ভ্রমন: সিদ্ধেশ্বর পাহাড় ও শিব মন্দির (পর্ব -০২)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম । আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে ভ্রমণ মূলক একটি পোস্টের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব।

কয়েক মাস আগে ঘাটশিলা ভ্রমণে গিয়ে সিদ্ধেশ্বর পাহাড় চড়ে শিব মন্দিরে যাওয়ার গল্পটা অনেকটাই বড়। তাই কয়েকটি পর্বের মাধ্যমে সেখানে যাওয়ার গল্পটা তোমাদের সাথে শেয়ার করব।

20230224_131348.jpg

20230224_131351.jpg

প্রথম পর্বের লিংক

পাহাড়ে উঠা দেখতে যতটা সহজ মনে হয় আসলে অতটা সহজ নয়। পাহাড় চড়া বেশ কঠিন কাজ কারণ এর আগেও আমি অনেক পাহাড়ে উঠেছি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে তখন এই ব্যাপারটা খেয়াল করেছি। এই পাহাড়ের রাস্তা ছিল নুড়ি পাথর দিয়ে ভরা। নুড়ি পাথর থাকলে সেই রাস্তা বেয়ে পাহাড় চড়া অনেকটা বিপদজনক কারণ পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা থাকে। যাইহোক এই নুড়ি পাথরের রাস্তাতে শুরু হয় আমাদের পথ চলা। উদ্দেশ্য যে করেই হোক বাবা সিদ্ধেশ্বর অর্থাৎ ভোলা বাবার দর্শন করা। শিবের অনেক নাম তার মধ্যে সিদ্ধেশ্বর অন্যতম। আমাদের ধর্মে ভগবান শিবের গুরুত্ব সব থেকে বেশি এবং আমাদের ভারতে শিব মন্দিরের সংখ্যা সব থেকে বেশি।

20230224_131430.jpg

20230224_131703.jpg

যাই হোক নুড়ি পাথরের রাস্তা বেয়ে কিছুটা উপরে উঠতেই সমতলের মত একটি জায়গা পাই আমরা। রাস্তা বেয়ে উপরে উঠার সময় আমি সবার থেকে পিছনে পড়ে যাচ্ছিলাম ছবি তুলতে গিয়ে। সময়টা দুপুরের আর গরমের সময় ছিল তবে গাছপালা বেশি থাকার কারণে গরম খুব বেশি লাগছিল না। বন্ধুরা মিলে গল্প এবং হাসাহাসি করতে করতে আমরা উঠছিলাম। একসাথে গল্প করতে করতে কোনো কাজ করলে কঠিন কাজও খুব সহজেই করা যায় এই ব্যাপারটা আমার জানা ছিলো । পাহাড়ে চড়ার মত কঠিন কাজ সহজে করার জন্যই আরো বেশি বেশি করে গল্প করছিলাম আমরা। গল্প করার কোনো এক সময় আমাদের সাথে ছোট একটা বিপত্তি ঘটে যায় । আমার এক বন্ধু তার চশমা খুঁজে পায় না।

20230224_131901.jpg

20230224_132014.jpg

আমরা পড়ি মহা বিপদে! আবার আমাদের পাহাড়ের কতটা নিচে যেতে হবে সেই ভাবনা শুরু হয় । আমরা পাহাড়ে উঠার সময় নিজেদের কিছু ফটো তুলেছিলাম সেই গুলো দেখে আমরা বুঝতে পারি চশমাটা কয়েক মিনিট আগে চোখে ছিল তারপর কোথায় হারিয়েছে। আসলে হয়েছিল কি আমরা চলতে চলতে টায়ার্ড হয়ে যাওয়ার পরে চোখমুখ ধোয়ার জন্য চোখ থেকে চশমা খুলে নি , সেই সময় আমার এক বন্ধু চশমা খুলে পাশের একটা জায়গায় রেখেছিল কিন্তু পরে ভুলে গেছিল । অনেক খোঁজাখুঁজির পরে আমরা একটু পাশেই পেয়ে যাই চশমা তাই আর আমাদের পাহাড় থেকে নিচে নামতে হয় নি । যাই হোক পুনরায় আবার চলা শুরু করে দি আমরা।চলতে চলতে একটি দোকানের দেখা পাই। সেখানে পুজো দেওয়ার সব সামগ্রী ও বিভিন্ন ধরনের খাবার দেখতে পাই। তবে আমরা পুজোর কোনো সামগ্রী কিনি না। নিজেদের জন্য জল আর টুকটাক কিছু খাবার কিনেছিলাম ।

20230224_132018.jpg

20230224_132131.jpg

যে দোকান থেকে আমরা আমাদের জন্য খাবার কিনেছিলাম সেই দোকানদার আমাদের সাবধান করে দিয়েছিল উপরে গিয়ে কোন প্রকার আগুন না জ্বালাতে। গরমের সময় ছিল আর পাহাড়ে অনেক শুকনো গাছপালা থাকে তাই পাহাড়ের কোন জায়গায় আগুন ধরালে সেই আগুন পাহাড়ের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা ঘাটশিলা ভ্রমণে গিয়ে প্রথম এরকম কোনো খাড়ায় পথ বেয়ে উঠছিলাম। চলার পথে দেখা দৃশ্যগুলো আমাদের কাছে অসাধারণ লাগছিল । এখানে শাল পাতার গাছ সব থেকে বেশি দেখা যাচ্ছিল ।তাছাড়াও পাতার বিড়ি তৈরি করার সেই গাছও দেখেছিলাম আমি। এই গাছ গুলো আমাদের চিনিয়েছিল আমাদের অটোচালোক অন্য একটি জায়গা থেকে। অটো চালকের মুখ থেকে আমরা এটাও শুনেছিলাম এই পাহাড়ে নাকি অনেক ঔষধি গাছও রয়েছে ।

চলবে...

20230224_132136.jpg

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীভ্রমণ
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনগালুডিহ ব্যারেজ, কুমির্মুরি, ঝাড়খণ্ড, ভারত।

সিদ্ধেশ্বর পাহাড় ও শিব মন্দির ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্বটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  

সিদ্ধেশ্বর পাহাড় ভ্রমণ এবং শিব মন্দির নিয়ে আমি একটা পর্ব তৈরি করেছিলাম। সেখানেও এই কথাগুলো আসলে উল্লেখ করেছিলাম যে, কত কষ্ট হয়েছিল আমাদের উপরে উঠতে। বিশেষ করে পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট নুড়ি পাথর থাকার কারণে যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছিল ওপরের দিকে উঠতে। তারপর আবার একটা বন্ধু চশমা হারিয়ে ফেলে, আবার সেই দোষ আমার ঘাড়ে দিয়েছিল। হা হা হা... তারপর আবার আমাদের সতর্ক করে দিয়েছিল উপরে যাতে গিয়ে আগুন না জ্বালাই এর প্রত্যেকটা কথাই আমার মনে আছে। তবে শেষ পর্যন্ত কিন্তু আমরা শিবের মন্দির দর্শন করতে পেরেছিলাম। ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট তুমি অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে লেখ দেখছি।

 last year 

পুরনো এই ঘটনাগুলো মনে করতে বেশ ভালই লাগে। সেই দিনের পাহাড় জার্নি বেশ ইন্টারেস্টিং হয়েছিল আমাদের।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56697.29
ETH 2390.51
USDT 1.00
SBD 2.29