জেনারেল রাইটিং || অশান্তির গরম!

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago (edited)

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই ঠিকঠাক আছো। আমি যদিও খুব বেশি ভালো নেই এই গরমে।

summer-7434439_1280.png

ইমেজ সোর্স

আজকের এই পোস্টের টাইটেল দেখে তোমরা আশা করি সকলেই বুঝতে পেরে গেছো যে, কোন বিষয় নিয়ে আজ আমি লিখতে চলেছি। বর্তমানে চারপাশে যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, প্রত্যেকটা মানুষই কষ্ট পাচ্ছে এই গরমের কারণে। আমার বয়স খুব বেশি হয়ে গেছে অথবা অনেক কম বয়স, এরকম কোন ব্যাপার না। তবে আমার জীবনকালের সময়টাতে আমি যতটুকু দেখেছি, দিন যতই যাচ্ছে এই গরমের পরিমাণটা কেমন জানি বেড়েই যাচ্ছে। কোন অবস্থাতেই গরম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আর পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়বে নাইবা কেন, মানুষ দিন দিন প্রকৃতির উপর যে হারে অত্যাচার করছে, তার ফলস্বরূপ প্রকৃতি এই অবস্থা আমাদেরকে ফেরত দিচ্ছে

প্রকৃতিকে আমরা যতটা কষ্ট দিচ্ছি, প্রকৃতি তার থেকেও কয়েক গুণ বেশি কষ্ট আমাদেরকে দিয়ে দিচ্ছে। অনেক আগে ছোটবেলায় যখন গ্রামে থাকতাম, গরমের সময়টাতে ফ্যান চালাতে হতো না। অনেক গরম হলে গাছের নিচে গিয়ে বসে থাকলেই শান্তি চলে আসতো। তারপর যখন শহরে চলে আসি, এই গরমের সময়ে ফ্যান চালালেই হয়ে যেত আর গরমের কষ্ট হতো না । তবে বর্তমানে ফ্যান চালালে গরম হাওয়া দেয়, ফ্যানের হাওয়াতে শান্তি পাওয়া যায় না । তাছাড়া এখন যেহেতু গরমের পাশাপাশি বায়ুতে আদ্রতা অনেক বেশি, এই কারণে গরমের অনুভূতিটা বেশি লাগে আর কি

বর্তমানে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও অনুভূতি তাপমাত্রা দেখাচ্ছে ৪২ ডিগ্রী থেকে ৫০ ডিগ্রির উপরে। এরকম বেশি তাপমাত্রা আমি আগে হতে দেখিনি কখনো। এই গরমের মধ্যে কোন প্রকার কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। কোন কিছু খেতেও ইচ্ছে করছে না। তাছাড়া এই গরমের মধ্যে মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের চেহারার দিকেও তাকানোর পরিস্থিতি নেই, গরমে যা কন্ডিশন হয়েছে সবার। গত বছরেও বেশ ভালই গরম পড়েছিল। সেই গরমের প্রভাব সহ্য করতে পারিনি বলে এইবার ভেবেছিলাম বাড়িতে কুলার লাগিয়ে গরমের প্রভাব কিছুটা রক্ষা পাবো। কিন্তু কুলার লাগানোর পরেও গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেলো না।

summer-7434392_1280.png

ইমেজ সোর্স

এখন তো ফ্যান চালিয়ে কোন লাভ হবে না আর কুলার চালালেও পুরোপুরি ভাবে ঠান্ডা হাওয়া পাওয়া যাচ্ছে না। একমাত্র যারা এসিতে রয়েছে, তারাই কিছুটা শান্তিতে রয়েছে এই গরমে। তবে এসি থেকে বের হলে অথবা বিদ্যুৎ চলে গেলে তাদের পরিস্থিতিও আমাদের মত এরকম শোচনীয় হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এই গরমে কিন্তু লোডশেডিংও অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। যার ফলে আরও বেশি কষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবার। এই গরমে আরও একটা বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে অনেক জায়গায়, সেটা হলো জলের সমস্যা। আমাদের শহরের বিভিন্ন জায়গায় জলের খুব সমস্যা দেখা দিয়েছে, জল ঠিকঠাক করে পাচ্ছে না কেউই।

