ট্রাভেল || গৌরাঙ্গ কুটির
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
কয়েক বছর আগে প্রথম যখন আমি মায়াপুরে গেছিলাম তখন মায়াপুরে গিয়ে কোথায় থাকতে হয়, কোথায় খেতে হয়, এই সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই ছিল না। এইজন্য সেইবার মায়াপুরে গিয়ে আমি একদিনের মধ্যেই কোনরকম ঘুরে চলে এসেছিলাম। তখন যদি আমি সেখানকার থাকার জায়গা এবং খাওয়ার জায়গা সম্পর্কে জানতে পারতাম, আমি দুদিন সেখানে থেকে সব জায়গাগুলো ঘুরে আসতে পারতাম। তবে ইনফরমেশন এর অভাব থাকার কারণে সেই সুযোগটা সেই বার হয়নি।
যাইহোক, এবার যখন আমি মায়াপুর ভ্রমণে গেছিলাম মা, দাদা এবং মায়ের এক বান্ধবী একসাথে তখন যাওয়ার আগে মায়াপুর ভ্রমণ রিলেটেড সবকিছু ইউটিউব দেখে জেনে গেছিলাম। এইখানে গিয়ে কোথায় ঘুরতে হবে, কোথায় থাকতে হবে, কি খেতে হবে, সব বিস্তারিত ভাবে জেনে গেছিলাম। আগে থেকে এই ব্যাপারগুলো জানা থাকলে ট্যুর করতে অনেক সুবিধা হয়। এইবার যখন মায়াপুরে গিয়ে পৌঁছেছিলাম, কিছু কিছু জায়গা ঘুরে আমরা চলে গেছিলাম আমাদের থাকার জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে।
আমরা আগেই বাড়ি থেকে প্ল্যান করে গেছিলাম, আমরা বেশি টাকার কোন জায়গায় থাকবো না মায়াপুর গিয়ে। একদম সুলভ মূল্যে যেখানে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানেই থাকবো। আর এইরকম একটা জায়গার সন্ধান পেয়ে গেছিলাম আমরা যার নাম ছিল গৌরাঙ্গ কুটির। তোমরা শুনলে অবাক হবে যে, এখানে একদিন থাকার জন্য জনপ্রতি ১০০ টাকা করে দিতে হয় মাত্র। মায়াপুর যারা দুইদিন থেকে ঘোরাঘুরির উদ্দেশ্যে যায় তাদের অনেকেরই হয়তো বেশি টাকার হোটেলে বা রিসোর্টে থাকা সম্ভব হয় না। তাদের জন্য এই জায়গাটা একটা পারফেক্ট জায়গা বলে আমি মনে করি। এইখানে যে থাকার জায়গা গুলো ছিল সেগুলো খুব উন্নতমানের ছিল তা কিন্তু নয়। এখানে ছিল বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে ঘেরা থাকার জায়গা এবং যার উপরে ছিল টিনের চালের ছাউনি। গ্রামের অনেক বাড়ি এ ধরনের হয়ে থাকে। এইখানে যারা তীর্থ যাত্রীরা যায় তারা সাধারণত গ্রুপ করে এসব জায়গায় থাকে।
এই গৌরাঙ্গ কুটিরের ভিতরে শুধু থাকার জায়গা নয়, খাওয়া ও স্নান করার জায়গাও ছিল এখানে। এখানে খাবার মূল্য যথেষ্ট কম ছিল। জনপ্রতি একবার খেতে ৭০ টাকার মতো খরচ পড়বে সেরকম ব্যবস্থা ছিল এখানে। এইখানে আমরা যেদিন গেছিলাম, গিয়েই থাকার জন্য রুম পেয়ে গেছিলাম। আমরা চারজনের জন্য একটি রুম নিয়েছিলাম। যেখানে আলাদা আলাদা করে চারটি বেডের ব্যবস্থা করা ছিল। তবে দিনে গিয়ে আমরা সেখানে না থেকে, আমারা জাস্ট আমাদের বেডিংপত্র গুলো সেখানে রেখে চারপাশে একটু ঘোরাঘুরি করে নিয়েছিলাম। এই গৌরাঙ্গ কুটিরের ভিতরেও একটু ঘুরে দেখার জায়গা ছিল। এখানকার পরিবেশটা আমার কাছে বেশ সুন্দর লেগেছিল। শান্ত সুন্দর একটা পরিবেশ ছিল সেখানে এবং ঘুরে দেখার জন্য বেশ দারুন ছিল।
