভেঙ্গে যায় ।তখন আর কারো প্রতি বিশ্বাস আসে না। আপনার পার্সোনাল বিষয় গুলো যখন অনে কেউ জানে তখন আসলে সে যখন প্রতারণা করে তখন দেখা যাবে আপনি ভেঙে পড়বেন কারণ একজন সবাইকে বিশ্বাস করা যায় না। বারবার বিশ্বাসভঙ্গের কষ্ট আর তীব্র হয়। তাই আমি মনে করি বিশ্বাসঘাতক বন্ধু করার থেকে একা চলা বেশ ভালো।
একদম মনের কথা গুলো বলে দিয়েছেন আপু। মনটা খুব শান্তি পেল আপনার কথাগুলো পড়ে। অনেক ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন।
বন্ধু নির্বাচন করতে সব সময় সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। কিন্তু আফসোসের বিষয় আমরা সেই জায়গাটাতে সতর্কতার বদলে সবটা দিয়ে ঢেলে দেই আমাদের আবেগ। যা পরবর্তীতে আমাদের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায।
এইরকম ভুলগুলো আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই হয়ে থাকে। যার মাশুল আমাদের সারাজীবন গুনতে হয়।
ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের অবশ্যই সময় নিয়ে বন্ধু নির্বাচন করা উচিত তার পরেও জগতে অনেক বন্ধু থাকবে যতই সময় নিয়ে নির্বাচন করি না কেন সময় সুযোগ বুঝে ক্ষতি করবে আসলে এটাই বাস্তবতা এটাকে মেনে নিতে হবে। তবে তার পরেও আমাদেরকে সব দিক থেকে সাবধানে থাকতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই খুব চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে আজকে শেয়ার করেছেন খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার করে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।
ভাই বন্ধু তো নির্বাচন করা কঠিন । আমি মনেকরি, বন্ধুত্ব হটাৎ হয়ে যায়। যেমন প্রেম হয়। আর এই হটাৎ বন্ধুত্ব অনেক সময় গভীর হয় আবার কোন সময় হালকা। তবে জীবনে কোন কিছুই সিরিয়াস ভাবে নেয়া উচিত নয় আমি মনে করি। সিরিয়াস হলে মনে কষ্ট টা বেশী হয়। ধন্যবাদ।
খুব যত্ন নিয়ে খাটি কিছু কথা বলেছেন দাদা। প্রণাম রইলো।
বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা এত কিছু বিচার করি না। কেমনে জানি অটো হয়ে যায় কথা বলতে বলতে। তবে প্রকৃত বন্ধু তারাই যারা কখনো ক্ষতির কারন হয়ে উঠবে না এবং বিপদে আপদে সব সময় পাশে থাকবে। আমাদের সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত বন্ধু বাছাই করার ক্ষেত্রে। আপনাকে ধন্যবাদ
খুব ভালো কথা গুলো বলেছেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