যেহেতু আমাদের টাইমের জল আসে অর্থাৎ সরকারি ভাবে জলের সাপ্লাই এর মাধ্যমে বাড়িতে জল আসে, সেইজন্য সাপ্লাই থেকে ঠিক থাক মত জল না আসায় আমাদের অনেক কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। এই গরম আসার পর থেকে, একের পর এক সমস্যা ফেস করেই যাচ্ছি। কোন কিছুরই কোন সঠিক সমাধান পাচ্ছিনা। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত এই গরম চলতেই থাকছে। যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন যদিও গরমের অনুভব বুঝতে পারি না।তবে যতটুক সময় জেগে আছি, এই গরমের মধ্যে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আসলে পরিবেশের এই গরম কমিয়ে ফেলাও আমাদের দ্বারা সম্ভব না। আমরা পৃথিবীটাকে এমন একটা পজিশনে এনে দ্বার করিয়েছি, যার বিরূপ প্রভাব গুলো আমাদেরই ফেস করতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে পারি, প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হতে পারি, জনসংখ্যা বিস্ফোরণের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারি। এমন কিছু কিছু স্টেপ রয়েছে যা করলে পরিবেশে এই গরমের প্রভাব কিছুটা কম আসবে। তবে এটা একদিনে আসবে না, বছরের পর বছর সময় লেগে যাবে এর রেজাল্ট দেখতে গেলে। প্রকৃতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হলে, প্রকৃতির উপর অত্যাচার করা যাবে না। আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি তাহলে আস্তে আস্তে প্রকৃতিও আমাদের কষ্টটা কম দেবে। বেশ কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে অনেক বেশি লোক অসুস্থ হয়েছে এইবার । সত্যি বলতে, এই অশান্তির গরম আর সহ্য করা যাচ্ছে না।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, সব শেষে এটাই বলবো যে, এই গরমে সবাই সাবধানে থাকো এবং ভালো থাকার চেষ্টা করো । সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 4 months ago 

আসলে প্রকৃতির বাতাস যেন শরীরকে শীতল করে দেয়। এখন যে গরম পড়েছে এই গরমে আমরা এসি ফ্যানের ভিতরে রয়েছে, তারপরও যেন আমাদের গরম ছাড়ছে না। কিন্তু আগের দিনে ফ্যান কারেন্ট ছিল না, তখন কিন্তু আমরা এই প্রকৃতির বাতাস এই গাছের নিচে বসেই আনন্দের সাথে মুহূর্তগুলো উপভোগ করতাম। আর গাছপালা কাটার কারণেই যেন আমাদের এই অবস্থা হয়েছে।

 4 months ago 

আর গাছপালা কাটার কারণেই যেন আমাদের এই অবস্থা হয়েছে।

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

হ্যাঁ একটা সময় যখন বিদ্যুৎ ছিলনা তখন ফ্যান ছাড়াই কিন্তু মানুষ থাকতো, গাছের নিচে বসলেই স্বস্তির আভাস পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে আমরা প্রকৃতির উপরে অত্যাচার করে এমন অবস্থা তৈরি করেছি যে ফ্যানের বাতাসেও টেকা যায় না।

 4 months ago 

আমরা আমাদের কর্মফল ভোগ করছি ভাই। আমরা প্রকৃতির উপর অত্যাচার করেছি, এখন প্রকৃতি আমাদের উপর অত্যাচার করছে। 😓

 4 months ago 

প্রচন্ড গরম আসার পর সত্যি আমরা রয়েছি অস্বস্তির মধ্যে। আর জলের সমস্যা তো বেড়েই চলেছে। হয়তো এসির মধ্যে যারা রয়েছে তারা একটু শান্তিতে রয়েছে। তবে যত দিন যাচ্ছে তত দিনকাল যেন কঠিন হয়ে গেছে।

 4 months ago 

আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি দিন দিন যা হচ্ছে, তাতে সামনে আরো কঠিন দিন আসছে ভাই।

 4 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এজন্য পানের সংকট হয়ে পড়েছে। এদিকে চলাচল সহজ নিজেদের কাজকর্ম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমন নিজেদের টিকে থাকা ও যেন কঠিন হয়ে পড়েছে। আর সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে লোডশেডিং এর কারণ। যাদের এসি রয়েছে তাদের হয়তো শান্তি কিন্তু সবার তো আর নেই। দেখা যাক কতদিন এমন অবস্থা থাকে।

 4 months ago 

দেখা যাক কতদিন এমন অবস্থা থাকে।

দেখতে দেখতে অনেক দিন ধরেই এই অবস্থা চলছে আপু, তবে এই গরমে শান্তি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কবে যে একটু শান্তি খুঁজে পাওয়া যাবে, সেই আশায় আশায় দিন কাটাচ্ছি এখন আপু।

