ট্রাভেল || খাতড়া থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়ার পথে (পর্ব -০২)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো ঠিক আছি। |
---|
আজকের এই পোস্টে তোমাদের সাথে একটি ভ্রমনমূলক ব্লগ শেয়ার করবো। "খাতড়া থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়ার পথে"- ব্লগের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবো এখানে।
খাতড়া থেকে মুকুটমণিপুরের টোটোতে করে যেতে ২৫ মিনিটের মতো সময় লাগলেও আমাদের যেতে লেগেছিল ৪৫ মিনিটের মত সময়। আমরা আমাদের যাত্রাকালের অনেকটা সময় টোটো দাঁড় করিয়ে আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটাকে উপভোগ করেছিলাম। নতুন জায়গায় গিয়ে নতুন পরিবেশ দেখতে বেশ ভালই লাগে। আমাদের টোটো চালক খুব ভালো ছিল, সেও দেখছিলাম আমাদের কথা মতো টোটো দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিল এবং আমাদেরকে সেই নতুন পরিবেশের সব কিছু দেখার ব্যবস্থা করে দিচ্ছিলো।
অবশেষে ৪৫ মিনিট পর গিয়ে আমরা পৌঁছে যায় এই মুকুটমণিপুর জায়গাটিতে। এই মুকুটমণিপুর জায়গাটি একটি পর্যটনকেন্দ্র ছিল। শীতকালের দিকে এই জায়গায় প্রচুর লোকের সমাগম হয়, এরকমটা আমরা জানতে পেরেছিলাম টোটো চালকের কাছ থেকে। এইখানে যেহেতু দেশী বিদেশী বিভিন্ন ধরনের পর্যটক আসে, সেই জন্য আশেপাশে বেশ কিছু রিসোর্ট এর ব্যবস্থাও দেখেছিলাম এখানে। আর এসব রিসোর্ট এর ভাড়াও ঠিকঠাক ছিল, এরকমটা আমাদের টোটো চালক আমাদের জানিয়েছিল। যাইহোক, আমরা এখানে সকাল সকালই পৌঁছে গেছিলাম।
আমরা সকালের না খেয়ে বেরিয়েছিলাম, সেজন্য আমরা মুকুটমণিপুর পৌঁছে কিছু খেয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এই সময় আমাদের টোটো চালক আমাদের নিয়ে যায় একটি চপের দোকানে, এখানকার ফেমাস চপ খাওয়ানোর জন্য। আমি আমাদের কলকাতাতে সকালবেলা এরকম চপ খেতে খুব কম লোকেই দেখেছি। তেলেভাজা চপ আমাদের কলকাতাতে সবাই বিকেল বেলা অথবা সন্ধ্যার সময় খায়। আর মুকুটমণিপুর গিয়ে দেখি, এই ব্যাপারটা উল্টো অর্থাৎ তারা সকালে চপ খায়। যাইহোক, অন্য কোন উপায় না থাকায় সকাল সকাল এই খালি পেটে তেলেভাজা চপ এবং সেই সাথে মুড়ি কিনে খাই আমরা। এখানে দাম বেশ কমই ছিল। এই চপ বিক্রেতার দোকানের নামও বেশ অদ্ভুত ছিল যা তোমরা ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাবে। আমাদের সাথে যে টোটো চালক ছিল তাকেও আমরা আমাদের সাথে চপ মুড়ি খেয়ে নেওয়ার জন্য বলি । যদিও সে আমাদের সাথে খায় না সেই মুহূর্তে এইগুলো।
তার পছন্দের ছিল এখানকার বেগুনি। সেই বেগুনিটা শেষ হয়ে গেছিলো বলে সে আর কোনো কিছু খাইনি। যাই হোক, খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আশেপাশে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়ি আমরা। এখানে কয়েকটা অংশ থেকেই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ ছিল। আমরা এক এক করে সব জায়গা দেখব, এরকম একটা প্ল্যান করি নি। পরে আমরা আমাদের টোটো চালকের কাছ থেকে এক ঘন্টার মত সময় চেয়ে নিয়ে পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখতে যাই। টোটো চালকও আমাদের কথায় রাজি হয়ে যায় এবং সে তার টোটো নিয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে আর আমরা মুকুটমণিপুর ঘুরে দেখা শুরু করি। এই জায়গায় বিভিন্ন ধরনের গাছপালা ছিল।
এখানের চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশটা দেখে বেশ ভালোই লাগছিল আমার। এখানে যে আমাদের ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ড্যামটি ছিল, সেটির উপরে যাওয়ার খুব ইচ্ছা আমাদের। তবে ইচ্ছা থাকলেও আমরা ওই দিকটাতে যেতে পারিনি কারণ ঐ দিকটা অনেক দূরত্বের ব্যাপার ছিল আর যেতেও অনেক টাকার প্রয়োজন হতো, সেই জন্য আমরা আশেপাশের জায়গা গুলোই ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নিই। এই জায়গাটাতে ঘোরাঘুরির সময় বেশ কিছু জিনিস আমাদের নজরে পড়েছিল। সেখানে থাকা কয়েকটি বন্ধ দোকানের সামনে বিভিন্ন ধরনের পুতুল দেখতে পাই আমরা । এগুলো সবই মাটির তৈরি ছিল। আমরা এখানকার দোকানদারদেরও খোঁজার চেষ্টা করি, এইগুলো কেনার জন্য। তবে আমরা যে সময়টা গেছিলাম সেই সময়টাতে সব দোকানই বন্ধ ছিল । তাই মাটির তৈরি ঐসব পুতুল কেনার ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না আমাদের হাতে।
এই জায়গাটাতে আমরা যে সময় গেছিলাম, সেই সময়টাতে পর্যটকদের ভিড় না থাকার কারণে আমার বেশ ভালোই লেগেছিল। সত্যি কথা বলতে অতিরিক্ত পর্যটক হয়ে গেলে সেই জায়গার সৌন্দর্য অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। তাই পর্যটক যে সব জায়গায় কম যায়, আমার কেন জানি সেসব জায়গা গুলো বেশি পছন্দ হয়। ভিড় না থাকার কারণে এই জায়গা আরও বেশি ভালো করে ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা ওইসময় গিয়ে।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | মুকুটমণিপুর, বাঁকুড়া, ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অচেনা জায়গা সম্পর্কে ধারণা পেতে আমি খুবই পছন্দ করি। ঠিক তেমনি ধারণা দিয়েছেন আজকের এই পোস্টের মধ্য দিয়ে। যেখানে আপনার পথ ভ্রমণের অনেক সুন্দর কিছু জানা হলো পাশাপাশি আরও বিস্তারিত কিছু দেখতে পারলাম। বেশ অনেক তথ্য বহন করেছেন এই পোস্টের মধ্য দিয়ে।
চেষ্টা করেছি ভাই, আমার ভ্রমন সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
সকালেই শুধু চপ খায় না, এদিকের লোকেরা মুড়ির সাথেই চপ খায়। কলকাতার সাথে প্রান্তিক এরিয়ার জায়গাগুলির অনেক তফাৎ। চপের স্বাদও আলাদা হয়ে যায়৷
এটা আপনি ঠিক বলেছেন আপু, এই ব্যাপারটা আমি সেখানে গিয়েই বুঝতে পেরেছিলাম।
https://x.com/ronggin0/status/1795636408474071259?t=8eACuhzQBr52XO9TmJNdIw&s=19