এইখানে থাকা ছোট ছোট বাঁশের বেড়ার তৈরি ঘর গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। ছোটবেলায় গ্রামে যখন বড় হয়েছি, এই ধরনের বাড়ি দেখার অভ্যাস আমার রয়েছে। এইজন্য এগুলো আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। গৌরাঙ্গ কুটিরে একপাশে বেড়ার তৈরি ঘরগুলো থাকলেও, অন্য পাশে ছিল দামি থাকার জায়গা। যেখানে জনপ্রতি ৭০০ টাকা করে এক রাত থাকার খরচ ছিল। তবে আমরা সেখানে গিয়ে থাকিনি। আমরা যে জায়গায় ছিলাম, সেই জায়গায় তীর্থযাত্রীদের বেশ ভিড়ও দেখতে পেয়েছিলাম। কারণ এই জায়গায় প্রতিদিন হাজার হাজার তীর্থযাত্রী আসে মায়াপুরের মন্দির দেখার জন্য। আর সেখানকার কিছু কিছু লোক এই জায়গায় এসে থাকে।
এই গৌরাঙ্গ কুটিরে গিয়ে সব থেকে ভালো লেগেছিল, এখানে থাকা মানুষগুলোর ব্যবহার। সবার ব্যবহার ছিল অনেক নমনীয়। দুপুরে আমার এখানে খেয়েছিলাম, এদের খাবারের কোয়ালিটিও বেশ ভালো ছিল। তবে রাতে যখন এই গৌরাঙ্গ কুটিরের ভিতর আমরা অবস্থান করেছিলাম আমাদের থাকতে কিছুটা কষ্ট হয়েছিল। কারণ মশার অত্যাচার বেশ ছিল এখানে। আর আমরা যখন গেছিলাম তখন হালকা ঠান্ডাও ছিল। সেই কারণে ঠান্ডারও একটু কষ্ট হয়েছিল আমাদের।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | মায়াপুর, ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা আপনার পোষ্ট মানে ভ্রমন যা সত্যি আমাকে অনুপ্রাণিত করে ৷ বিগত দিনেও দারুন কিছু ভ্রমন পোষ্ট দেখেছি ৷ গৌরাঙ্গ কুটির দেখতে অবেকটা রামায়নের জঙ্গলে মুনি ঋষিগণ বা গুরুদেব যারা এমন কুটিরে থাকে ৷
যা হোক পরিবেশে টা বেশ চমৎকার আর নীরব ৷ আরও ভালো লাগলো মাত্র একদিন থাকতে মাত্র ১০০ টাকা ৷
যা হোক ভারতবর্ষ মানে সয়ং স্বর্গ যা আমার মনে হয় ৷ যা হোক একদিন আপনাক ডিএম করবো কিছু কথা বলার জন্য ৲৷ ধন্যবাদ দাদা গৌরাঙ্গ কুটিরে থাকার অনুভুতি শেয়ার করার জন্য ৷
এটা ফিল করতে গেলে এখানে ঘুরতে আসতে হবে ভাই আপনাকে। যাইহোক, আপনার ওভারল মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
গৌরাঙ্গ কুটির এ খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন আপনি৷ এখানে খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনি আমাদের মাঝে সবকিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন৷ এখানে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন যা থেকে খুবই ভালো লাগছে৷ আপনার কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন ভ্রমণের পোস্ট দেখে খুবই ভালো লাগে৷
আপনার এই সুন্দর মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
https://twitter.com/ronggin0/status/1775484495434830024?t=tDRMMMpKxerqJpmNwo8zpg&s=19