 4 months ago 

এই গরমে কি থেকে কি করবো এটা বুঝতেই পারছিনা। আসলে প্রকৃতির এরকম অবস্থার জন্য আমরাই দায়ী। কারণ প্রত্যেকটা মানুষ কারণে-অকারণে প্রকৃতির উপর অত্যাচার করতেছে। যে কোন সময় তারা নিজের ইচ্ছায় গাছ কাটতেছে কারণে-অকারণে। যেটা করা একেবারেই উচিত হচ্ছে না। চারপাশে যদি গাছপালা থাকতো, তাহলে হয়তো আমরা এত বেশি গরম অনুভব করতে পারতাম না। লোডশেডিং তো এখন প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। তবে পাখার নিচে এখন তেমন প্রশান্তি পাওয়া যায় না, গাছের নিচে বসলে আগে যেমন প্রশান্তি পাওয়া যেতো। দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা মানুষের উচিত গাছ না কেটে, আরো বেশি করে গাছ লাগানো।

 4 months ago 

শতভাগ একমত আপু আপনার এই কথার সাথে, প্রত্যেকটা মানুষের উচিত গাছ না কেটে, আরো বেশি করে গাছ লাগানো।

 4 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে যে পোস্টটি শেয়ার করেছেন সত্যিই এই পোষ্টের সাথে আমার এলাকার কিছু দৃশ্য মিলে যাচ্ছে। যেমন আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম আপনাদের ওখানে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪৫°। আর আমাদের এখানে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি। সব মিলিয়ে এই অশান্তিকর গরম যেন কোনো মতেই যাচ্ছে না। এই গরমে আমাদের বেশি বেশি করে পানি খাওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু এখন টিউবয়েলের পানি তোলা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে কারণ এ রোদের কারণে টিউবয়েলের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে এমনটাই হচ্ছে। আমার এলাকাতে অনেক টিউবয়েলে পানি তোলা হচ্ছে না তাই তারা খুবই কষ্টের সাথে জীবন পার করছে। একটু বৃষ্টির দেখা দিলে হয়তো এই সমস্যা সমাধান হতো। সত্যিই ভাইয়া এই গরম যেন কোনৈ মতে আর সহ্য হচ্ছে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

একটু বৃষ্টির দেখা দিলে হয়তো এই সমস্যা সমাধান হতো।

ভাই অনেকদিন পর আজ একটু বৃষ্টি হলো আমাদের এইখানে। এখন দেখা যাক, এই সমস্যার সমাধান পাই কিনা।

 4 months ago 

প্রকৃতির বাতাস আর বৈদ্যুতিক ফ্যানের বাতাসের অনেক বেশি পার্থক্য রয়েছে। এখন ফ্যানের নিচে বসলে আর প্রশান্তি পাওয়া যায় না, যেটা আমরা গাছের নিচে বসলে পেতাম। গরম তো আস্তে আস্তে আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। কারণ প্রকৃতির অবস্থা আমরা মানুষরাই একেবারে খারাপ করে ফেলেছি। আর আমরা মানুষরা সেই কাজের কর্মফল পাচ্ছি এখন। এখনো অনেক সময় রয়েছে সবারই উচিত বেশি করে গাছ লাগানো। এই গরমে পাখার নিচে বসলেও যেন কাজ হয় না। গরম তো লাগেই বরং পাখার বাতাস আরো বেশি গরম লাগে।

 4 months ago 

এত সুন্দর করে আপনার এই কথাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

এখনো অনেক সময় রয়েছে সবারই উচিত বেশি করে গাছ লাগানো।

আমিও আপনার এই কথার সাথে সহমত পোষণ করি ভাই।

 4 months ago 

আসলেই দাদা এই যে গরম বাড়ছে কমার তো কোনো লক্ষ্যণ দেখছি না। সামনে তো আমাদের জন্য আরও ভয়াবহ অবস্থা অপেক্ষা করছে। আমাদের এখনই সতর্ক হওয়া উচিত। যেভাবে প্রকৃতি ধ্বংস করছি তার ফলটাও পাচ্ছি। ফ্যানের বাতাসের কথা কি বলবো দাদা। রাতে ফ্যানের নিচে শুইলেও দেখি শরীর ভিজে যাচ্ছে গরমে 🙂।

 4 months ago 

যেভাবে প্রকৃতি ধ্বংস করছি তার ফলটাও পাচ্ছি।

ভাই, কর্মফল তো ভোগ করতেই হবে সবাইকে। নিজেদের করা কর্মের ফল থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই ।

 4 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন দাদা। নিজের কর্মফল নিজেকেই ভোগ করতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 57852.72
ETH 2355.59
USDT 1.00
SBD 2.44